পড়ন্ত বিকেলের আলোয় নামছি খাটি গ্রাম থেকে জয়কুন গ্রামে। আমাদের পিণ্ডারি ট্রেক শেষ। পা যেন আর চলছে না। ক্লান্তিতে নয়।মনে অদ্ভুত এক অনুভূতি হচ্ছে। রাস্তার ধারে ফুটে থাকা নাম-না-জানা নানা রঙের জংলি ফুল, ঝিঁঝিঁ পোকার ডাক, বড় বড় গাছের গম্ভীরভাবে দাঁড়িয়ে থাকা। পাহাড়ি ঝোরা। পারাপারের ছোট সাঁকো। সারি সারি পাহাড়ের শ্রেণি পার হয়ে সবার ওপরে সাদা বরফ মাথায় নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা গর্বিত মাইকতোলি (৬৮০৩মিটার) শৃঙ্গ। একটু দূরে সরু ফিতের মতো নেমে যাওয়া সুন্দরডুংহা যাবার রাস্তা। ছোট্ট ছোট্ট ছবির মতো রঙচঙে বাড়ি। সব কিছুই যেন মনকে বিবশ করে তুলছে। এই দেড় কিলোমিটার রাস্তায় যা দেখছি মন ক্যামেরার পাশাপাশি হাতের ক্যামেরাতেও বন্দি করে নিচ্ছি আমরা দুই বন্ধু– আমি আর কৌশিক। ভাবছি যাবার দিন তো এই একই রাস্তায় দিয়ে গেছি। কিন্তু এই বিশাল পাইনদেওদার গাছের নীচে ফুটে থাকা নানা রঙের ফুল, বিচিত্র নকশার ছত্রাক, শ্যাওলার মনকাড়া রূপ আমাদের চোখে পড়েনি কেন! হিমালয় এভাবেই তার রূপ ঐশ্বর্য প্রকাশ করে বিশেষ বিশেষ মুহূর্তে। আর তার টানেই বারবার কঠিন ট্রেকের কষ্ট সহ্য় করেও ফিরে আসি হিমালয়ের কাছে

ঝকঝকে আকাশের নীচে অপরূপ হিমালয়। ছবি লেখকের তোলা।

আমাদের তিন জনের দলের সবথেকে সিনিয়র শিশিরদা এর মধ্যেই দ্রুতগতিতে পৌঁছে গেছে জয়কুন গ্রামে, আমাদের যাবার দিনের হোম স্টেতে। হন্সি নামে মেয়েটির বাড়ি। মেয়েটি আবার আমাদের গাইড দেবেন্দারের শ্যালিকা। ছোট্টখাট্ট বছর চব্বিশ পঁচিশ বছরের মেয়েটি একাই চালাচ্ছে হোম স্টেটি।এখনো পুরোপুরি তৈরি হয়নি। আন্তরিকতা দিয়ে ঢেকে দিচ্ছে অন্যান্য সমস্যাগুলি।আজ এখানে রাতে দেবেন্দার নিজে হাতে রেঁধে খাওয়াবে মুরগির মাংস ভাত।তারপর কাল আমরা জয়কুন থেকে কিলোমিটার হেঁটে যাবো খারকিয়া।যেখানে আমাদের এবারের মতো  যাত্রা শেষ।          

মাইকতোলির চাঁদ

এবারে আমরা যাবো পিণ্ডারি গ্লেসিয়ার ট্রেক করতে। উত্তরাখণ্ডের কুমায়ুনে। কথিত আছে পাণ্ডবরা এখানে পিণ্ডদান করেছিলতাই নাম হয়েছে পিণ্ডারি। অকাল তখত অমৃতসর এক্সপ্রেসে উঠেছিলাম কলকাতা স্টেশন থেকে। সেদিন ছিল রবিবার, কোজাগরী লক্ষ্মীপুজো। পরের দিন সকালে পৌঁছে যাই বেরিলি। সেখান থেকে গাড়িতে বাগেশ্বর। বাগেশ্বর জায়গাটা বেশ সুন্দর। আমরা উঠলাম কুমায়ুন মণ্ডল বিকাশ নিগমের বাংলোতে।  সরযূ আর গোমতি নদির সঙ্গমে রয়েছে বাঘনাথ মন্দির। কথিত আছে স্বয়ং শিব বাঘের রূপ এবং পার্বতী গো-মাতা রূপ ধরে আবির্ভূত হয়েছিলেন এখানে তাই বাঘনাথ নাম এখানে শিবের। আরও কয়েকটা মন্দির আছে বাগেশ্বরে। 

পরদিন অর্থাত্‍ মঙ্গলবার সকালে প্রাতঃরাশ সেরে আমরা গাড়িতে পৌঁছলাম খারকিয়া। মোবাইল নেটওয়ার্ক  খারকিয়া থেকেই পাওয়া যাচ্ছে না। এই খারকিয়া  থেকেই আমাদের হাঁটা শুরু। এখানেই আমাদের সঙ্গে পরিচয় হয়  হন্সির, যার হোমস্টেতে আমরা জয়কুনে গিয়ে থাকব। হন্সি হচ্ছে আমাদের গাইড মোহন সিং-এর বোন। 

লাঠিটা শক্ত করে ধরে নদীখাতে নামতে শুরু করলাম। কোথাও রাস্তা বলে কিছু নেই। এ পাথর পাথরের ওপর দিয়ে কখনও দুটো পাথরের ফাঁক দিয়ে চলতে লাগলাম। অবশেষে দূর থেকে দেখা সাঁকোটার কাছে চলে এলাম। তিনটে কাঠের গুঁড়ির ওপর কিছু আড়াআড়ি কাঠ বাঁধা।

যেহেতু আমরা বর্ষার পরে এসেছি, চারদিক একেবারে সবুজে ঝক ঝক করছে। রাস্তায় পেলাম ফুলে ফেঁপে ওঠা ঝরনা। খারকিয়া থেকে জয়কুন গ্রাম চার কিলোমিটার মতো। রাস্তা প্রথমে দু’ কিলোমিটার মতো নামতে হবে, তারপর কিছুদূর মোটামুটি সোজা রাস্তা, তারপর  চড়াই। আরও দেড় কিলোমিটার গেলে খাটি গ্রাম (২২১০ মিটার)।খাটিতে জনবসতি বেশি। থাকার জায়গাও বেশি। তুলনায় জয়কুন অনেক শান্ত জায়গা। লোকজনও কম।  

পথে অনেক ফিরতি ট্রেকারদের সঙ্গে দেখা হোল। তাদের কেউ কানাকাটা পাস, কেউ সুন্দরডুংহা, কেউ পিণ্ডারি করে ফিরছে। পিণ্ডারি করে যারা ফিরছে সকলেই বলল কয়েকটা জায়গা ধসে রাস্তা বেশ খারাপ হয়ে গেছে। হাঁটা কঠিন। অধিকাংশ টিমের একজন দু’জন কঠিন জায়গাটা পর্যন্ত গেছে তারপর আর যায়নি।  তখন বুঝিনি এইঅসুবিধাঠিক কতটা। যথাস্থানে বলব।

সন্ধেবেলা এল আমাদের গাইড দেবেন্দার এবং পোর্টার নরেন্দার। ছাব্বিশ- সাতাশ বছর বয়স। মোহন সিং নিজে যেতে পারবে না বলে এদেরকে পাঠিয়েছে। দেবেন্দার একটু চিন্তিত ভাবেই বলল আপনারা তিনজনেই বয়স্ক। তারপর স্বগতোক্তিতবে চলে যেতে পারবেন। একটু সময় বেশি লাগবে। মিনমিন করে বললাম আমরা গত বছর হর কি দুন করেছি। ও পাত্তাই দিল না, বলল ওখানে তো ওই কালিপাত্তি ধারের  চড়াই ছাড়া কিছু নেই। বাকি তো সহজ।

ভাবলাম এটা টিপিক্যাল গাড়োয়ালি আর কুমায়ুনিদের ইগোর লড়াই, কার রাস্তা কত কঠিন আর কোন গাইড কত ভালভাবে নিয়ে যায়। তাই আবার বললাম, কিন্তু পিণ্ডারি তো সহজ ট্রেককেউ কেউ মজা করে লেডিজ ট্রেকও বলে। দেবেন্দার চুপ করে থেকে বললহ্যাঁ সহজ। তবে এখন একটু কঠিন হয়ে গেছে। কঠিনব্যাপারটা বেশি ভাঙল না। 

গাইডের দক্ষ হাতই ভরসা। ছবি লেখকের তোলা।

জয়কুনের রাতটা ভুলব না।  রাত তখন দুটো- আড়াইটে হবে। কৌশিক আমাকে ঘুম থেকে তুলে দিয়ে বলল,বাইরে চল। ধড়মড় করে জ্যাকেট চাপিয়ে বাইরে চলে এলাম। সারা বিশ্ব যেন সাদা চাঁদনির চাদরে নিজেকে মুড়ে নিয়েছে। দিনের আলোয় দেখা সবুজ পাহাড়গুলোকে অদ্ভুত মায়াবী লাগছে। আর সবার উপরে মাইকতোলি শৃঙ্গের স্নিগ্ধ অথচ তীব্র রূপ। চাঁদের আলোর প্রতিটা কণা যেন মাইকতোলির গায়ে লেগে প্রাণ পেয়ে আমাদের দেহের প্রতিটা রন্ধ্রে রন্ধ্রে প্রবেশ করছে। বুঝলাম চন্দ্রাহত হওয়া কাকে বলে!

দ্বোয়ালিতে

পরদিন  অর্থাৎ বুধবার চলতে শুরু করলাম জয়কুন থেকে। খাটি গ্রাম পেরোলাম, (যার কথা যাত্রা শেষে বলেছি)। আজ আমাদের গন্তব্য জয়কুন থেকে ১১ কিলোমিটার  দূরে দ্বোয়ালি (২৫৭৫ মিটার)

ট্রেকের রাস্তা যেমন হয়–  কখনও চড়াই কখনও উৎরাই। রাস্তার সৌন্দর্য অসাধারণ। এক দিক দিয়ে বয়ে চলেছে নীল পিণ্ডারি নদী। আমরা এগিয়ে চলেছি পায়ে চলা রাস্তা দিয়ে। কখনও বড় বড় গাছের ছায়ায়, কখনও ঝকঝকে রোদের মধ্যে দিয়ে ঘাসজমির মধ্যে দিয়ে ঘামতে ঘামতে যাচ্ছি। কিছু জায়গায় সরু বাঁশের জঙ্গল। দু’দিক দিয়ে নুইয়ে পড়া বাঁশের ডালপালা যেন সবুজ তোরণ তৈরি করেছে। নীচে বাঁশ পাতার সবুজ গালিচা। নদীর ওপারেও পাহাড়ের পর পাহাড়ের সারি। সব শেষে উঁকি দিয়ে যায় তুষারশুভ্র শৃঙ্গ। আর দেখছি অসংখ্য পাহাড়ি ঝরনাবর্ষার জলে পুষ্ট হয়ে জলপ্রপাত হয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ছে। কখনও আমাদের রাস্তার ওপর দিয়ে বা ছোট্ট সাঁকোর তলা দিয়ে অথবা কখনও সরাসরিগন্তব্য সেই পিণ্ডারি নদী।

দুর্গম গিরি। ছবি লেখকের তোলা। 

চলা শুরুর কিছুক্ষণের মধ্যেই দেবেন্দারকে জানিয়ে দিয়েছি আমরা একেবারেই অ্যাডভেঞ্চার করতে আসিনি।পাহাড় ভালবাসি তাই এসেছি। যতদূর যেতে পারব যাব। এমনকী পিণ্ডারি জিরো পয়েন্ট না যেতে পারলেও কিছু যায় আসে না। আমাদের এই কথা আর হাঁটা দেখে দেবেন্দারের হয়ত কিছুটা আস্থা  বাড়ল আমাদের ওপর। নীল আকাশের নীচে পাহাড় ঘেরা জায়গায় সরকার থেকে করে দেওয়া ছোট্ট শেডে সঙ্গে প্য়াক করে আনা  রুটি সব্জির লাঞ্চ করার সময় জানিয়ে দিল আমাদের তিনজনকেই জিরো পয়েন্টে নিয়ে যেতে পারবে! আসলে ২০১৩ সালে উত্তরাখণ্ডে যে ভয়ঙ্কর বন্যা হয়েছিল তাতে পিণ্ডারির মূল রাস্তা অনেক জায়গাতেই ধুয়েমুছে গেছে। নতুন রাস্তা নদীর পাশ ছেড়ে অনেক উঁচুতে করতে হয়েছে। তার ওপর এবছর সেপ্টেম্বর মাসের শেষ দিকের ধস। সব মিলে রাস্তা আগের থেকে কঠিন হয়ে গেছে।

আমাদের হিসেবে দ্বোয়ালির কাছে চলে এসেছি তখন। দেবেন্দারকে জিজ্ঞাসা করতে  বলল এক কিলোমিটারের কিছু বেশি বাকি। আমরা বললাম তাহলে তো আর আধঘণ্টা থেকে চল্লিশ মিনিট। বলল সামনে বোল্ডার জোন আছে তাই ঘণ্টা খানেকের বেশি লাগবে। একটু অবিশ্বাস নিয়েই বোল্ডার জোন আসার অপেক্ষায় ছিলাম। সেখানে পৌঁছে বুঝলাম কেন সময় লাগবে।

জায়গাটা আসলে পিণ্ডারি নদী আর কাফনি নদীর সঙ্গম স্থল। ভীষণ ভাবে ধসপ্রবণ। যার জন্যে নদীপথগুলোই ছড়িয়ে গেছে। মূল ধারার সঙ্গে অনেক ছোট ছোট ধারা এসে মিশেছে। বোল্ডার ধসে যেখানে বাধার সৃষ্টি করেছে, সেখানে নদী ঘুরে অন্য রাস্তা খুঁজে নিয়েছে। কোনটা নদীর মূলস্রোতের সঙ্গম স্থল, ভাল করে বোঝা যাচ্ছে না। অনেক দূরে পাহাড়ের ওপর কে এম ভি এন বাংলো দেখতে পাচ্ছি, কিন্তু সামনে এক ফালি ছোট্ট মাঠ ছাড়া বাকিটা প্রায় নব্বই ডিগ্রিতে ধসে গেছে। জানি না আর কতদিন বাংলোটা থাকবে।আমাদের এখনকার রাস্তা ছেড়ে ধসের ধ্বংসলীলা দিয়ে নেমে শেষমেশ খাড়াই বেয়ে উঠে ওই বাংলোয় পৌঁছতে হবে।

পাহাড়ের ঢালে শান্ত গ্রাম। ছবি লেখকের তোলা।

লাঠিটা শক্ত করে ধরে নদীখাতে নামতে শুরু করলাম। কোথাও রাস্তা বলে কিছু নেই। এ পাথর পাথরের ওপর দিয়ে কখনও দুটো পাথরের ফাঁক দিয়ে চলতে লাগলাম। অবশেষে দূর থেকে দেখা সাঁকোটার কাছে চলে এলাম। তিনটে কাঠের গুঁড়ির ওপর কিছু আড়াআড়ি কাঠ বাঁধা।পরে আরও একটা এমন সাঁকো পাব। যাইহোক নড়বড়ে হলেও যাওয়া যায়। চলে গেলাম ওপারে। এবার যে বোল্ডার জোন এল সেটাই আসল ঝামেলার। বেশ কয়েক জায়গায় চারহাত- পা কাজে লাগাতে হল। এক জায়গায় এসে একটু আঁতকে উঠলাম। যেদিকে দাঁড়িয়ে আছি তার থেকে উঁচু একটা পাথরে উঠতে হবে—  দুটো পাথরের মাঝে দু- তিন ফুটের ব্য়বধান। দশবারো ফুট নীচে কী  আছে ঠিক বোঝা যাচ্ছে না। দেবেন্দার লাঠি বাড়িয়ে দিয়ে ধরতে বলছিল। আমি ঠিক ভরসা পেলাম না। শক্তি সঞ্চয় করে মনঃসংযোগ করে লাফিয়ে টপকে গেলাম, তিপ্পান্ন বছরের হার্টের ধুকপুকুনি বাড়িয়ে। কৌশিকও চলে এল।

এর মধ্যে শিশিরদা পোর্টার নরেন্দারকে নিয়ে খুব তাড়াতাড়ি এগিয়ে গেছিল। আমরা ওদের দেখতে পাচ্ছিলাম না। ভাবছিলাম বাংলোয় চলে গেল নাকি! তবে আরও কিছু উঁচু পাথর হাঁচড় পাঁচড় করে পার হয়ে দেখলাম একজায়গায় জলের ধারে দাঁড়িয়ে শিশিরদা নরেন্দারকে খুব চোটপাট করছে। কাছে গিয়ে ব্যাপারটা বুঝলাম। আমাদের গ্রামে একটা প্রবাদ ছিলআগে গেলে বাঘে খায়। সেটাই হয়েছে। শিশিরদা দ্রুত যেতে গিয়ে পড়ে গেছে। কিন্তু দোষটা নাকি নরেন্দারের। নাকি খারাপ রাস্তা দিয়ে নিয়ে যাচ্ছিল! নরেন্দার প্রাণপণে বোঝাচ্ছিল তা নয়, কিন্তু শিশিরদা বুঝবে না।  নরেন্দারকে বললাম শিশিরদার ষাটের ওপর বয়স। যেন  ঠিকঠাক দেখভাল করে। তারপর  ফিসফিস করে নরেন্দারকে কিছু টিপস দিলাম। তারপর থেকেই পুরো ট্রিপ শিশিরদা নরেন্দারের প্রিয়আঙ্কেলজিহয়ে গেল। চোট গুরুতর ছিল না। একটু ওষুধ লাগাতে হয়েছিল।

জায়গাটা আসলে পিণ্ডারি নদী আর কাফনি নদীর সঙ্গম স্থল। ভীষণ ভাবে ধসপ্রবণ। যার জন্যে নদীপথগুলোই ছড়িয়ে গেছে। মূল ধারার সঙ্গে অনেক ছোট ছোট ধারা এসে মিশেছে। বোল্ডার ধসে যেখানে বাধার সৃষ্টি করেছে, সেখানে নদী ঘুরে অন্য রাস্তা খুঁজে নিয়েছে। কোনটা নদীর মূলস্রোতের সঙ্গম স্থল, ভাল করে বোঝা যাচ্ছে না।

অবশেষে পৌঁছলাম দ্বোয়ালি কে এম ভি এন বাংলোয়।গরম চা খাওয়ানোর পর দেবেন্দার চলে গেল রাতের খিচুড়ি ডিম ভাজা বানাতে।

সন্ধ্যের একটু আগেই পিণ্ডারি করে আমাদের বাংলোয় চলে এল আমাদের পুরনো ট্রেকিং বন্ধুদের আর একটা দল.. আর এক কৌশিক, সজল, তীর্থ আর দীপক। অনেক দিন পর দেখা হওয়ার উচ্ছ্বাস মেটার পর রাস্তার হালচাল জিজ্ঞাসা করলাম। সজল প্রায় আঁতকে উঠল। দুটো তিনটে জায়গা খারাপ কিন্তু একটা জায়গা এতই খারাপ সেখানে প্রায় দেওয়াল পিঠ ঠেকিয়ে এগোতে হবে কারণ অন্যদিকে খাদ। রাস্তা বলে কিছু নেই। ওই কৌশিক স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে সাহস দিয়ে বলল চিন্তার কিছু নেই, গাইড পেছন থেকে ধরে থাকবে, চলে যাবেন। শুধু ওই দুটো মিনিট তোমার মনে হবে একটু বেশি লম্বা।

যাত্রা শুরু তো করেছি, কিন্তু শেষ করতে  পারব তো? এই চিন্তা নিয়েই শুতে গেলাম।

ডঃ সুমিত দাশ পেশায় মনোরোগ বিশেষজ্ঞ। স্বাস্থ্যের বৃত্ত পত্রিকায় নিয়মিত লেখালেখি করেন। গণ স্বাস্থ্য আন্দোলনের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত। অবসর সময়ে বেড়াতে যেতে ভালোবাসেন।

3 Responses

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *