টেলিপ্যাথি (গল্প)

Illustration by Upal Sengupta

ঠিক পরের মাসে ধুমধাম করে ইয়াসমিনের বিয়ে হয়ে গিয়েছিল সেই ডাক্তার পাত্রের সঙ্গে। ইমরান কোনওদিন জানতেও পারেনি যে তার জন্যে মনে এত আগুন নিয়ে একটি মেয়ে আরেকজনের ঘরের প্রদীপ জ্বালাতে যাচ্ছে। খুব স্বাভাবিক কারণেই বাকি বছরটা ইয়াসমিন এক কলেজে থাকলেও তিনজনের খুব একটা দেখা হয়ে ওঠেনি। হোস্টেলেও আর থাকা হয়ে ওঠেনি ইয়াসমিনের। প্রতিনিয়ত স্বামীসেবা আর ঘরকন্না বাদ দিয়ে নিজের জন্যে বাঁচা প্রায় ভুলেই গিয়েছিল সে ।

গোলকিপার (পর্ব ২১)

Episodic Novel Illustration ধারাবাহিক উপন্যাস

কুর্চি একবার ভাবল ফিরেই যাবে কিনা। তারপর নিজেকে বোঝাল, অনেক ভেবেচিন্তেই তো এখানে এসেছে সে। এখন ফিরেই বা যাবে কেন? একতলায় বসার ঘরে ঢুকে দেখল, খালি গলায় গাইছেন মানিনীদি আর বাবার সঙ্গে বসে একমনে গান শুনছেন নন্দিতাদিদা, সুচিরাপিসি আর সুশোভনজেঠু। কুর্চি যেদিক দিয়ে ঢুকল, তার উল্টো দিকে তাকিয়ে আছেন তাঁরা, মানিনীদির দিকে মুখ করে। চোখ বন্ধ করে গাইছিলেন মানিনী, গান শেষ হতে তিনিই প্রথম দেখতে পেলেন কুর্চিকে। বললেন, “ওই তো কুর্চি এসে গেছে।” সুজাত তাঁর সোফায় পাশের জায়গাটা দেখিয়ে বললেন, “আয়, বোস।”

গোলকিপার (পর্ব ১৯)

Episodic Novel Illustration ধারাবাহিক উপন্যাস

বেলভেডিয়ার নার্সিং হোমে পৌঁছতে পৌঁছতে অবশ্য ভিজিটিং আওয়ার শেষ। তবে ডাক্তার করকে হাসপাতালেই পেয়ে যাওয়ায় অরিত্রর কাছে যেতে কুর্চির অসুবিধে হল না। সকালের ফিজিওথেরাপি সেশন শেষ করে স্নান-টান সেরে ঘরের কোণের সোফায় বসে শরদিন্দু পড়ছিল অরিত্র। কুর্চিকে দেখে খুশি খুশি গলায় বলল, “কদ্দিন পরে এলে। আমাকে তো চিন্তায় ফেলে দিয়েছিলে!” শুনে এত জোরে হেসে উঠল কুর্চি যে নিজেই লজ্জা পেল। অরিত্রর মুখোমুখি সোফাটায় বসতে বসতে বলল, “সরি। দিন নেই রাত নেই, আমি পাঁইপাঁই করে ছুটে বেড়াচ্ছি, আর আমাকে নিয়েই চিন্তা হাসপাতালে বন্দি গোলকিপারের! শুনি, কিসের এত চিন্তা তোমার?”

স্বগত স্বীকার (কবিতা)

Cover photo for Bengali Poetry

অসুখের ইতিহাসে নীরব কান্নার বিবরণ আছে, জেনো।
অভিমান ঘনিষ্ঠ হলে যে ব্যক্তিগত সুখ হয়
তার নীচে জমা থাকে এক-একটা এপিসোডিক বিরতি
নিশ্চিত আশ্রয় থেকে ছদ্ম-সুখে,
নিজস্ব পরিধি ছেড়ে কৌণিকবিন্দুতে-
আজ তবে শূন্যের কথা কেন?

প্রেমদিবসের আগে (গল্প)

Upal Sengupta illustration উপল

ঠান্ডাটা যেন যেতেই চাচ্ছে না! ঠান্ডার নতুন নতুন খবরে ছেলে-বৌমা লাফিয়ে লাফিয়ে উঠছে। নিত‍্যি প্ল্যান ভাঁজছে, কোথায় যাওয়া যায় অন্তত দুটো দিনের জন্য! কোথায় গিয়ে মুঠোয় বরফ নিয়ে লুফোলুফি খেলা যায়! আর ওদের এই লাফালাফির সঙ্গে সঙ্গেই সুমিত্রার বুকের মধ্যে একটা বল লাফাতে থাকে! মানুষটা কী কষ্টটাই না পায় ঠান্ডায়! একটার ওপর আর একটা গরম জামা চড়িয়েও যেন সে দুর্বিপাক ঠেকানো যায় না!

ফাঁদ পাতা ভুবনে!

lovers face to face মুখোমুখি প্রেমিক প্রেমিকা

আত্মসম্ভ্রমে খানিক সাবধানী হয়ে, অতি সন্তর্পণে চাক্ষুষ সবটা পরিক্রমা করে শেষে গিয়ে বুঝলুম, সে এখনও আসেনি। কথা হচ্ছে, এই কফি কর্নারগুলোয় বিস্কুটের নাম কুকি, আর তার দাম আমার এক প্যাকেট সিগারেটের সমান। তাছাড়া খালিপিলি বসে থাকাও ভদ্র জায়গায় ভালো দেখায় না, কিছু না কিছু নিতেই হয়। সুতরাং সে না-আসা অবধি ঘুরে-ঘুরে অন্যান্য দোকানপাট দেখাই স্বাস্থ্যকর। এই মনে করতে-করতেই ফোন বাজল। যে হাত নেড়েছিল, সে আমায় দেখেই হাত নেড়েছিল, অতীত অভিজ্ঞতায় হীনমন্যতা জন্মেছে মনে গভীরে, তাই বিশ্বাস করতে পারিনি, ও-ই সে-ই।

দিব হৃদয়দোলায় দোলা!

বসন্ত শুভ্রনীল spring illustration

আপনি কি সেই চৌকিদার যে কবির দরজার বাইরে সারারাত পাহারায় থাকেন আর ভোরবেলা ঘুমচোখে প্রথম যাকে দেখেই কবি অবাক – এ যে দেখি বসন্ত জাগ্রত দ্বারে! ওকে নিমপাতার রস দাও মাটির ভাঁড়ে।