আগের পর্ব পড়তে: [১] []

কলকাতা থেকে বোলপুর পৌঁছতেই প্রায় পাঁচ ঘণ্টা লেগে গেছিল। সে রাতটা হোটেলে থেকে পরদিন ব্রেকফাস্ট সেরেই তারা বাংলা-ঝাড়খণ্ড সীমানায় মলুটী পৌঁছল ম্যাপের ভরসায়। 

মলুটী ঢোকার আগেই পড়ল একটা নদী। স্থানীয় লোকজন এমন ব্যবস্থা করে রেখেছে যে গাড়ি চলে যাবে নদীর ওপর দিয়েই। কী নদী দেখ তো এটা? 

সীমা ম্যাপ দেখে জানায় ময়ূরাক্ষী। 

ময়ূরাক্ষী? নদীর কজ ওয়ে পেরোতে গিয়ে সায়নের মনে পড়ল এই নদী নিয়ে জমে আছে কত গল্প। সেসব তার নিজের অজান্তে ঘটে যাওয়া, বেশ অনেক বছর আগের ঘটনা।

***

পাঁচশো বছরের প্রাচীন ইতিহাস তখন সায়ন আর সীমার চোখের সামনে। সীমা বলল— ‘দেখ, এখানে সব নাম ময়ূর দিয়ে। নদীর নাম ময়ূরাক্ষী। জায়গাটার নাম ময়ূরেশ্বর।’ 

— ‘হয়ত একসময় অনেক ময়ূর ঘুরে বেড়াত তাই এমন সব নাম।’ 

— ‘আরও আছে। বীরভূমের ময়ূরেশ্বর ছাড়া, মোরগ্রাম সড়ক, পুরুলিয়ার মুরগুমা, ওড়িশার ময়ূরভঞ্জ—এসবই ময়ূরের মায়া, বুঝলে!’ সায়ন বলে। সাধে কী আমাদের জাতীয় পাখি ময়ূর! এসব অরণ্যময় জায়গা সায়ন একসময় প্রচুর ঘুরেছে, কোম্পানির মাল বেচতে গিয়ে অফিসের কাজে।

সীমা বলল, ‘বেশ মিলিয়ে দিলে তো? আমিও অনেক মিল পেয়েছি জানো! গাড়িতে আসার সময় স্বপ্নে।’

সায়ন বলল, ‘কেমন? শুনি তবে। তোমার স্বপ্ন মানে তো সাংঘাতিক! নির্ঘাত পেটগরম হয়েছে। কী খেয়েছিলে বল তো?’ 

সীমা বলল, ‘থামবে তুমি! এখন বলছি না সেসব। আরও কিছু মিল পেলে বলব। তবে না বুঝব আমি ঠিক। মানে QED বিজ্ঞানের ভাষায়। অঙ্কের মাস্টারমশাই তো আবার হাতেনাতে প্রমাণ ছাড়া কিছুই বিশ্বাস করেন না।’ 

— ‘আওয়াজ দেবে না আমায়।’

Design1

মন্দির চত্বরের বাইরে গাড়ি থেকে নামতেই এক স্থানীয় ছেলে ওদের কাছে এসে দাঁড়াল। গাড়ির পিছু পিছু আসছিল বোধহয়। চেকচেক পান্তলুন আর ফ্লানেলের ফুল শার্ট তার পরনে। চেহারায় চাকচিক্য নেই, তবে চোখেমুখে বুদ্ধির ছাপ।  

— ‘বাবু, ঘুরে সব দেখাতে পারি আপনাদের। জানাতে পারি লোকাল ইতিহাসও। আমায় সঙ্গে নেবেন?’ বলল সে।

সায়ন বলল— ‘বেশ ভালোই তো। চল্ তবে। ইতিহাস, ভূগোল সব বলতে হবে কিন্তু।’ 

ছেলেটা বলল— ‘সব জানি। বলব যেতে যেতে। চলুন।’ 

— ‘কত চার্জ রে তোর? কতক্ষণ ঘুরবি?’ সীমা বলে। 

সায়ন সীমাকে থামায়, ‘কী যে বল তুমি? এত গরীব গ্রাম। কিছুই নেই এখানে তায় আবার চার্জ?’ 

‘আপনাদের ভালো লাগলে যা খুশি দিয়ে যাবেন।’ ছেলেটা বলে।

মোটের ওপর বেশ গরিব বেশভূষা দেখে মায়া হল সায়নদের।  দু-চার টাকা রোজগার হবে ছেলেটার। সেই আশায় ছেলেটিকে নিজেদের সঙ্গে নিল ওরা। ছেলেটির নাম ছিদাম বিশ্বাস। দিব্য বাংলা অ্যাকসেন্ট। বেশ সপ্রতিভ বলেই মনে হয়। 

সঙ্গ নিয়েই ছিদাম শোনাতে আরম্ভ করল মলুটীর বিখ্যাত বাজ বসন্তের গল্প। মুখস্থ যেন। ক্লায়েন্ট সম্মত হতেই পথ চলতে চলতে গলগল করে বেরিয়ে আসতে লাগল সব। মন্দিরময় মলুটী গ্রাম পায়ে হেঁটেই ঘুরছে ওরা তিনজনে। গাড়িটা সামান্য দূরে পার্ক করে রেখেছে সায়ন। এখানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে অজস্র মন্দির। কোনোটা ভাঙাচোরা, কোনোটা এখনও আস্ত, কোনোটায় রিপেয়ারিং হয়েছে, তবে পুজো হয় না একটাতেও। বোঝা যায় একসময় পরপর নির্মাণ হয়েছিল যত্রতত্র, যেন এক নেশায়। একের পর এক। 

Design2

ওদের আলোচনার বিষয়বস্তু তখন বসন্ত রায়। ছিদামের ঠোঁটের ডগায় যেন সেই গল্প। আজকাল সবাই এসে নিজের মতো ঘোরে। গাইড নেবে আবার এই বাজারে! অনেকদিন পরে তাই এমন ক্লায়েন্ট পেয়ে মনের খুশিতে সে বলতে থাকে…

—’এখানে লোকে তাকে বাজবসন্ত বলেই জানে, সেই আদি অনন্ত কাল ধরে। বীরভূম জেলার ময়ূরেশ্বরের কাছে কাটিগ্রামের এক হতদরিদ্র পিতৃহীন ব্রাহ্মণ নাবালক এই বসন্ত রায়। মায়ের সঙ্গে গাঁয়ের গোরুবাছুর চরিয়ে তার দিন কেটে যেত কোনওমতে। একদিন মাঠে গরু ছেড়ে দিয়ে ঘাসের ছায়ায় গভীর ঘুমে ঢলে পড়ে সে। রোদ বাড়তে বাড়তে তার মুখে রোদ এসে পড়তেই এক বিষধর সাপ ফণা তুলে বসন্তের মুখের রোদ আড়াল করে দাঁড়িয়েই রইল। কাশীর মঠের এক সাধু মহারাজ সেই সময় ওই পথ দিয়ে যাচ্ছিলেন। তিনি এমন ঘটনা দেখতে পেয়ে রাখাল বালকের কাছে যেতেই সাপটি অন্তর্হিত হল এবং সাধু তখন ঘুমন্ত সেই ছেলেটির মুখে রাজা হবার সব লক্ষণ চাক্ষুষ যেন দেখতে পেলেন। বসন্তের ঘুম ভাঙিয়ে তার মায়ের কাছে হাজির হয়ে শীঘ্রই ছেলের রাজ্যলাভের সুখবরটি দিলেন। এমন কী বসন্তকে সিংহবাহিনী মন্ত্রে দীক্ষা দিয়ে নিজের শিষ্য করে নিলেন।’

— ‘ওয়েট ওয়েট ওয়েট’… সীমা বলে, ‘দেখেছো! ময়ূর যেখানে থাকে সাপও সেখানে। অতএব… নে তুই বল আবার।’

Design3

ছিদাম শুরু করে…

— ‘সেসময় গৌড়ের নবাব আলাউদ্দিন হোসেন শাহ উৎকল দেশ থেকে ফেরার পথে বিশ্রামের জন্য শিবির ফেলেন ময়ূরাক্ষী নদীর তীরে। হঠাৎ জানা যায়, বেগমসাহেবের অতি প্রিয় এক পোষা বাজপাখি সোনার শিকল কেটে পালিয়ে গেছে। সে আবার যে সে বাজপাখি নয়। বাদশাহি সেই বাজপাখির নাকে হিরে বসানো সোনার নোলক, পায়ে সোনার শিকল। পাখির শোকে রানি প্রায় শয্যা নিয়েছেন। তাকে সান্ত্বনা দিতে সম্রাট ঢেঁড়া পিটিয়ে ঘোষণা করলেন যে ব্যক্তি সেই বাজপাখিকে এক্ষুনি ধরে এনে দিতে পারবে, সে যা চাইবে তাই পাবে। 

কিশোর বসন্ত পাখি ধরতে ওস্তাদ। গাছের ডালে মাংসের টুকরো রেখে ফাঁদ পেতেছিল বুদ্ধিমান বসন্ত। বাজপাখিও তা দেখেই ধরা দিল টুক করে। সেই বাজপাখিকে নিজের ঘাড়ে চড়িয়ে নিয়ে বাদশার দরবারে উপস্থিত হতেই সম্রাট খুশি হয়ে হুকুম দিলেন, পরদিন সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত বালক বসন্ত রায় ঘোড়ায় চেপে যতটা ঘুরে আসতে পারবে সবটাই সে পাবে নানকার অর্থাৎ নিষ্কর জমিদারি হিসাবে। এভাবেই বসন্ত রায় হলেন নানকার রাজ্যের রাজা আর বাজপাখি ধরে দেওয়ার সুবাদে তার নাম হল বাজ বসন্ত। তখন থেকেই জায়গাটার নাম নানকার মলুটী। ম্যাপে দেখুন তাই আছে।’ ছিদাম বলল। 

সায়ন বলল, ‘তুই ম্যাপের খবরও রাখিস দেখছি।’ 

— ‘এখন তো স্মার্ট ফোনের যুগ বাবু। না রেখে উপায় কী?’

সীমা বলে, ‘তারপর কী হল সেই বাজ বসন্তের?’

Design4

ছিদাম আবারও শুরু করে… 

— ‘এই বাজবসন্তের বংশধররাই পরে মলুটীতে তাঁদের রাজধানী স্থাপন করলেন। তাঁরা একদিকে যেমন শিল্পকর্মের পৃষ্ঠপোষক তেমনই তাঁদের ধর্মকর্মে মতি।’

সায়ন বলে— ‘আর তাই পুরো মলুটী গ্রাম জুড়ে প্রায় একশো বছর ধরে, একের পর এক তাঁরা বানিয়ে ফেললেন অপরূপ শিল্পসুষমাযুক্ত ১০৮টি মন্দির।’ 

ছিদাম বলে, ‘বর্তমানে অবশ্য ৭২ টি এমন মন্দির বেঁচে রয়েছে।’ 

— ‘কতরকমের স্টাইল সব মন্দিরের। চারচালা, আটচালা, পঞ্চরত্ন, শিখর দেউল… কী সুন্দর এই মন্দির বল! এইগুলোই তো ভিডিওতে দেখছিলাম সেদিন, মনে নেই?’ সায়ন বলল। 

‘তাই বলে এত এত মন্দির কেন রে এখানে?’ সীমা জিগেস করে।

ছিদাম বলে, ‘সবাই বলে দেবতার বর। গাঁয়ের লোকের এমনই বিশ্বাস। উনারা দেবতার গ্রাম বলেন নানকার মলুটীকে।
১৬৯০ সালে রাজনগরের সঙ্গে নানকার রাজ্যের প্রচণ্ড যুদ্ধে নানকার রাজ্যের রাজধানী ডামরা পুরো ধ্বংস হয়ে যায়। এর প্রায় ন’বছর পর নানকার রাজারা মলুটীতে তাঁদের নতুন রাজধানী নির্মাণ শুরু করেন। নানকার রাজবংশ মলুটীতে এসে শেষ পর্যন্ত ছয় তরফে ভাগ হয়ে যায়। ওদের সবাই খুব পুজোআচ্চা করত। তাই মন্দির নির্মাণে সব শরিকরা সমান ভাবেই এগিয়েছিল। তাঁদের মধ্যে যেন প্রতিযোগিতা শুরু হয়। কে কয়টা মন্দির বানাতে পারে। এই জন্যই তো দেড়শ বছরে ১০৮ টি মন্দির নির্মিত হয়।’

Design5

‘মানুষজনের ঘরদোর তো দেখছি না? এত শরিকরা সব থাকত কোথায়?’ সায়ন বলে।  

ছিদাম বেশ উৎসাহ নিয়ে বলতে থাকে— ‘শরিকদের মধ্যে কত কত কালী আর দুর্গা পুজো হত জানেন? এ ধরনের প্রতিযোগিতার প্রধান কারণ হল কে কত বড়লোক সেটা প্রমাণ করা।’ 

সীমা বলে ওঠে, ‘বুঝেছি। মানে বৈভব প্রদর্শন। কার কত খরচা করার ক্ষমতা…’

— ‘হ্যাঁ, একদমই তাই। আরেকটা ব্যাপারও ছিল। নানকার রাজবংশের কেউ পাকা ঘরবাড়ি বানাতে পারবে না। তাই দেবদেউল বানিয়ে সেই সাধ মেটাত। সেই সঙ্গে ছিল শরিকদের মধ্যে ঝগড়া। তখন শরিকি পরিবারের নানা লোকজনের নামে মন্দির উৎসর্গ করা হত। একবার এক শরিকের এক বৌয়ের নামে মন্দির উৎসর্গ হল তো পরের বার আরেকজনের নামে। এই জন্যেই বুঝি এত এত মন্দির এই গ্রামে। আবার হিংসাও ছিল যথেষ্ট। এ শরিকের মন্দিরে ও শরিকের কেউ পুজো দিতে যাবে না।’ ছিদামের কথাগুলো শুনতে বেশ লাগে সেই মন্দিরতলায় পথ চলতে চলতে।  

‘মন্দিরের গায়ের কাজগুলো দেখলে? প্যানেলগুলোয় রামায়ণ, মহাভারত, দশবতার— কী দারুণ না?’ সীমা বলল। 

‘নিখুঁত এক্কেবারে। ছবি নিয়েছি বেশ কয়েকটা।’ সায়ন বলে। 

— ‘তাহলে আর কী! পোষ্ট করে দাও এবার।’

সায়ন বলে— ‘নাহ। এত ছবি একসঙ্গে দেব না।’

সীমা মৃদু হাসল। সায়ন তা দেখে বলল, ‘হাসলে কেন?’ 

— ‘আমি কিন্তু ইতিমধ্যেই পেয়ে গেছি, আরেকটা মিল। আমার স্বপ্নের সঙ্গে। পরে বলব। সব জমিয়ে রাখছি।’ 

Design6

সায়নের আর তর সয় না। 

তা দেখে সীমা বলল, ‘ওই যে শ্রীদাম থুড়ি ছিদাম বলল না, ফণা তোলা সাপের কথা? বসন্ত রায়ের ভাগ্য কেমন ফিরিয়ে দিল দেখলে! এ হল আমাদের নাগবংশীয়দের কিসসা। বুঝেছ? এসব তোমাদের চৌধুরীবাবুদের মাথায় ঢুকবে না জন্মেও। আর ঢুকলেও তোমাদের এসবে বিশ্বাস নেই বিন্দুমাত্র।’

— ‘তবে একটা জিনিস আমার মাথায় ঢুকেছে। বাজ বসন্তের বংশধরেরা মুসলমানদের কাছে ভয়ানক যুদ্ধে হেরে গিয়েই এখানে চলে আসে। তাঁরা বোধহয় অরিজিনালি বাঁকুড়ার ছিল। যে কারণে মল্লরাজারা এখানে এসে এ জায়গার নাম দেয় মল্লহাটি। সেই থেকেই মলুটী। কাছেই মল্লারপুর। যদিও গুগল ম্যাপে কেউ একজন এই নামটিকে মোল্লারপুর বলে চিহ্নিত করেছেন। আর সেই গ্রামের অধিষ্ঠিত শিব হলেন মল্লেশ্বর। তাহলেই বোঝ মল্লরাজাদের সঙ্গে এদের কানেকশন।’  

সায়নের এই অনবদ্য অ্যানালিসিসে মুগ্ধ হয়ে সীমা বলল, ‘তাহলে অংকের মাস্টারমশাইও মাঝেমধ্যে ইতিহাস পড়েন বৈ কি!’ ফেসবুকে টুক করে একটি টেরাকোটা প্যানেলের অনবদ্য ছবি পোস্ট করে সে স্ট্যেটাস আপডেট করল…মল্লারপুর> মল্লেশ্বর> মল্লহাটি> মলুটী 

সেইসঙ্গে চিন্তান্বিত ইমোটিকন দিয়ে আবারও লিখল ‘ফিলিং কিউরিয়াস আবাউট বাঁকুড়ার মল্লরাজা কানেকশন উইথ বীরভূমের মলুটী’। 

ছিদাম অবিশ্যি আসামাত্রই জানিয়েছে যে মলুটী নামটা এসেছে মহুলটি থেকে। এখানে অনেক মহুল গাছ ছিল, তাই গ্রামের এমন নাম। আশেপাশে আরও এমন সব গ্রামের নাম মহুলবোনা, মহুলপাহাড়ি। 

— ‘মলুটীর জনপদ বেশ প্রাচীন বোঝাই যায়’, সায়ন বলে । 

ছিদাম বলে— ‘তা তো বটেই। এখানে আগে এত জঙ্গল ছিল যে বাঘ, ভাল্লুক, বুনো হাতি বেরত। তারা জমিদারদের গ্রামের মধ্যে যাতে ঢুকতে না পারে তাই পাইক বরকন্দাজ রেখেছিল ওরা। গ্রামের দক্ষিণ দিকে চিলা কাঁদর নদীর কাছে বিশাল বিশাল  পাথরের চাঁই দিয়ে ওয়াচ-পয়েন্ট বানিয়েছিল ওরা। ওদিকে গেলে পাথরগুলো দেখলে এখনও বোঝা যায়। আপনারা আসার সময় দেখেছেন? হস্তিকান্দা গ্রাম পড়ে। সেখানে দিনে দুপুরে বুনোহাতির দল ঘুরে বেড়াত।’ 

সায়ন বলে, ‘না রে দেখিনি তো! আচ্ছা শোন। একটা কথা বলতে পারবি? বাঁকুড়ার মল্লরাজাদের সঙ্গে এই ঝাড়খণ্ডের মল্লরাজদের কী কানেকশন?’ 

ছিদাম বলে, ‘নেপালদাদু তো লিখেইছেন উনার বইতে।’ 

— ‘কোনও এককালে এটা বাঁকুড়ার মল্লরাজাদের দখলে ছিল। বাঁকুড়াকে তো মল্লভূম বলে। বাঁকুড়ার প্রথম মল্লরাজা আদিমল্লর নামে মল্লভূম। বাঁকুড়া কি খুব দূরে নাকি? তবে মলুটী গ্রামের এই মন্দিরগুলো দেখুন। বাঁকুড়ার সব মন্দিরের মত নাকি বলে সবাই?’  

— ‘সেটাই তো দেখছি রে। মন্দিরের প্যানেলের উপরের কারুকার্যগুলো অবিকল। তাই না সীমা?’ বলে গুগল ফোটো থেকে ওদের বাঁকুড়ার ছবি বের করে দেখায় সায়ন। ‘সেইজন্যই আমি ভাবছি সেই কখন থেকে। এখানে আসা অবধি।’

 

 

অলংকরণ: শুভ্রনীল ঘোষ

*পরের পর্ব প্রকাশ পাবে ২২ মার্চ, ২০২৩
Indira Mukhopadhyay Author

রসায়নের ছাত্রী ইন্দিরা আদ্যোপান্ত হোমমেকার। তবে গত এক দশকেরও বেশি সময় যাবৎ সাহিত্যচর্চা করছেন নিয়মিত। প্রথম গল্প দেশ পত্রিকায় এহং প্রথম উপন্যাস সানন্দায় প্রকাশিত হয়। বেশ কিছু বইও প্রকাশিত হয়েছে ইতিমধ্যেই। সব নামীদামি পত্রিকা এবং ই-ম্যাগাজিনের নিয়মিত লেখেন ছোটগল্প, ভ্রমণকাহিনি, রম্যরচনা ও প্রবন্ধ।

One Response

  1. মুগ্ধ হলাম, ইতিহাসের তালপাতা বেশ আকর্ষণীয় ভাবে লিখেছেন যদি মনে একটু প্রশ্ন জাগতে শুরু করেছে তবে কি ইতিহাসের কোনো পাতা ধরে আসবে এই উপন্যাসের কাহিনিপথ? আগে পড়ে জানতে বাধ্য করে দিচ্ছেন ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *