যে কোনও নতুনের আগমন সব সময়ই স্বাগত। বাংলালাইভ নতুন রূপে আপনাদের সামনে এল, খুবই আনন্দের ব্যাপার। আনন্দ কুক্ষিগত করে রাখতে নেই, সবার সঙ্গে ভাগ করে নেওয়াই দস্তুর। আর সেই ভাগাভাগির উপকরণ হিসেবে এই ডিজিটাল-পৃথিবী এক অপরিহার্য এবং উপযোগী উপকরণ। ওয়েবদুনিয়ার তো এটাই মস্ত সুবিধে,সর্বত্র বিরাজমান। তা-ই সব বাঙালিকে বাঙালিয়ানায় বেঁধে ফেলার এ এক চমৎকার সুযোগ। আমরাও যারপরনাই খুশি। 

কিন্তু আমাদের একটা কথা খেয়াল রাখা প্রয়োজন। এ খুশি যেন শোভনতার সীমা অতিক্রম করে না যায়। ডিজিটাল দুনিয়ায় যেমন অবাধ স্বাধীনতা, তৎক্ষণাৎ স্বীকৃতি প্রাপ্তির আত্মতৃপ্তি রয়েছে, তেমনই তথ্যের নিরাপত্তা এবং ব্যক্তিগত পরিসর কিন্তু বিপন্ন। আমরা নিজেদের অজান্তেই নিজেদের সব তথ্য সকলের জানার ও ব্যবহারের ব্যবস্থা করে দিচ্ছি। সম্প্রতি ভারতীয় সুপ্রিম কোর্টের মাননীয় বিচারপতি যে মত প্রকাশ করেছেন, তার মানে করলে দাঁড়ায় যে, টেকনোলজি এখন এমন উন্নত হয়েছে, যা একই সঙ্গে বিপদসীমায় পৌঁছে গিয়েছে। অনলাইন-এ যে কেউ নাম গোপন রেখে ট্রোল করতে পারছে, ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ-এর মতো মাধ্যমে মিথ্য়ে খবর, রটনা ছড়াতে পারছে। এ ছাড়াও টোপ দিয়ে নানা রকম অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে। অর্থাৎ, এই সব ঘটনা থেকে বোঝাই যাচ্ছে যে, গণমাধ্যমের সংস্থাগুলি যতই তথ্য সুরক্ষার দাবি করুক, আদতে তা যথেষ্ট সুরক্ষিত নয়। এমনকী রাষ্ট্রও যে সোশ্যাল মিডিয়াকে ব্যবহার করে নির্বাচনের কাজে লাগাচ্ছে, সে অভিযোগও এখন দুনিয়া জুড়ে। 

অতএব উপায়? অনেকেই  বলছেন যে স্মার্টফোন হয়তো ত্যাগ করে ব্যক্তিগত পরিসরকে সুরক্ষিত করবেন। কিন্তু আজকের দুনিয়ায় সত্যিই কি তা সম্ভব? এই প্রশ্নের কারণ, ওয়েবদুনিয়া তো কেবল ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহৃত হয় না, অন্যান্য সহস্র প্রয়োজনেও তা কাজে লাগে। সুতরাং তা থেকে মুখ ফিরিয়ে থাকা বা তাকে খুব কেটেছেঁটে ব্যবহার করা কঠিন। কিন্তু তবুও একটা উপায় আছে। সে উপায় একমাত্র মানুষই তার মানুষী সামর্থ্য দিয়ে কার্যকর করতে পারে। তা হল সংযম। ডিজিটাল মিডিয়া, ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ—এ সব ব্যবহারের সময় সংযমের কথাটা খেয়াল রাখা জরুরি। নিজেকে প্রশ্ন করা জরুরি। আমি কী করছি, কতটা করছি, যা করছি তা আদৌ যুক্তিযুক্ত কি না, আমি নিজেকে কতটা উন্মোচন করছি, অন্যকে আঘাত করছি কি না—এ সব মাথায় রাখা দরকার। আগে ভাবপ্রকাশের এত উপকরণ ছিল না বলেই হয়তো, ঝামেলা কিছু কম ছিল। অন্যায়, আঘাত, অপমান— এ সবও সংগঠিত ট্রোলিং বা লিঞ্চিং আকারে প্রকাশ পেত না। এখন পৃথিবী অনেক খোলামেলা, অনেক অনিয়ন্ত্রিত। এই পৃথিবীতে কোনও নিয়ন্ত্রণের মাপকাঠি নেই। যা অত্যন্ত ভয়ঙ্কর। সুতরাং শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষের একটাই কাজ, সংযম অনুশীলন করা। যে সংযম তাকে হয়তো কিছু আনন্দ থেকে বিরত রাখবে, কিন্তু আবার ভয়ঙ্কর নিরাপত্তাহীনতা বা বিপন্নতা থেকে রক্ষা করবে।

সঞ্চারী মুখোপাধ্যায় হাসিখুশি, এমনকী যখন সেই মোড-এ থাকেন না, নিজেকে ঠেলে হিঁচড়ে হিহিহোহো’তেই ল্যান্ড করানোর চেষ্টা করেন। জাপটে ভালবাসেন আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব, সিরিয়াল, গান, রাস্তায় নেড়িবাচ্চার লটরপটর কান। পড়াশোনার সময় ফিল্ড করেছেন, হাতুড়ি দিয়ে পাথর ভেঙেছেন, গ্রামবাসীদের তাড়া খেয়েছেন, এক বার পাহাড় থেকে অনেকটা হড়কে পড়ে মুচ্ছো গেছিলেন, উঠে দেখেন, কবর! এক বার ম্যানেজমেন্ট কোর্সের অঙ্গ হিসেবে চিন গেছিলেন, রাত্তির দুটোয় সাংহাইয়ের রাস্তায় হারিয়ে গিয়েও কাঁদেননি। ফিউজ সারাতে পারেন, পাখার কার্বন বদলাতে পারেন, কাগজের চোঙ পাকিয়ে গাড়িতে পেট্রল ঢালতে পারেন, চিনেবাদাম ছুড়ে দিয়ে মুখে নিপুণ লুফতে পারেন। ব্যাডমিন্টন খেলার ইচ্ছে খুব, কিন্তু জায়গা ও র‌্যাকেট নেই। অরোরা বোরিয়ালিস যারা দেখেছে, তাদের একাগ্র ভাবে হিংসে করেন। দেশের বাড়িটা উনি বড় হওয়ার পর ছোট হয়ে গেছে বলে, আর আমির খান এক বার কার্টুন এঁকে দিয়েছিলেন— সে কাগজ হারিয়ে গেছে বলে, জেনুইন কষ্ট পান। এক বার ঈগলের রাজকীয় উড়ান আগাগোড়া খুব কাছ থেকে দেখেছিলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *