দুর্জয়বাবুর দুঃসময় (গল্প)

এতদিনের ‘ফোনাসঙ্গের’ অভ্যেস থেকে নিষ্কৃতি পাওয়া সহজ ব্যাপার নয়। তাছাড়া দুর্জয়বাবুর একটা নৈতিক দায়িত্বও তো আছে একাকিনী নারীদের প্রতি! তার সঙ্গে যোগ হয়েছে একটা চোরা ভয়!…
বসন্তদিন (গল্প)

ছুটির দিনে দুব্রোভনিকের জনবহুল রাস্তা স্ত্রাদুনে চলে যায় সুজয়। একটা বিয়ার নিয়ে বসে থাকে সৈকতে। দু’ চারটে চেনা মুখ হাসে। সামান্য গল্পস্বল্প হয়।
সহযোদ্ধা (গল্প)

দু’জনকে যদি একসঙ্গে তাড়ানো হত তাহলে দু’জনকে এক করে দেওয়া হত। একটা ইউনিট করে দেওয়া হত। আর পার্টি সেটা চায় না। বাঘ যেমন শিকারের আগে হরিণকে একা করে দিতে চায়, পার্টিও ঠিক সেটাই চায়। তাই তোমাকে মঞ্চে নামিয়ে এই নাটক সাজানো হয়েছে। কিন্তু নাটকের সংলাপটা আমি একটু বদলাব। আর আমাকে হেল্প করবে তুমি। আমাকে বহিষ্কার করবে পার্টি থেকে।
মানবপুত্র (গল্প)

সন্ধেবেলায় বাদশাদাদা রুটি আলুভাজা খায়, নাহলে চায়ের সঙ্গে সিঙ্গাড়া। টাবু নানা ছলছুতোয় তখন বাদশাদাদার বাড়ি যায়। কিন্তু হাবু তার মাথায় চাঁটা মেরেছিল, ‘হ্যাংলা কোথাকার! ওরা বোঝে, তুই কেন যাস।’
কুমার বিশাখ (গল্প)

শুধু কুমারের ওদের প্রতি দুর্বলতা আছে। লাজুক ময়ূরের দৃপ্ত ভঙ্গিতে, চলার মধ্যে একটা যুদ্ধংদেহী ভাব আছে। যেভাবে ঝোপ জঙ্গল চাষের জমি থেকে বিষধর সাপ ধরে তীক্ষ্ণ ঠোঁটের আঘাতে তাকে ফালাফালা করে দেয় তা মুগ্ধ হয়ে দেখে কুমার।
টেলিপ্যাথি (গল্প)

ঠিক পরের মাসে ধুমধাম করে ইয়াসমিনের বিয়ে হয়ে গিয়েছিল সেই ডাক্তার পাত্রের সঙ্গে। ইমরান কোনওদিন জানতেও পারেনি যে তার জন্যে মনে এত আগুন নিয়ে একটি মেয়ে আরেকজনের ঘরের প্রদীপ জ্বালাতে যাচ্ছে। খুব স্বাভাবিক কারণেই বাকি বছরটা ইয়াসমিন এক কলেজে থাকলেও তিনজনের খুব একটা দেখা হয়ে ওঠেনি। হোস্টেলেও আর থাকা হয়ে ওঠেনি ইয়াসমিনের। প্রতিনিয়ত স্বামীসেবা আর ঘরকন্না বাদ দিয়ে নিজের জন্যে বাঁচা প্রায় ভুলেই গিয়েছিল সে ।
কাপলস আর ওয়েলকাম (গল্প)

টিভি চালিয়ে বিছানায় আরাম করে গুছিয়ে বসল দিব্য। এ.সি অন করে একটা হাল্কা লাইট জ্বালিয়ে বাকিগুলো নিভিয়ে দিল। বাইরে দুপুর হলেও এই ঘরের ভারি পর্দাগুলো সেই গনগনে আলো আটকে রেখেছে। বেল বাজতে দিব্য উঠে গিয়ে দরজা খুলল। কফি এসে গেছে। রুম সার্ভিসের ছেলেটি মিষ্টি হেসে বলল -“স্যার, লাঞ্চের অর্ডার করতে হলে কিন্তু প্লিজ দু’টোর মধ্যে করে দেবেন। মেনু কার্ড টেবিলের ওপরেই রাখা আছে। “দরজা বন্ধ করে কফি নিয়ে বিছানায় এসে বসল দিব্য। সুহেলি বাথরুম থেকে বেরিয়ে বাইরের জামাকাপড় ওয়ার্ডরোবে রেখে নিজেও কফি নিয়ে বিছানায় দিব্যর গা ঘেঁষে বসে পড়ল।
ইন্দিরার স্বর্গারোহণ ও তারপর (গল্প)

একদিন নিজের জগতের বাইরে গিয়ে বসার ঘরে বৌমার ছবিতে বাসি মালা দেখে কেঁপে উঠে হাঁক দিয়েছিলেন “সাধনা!” বলে। সিদ্ধেশ্বরীদেবীর এই উচ্চস্বর অনেকদিন বাদে শুনে পুরনো কাজের মেয়ে সাধনা- যে নিজেকে বাড়ির ম্যানেজার বলে পরিচয় দিয়ে থাকে, হন্তদন্ত হয়ে হাজির হল। “জানিস না, কোনও ফটোতে বাসি মালা ঝুললে বৌমা রেগে যায়!” হঠাৎ খেয়াল পড়তে কালে গোলমাল হয়ে গিয়েছে- ‘যায়’টা ‘যেতো’ হবে। চোখের জল মুছতে মুছতে নিজের ঘরে ফিরে গিয়েছিলেন সিদ্ধেশ্বরী। তারপর থেকে মালাটা নিত্য আসে আর বৌমার গলায় টাটকা মালা ঝোলে।