শিশু বনাম রবীন্দ্রনাথ

সে রবীন্দ্রজয়ন্তী ভুলব না। মহারাজের উতোর আর দর্শকদের চাপান। মহারাজ বলছে—“এককানি ছোতো খেত আমি একেলা”। বলেই দর্শকদের সুযোগ দিতে চুপ করে যাচ্ছে। তাঁরা সমস্বরে ক্যাচ লুফে নিয়ে—“চারিদিকে বাঁকা জল করিছে খেলা।” হঠাৎ মহারাজ আপন মনে—“বাকা জল, আঁকা জল কইছে খেলা…। গান গেয়ে গান গেয়ে কইছে খেলা…।” বড় করতালি সহযোগে মহারাজ মঞ্চ থেকে নেমে এলেন। বাবা সগর্বে বললেন—“বলেছিলাম না, সবটা বলতে পারবে না?”
প্রবাসে রবীন্দ্রজয়ন্তী পালন উপলক্ষ্যে কিছু মজার ঘটনা, স্মৃতিচারণ করলেন আলোলিকা মুখোপাধ্যায়…
রবীন্দ্রকাব্যে জন্মদিন এবং পঁচিশে বৈশাখ

বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, রবীন্দ্রনাথ তাঁর সত্তর বৎসর পূর্ণ হওয়ার আগে পর্যন্ত তাঁর কবিতায় মাত্র কয়েকবার জন্মদিনের প্রসঙ্গ উল্লেখ করেছেন, সেই তিনিই পরবর্তী দশ বৎসরের জীবৎকালে অসংখ্যবার এই প্রসঙ্গে ফিরে ফিরে গেছেন। তাহলে কি সাধারণ মানুষের মতোই রবীন্দ্রনাথও যত জীবন-সমাপনের দিকে এগিয়েছেন, ‘শেষ পারানির কড়ি’ হিসাবে জন্মদিনকেই ‘স্মরণবীণ’ করে তুলতে চেয়েছেন?
লিখলেন দিলীপ কুমার ঘোষ…
নিজের রবীন্দ্রনাথ (প্রবন্ধ)

দুর্ভাগ্যবশত, ওই সময় যাঁদের সঙ্গে আমার সাক্ষাৎ হয়েছিল, পরে বুঝেছিলাম, তাঁরা কেউই রবীন্দ্রনাথকে ভালবাসতে পারেননি। পরবর্তীকালে কোনো কোনো মানুষকে দেখেছি, যাঁরা হয়তো ধুতি পাঞ্জাবিই পরেন, সভা সমিতিতেও হয়তো যান, কিন্তু রবীন্দ্রনাথকে সত্যিকার ভালবাসেন।
রবি থেকে সত্যজিৎ: প্রবাহ-পরম্পরা (প্রবন্ধ)

তবে কি ধরে নেওয়া যেতে পারে যে সত্যজিতের মতো বহুমুখী প্রতিভাও রবীন্দ্রনাথের গানকে এমন নবীকরণ করেছিলেন সজ্ঞানেই! যদিও তিনি তাঁর অন্যান্য চলচ্চিত্রেও রবীন্দ্রনাথের অনেক গানের ব্যবহার করেছিলেন সযত্নেই। এই প্রসঙ্গে কাঞ্চনজঙ্ঘা ছবিতে অমিয়া ঠাকুরের কন্ঠে ‘এ পরবাসে রবে কে’ গানটির প্রয়োগ চলচ্চিত্র জগতে একটি মাইলস্টোন হিসেবে স্বীকৃতি পেতে পারে।
তোমায় আমি দেখিনি (কবিতা)

এমন দিনে, ছল ছেড়ে দিই যত
ভালবাসার আয়াসে বিক্ষত
মেঘ যেরকম আকাশ পেলে ডাকে…
তোমার সাড়া পেয়েছি, তাই জানি
আবার আমায় বদলে দেবে গানই
হঠাৎ কোনও পঁচিশে বৈশাখে!
নববর্ষের প্রাতঃসূর্য

শান্তিনিকেতনের প্রখর দাবদাহ আর জলকষ্টের জন্য এই বছর থেকেই নববর্ষের দিন রবীন্দ্রজন্মোৎসব পালনের রীতি শুরু হয়। এই রীতি চলে অনেকদিন পর্যন্ত। ২০০০ সালের গোড়ার দিকে এই রীতি পরিবর্তন করেন বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। নববর্ষ আর রবীন্দ্রজন্মোৎসব আলাদা করে দেওয়া হয় কারণ “সেমেস্টার সিস্টেম” চালু হয়ে যাওয়ায় পঁচিশে বৈশাখ তখন থেকে আর গরমের ছুটির মধ্যে পড়ে না। শান্তিনিকেতনের নববর্ষ ও রবীন্দ্রজন্মোৎসব শুধু উৎসব ছিল না কোনও দিনই। বাংলা নতুন বছরের দিনে সে ছিল বাংলা ভাষার উৎসব, বাঙালির সংস্কৃতির উৎসব।