উপন্যাস: আকাশপ্রদীপ: শেষ পর্ব

Novel Akashpradip Part-24

পশমিনা শালটার সঙ্গে সিমোন আর একটা জিনিস পাঠিয়েছে সীমন্তিনীর জন্য৷ একটা ব্ল্যাক অ্যান্ড হোয়াইট ছবি৷ ছবিতে এক সুখী দম্পতির মাঝখানে একটি ছোট্ট মেয়ে মায়ের কোল ঘেঁষে বসে৷ রণো সন্তর্পণে ওর সঙ্গের একটা ফোল্ডার থেকে বার করে এনেছিল ছবিটা৷ সীমন্তিনীর হাতে দিয়ে দেখেছিল কাঁপছে মাম্মার হাতখানা৷ ছবির বাচ্চা মেয়েটা হাসি মাখা মুখে ঢলে পড়েছে মা’র কোলে৷ মা আর বাবা দুজনেই হাসিমুখে তাকিয়ে রয়েছে মেয়েটার দিকে।

উপন্যাস: আকাশপ্রদীপ: পর্ব ২৩

novel Akashpradip part 23

পনেরো-ষোলো বছরের রণো যেন একজন ব্ল্যাক ছেলে৷ আত্মরক্ষার জন্য কী একটা ঘোরতর অন্যায় করেছে সে৷ পুলিশ এসে জেরা করছে রণোকে৷ রণো অসহায়ভাবে খুঁজছে ওর বাবাইকে৷ পুলিশ কোনও কথা না শুনে পিস্তল বার করে গুলি করছে রণোর কানের কাছে৷ সাইলেন্সার লাগানো পিস্তল৷ কোনও আওয়াজ হচ্ছে না৷ শুধু নির্বাক ছবির মতো রণো পড়ে যাচ্ছে৷ সীমন্তিনী ঘুমের মধ্যে গলা ফাটিয়ে চিৎকার করছে— ‘রণো! রণো! যাস্‌ না! তুই থাক্‌৷ তুই আমার কাছে থাক৷’ চারদিক অন্ধকার৷

উপন্যাস: আকাশপ্রদীপ: পর্ব ২২

Novel Akashpradip part 22

সুন্দরী হিসেবে দিদির খ্যাতি ছিল৷ কুড়ি বছর বয়সে দিদির ছবি ‘ফেমিনা’তে কভার হয়েছিল৷ দিদির প্রথম বিয়ে হয় ডাক্তার এ সি রায় বা অম্বিকাচরণ রায়ের সঙ্গে, কলকাতা সার্কিটে আপ অ্যান্ড কামিং ডাক্তার হিসেবে যার তখন প্রচুর খ্যাতি আর সম্মান৷ বিয়ের পরের বছরই সীমন্তিনীর জন্ম৷ দিদির তখন সবে তেইশ আর আমার আঠেরো৷ সীমন্তিনীর জন্মের বছরখানেক পরেই কলকাতায় আসেন ইংল্যান্ডের এক নামকরা থিয়েটার পার্সোনালিটি ডেভিড ব্রুক৷ ইনি ডক্টর রায়ের পূর্বপরিচিত৷ কলকাতায় শেক্সপিয়রের থিয়েটার প্রোডাকশনের কাজে ইনি কয়েকজন অ্যাসিস্ট্যান্ট খুঁজছিলেন৷ আমার দিদি রাধিকা ওঁকে সাহায্য করার কাজে যোগ দেয় এবং অচিরেই দুজনের মধ্যে তুমুল প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে৷

উপন্যাস: আকাশপ্রদীপ: পর্ব ১৭

Novel Akashpradip part-17

তখন আই.বি. ডিপার্টমেন্ট আমাদের মতো বেশ কিছু ছেলেমেয়েকে ব্ল্যাকলিস্ট করেছে, নকশাল মুভমেন্টে মদত দিচ্ছি বলে৷ পুলিশের হাত থেকে বাঁচার জন্য অনেকেই ওয়েন্ট অ্যাব্রড৷ আমিও তাদের মধ্যে ছিলাম৷ আমার বাবার টাকারও অভাব ছিল না, কানেকশনেরও না৷ পেপার্স রেডি করতে বাবার সাত দিনও লাগেনি৷

উপন্যাস: আকাশপ্রদীপ: পর্ব ১৬

Novel Akashpradip part 16

বৃদ্ধ মানুষটি কিছু যেন বলতে চাইছিলেন বাবার কাছে৷ দাদু তাঁর একমাত্র জীবিত ছেলের কাছে ওই অব্যক্ত চাউনি দিয়ে কী বলতে চেয়েছিলেন কে জানে? পরে ঐ দৃষ্টি মনের মধ্যে হন্ট করেছে অনেকবার৷ তার চেয়েও বেশি ওর মনে হচ্ছিল বাবার কথা৷ জ্যোতির্ময়ের দুচোখ বেয়ে জল পড়ছিল৷ আর তাঁর বাবার দুটি হাত নিজের হাতের মধ্যে জড়িয়ে ধরেছিলেন তিনি৷
…অপরাজিতা দাশগুপ্তের উপন্যাস আকাশপ্রদীপ, পর্ব ১৬

উপন্যাস: আকাশপ্রদীপ: পর্ব ১৫

Novel Akashpradip part 15

প্রথম যুগে গণনাট্য আন্দোলনে অনেক রথী-মহারথী যোগ দেন৷ বম্বের পৃথ্বীরাজ কাপুর, বলরাজ সাহনি, খাজা আহমেদ আব্বাস, বাংলার বিজন ভট্টাচার্য, ঋত্বিক ঘটক, উৎপল দত্ত, সলিল চৌধুরী, জ্যোতিরিন্দ্র মৈত্র সবাই৷ এই দলের বিজন ভট্টাচার্য ১৯৪৪-এ ‘নবান্ন’ নামে নাটক লেখেন যা পরে বহুরূপীতে শম্ভু মিত্র, তৃপ্তি মিত্র অভিনয় করেন৷
…অপরাজিতা দাশগুপ্তের উপন্যাস আকাশপ্রদীপ, ১৫তম কিস্তি

উপন্যাস: আকাশপ্রদীপ: পর্ব ১৪

Old kolkata Akashpradip 14

বাবা ঈশ্বরবিশ্বাসী ছিলেন বটে, কিন্তু এই অনিশ্চয়তার সময়ে তিনি দিশাহারা বোধ করিতেন৷ ছোটকু-ফিরিলে তর্ক-বিতর্ক করিয়া তাহাকে বিপথ হইতে নিবৃত্ত করিবার চেষ্টা করিতেন৷ মনে পড়ে একদিন অফিস হইতে বাড়ি আসিয়া দেখি ছোটকুর সঙ্গে বাবার তুমুল বাদানুবাদ হইতেছে৷