গ্রাম-শহরের রূপকথা

বিমল রায়ের ছবিতে যখন ভূমিচ্যুত কোনও গ্রাম্য কৃষক, হাতে টানা রিকশা চালায়, তখন তা আসমুদ্র হিমাচলের আকাশে বিদ্য়ুৎবহ্নি! সামান্য একটা হাতে টানা রিকশা– যা এক কালে ভারত, চিন, দক্ষিণ এশিয়ার নানা শহরে স্থানীয় পরিবহণের অঙ্গ ছিল, তা হয়ে ওঠে গ্রাম-শহরের অন্তর্বর্তী রূপক।
অপূর্ব এক ডিঙি

রিস্কাওলা কালা। খালি পথনির্দেশটুকু কানে যায় তার। ঈশ্বর তাকে বিশেষ ক্ষমতা দিয়ে পাঠিয়েছেন আজব এ শহরে শৌখিন বেতো বাবুবিবিদের আয়েশ আর আদিখ্যেতার ভার বইতে, সারভাইভালের তরে। তুম কালা তো জগত ভালা, কী?
আমি যে রিসকাওয়ালা

ব্যস্তসমস্ত রাস্তার মধ্যে দিয়ে কাটিয়ে কাটিয়ে হেলেদুলে যেতে আমার ভালই লাগে। ছাপড়া আর মুঙ্গের জেলার বহু ভূমিহীন কৃষকের রিকশায় আমার ছোটবেলা কেটেছে। যে ছোট বেলায় আনন্দ মিশে আছে, যে ছোট-বড় বেলায় ওদের কষ্ট মিশে আছে, যে বড় বেলায় ওদের অনুপস্থিতির যন্ত্রণা মিশে আছে। থাকবেও চির দিন।
টানা রিকশার দাস্তান

সরকারি হিসাবে ২০০৮ সালে কলকাতায় ৫৯৪৫টি হাতে-টানা রিক্শা ছিল। কলকাতায় প্রায় ২৫০ জন সর্দার। এক একজন সর্দারের অধীনে কুড়ি জন করে রিক্শাচালক থাকেন। রিক্শাচালকদের বাধ্যতামূলক ভাবে সপ্তাহে ২৮০ টাকা বা দৈনিক ৪০ টাকা সর্দারের হাতে জমা দিতে হয়। সর্দাররা প্রতি সপ্তাহে মালিককে প্রাপ্য টাকা বুঝিয়ে দেন। এক একজন মালিকের গড়ে ১০ থেকে ১৫টি রিক্শা চলে। রিক্শা চালকদের অধিকাংশেরই বাড়ি বিহার, ঝাড়খন্ডে। অন্যান্য প্রদেশ ও বাঙালি শতকরা ২০ ভাগ।