জল সংকট নিয়ে নাজেহাল গোটা দেশ| অনুমান করা হচ্ছে ২০৩০ সালে জলের চাহিদা দ্বিগুণ হয়ে যাবে কিন্তু সেই পরিমাণে জল সরবরাহ হবে না| ইতিমধ্যেই সরকার এবং সাধারণ মানুষ নড়েচড়ে বসেছেন| বিভিন্ন উপায় জল সংরক্ষণের চেষ্টা করে যাচ্ছেন তারা|  অনেকেই ইতিমধ্যে ‘রেন ওয়াটার হার্ভেস্টিং’-এর দিকে মন দিয়েছেন| বৃষ্টির জল সংরক্ষিত রেখে পরে কার্জকর ভাবে তাকে ব্যবহার করাকেই বলা হয় ‘রেন ওয়াটার হার্ভেস্টিং’ বা বৃষ্টির জল সংরক্ষণ|

বৃষ্টির জল সংরক্ষণের সুবিধা অনেক| ভূগর্ভস্থ জল বা কর্পোরেশনের সরবারহ করা জল ছাড়াও এটি হল জলের আর একটি উৎস| যেখানে অন্য কোনও ধরনের জলের উৎস নেই সেখানে নানা কাজে এই জল ব্যবহার করা যায়| এ ছাড়াও এই জলে কোনও রাসায়নিক পদার্থ নেই তাই শরীরের জন্যেও উপকারী|

বেঙ্গালুরুর দ্যা ট্রায়ো ওয়ার্ল্ড অ্যাকাডেমি স্কুল এই ব্যাপারে নজির তৈরি করেছে| ছাত্রদের বৃষ্টির জল ধরে রাখার ব্যাপারে উৎসাহী করতে বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে স্কুল | এখানেই শেষ নয়‚ জল কতটা মূল্যবান এবং তা সংরক্ষণ করা কতটা জরুরি সে ব্যাপারেও ওয়াকিবহল করা হয় ছাত্রদের|

২০১৭ সালেই স্কুলেরই ছাদে এবং জমিতে ১২টা বড় বড় চৌবাচ্চা তৈরি করা হয়েছে | তাতেই বৃষ্টির জল ধরে রাখা হয় | এক একটা চৌবাচ্চা দশ হাজার লিটার জল ধরতে পারে | গাছে জল দেওয়ার জন্য ব্যাবহৃত হয় এই সংরক্ষিত জল| এ ছাড়াও জল পরিশুদ্ধ করে অন্য কাজেও লাগানো হয় | 

স্কুলের ম্যানেজিং ডিরেক্টার এই প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে বলেন ‘আমরা প্রকৃতির থেকে শুধুমাত্র নিতে শিখেছি দিতে শিখিনি| স্কুলের পড়ুয়াদের বৃষ্টির জল সংরক্ষণ করতে শেখানো হয় যাতে তারা প্রকৃতির সম্ভার কিছুটা হলেও প্রকৃতিকে ফিরিয়ে দিতে পারে |’

শুধুমাত্র বৃষ্টির জল সংরক্ষণই নয় স্কুল-কর্তৃপক্ষ হাত ধোয়ার কলে এমন যন্ত্র লাগিয়েছেন যা ৬০ শতাংশ জলের অপচয় কমিয়ে দিতে পারে | ‘ছাত্ররা হাত ধুয়ে মাঝে মধ্যেই কল খুলে রেখে চলে যায় | বা হাতে সাবান লাগানোর সময় কল খুলে রাখে| এই ভাবে কয়েকশো লিটার জলের অপচয় হয়| কলে লাগানো হয়েছে বিশেষ যন্ত্র যা জল অপচয় বন্ধ করে |’ জানিয়েছেন স্কুলের ম্যানেজিং ডিরেক্টর |

এখানেই শেষ নয় আরও একটা অভিনব উপায় জল সংরক্ষণ করা হয় এই স্কুলে | স্কুলের চারি দিকে বড় বড় ড্রাম রাখা রয়েছে | স্কুল ছুটির সময় ছাত্ররা সেই ড্রামগুলোতে বোতলের বাড়তি জল ঢেলে দেয় | এই ভাবে দিনে ৫০ লিটার অবধি জল সংরক্ষণ করছে দ্যা ট্রায়ো ওয়ার্ল্ড অ্যাকাডেমি | 

পঞ্চম শ্রেণীর এক খুদে জানিয়েছে ‘আমরা সবাই জল সংরক্ষণ করার চেষ্টা করছি | স্কুলে আমরা এই ব্যাপারে অনেক সাহায্য পাই| বাড়িতেও আমরা একই ভাবে জল সংরক্ষণ করার চেষ্টা করছি | আমাদের প্রজন্মের সবার এগিয়ে আসা উচিত|’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *