১
মেমসাহেবের কেতাদুরস্ত স্নানঘরেই ঝুলে থাকত হেয়ারড্রায়ারটা। প্রথম প্রথম বড় লোভ হত সুদক্ষিণার। ভাড়াটে হয়ে এ বাড়িতে যবে থেকে সে উঠেছে, তবে থেকেই দেখছে সেটাকে। কিন্তু অন্যের জিনিস বলে হাত দিয়ে নেড়েচেড়ে দেখবে বা নিজের চুল শুকনোর জন্য ব্যবহার করবে বলে ভুলেও ভাবেনি সে। ছুঁয়েও দেখেনি। কারণ সুদক্ষিণার মাথায় একরাশ কালো চুল নেই। এদেশে আসার আগেই সে বয়কাট করে ফেলেছে। তাই চুল শুকনোর ঝামেলাও নেই। তবুও রোজ চানঘরে ঢুকেই সুদৃশ্য বেসিন কাউন্টারের পেল্লায় আয়নার পাশে ঝুলতে থাকা হেয়ারড্রায়ারটায় চোখ পড়ে। এখানে ধোঁয়া-ধুলোর ঝামেলা নেই। সব সিল করা। অতএব হেয়ারড্রায়ারটায় অন্য আসবাবের মত ধুলোর আস্তরণও পড়ে না। লাল-কালোয় এমন সুন্দর হেয়ারড্রায়ার সুদক্ষিণা কখনও চোখেই দেখেনি। তবে প্রতিমাসে ব্যাংক থেকে অনলাইনে বাড়ি ভাড়া ট্রান্সফার করে দেবার পর মালকিন আইরিন আসেন ভাড়ার রসিদের হার্ড কপিটি দিতে।
এখানে বাড়ির মালকিনরা খুব হুঁশিয়ার ভাড়াটের ব্যাপারে। তাকে যতটা সার্ভিস দেওয়ার কথা সেটা ঠিকমত দিচ্ছেন কিনা, অথবা যদি বিন্দুমাত্র প্রবলেম থাকে তবে তা ঝটিতি সমাধানের ব্যাপারে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ তাঁরা। তাই সমস্যা হবার আগেই সবকিছু খুঁটিয়ে তদারকি করে যান প্রতিমাসে। ছুতোনাতায় একবার ঠিক সেই স্নানঘরে গিয়ে তদারকি করে আসেন। সুদক্ষিণার বেসিনের ঠান্ডা ও গরমজলের কলে জলের ফোর্স, কমোডের সিস্টার্নের জল লিক করছে কিনা, বাথটবের শাওয়ারের ফুটোগুলো বুজে গেছে কিনা, অথবা বাথটব থেকে কলকল করে ঠিক জল নির্গমন হচ্ছে কিনা, সব দেখে যান খুঁটিয়ে। আর সবশেষে নিজের প্রিয় সেই হেয়ার ড্রায়ারটার দিকে তাকিয়ে নেন এক ঝলক। বুদ্ধিমতী সুদক্ষিণার তা চোখ এড়ায় না। সে ভাবে একদিন বলবে, “আইরিন, এত প্রিয় জিনিস আপনার, শখেরও বটে, নিয়ে যান আপনি ওটা। আমার লাগেনা তো।”
সুদক্ষিণা লক্ষ্য করে হেয়ারড্রায়ারটার প্রতি আইরিনের একটা প্রচ্ছন্ন আকর্ষণও আছে। অথচ কেন যে সে ওটাকে স্থানচ্যুত করে না, তা বুঝতে পারেনা। এমন একটা সামান্য অথচ কেজো জিনিস। নিয়ে গেলেই পারে। ফেলে দিলেও পারে আইরিন। তবুও সে বিষয়ে কোনও কথাও হয় না। আপাতভাবে গম্ভীর বাড়িওয়ালিকে ঘাঁটাতেও মন চায়না সুদক্ষিণার। একাই থাকে এই এপার্টমেন্টে সে। কখনো উইকএন্ডে দু একজন বন্ধুবান্ধব আসে হয়ত। বাকি সময় ইউনিভার্সিটিতেই নিজের গবেষণার কাজ নিয়ে ব্যস্ততা তার। সুদক্ষিণার বাড়ির মালকিন আইরিন মধ্যবয়সী পুয়ের্তোরিকান স্বল্পভাষী মহিলা। বেশ কাজের বাড়িউলি। কেজো কথা ছাড়া বেশি বকেন না। মধ্যবয়সি ভাড়াটের বিষয়ে আপাতভাবে কোনও হেলদোল নেই। শুধু বলে রেখেছেন, বাড়িতে কেউ অতিথি এলে আগে থেকে বোলও। জলে যাতে টান না পড়ে।
দেশি মকান-মালকিন হলে এখুনি বেল বাজিয়ে ঘরে ঢুকে হয়তো হাঁড়ির খবর জানতে উৎসুক হত। বিয়ে হয়েছে, নাকি প্রেম করছে অথবা থাকাথাকি করছে কিনা কারও সঙ্গে। আইরিন নিজের কাজ নিয়ে ব্যস্ত। একটু দূরে থাকে। তবে নিজের ভাড়া দেওয়া বাড়িগুলোর তদারকি করতে আসে উইকএন্ডে। জমিতে মাল্চ ঢেলে দেয়। আগাছা সাফ করে। সিঁড়ি বেয়ে উঠে কাচের জানলা মোছে। মাসে একবার পালা করে হানা দেয় ভাড়া দেওয়া বাড়িগুলোতে।
প্রথম যেদিন সুদক্ষিণা তল্পিতল্পা নিয়ে এ বাড়িতে থাকতে শুরু করল তখনও তাকে নিয়ে আইরিনের কোনও আবাহন, বিসর্জন কিছুই ছিলনা। দেশি মাসিমা বাড়িউলি হলে সোজা ঘরে ঢুকেই হয়তো বলে বসতেন, “তা বলি এত বড় মেয়ে, বাপ-মা বিয়ে না দিয়ে পাঠাল বিদেশ বিভূঁইয়ে?” অথবা বিয়েওলা মেয়েকে বলেই বসতেন, “বিয়ের পরপরই মাথায় এট্টু সিঁদুর না ছোঁয়ালে চলে?” বলে নিজের সিঁদুর কৌটো খুলে এক ফোঁটা সিঁদুর সিঁথিতে, আর একটু লোহাতে ঠেকাতে গিয়েই বলে উঠতেন, “তা বৌমা? তোমার দু’হাত খালি কেন বাপু?” হয়তো শোয়ার ঘরে উঁকিঝুঁকি দিতেন। কিম্বা আড়ি পাততেন রবিবারের দুপুরে। অথবা বলেই বসতেন, “তা বলি আজ কী রান্না হল বৌমা?” কিম্বা “ছুটির উইকএন্ডে কী প্ল্যান তোমাদের” বলে আঁচলে হাত মুছতে মুছতে ঠকাস করে সেন্টারপিসের ওপর একটি মুড়িঘন্টের বাটি রেখে যেতেন। অথবা আসার দিন রাতে একবেলা নেমন্তন্ন করলেও করতে পারতেন। কিম্বা কৌতূহল বশে বলেই বসতেন হয়তো. “তা শাশুড়ি কেমন হল তোমার?” বা বিস্ফারিত নেত্রে নিজেকে কন্ট্রোল করতে না পেরে ডায়লগ ছাড়তেন, “তা কেমন গয়নাগাটি পেলে বৌমা?”
বিয়ের পর যেমন হয় আর কি দেশি মেয়েদের জীবন। স্থান কাল পাত্র ভেদে আজও এমনি অব্যাহত থাকে। নতুন জায়গায় সংসার পাতলেই অহেতুক কুতুহলী মহিলা মহল যেন একটু বেশিই সজাগ হয়ে পড়ে। আর সদ্য বিবাহিত মেয়েটি যদি পাঁচাল করতে পছন্দ করে তাহলে আর কথাই নেই। শ্বশুরবাড়ির গল্পে মুখর হয় ভিন্ পাড়ার প্রতিবেশিনীও। বাড়িউলির জন্যে মেয়ের মা একটি নমস্কারি শাড়িও হয়ত দিয়ে দেন পরের বার। আর আইবুড়ো হলে তো আর রক্ষে নেই। সন্দেহের লেখচিত্র উঠতেই থাকে তুঙ্গে। যতক্ষণ না মেয়েটির বিয়ে হয় আর বিবাহিত বর নিয়ে সে থাকতে শুরু করে।
দেশি বাড়িউলি মাসিমাদের মত পানের খিলি ঠুসে, আঁচলে চুনের হাত মুছে গল্প করার সময় আইরিনেরও নেই। আর সুদক্ষিণারও নিজের সংসার আর পড়াশুনো সামলিয়ে সূর্যোদয় আর সূর্যাস্তের সময়টুকুনি আইরিন মাসিমার সঙ্গে ওই হাই হ্যালো অবধিই, এর চেয়ে বেশিদূর কখনওই গড়ায়নি। সুদক্ষিণার বিয়ের বালাই নেই। বর, শাশুড়ি, নমস্কারি দূর অস্ত্। এখানে মেমসাহেব বাড়িউলি দয়া পরবশ হয়ে হাত পুড়িয়ে খাওয়া আইবুড়ো মেয়ের জন্য রান্না ভর্তি বাটিও আনেন না আর ভাড়াটের দ্বারা বাড়িউলি আন্টির জন্য সেই বাটি ভর্তির জন্য আদিখ্যেতাও অচল এদেশে। অতএব সম্পর্কের আবাহন, বোধন, বিসর্জন কিছুই নেই। তবে সুদক্ষিণার একাধিক বয়ফ্রেন্ড আসে এ বাড়িতে। তা নিয়ে নির্লিপ্ত আইরিনের অবিশ্যি কোনও হেলদোল নেই।
কিন্তু তার স্নানঘরে সেই ঝুলন্ত হেয়ার ড্রায়ার, অযথা চক্ষুশূল। অবাঞ্ছিত একটা জিনিস এবং সর্বোপরি বড্ড চোখে পড়ে। এই দেখনদার ঝকঝকে একটা চুল শুকনোর যন্তর সুদক্ষিণার চোখে পড়লেই পীড়া দেয় কেন কে জানে। গম্ভীর আইরিনকে মুখফুটে বলতেও পারেনা সে, “আই ডোনট নিড দিস, আই নেভার ইউজ হেয়ার ড্রায়ার। ইউ ক্যান টেক ইট ব্যাক আইরিন।” কে জানে কি থেকে কিসের সূত্রপাত হয়ে যায়! অল্পভাড়ায় ভালো লোকেশানে এদেশে বাড়িভাড়া পাওয়াও দুষ্কর যে। মুখে কুলুপ এঁটে থাকে সুদক্ষিণা।
তার ভাড়াবাড়ির লিভিং রুমটির এক কোণে একটি পেল্লায় স্ট্যান্ডিং লাইটও আছে। বাড়িউলি সেটিও রেখে গেছেন ভাড়াটিয়ার জন্য। খুব কেতাদুরস্ত সেই আলো। সুদৃশ্য ঘষা কাঁচের শেড ফুলের মত নুয়ে থাকে ঘরের কোণে। অবিশ্যি হেয়ারড্রায়ারের মত এই কেজো জিনিসটিকে সুদক্ষিণার মোটেও অবাঞ্ছিত মনে হয় না। বরং নিজেকে তার লিভিংরুমের সৌন্দর্য্যায়নের জন্য কিনে আনতে হয়নি বলে মনে মনে আইরিনকে সে ধন্যবাদ জানায়।
২
সেই উইকেন্ডে অনেক ছেলে বন্ধুরা এল সুদক্ষিণার এপার্টমেন্টে। এই প্রথম তার বাড়িতে এসেছে সবাই। কেউ বিয়ার, কেউ রেড ওয়াইন, কেউ কাবাব বানিয়ে পটলাক পার্টি। সারারাত ধরে তুমুল আড্ডা আর তর্কের তুফান তুলল পড়ুয়া ছেলেপুলেগুলো। এটাই এখানে তাদের রিক্রিয়েশন। মাঝেমাঝে একজোট হয়ে গেটটুগেদারে গা ভাসিয়ে দেওয়া। উইকেন্ড জমে যায়। আবার নতুন সপ্তাহের শুরুতে এগিয়ে চলে তারা। কেটে যায় কাজের বোরডম। পার্টি চলাকালীন তার বন্ধুদের অনেকেই সুদক্ষিণাকে প্রশ্ন করে, কী সব আওয়াজ হচ্ছে কেন রে? মানে বিপ্, বিপ্! যেমন স্মোক এলার্ম বাজে। থেমেও যায়। সুদক্ষিণা শুনেও শোনে না। ছেলেগুলো কী শুনতে কী শুনছে। তারা কিচেনে কিছুই ডিপফ্রাই করেনি যে ধোঁয়ার কারণে স্মোক এলার্ম বাজতে শুরু করবে। বারেবারে ছেলেগুলো বলার পর সুদক্ষিণার খেয়াল হল, আবার উড়িয়েও দিল সে। টয়লেটে ঢোকে। কিছুই শব্দ পায় না। আবারও চোখ পড়ে যায় সেই চক্ষুশূল হেয়ারড্রায়ারের দিকে।
রাতে পার্টি শেষে সবাই ঘুমিয়ে পড়েছিল সুদক্ষিণার ফ্ল্যাটেই। কেউ কার্পেটের ওপরে, কেউ ডিভানে, কেউ বেডরুমে। ছড়িয়ে ছিটিয়ে, এক ছাদের নিচে। ঘরময় এলোমেলো কাচের গ্লাস, প্লেট, কাঁটা, চামচ, টিস্যু… যেমন পড়ে থাকে আফটার-পার্টি আর কী। পার্টির পরদিন নিপাট ছুটির দিন। অগোছালো লিভিং রুম, ডাইনিং স্পেস সব গুছিয়ে নেবে সুদক্ষিণা। সেদিন আবার বাড়িউলির আসার দিন। মাসের একটা রবিবার এ বারেই পড়েছে। ডিসগাস্টিং। ঘুম ভাঙতেই আইরিনের কথাটা মনে পড়ে গেল সুদক্ষিণার। দেঁতো হাসি হাসতে হবে আবারও।
ভোরে উঠে রোজের মত কফি মেকারের অ্যালার্ম বাজবে না ছুটির দিনে। অতএব তাড়া নেই। কফি বানিয়ে বন্ধুদের একে একে ডেকে তোলে সুদক্ষিণা। এ বার যে যার মত নিজের ফ্ল্যাটে ফিরে যাবে। ঘর গুছোতে থাকে সুদক্ষিণা। ডোর বেল বেজে ওঠে। আইরিন এল বুঝি। ঠিক তাই। যেমন ভাবা তেমনি। এসেই সোজা সে কিচেন সিংক, স্মোক অ্যালারম পরখ করে। সুদক্ষিণা দাঁতে দাঁত চেপে থাকে। হ্যাঁ গো বুড়ি হ্যাঁ। তোমার সব স্থাবর, অস্থাবর সম্পত্তি যথাস্থানেই আছে। কী মায়া রে বাবা জীবনের! টাকা দিয়ে তো থাকি তোমার বাড়ি। ড্যামেজ হলে ছেড়ে দেব যখন, তখন তো ঘাড় মটকে ডলার নেবে তুমি কম্পেনসেশন হিসেবে। তবুও মাসে মাসে এসে এত কী দেখার আছে !
এ বার আইরিন গুটিগুটি ওয়াশরুমে ঢোকে প্রতিবারের মতোই। সুদক্ষিণা বলে, “ইটস ওকে, নাথিং ইজ রং সো ফার।” একে একে সব দেখে আইরিন। সুদক্ষিণা রাগে বলে ওঠে এবার, “প্লিজ টেক ইওর হেয়ারড্রায়ার। আই হ্যাভ ওয়ান অফ মাই ওন।” আইরিন অসন্তুষ্ট হয় যেন মনে মনে। বলে ওঠে, “হোয়েদার আই টেক ইট অর লিভ ইট, দ্যাটস মাই বিজনেস।” সুদক্ষিণার এবার সন্দেহ হয়। যে মেয়েমানুষের বাড়ির প্রতিটি জিনিসের ওপর এত মায়া, সে কেন অমন একটা দামি হেয়ারড্রায়ার ভাড়াটের বাথরুমে রেখে দেয় দিনের পর দিন? জটিল রহস্য দানা বাঁধে তার মনে। আইরিনকে লক্ষ্য করে সে। আইরিন বাইরে আসে। লিভিং রুমে। লিভিং রুমের কোণায় গিয়ে পা উঁচু করে দেওয়াল থেকে স্ট্যান্ডিং লাইটটা সন্তর্পণে খুলে নেয়। যেন বাল্ব বদল করছে এমন ভাব করে। সুদক্ষিণা যে তাকে বাথরুমের আয়না দিয়ে আড়াল থেকে দেখছে আইরিন জানে না। ব্যাটারির মত কিছু বদল করে সে। আলোটার মধ্যে পুরে দেয় কিছু একটা। এবার চুপচাপ বাই বলে চলে যায় প্রতিবারের মতোই। সুদক্ষিণা দরজা বন্ধ করে।
জীবনে প্রথম সেই দামি, কর্নার ল্যাম্পটিকে হাতে তুলে নেয়। কৌটোর মত প্যাঁচ মনে হচ্ছে। ঘোরাতেই খুলে যায়। এবার সে আবিষ্কার করে ছোট্ট একটা ডিভাইস! ব্যাটারি অপারেটেড। চার্জে লাগানো থাকলে বাড়িতে ছেলেদের গলা শুনলেই জেগে ওঠে সে। সব কথাবার্তা রেকর্ডেড হয় সেখানে। সুদক্ষিণার অ্যাডভাইজারের ল্যাবে এমন দেখেছিল সে। সুদক্ষিণার ঘেন্না হয় আইরিনের প্রতি। ছিঃ। টাকার প্রয়োজনে বাড়ি ভাড়া দেয়, আবার আড়ি পাতে ভাড়াটের ঘরে? আইরিনের প্রবলেম সুদক্ষিণা বা অন্য কোনও মেয়ে নয়! বাড়িতে কোনও ছেলে এলেই মেল ভয়েস রেকগনাইজ করে সেই যন্ত্র। তাই বুঝি সেদিন সুদক্ষিণার বন্ধুরা সারাক্ষণ বিপ্ বিপ্ শব্দ শুনেছে! মিলে যায় ইক্যুয়েশন। এ তো হোটেলের ঘরের মধ্যে সিসি ক্যামেরা রাখার মত ক্রাইম! এনাফ ইজ এনাফ, আইরিন! এ বাড়ি ছেড়ে দেব আমি। ভাড়াবাড়িতে নিজের কোনো প্রাইভেসি নেই? পরদিন একটি উকিলের চিঠি পাঠাবে বলে মনস্থির করে সুদক্ষিণা।
এ বার সে বুঝতে পারে ফেসবুক দেখে ভাড়াবাড়ি নির্বাচন করার অসুবিধা। পূর্বতন ভাড়াটেদের সঙ্গে আইরিন নাকি একটু বেশি বকবক করত। সেই বাচালতার খবর ছড়িয়েছে আন্তর্জালেও। তারা তাই রেটিং খুব কম দিয়েছিল ওই বাড়ির । শহরের সবকিছু অত নাগালের মধ্যে তাই বাড়িটা নির্বাচন করেছিল রেটিং এর মাথা খেয়ে। বাকি সব ঠিকঠাক ছিল। এই কারণেই বুঝি আইরিনের মুখে কুলুপ আঁটা! সে নিঃশব্দে কাজ সারে! একলা বুড়ির নেই কাজ তো ভাড়াটের খই ভাজ। দিশি বাড়িউলির চেয়ে আইরিন আরেক ধাপ ওপরে। তাঁদের দৌড় ঐ আড়িপাতা অবধি। অন্যের ব্যাপারে কিউরিওসিটির একটা লিমিট আছে তো। তাই বলে ভয়েস রেকর্ডার রেখে ভাড়াটের ঘরে আড়ি পাতবে?
এর পরেই মনে পড়ে তার। বাথরুমের সেই হেয়ার ড্রায়ারটায় আবার তেমন কোনও ফাঁদ পাতা নেই তো? কে জানে সেটা হয়তো সিসি ক্যামেরা! এবার থেকে স্নানের আগে ভাবতে হবে কোথাও কোন ক্যামেরা সাঁটা আছে কিনা! কিন্তু তার আগে অবিশ্যি এ বাড়ি সুদক্ষিণা কে ছাড়তেই হবে।
রসায়নের ছাত্রী ইন্দিরা আদ্যোপান্ত হোমমেকার। তবে গত এক দশকেরও বেশি সময় যাবৎ সাহিত্যচর্চা করছেন নিয়মিত। প্রথম গল্প দেশ পত্রিকায় এহং প্রথম উপন্যাস সানন্দায় প্রকাশিত হয়। বেশ কিছু বইও প্রকাশিত হয়েছে ইতিমধ্যেই। সব নামীদামি পত্রিকা এবং ই-ম্যাগাজিনের নিয়মিত লেখেন ছোটগল্প, ভ্রমণকাহিনি, রম্যরচনা ও প্রবন্ধ।
বাহ্ বেশ গল্প
চমৎকার
দিব্যি লাগল।আমি আগেও আপনার লেখা পড়েছি।এখন আপনার নাম টি বেশ টানে আমাকে।
Khub valo laglo.
খুব ভালো লাগল, কিন্তু হেয়ার ড্রায়ারের রহস্য উদ্ঘাটন হলো না যে
It’s good but the mistry of hairdryer is not solved
ভাল লাগল
Hair dryer er Mistry to Mistry e theke galo
কোথাও কি রহস্য উন্মোচন করার কথা ছিল? ছোটোগল্পের খিদে রেখে দিলাম পাঠকের জন্য। স্ট্যান্ডিংলাইটে যেমন কিছু ফাঁদ পাতা তেমনি থাকতেই পারে হেয়ার ড্রায়ারে। সেটা পাঠক ভাবুক। গল্পের নাম কিসসা। রহস্য নয় কিন্তু।