মান (কবিতা)

বন্ধু বদলে বদলে হেঁটে যাচ্ছে গোধূলির দিকে
ফিরে তাকাচ্ছে না তোমার অভিমান।
পুরনো প্রেমের দিকে, নতুন ওমের দিকে হেঁটে যাচ্ছে দীর্ঘ ছায়া নিয়ে
পাঠকের বৃত্তান্তে ‘দেবেশ রায়’ (প্রবন্ধ)

দেবেশ রায় আর আমাদের মধ্যে নেই এটা যেমন মর্মান্তিক সত্য, তেমন এও সত্য, তাঁর লেখা ও ভাবনার এক বিশাল জগতের সামনে আমরা আজও দাঁড়িয়ে আছি। আগামী সময় এই সমুদ্র থেকে নতুন কোনও অমৃত খুঁজে পাবেই। একজন সামান্য পাঠক হিসেবে দেবেশ রায়ের রচনার সামনে নতজানু হয়েই আগামী সময়ের লেখকদের কাছে আশাবাদী হয়ে রইলাম।
সহযোদ্ধা (গল্প)

দু’জনকে যদি একসঙ্গে তাড়ানো হত তাহলে দু’জনকে এক করে দেওয়া হত। একটা ইউনিট করে দেওয়া হত। আর পার্টি সেটা চায় না। বাঘ যেমন শিকারের আগে হরিণকে একা করে দিতে চায়, পার্টিও ঠিক সেটাই চায়। তাই তোমাকে মঞ্চে নামিয়ে এই নাটক সাজানো হয়েছে। কিন্তু নাটকের সংলাপটা আমি একটু বদলাব। আর আমাকে হেল্প করবে তুমি। আমাকে বহিষ্কার করবে পার্টি থেকে।
চাওয়ার তুই (কবিতা)

স্যাঁতস্যাঁতে দিন জ্বালাচ্ছে খুব, কিছুই মন টানছে না!
ভাল্লাগে না, ভাল্লাগে না, রোজনামচার কাজের চাপ,
তারচে বরং তুই এলে, বেশ, রোদের আয়েশ চায়ের কাপ;
গোলকিপার (শেষ পর্ব)

“টাকার জোরে, ক্ষমতার নেশায় তার চতুর্দিকের সব কিছু নিজের ইচ্ছে মতো চালাতে চায়, এরকম একটা উন্মাদ, একটা পাগলের জন্যে তোমাকে ভুগতে হয়েছে গোলকিপার। তোমার সঙ্গে সঙ্গে আমাকেও হয়েছে। ঠাম্মাকে হারিয়েছি আমি এই পাগলামির জন্যে। তখন তো জানতামই না। কিন্তু সেই পাগলটাকে কি আজ এক মুহূর্তের জন্যেও দেখতে পেলে? অবশ্য দেখবেই বা কী করে! তুমি তো আজ একবারও তাকাওইনি তার দিকে!”
গোলকিপার (পর্ব ২২)

এতক্ষণ মুখ খোলেননি সুমিত্রা। এবার ছেলের দিকে তাকিয়ে বললেন, “যে মেয়েটা তোর ভালোর কথা ভেবেই এত কিছু করছে, আমি তো দেখছি সেই একেবারে প্রথম দিন থেকে, তার সঙ্গে কোনও কথা না বলে তাকে এক কথায় উড়িয়ে দেওয়া যায় না ছোটু। সে যদি তার বাড়িতেই আমাদের থাকার ব্যবস্থা করে থাকে…” মা’কে কথা শেষ করতেও দিল না অরিত্র, ঝাঁপিয়ে পড়ে বলে উঠল, “তুমি কিছু জানো না মা। কুর্চি আমার বন্ধু বলে এই লোকটা, কুর্চির বাবা, আমাকে শেষ করে দিতে চায়। দেবুদাই দুদিন আগে বলছিল, ভাড়াটে খুনি লাগাবে আমার পেছনে। এখন ওরই সঙ্গে আমাদের থাকতে হবে? পাগল নাকি!”
টেলিপ্যাথি (গল্প)

ঠিক পরের মাসে ধুমধাম করে ইয়াসমিনের বিয়ে হয়ে গিয়েছিল সেই ডাক্তার পাত্রের সঙ্গে। ইমরান কোনওদিন জানতেও পারেনি যে তার জন্যে মনে এত আগুন নিয়ে একটি মেয়ে আরেকজনের ঘরের প্রদীপ জ্বালাতে যাচ্ছে। খুব স্বাভাবিক কারণেই বাকি বছরটা ইয়াসমিন এক কলেজে থাকলেও তিনজনের খুব একটা দেখা হয়ে ওঠেনি। হোস্টেলেও আর থাকা হয়ে ওঠেনি ইয়াসমিনের। প্রতিনিয়ত স্বামীসেবা আর ঘরকন্না বাদ দিয়ে নিজের জন্যে বাঁচা প্রায় ভুলেই গিয়েছিল সে ।
কবিতার সঙ্গে বসবাস

অজানা। এই একটি শব্দ পর্যন্ত শুধু আমি পৌঁছতে পারি। আমার কাছে কোনও কবিতা হঠাৎ আরম্ভ হয়। কয়েকটি লাইন পরপর মাথায় চলে এল। কখনও বা মাত্র একটাই লাইন তিন দিন চার দিন ধরে মানের মধ্যে ঘুরে চলেছে। পরে লাইন আর আসছে না। অকস্মাৎ পরে দু’টি তিনটি লাইন চলে এল। অবাক হয়ে দেখলাম চার লাইনের একটি স্তবক তৈরি হয়ে গেছে! তখনও কিন্তু খাতা কলম নিইনি। এই যে চার লাইনের একটি স্তবক মনের মধ্যে তৈরি হয়ে উঠল, তা কী উপায়ে হল? সত্যি আমি জানি না।