আমার নাম ইভান। আমার ছবি আঁকতে খুব ভাল লাগে। দেখ আমি কেমন দুটো পাখির ছবি এঁকেছি। একটা মা পাখি। একটা বেবি পাখি। দু’জনেই গাছের ডালে বসে আছে। জানি তোমরা সবাই কী ভাবছ! পাখিদুটোর বাসা কোথায়? আমি বাসাটা আঁকিনি, তাই দেখা যাচ্ছে না। উঁচু ডালে আছে ওদের বাসা। ওরা কিন্তু খুব দারুণ বাসা বানাতে পারে।

তোমরা বাবুই পাখি দেখেছ? আমি টিভিতে দেখেছি। বাবুই পাখি এত্ত সুন্দর আর শক্তপোক্ত বাসা বানাতে পারে যে কেউ ওদের বাসা নষ্ট করতে পারে না। আর বাসাটা দেখতে খুব সুন্দর হয়।

কিন্তু গাছে তো অনেক পাখি থাকে। জানো আমাদের ন্যাশনাল বার্ড কী? ময়ূর। ইংরিজিতে বলে পিকক। আমার স্কুলের ম্যাম আমাকে একটা ক্রাফটে পিকক বানাতে দিয়েছিল। আমি বাবার সঙ্গে সেটা বানিয়েছিলাম। আসলে ওটা তো আমার সবচেয়ে প্রিয় পাখি। কিন্তু কলকাতায় তো পিকক দেখা যায় না গাছে। খালি চিড়িয়াখানায় গেলে তবেই দেখতে পাবে। এখানে আমাদের বাড়ির পাশে কাক, চড়াই, টুনটুনি আর শালিক পাখি আছে।

কিন্তু তোমাদের কি পাখিকে খাঁচায় রেখে পুষতে ইচ্ছে করে? আমার করে না। খাঁচায় ওরা কী করে উড়বে? ডানাই তো নাড়তে পারবে না। এক জায়গায় বসে থাকতে কি কারও ভাল লাগে? এই যেমন এখন করোনা এসে আমাদের সবাইকে বাড়ির মধ্যে বন্ধ করে দিয়েছে। স্কুলে যেতে দিচ্ছে না, পার্কে যেতে দিচ্ছে না, ড্রইং ক্লাসে যেতে দিচ্ছে না। বন্দি করে রেখেছে। এটা কি আমাদের ভাল লাগছে? তাহলে পাখির কী করে খাঁচায় থাকতে ভাল লাগবে বল?

*লেখকের বক্তব্যের ভিত্তিতে অনুলিখিত। 

ইভান দোলনা ডে স্কুলে পড়ে। বয়স ছয়। এবার ওয়ানে ওঠার পালা তার। লাফালাফি, দুষ্টুমি, চেঁচামিচি ইভানের না-পসন্দ। চুপচাপ নিজের মনে থাকতেই ভালবাসে। তাই বলে পড়াশুনো করতে মোটেই পছন্দ করে না। সারাদিন রেলগাড়ি, ট্রাফিক সিগনাল, গেটম্য়ান নিয়ে কল্পনার রাজ্যে ঘোরাঘুরিই ইভানের সবচেয়ে প্রিয়। ভালবাসে ছবি আঁকতে। আর সবার কাছে জানতে চায়, স্যুইচ দিলেই আলো-পাখা কী করে জ্বলে ওঠে?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *