লিপিকুশলতা চোখে-চোখে
নত শূন্যে যে বহমান
জল, তাকিয়েছ অপলকে
লতা-গুল্মের সন্ধান!

যদি অস্ফূট তার স্বরে
স্বরবর্ষণ ছুটে আসে
যদি বুকে হাঁটা বৎসরে
শুধু করোটির ঘাসে-ঘাসে

খিল জেনেছ বিহঙ্গমা
ভয় কেঁপেছে অতর্কিতে
ছেদ দাঁড় ভেঙে পড়া কমা
মিল পথে-পথে খুঁজে নিতে

প্রতিবিম্বের হিরেমোতি
ঢাকা মলাটের মাস্তুলে
দিন সন্তানসন্ততি
জল পাষাণের ক্ষত তুলে

এই আনতের সংসারে
দল কড়া নাড়ে দরজায়
ফুল মরণের অধিকারে
যেন খোঁজটুকু নিতে যায়…

যেন সন্ধের ধুলোবালি
সাথে উড়ে-উড়ে আসা ছাই
মেঘ ঢেকে রাখে চিরকালই
দূর লহমাকে লহমায়

যত অধিগত তার তারা
লিপিকুশলতা চোখে চোখে
নত সমুদ্রবন্ধ্যারা
পলি মলিন সমস্তকে

পদচারণার ধীর লয়ে
সেই দুয়ার অবধি আসা
খোঁজ অথৈ সমন্বয়ে
রোজ সঙ্গীতে ঘেরা বাসা

আনুষঙ্গিক আর যত
থাকে, পড়ে থাকে সংগ্রহে
নত শূন্যে যে অবিরত
ঢেউ বয়ে যায় গ্রহে গ্রহে

কেউ তুলে নেবে তাকে হাতে
রাশিভস্মের হিমবাহ
নাম লিখে নিলে সাক্ষাতে
নিচু গোধূলির গ্রামে দাহ

কিছু বলার ছিল কি শ্বাসে
তার কপালে শুয়েছে শিখা
মেঘ সন্ত্রাসে সন্ত্রাসে
মেঘ বলে গেল ক্রমনিকা

টান — সে আহিরভৈরবে
ভাঙা গলুই, স্তব্ধ, চাপা
রাঙা সাধনার শবে শবে
বাঁকা বিষাদের লেখা ছাপা

সেই অসংশোধনে জোড়ে
সীমা উল্লাসে পাওয়া ক্ষেত
কবি চলে যায় সাতভোরে
শুধু পড়ে থাকে সংকেত

ধূ ধূ বালির সে বহুস্বরে
তীর টেনেছে অসংখ্যকে
রোদ পড়ে আছে অক্ষরে
লিপিকুশলতা চোখে-চোখে!

সুমন ঘোষের বসবাস বীরভূম জেলার বাতিকার গ্রামে। পেশা শিক্ষকতা। যদিও কবিতা ও সাহিত্য নিয়েই তাঁর অবিরাম উদাসীন পথ চলা। সপ্তর্ষি থেকে প্রকাশিত হয়েছে তাঁর কাব্যগ্রন্থ বারোয়ারি কমিটির থিয়েটার। নিয়মিত লেখেন দেশ, কৃত্তিবাস, উনিশ কুড়ি, কবিসম্মেলন, এখন শান্তিনিকেতন-সহ বিভিন্ন পত্রপত্রিকা ও পোর্টালে। ভালবাসেন নাটক, গান, চিঠি ও কলম। তিনি জানেন জীবন অরূপে গলে যাবে তথাপি তিনি আজন্ম রোমান্টিক ও স্বপ্নচারী।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *