যে তালতলা মাঠে বালকের প্রথম স্কুলবেলা বা এবিসিডি-বেলা, ঘাসে চাটাই পেতে কোলে স্লেট নিয়ে নীলদিদিমণিদের কাছে ‘এ ফর অ্যাপেল’ শেখা, ‘মে গাড ব্লেস ইউ’ বললে ভোরের বাতাসে ভাসে লালসবুজ লজেন্স আর কিসমিস-বিস্কুট বা বড়ুয়া কেকের গন্ধ, হরেন মুখার্জির বাড়ির জানালার শিকে ঝোলে ব্ল্যাকবোর্ড, সেই মাঠে আপনমনে হাঁটতেন বঙ্গবালা দেবী৷ বর্ষায় মাঠ ডুবে গেলে বকের দলের পাশাপাশি হাঁটতেন জল ভেঙে৷ কী শীত বা বর্ষা বা ঠা ঠা রোদ, তিনি একা একা ঘুরতেন ওই জায়গাটুকুর মধ্যে৷ হাঁটতেন আর কী যেন বলতেন বিড়বিড় করে, কখনও হাসতেন, কখনও দূরের দিকে আঙুল তুলে কিছু দেখাতেন৷ কী বলতেন তা শুনতে চায়নি নীলদিদিমণিদের স্কুলে-আসা বালকের দল, ভলিবল বা ক্রিকেট খেলতে-আসা তুলনামূলক বড়োরা৷ তারা এটুকুই জেনেছে ‘ইনি বঙ্গবালা’ এবং আর পাঁচজনের মতো নন৷ তিনি বুঝতে পারেন না এখন সকাল কি বিকেল, বুঝতে পারেন না ফাঁকামাঠ কি ভিড়েরমাঠ৷ কেউ ‘দিদিমা’ বা কেউ ‘মাসিমা’ ডেকে সরিয়ে দিয়েছে খেলার মাঠের ভেতর ঢুকে-পড়া তাঁকে৷ তিনি শুধু হাসতেন যে সরিয়ে দিয়েছে তার দিকে তাকিয়ে৷
পরনে তাঁতের শাড়ি আর লম্বা হাতার জামা পরা ছিপছিপে গড়নের বঙ্গবালা সম্পর্কে কেউ বালককে বলেছিল, ইনি বাংলার রাজ্যপাল হরেন মুখার্জির স্ত্রী৷ ব্যস্ ওইটুকু৷ সে বাইরে থেকে দেখেছে তাঁর বাড়ি: পাঁচ-ছয় ধাপ সিঁড়ি ভেঙে চাতাল, হেলান-দিয়ে বসবার বেদি দু-পাশে, বড়ো বড়ো জানালা, বড়োসড়ো ছাদ৷ বাড়িতে অনেক লোকজন৷ বাইরের দেয়ালে রং পড়েনি অনেককাল৷ সে শুনেছে, হরেন মুখার্জির সময় থেকে কয়েকটি ক্রিশ্চিয়ান পরিবার এখানে থাকে৷ এরা আশ্রিত, গরিব৷ বাড়ির পেছন দিকে বাগান, নানারকম গাছে গাছে ছায়া হয়ে আছে৷ এখানে জলের ড্রাম থাকত, ঢাকনার ওপর টিনের মগ৷ নীলদিমিণিদের দেওয়া লজেন্স-বিস্কুট বা কেক খাবার পর বা তেষ্টা পেলে জল খেতে এই বাগানে ঢুকেছে বালক৷

বালকবেলায় বেশি জানবার দরকার হয় না৷ খেলায় খেলায় চমৎকার কেটে যায় দিন৷ জেমস, চার্লি, ইমানুল, নওশাদ, সুবল, টুটু, নিলুদা, বেচুদা, রাজুদা, কচিদার সঙ্গে ভলি বা ক্রিকেটে সময় কী দারুণ কাটে! বঙ্গবালা মারা যান ষাট দশকের মাঝামাঝি৷ তখন নওশাদ-ইমানুল-কচিদারা আর এ পাড়ায় থাকে না৷ চলে গেছে ফুলবাগানে৷ চৌষট্টির দাঙ্গার পর৷ একটা মুসলমান বস্তি ছাই হয়ে যায় তালতলা মাঠের গায়ে৷ কেন দাঙ্গা হল, কেন ইমানুলদের ঘর ছাই হল, জানা নেই৷ সেই বস্তির জামরুল গাছ বড়ো প্রিয় ছিল বালকের৷ ডাল ভেঙে খোলার চালে পড়ে একবার কী হেনস্থা! পোড়া ঘর গুঁড়িয়ে জমি হল৷ জমির মালিক হলেন ধবধবে খদ্দরের প্যাকেজে গান্ধীবাদী শিবদা৷ গাছপালা লাগিয়ে তিনি আশ্রম বানালেন৷ কীভাবে এইসব হয় বালক জানে না৷
বঙ্গবালা যখন মারা গেলেন, মিশ্র বসতি তখন পুরোটাই পালটে গেছে৷ ঘরের দরজার বাইরে খাটিয়ায় নওশাদের বাবাকে ফেজ পরে উর্দু কাগজ পড়তে আর দেখা যায় না৷ জেমস, চার্লিরা আছে, তবে আগের মতো নেই৷ আগের মতো নেই ট্যাক্সিচালক স্যামদাদা (নাম ছিল হয়তো স্যামুয়েল)৷ রঙিন কাগজের শেকল ঝোলানো ঘরে রাতের দিকে নেশাগ্রস্ত হয়ে গিটার বাজিয়ে গান গায়, নাচে, একা একা তখনও৷ কিন্তু এরা অন্য কোথাও চলে যেতে চাইছে৷ পার্ক সার্কাসে বা বেকবাগানে বা গড়ফায়৷ বইয়ে আছে, এই পাড়া বহুকাল আগে থেকে মুসলমান ও ক্রিশ্চিয়ান-প্রধান৷ প্রমাণও আছে, পাড়ার মাঝখানে সামান্য ব্যবধানে মসজিদ আর গির্জা৷ মন্দির তৈরি হয়েছে অনেক পরে, দেশভাগে উৎখাত ‘বাঙালরা’ এখানে আসার পরে৷ চৌষট্টির দাঙ্গায় ছবিটা পালটে গেল৷ খেলার দল ভেঙে গেল৷ খেলার আবহ নষ্ট হয়ে গেল৷ নীলদিদিমণিদের স্কুল আর বসে না৷ বঙ্গবালা একা একা হাঁটেন মাঠ জুড়ে৷ তাঁকে ডেকে নিয়ে যায় বাড়ির কেউ৷

বালক বড়ো হলে বিশদে জানবে কে ছিলেন বঙ্গবালা, কে ছিলেন হরেন মুখার্জি, কেমন ছিলেন তাঁরা, কেন তাঁরা এই বস্তিতে ছিলেন, তালতলা মাঠ ও তার বিস্তৃত চারপাশের বসতি কেমন ছিল৷ নিজের পাড়ার খবর জানবে সে বই থেকে৷ হরেন মুখার্জি মানে হরেন্দ্রকুমার মুখোপাধ্যায়৷ তাঁর বাড়ি বলে যা পরিচিত, সেটা বানিয়েছিলেন লালচাঁদ মুখোপাধ্যায়, হরেন্দ্রকুমারের বাবা৷ ১৮৮০ সালের কাছাকাছি কোনো এক সময়৷ লালচাঁদরা নদিয়ার মানুষ৷ সেখান থেকে প্রথমে হুগলির শ্রীরামপুর, পরে হাওড়া৷ হাওড়া থেকে লালচাঁদ আসেন শেয়ালদার কাছে ২২ নম্বর বৈঠকখানা সেকেন্ড লেনে৷ এখানেই ১৮৭৭-এর ৩ অক্টোবর হরেন্দ্রকুমারের জন্ম৷ দীনদরিদ্র লালচাঁদ যখন তাঁর জ্ঞানবুদ্ধির মাধ্যমে মাসে ১০০ টাকা উপার্জনের ব্যবস্থা করতে পারলেন, এন্টালির ডিহি শ্রীরামপুরে এই বাড়ি তৈরি করেন৷ তখন এই এলাকাকে তালতলা বলা হত কিনা বা এখনও বলা হয় কিনা জানা নেই, তবে পঞ্চাশ-ষাট-সত্তর দশকে তালতলাই বলত৷ লালচাঁদ যখন জমি কিনে বাড়ি তৈরি করেন, তখন সেখানকার বাসিন্দারা বেশিরভাগ মুসলমান আর ক্রিশ্চিয়ান৷ নিম্নমধ্যবিত্ত৷
পাড়াটা অনুন্নত, ঠিকমতো গড়ে ওঠেনি৷ ঘিঞ্জি বস্তি৷ কাঁচা রাস্তা৷ আলোর ব্যবস্থা নেই৷ এখানে থেকেই স্কুলে পড়েছেন হরেন্দ্রকুমার৷ পড়েছেন রিপন (পরে সুরেন্দ্রনাথ) কলেজে৷ রিপন থেকে গেছেন প্রেসিডেন্সিতে৷ যানবাহনের সুবিধা ছিল না৷ ডিহি শ্রীরামপুর থেকে হেঁটে শেয়ালদা ও কলেজ স্ট্রিটে যাতায়াত করেছেন গোটা ছাত্রজীবন৷ ১৮৯৩ সালে প্রবেশিকা, ১৮৯৭-এ বিএ৷ বিএ পড়বার সময় মা প্রসন্নময়ীর জীবনাবসান হয়৷ ১৮৯৮-এ এমএ, প্রেসিডেন্সি থেকে৷ প্রথম শ্রেণিতে প্রথম৷ রেজাল্ট বেরয় যখন, হরেন্দ্রকুমার কলেজ স্কোয়ারে ঘুরছিলেন৷ এক বন্ধুর কাছে রেজাল্ট শুনে তিনি অবাক৷ যদুনাথ সরকার ও পারসিভালের প্রিয় ছাত্র ভাবতে পারেননি, এরকম রেজাল্ট করবেন৷

ওই বছরই শ্রীরামপুর মিশনের গির্জায় চিন্ময়ী দেবীর সঙ্গে বিয়ে হয় হরেন্দ্রকুমারের৷ এই গির্জায় ধর্মান্তরিত হয়েছিলেন তাঁর ঠাকুর্দা কুলীন ব্রাহ্মণ ভৈরবচন্দ্র৷ প্রায় পঁচিশ বছরের দাম্পত্য হঠাৎই থমকে যায় চিন্ময়ীর মৃত্যুতে৷ হরেন্দ্রকুমার আর বিয়ে করতে চাননি৷ বুড়ো বাবার দাবির কাছে নতি স্বীকার করে ১৯২৩ সালে বিয়ে করেন বঙ্গবালাকে৷ বঙ্গবালা লালচাঁদেরই পছন্দ৷ সেই সময় পশ্চিমবঙ্গ শিক্ষাবিভাগে কাজ করতেন৷ ১৯২৭ সালে ৯৯ বছর বয়সে এই ডিহি শ্রীরামপুরের বাড়িতেই জীবনাবসান হয় লালচাঁদের৷ তাঁর কথা পাড়ার কেউ কখনও বলেছে এমন মনে পড়ে না সেদিনের বালকের৷ বালক একথাও শোনেনি কারও কাছে যে এই বাড়িতে শিক্ষাবিদ হরেন্দ্রকুমারের বিরাট গ্রন্থাগার ছিল৷ সে জানত না হরেন্দ্রকুমার সরল জীবন যাপনে বিশ্বাসী জ্ঞানী ও আদর্শবাদী মানুষ ছিলেন৷ এমএ পাস করা ও চিন্ময়ী দেবীর সঙ্গে বিয়ের পরই হরেন্দ্রকুমার স্কুলশিক্ষকের পেশায় যুক্ত হন৷ এরপর কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করেছেন ১৯৪০ সাল পর্যন্ত৷ তবে বরাবরই তিনি নিজেকে ‘ইস্কুলমাস্টার’ ভাবতেন৷ একজন স্কুলশিক্ষকের অত্যন্ত সরল ও সাদাসিধে জীবন ছিল তাঁর আদর্শ৷ বাড়িতে পরতেন ধুতি বা লুঙ্গি আর ফতুয়া৷ যখন রাজভবনে তিনি, তখনও একই পোশাক৷ এই পোশাকের জন্য কাজের লোক বা দারোয়ানরা অনেক সময় তাঁকে রাজ্যপাল বলে চিনতে পারেনি৷ মনে করেছে তাদের মতো একজন৷

এই সরলতা নিয়ে রাজভবনে অধঃস্তনরা আড়ালে হাসাহাসি করত বলে শোনা যায়৷ ডিহি শ্রীরামপুরের বাড়িতে বিলাসিতার কোনও চিহ্ন ছিল না৷ স্বামী-স্ত্রী দুজনই একই ভাবনার শরিক৷ বাড়ির ছাদে কলের ব্যবস্থা করতে চেয়েছিলেন হরেন্দ্রকুমার৷ বঙ্গবালা আপত্তি করেন৷ নীচের কল থেকে বালতি ভরে জল তোলা স্বাস্থ্যকর বলে মনে করেছেন তিনি৷ এঁরা রাজভবনে যখন গেলেন, ডিহি শ্রীরামপুরের জীবনযাপনটা ছেড়ে যাননি৷ ১৯৫১ সালের ২৫ অক্টোবর পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল হলেন ড. হরেন্দ্রকুমার মুখোপাধ্যায়৷ ডিহি শ্রীরামপুরের বাড়িতে বসেই খবরটা পান৷ সাংবাদিকরা আসেন৷ তাঁদের সঙ্গে কথা বলেন৷ মুখ্যমন্ত্রী বিধানচন্দ্র রায় এই মনোনয়নে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, হরেনবাবু একজন খাঁটি খ্রিস্টান এবং খাঁটি শিক্ষক৷ একজন শিক্ষককে বাংলার রাজ্যপালের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, এটা বলবার মতো ঘটনা৷ ১৯৫৬ সালের ৭ আগস্ট প্রয়াত হন রাজ্যপাল হরেন্দ্রকুমার৷ বঙ্গবালা ফিরে আসেন ডিহি শ্রীরামপুরে৷
ফিরে এলেন সেই বাড়িতে, যেখানে বিরাট গ্রন্থাগার৷ স্বামীর স্মৃতিবিজড়িত পরিবেশ৷ হরেন্দ্রকুমার তাঁর স্থাবর অস্থাবর সম্পত্তি-সহ বইপত্রও দান করে গেছেন উইলে৷ হয়তো কিছুকাল সেই পরিবেশ পেয়েছিলেন বঙ্গবালা৷ তাঁর জীবদ্দশায় গ্রন্থাগার চলে যায় কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে৷ এরপরই কি ধীরে ধীরে শূন্য হয়ে যায় বাড়ি? নিঃসঙ্গ হয়ে পড়েন বঙ্গবালা? টাকারয়সার অভাব হয়তো তেমন ছিল না৷ সাদামাটা জীবনে কতই বা ব্যয়! রাজভবনের আনুষ্ঠানিকতার চাপ থেকে মুক্তি পেয়েছেন বটে, কিন্তু বড্ড একা হয়ে গিয়েছেন৷ এই কারণেই কি মানসিক ভারসাম্য হারান? তালতলা মাঠে একা একা হাঁটছেন তিনি৷ বয়স আর অযত্নে কিছুটা মলিন মুখ৷ হাসি শিশুর মতো৷ দৃষ্টি বড়ো আপনজনের৷ বর্ষায় ডুবে গেছে মাঠ৷ জল ভেঙে হাঁটছেন বকের সঙ্গে৷ থেলার ভিড় থেকে তাঁকে সরিয়ে দেয় কেউ৷ বাড়ি থেকে এসে ডেকে নিয়ে যায় কোনও প্রিয়জন৷ সেদিনের বালক দেখতে পায়৷
সেই পাড়ার খোঁজে গিয়েছিল সে কয়েক মাস আগে৷ তালগাছগুলো আর নেই৷ আশেপাশের বস্তি প্রোমোটিংয়ের সুবাদে উঁচু উঁচু বাড়ি৷ তালতলা মাঠে ইমারতি মাল পড়ে আছে এখানে সেখানে৷ প্রোমোটিংয়ে যাবে বলে অপেক্ষা করছে বাকি একতলা দোতলা৷ মাঠটাও হয়তো যাবে৷ বাইক চলছে মাঠের ওপর দিয়ে৷ কেমন যেন শুকনো রুগ্ণ চারদিক৷ বাতাসে ভয়ের কাঁপন৷ ধ্বংসস্তূপ হবার জন্য জরাগ্রস্ত দেওয়াল নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে লালচাঁদ মুখার্জি এবং হরেন মুখার্জির বাড়ি৷ সেই বাড়ির এক যুবক বাসিন্দা সন্দেহের চোখে দেখে কোনও প্রশ্নের জবাব না দিয়ে শুধু বলে গেলেন, তিনি রাষ্ট্রপতি ছিলেন৷
সব ছবি লেখকের তোলা
*পরবর্তী পর্ব প্রকাশিত হবে ২৬ জুলাই ২০২২
মধুময়ের জন্ম ১৯৫২ সালে পূর্ববঙ্গের ময়মনসিংহে, কিশোরগঞ্জে। লেখাপড়া কলকাতায়। শৈশব-যৌবন কেটেছে স্টেশনে, ক্যাম্পে, বস্তিতে। গল্প লিখে লেখালেখি শুরু। পরে উপন্যাস। বই আখ্যান পঞ্চাশ, আলিঙ্গন দাও রানি, রূপকাঠের নৌকা। অনুসন্ধানমূলক কাজে আগ্রহী। পঞ্চাশের মন্বন্তর, দাঙ্গা-দেশভাগ, নকশালবাড়ি আন্দোলন নিয়ে কাজ করেছেন। কেয়া চক্রবর্তী, গণেশ পাইন তাঁর প্রিয় সম্পাদনা। প্রতিমা বড়ুয়াকে নিয়ে গ্রন্থের কাজ করছেন চার বছর। মূলত পাঠক ও শ্রোতা।
খুব সুন্দর লেখা। কিছুই প্রায় জানিনা। খুব ভালো লাগলো পড়ে। ধন্যবাদ জানাই 🙏🏾
আজকের বাস্তবতায় দাঁড়িয়ে হরেন্দ্রকুমার মুখার্জির আদর্শ ও সাধাসিধে যাপনের কথা কেমন যেন রূপকথার মতো অবিশ্বাস্য শোনায়! আর হাহাকার জাগে মনে, এত তাড়াতাড়ি সব কেন শেষ হয়ে গেল!