হাতে সময় মোটামুটি দু’সপ্তাহ। পুজোর কেনাকাটা চলছে জোর কদমে। কিন্তু শুধু সাজপোশাক নিয়ে ভাবলেই তো আর চলবে না। ত্বক আর চুল যদি ফ্যাকাশে দেখায়, তা হলে যতই মেক-আপ করুন না কেন, চেহারায় সেই জেল্লা কিন্তু ফিরে আসবে না। তাই এখন থেকেই ত্বক আর চুলের যত্ন নিতে শুরু করুন। চটজলদি রূপ রুটিন নিয়ে হাজির আমরা—
● বাঙালির কাছে মহালয়া মানেই পুজোর শুভ সূচনা। আর সেদিক থেকে দেখতে গেলে কিন্তু দিন পরে আছে মাত্র ১০। তাই আপাতত সব রকম সাবানকে বাতিল করে নিয়ে আসুন হালকা ক্লেনজার। এর নিয়মিত ব্যবহারে ত্বক পুষ্টি পাবে ও পিএইচ ব্যালেন্স বজায় থাকবে। বেশির ভাগ সাবানে সেরামাইড বা গ্লিসেরিন থাকে যা ব্যবহার করলে প্রাথমিক ভাবে ত্বক তরতাজা মনে হলেও আদতে ত্বকের ক্ষতি করে। তাই পুজোর আগে মাইল্ড ক্লেনজার লাগানোই বুদ্ধিমানের কাজ। তা হলে পুজোর পাঁচ দিন ত্বক একদম ঝকঝকে দেখাবে।
● এক্সফোলিয়েটর ব্যবহার নিশ্চয় করেন। তবে এখন আর বাজারি প্রডাক্ট না লাগিয়ে, বাড়িতেই এক্সফোলিয়েটর বানিয়ে ফেলুন। উপকরণ খুবই সহজে পাওয়া যায়। চিনি, চাল, নুন বা ওটস জাতীয় দানাদার উপকরণ অলিভ অয়েল, নারকেল তেল বা লেবুর রস দিয়ে মিশিয়ে নিন। তৈরি ঘরোয়া অথচ সবচেয়ে কার্যকরী স্ক্রাব। এই ক’টা দিন রোজ এই স্ক্রাব মুখে লাগান। দেখবেন ত্বক একেবারে মসৃণ হয়ে গেছে।
● দুর্গা পুজো মানেই কিন্তু রাত জাগা। তাই চোখের যত্ন এখন থেকেই নিন। যে কোনও ভাল ব্র্যান্ডের আই ক্রিম নিয়মিত ঘুমনোর ৩০ মিনিট আগে চোখের তলায় লাগিয়ে ভাল করে মাসাজ করে নিন। ক্রিম লাগিয়ে সঙ্গে সঙ্গে কিন্তু ঘুমিয়ে পরবেন না। ৩০ মিনিট অপেক্ষা করাটা অত্যাবশক।
● সময় কম বলে শুধু ক্রিম বা তেল দিয়ে ত্বকের পরিপূর্ণ যত্ন নেওয়া সম্ভব নয়। একটা ইলেক্ট্রিক্যাল ফেশিয়াল ক্লেনজ়িং ব্রাশ কিনে ফেলুন। পার্লার যাওয়ার সময় না পেলে তো অতি অবশ্যই নিজের বিউটি কিটে সামিল করে ফেলুন একে। এক্সফোলিয়েশন বা ক্লেনজ়িং-এর সময় এই মাসাজ ব্রাশটি সারা মুখে বুলিয়ে নিন। এতে সমস্ত মরা কোষ উঠে আসবে। ত্বক ঝলমলে দেখাবে।
● ত্বক সুন্দর রাখতে সঠিক তাপমাত্রার জলে স্নান করুন। হালকা উষ্ণ জলই স্নান করার পক্ষে আদর্শ। স্নানের জল অতিরিক্ত গরম হলে, ত্বক শুষ্ক হয়ে যায় যা পরোক্ষে ত্বকেরই ক্ষতি করে। ত্বকের প্রাকৃতিক ময়শ্চার আর তেল শুষে নেয় গরম জল আর তাকে করে তোলে রুক্ষ ও খসখসে।
● সারা বছর ত্বক ভাল রাখতে ক্লেনজ়িং, টোনিং, ময়শ্চারাইজ়িং রুটিন মেনে চলা প্রয়োজন। পুজোর আগে ময়শ্চারাইজ়ারের বদলে হামেকট্যান্ট ব্যবহার করুন। এটি বাতাসের আদ্রর্তা টেনে ত্বকের ময়শ্চার ব্যালেন্স বজায় রাখে। ফলে ত্বক কোনওভাবেই ফ্যাকাসে দেখায় না।
● পুজোর ঠিক আগে রাতের রূপ রুটিনেও একটু অদলবদল করা প্রয়োজন। টোনার আর ময়শ্চারাইজার তো লাগাবেনই, এ ছাডা়ও নাইট সেরাম আর নাইট কেয়ার ক্রিম ব্যবহার করুন। প্রতি দিন ব্যবহার করলে তফাৎ নিজেই বুঝতে পারবেন।
● পুজোর সাত দিন আগে থেকে ক্লে মাস্ক ব্যবহার করা শুরু করুন। এক দিন ছাড়া ছাড়া এই ধরনের মাস্ক ব্যবহার করা যায়। ক্লে মাস্ক মুখের সমস্ত জেদি ময়লা তুলে ফেলতে পারে অনায়াসে। ফলে ত্বকের হারানো জৌলুস ফিরে আসে ক’দিনের মধ্যেই।
● পুজোর আগে পার্লার যাওয়া মানে রীতিমতো যুদ্ধক্ষেত্রে যাওয়া। এত ভিড় থাকে যে সামান্য থ্রেডিং করাতেও ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়। সেখানে ফেশিয়াল করানো তো বেশ কঠিন। বাড়িতেও কিন্তু ফেশিয়াল করতে পারেন। ফল সব ত্বকের জন্যই ভাল। কমলালেবু, স্ট্রবেরি নানা ধরনের ফল ব্যবহার করে দেখুন। দারুণ কাজ দেবে।
● সারা বছর তো বটেই, এই ক’দিন সানস্ক্রিন ছাড়া মোটে বাড়ি থেকে বেরবেন না। উচ্চ এসপিএফ যুক্ত সানস্ক্রিন লাগানোটাই বাঞ্ছনীয়। না হলে রোদের কারণে মুখে ট্যান পড়ে যেতে পারে।