পার্ল এস বাক-এর লেখা ‘দ্য গুড আর্থ’ পড়তে গিয়ে ‘লোটাস ফিট’ এবং ‘চাইনিজ় ফিট বাইন্ডিং’ সম্পর্কে প্রথমবার জেনেছিলাম। যদিও এর ভয়াবহতা সম্পর্কে কিছুই বুঝিনি তখন। ভেবেছিলাম সে যুগে যেহেতু মোজা ছিল না, তাই বোধহয় চিনের মেয়েরা সিল্কের টুকরো দিয়ে পা বেঁধে রাখতেন। পরবর্তীকালে চাইনিজ় বান্ধবী জেনি ব্যাপারটা বুঝিয়ে বলায় আতঙ্কে শিউরে উঠেছিলাম।
ফিট বাইন্ডিং শব্দটি যদি প্রথমবার শুনে থাকেন তাহলে জানিয়ে রাখি যে এর অর্থ শুধু পা বেঁধে রাখাই নয়; বরং রীতিমতো ভেঙেচুরে, ভাঙা পা বেঁধে রেখে মেয়েদের পার্মানেন্টলি বিকলাঙ্গ করে দেওয়া হত। এমন যন্ত্রণাদায়ক বিউটি রিচ্যুয়াল মেনে চলার পেছনে কারণ ছিল অবশ্য একটিই, তা হল ধনী পাত্রের সঙ্গে মেয়ের বিয়ে! জেনি পরিষ্কার বলেছিল,
– বিশ্বাস করবে কিনা সেটা তোমার ব্যাপার, কিন্তু ফিট বাইন্ডিং ব্যাপারটা পুরুষতন্ত্রের চাপিয়ে দেওয়া অভিশাপ ছিল না। মেয়েরা নিজেরাই বেছে নিয়েছিল সেই যন্ত্রণা। এখন যেমন আমরা স্বেচ্ছায় পেনসিল হিল জুতো পরি, নিয়মিত ওয়্যাক্সিং করে শরীরকে নির্লোম করে রাখি, সেই যুগেও ব্যাপারটা ছিল ঠিক তেমনি।
আমি অবাক হয়ে বলেছিলাম,
– আশ্চর্য, হাই হিলস পরার সঙ্গে পার্মানেন্টলি পা ভেঙে ফেলার তুলনা করছ তুমি!
জেনি নিজের মাথায় দুবার টোকা মেরে বলেছিল,
– ব্রেইনওয়াশ করলে সব সম্ভব। হাসিমুখে ব্যথা সহ্য করাটা নারীত্বেরই একটা অংশ হিসেবে ধরা হত। তাছাড়া ধর্ম আর নীতির বাহানায় মেয়েরা নিজেরাই নিজেদের চোখের ওপর পট্টি বাঁধে। ও ব্যাপারে অন্য কাউকে দোষ দিয়ে লাভ নেই।
চিনদেশে প্রায় এক হাজার বছর ধরে চলতে থাকা এই অদ্ভুত নিয়মের শুরু হয়ে ছিল দশম শতাব্দীতে সম্রাট লি ইউ (Li Yu)-এর রাজ দরবারে। কিংবদন্তী বলে যে রাজনর্তকী ইয়াও নিয়াং (Yao Niang) ছিলেন জন্মসূত্রে বিকলাঙ্গ। তাঁর পায়ের আঙুলগুলি ছিল ভেতর দিকে বাঁকানো। এই কারণে তিনি পা দুটি তিনি রেশমের কাপড় দিয়ে বেঁধে রাখতেন সবসময়। তবে এমন বিকৃতি থাকা সত্ত্বেও তিনি পায়ের গোড়ালির ওপর ভর দিয়ে হাঁটতেন এবং নাচতেন, এবং ওভাবে হাঁটার কারণে শরীরের নিম্নাংশে প্রচন্ড চাপ পড়ত। যার ফলস্বরূপ তাঁর নিতম্ব ও উরুর গঠন হয়ে দাঁড়ায় ঈর্ষণীয়।
সম্রাটের দরবারে পদ্মের আকারে তৈরি মঞ্চে ইয়াও নিয়াং তাঁর পদ্মনৃত্য (Lotus Dance) প্রদর্শনের পর সম্রাট লি ইউ তাকে প্রেম নিবেদন করে বসেন। পরবর্তীকালে অন্যান্য রাজনর্তকীরাও সম্রাটের প্রিয় পাত্রী হয়ে ওঠার জন্য ইয়াও নিয়াং-এর মতো হাঁটতে শুরু করেন, এবং তাঁদের দেখাদেখি রাজপুরুষদের ঘরের মেয়েরাও এই নিয়ম অনুসরণ করতে শুরু করেন। সম্রাটের প্রেয়সী রাজনর্তকী নিয়াং-এর বিকলাঙ্গ চরণ যুগলের নাম হয় ‘লোটাস ফিট’ (Lotus feet) এবং রাতারাতি তা হয়ে ওঠে তৎকালীন চিন দেশের মোস্ট ওয়ান্টেড ফ্যাশন স্টেটমেন্ট। আক্ষরিক অর্থেই ‘শ্রীচরণকমল’-এর চাহিদা এতটাই বাড়াবাড়ি রকমের হয় যে তা মেনে চলার জন্য অভিভাবকেরা তাঁদের শিশুকন্যাদের পা দু’খানা ভেঙে ফেলতেও দ্বিধা বোধ করতেন না। 960 সালে সং (Song) বংশের রাজত্বকালে মেয়েদের সৌন্দর্য্য এবং আভিজাত্যের প্রায় সমার্থক হয়ে দাঁড়ায় লোটাস ফিট। মাত্র তিন ইঞ্চি লম্বা ক্ষুদ্রতম পদ্মকলির মতো পায়ের আকার ছিল আদর্শ। তাকে বলা হত স্বর্ণকমল (Golden Lotus)। চার ইঞ্চি আকারের পায়ের নাম ছিল রৌপ্যকমল (Silver Lotus) এবং পায়ের আকার পাঁচ ইঞ্চি এর চাইতে বড় হলে তার নাম হত লৌহকমল (Iron Lotus)। বলাইবাহুল্য স্বর্ণকমল পায়ের চাহিদা ছিল সবচাইতে বেশি, এবং পায়ের আকার তার চাইতে বড় হলে মা-বাবারা রীতিমতো চিন্তায় পড়ে যেতেন।

ফিট বাইন্ডিং-এর জন্য আদর্শ মনে করা হত চার থেকে সাত বছর বয়সী বাচ্চা মেয়েদের। কেননা চার বছরের কম বয়সী শিশুর পক্ষে অতখানি যন্ত্রণা সহ্য করা সম্ভব নয়, আবার সাত বছরের পর পায়ের হাড় অতিরিক্ত শক্ত হয়ে যায়। রীতিমতো পাজিপুঁথি দেখে শুভদিন স্থির করা হত। তারপর নির্দিষ্ট দিনে দেব দেবীদের কাছে মন্ত্র পড়ে, পুজো দিয়ে পা বাঁধার রিচ্যুয়াল শুরু করা হত। পরিবারের বয়স্ক মেয়েরা অথবা ধনী পরিবারের ক্ষেত্রে পেশাদার বাঁধিয়েরা এরপর ভেষজ ঔষধি ভেজানো পশুর রক্তে শিশুটির পায়ের পাতা দীর্ঘ সময় ডুবিয়ে রাখতেন। তারপর আরও কিছুক্ষণ ধরে সুগন্ধি তেল এবং মাখন দিয়ে মালিশ করা হত পায়ের পাতা দু’টি। এরপর দু’পায়ের বুড়ো আঙুল দু’টি বাদে বাকি সবকটি আঙুলের নখ গোড়া থেকে কেটে, আঙুলগুলি ভেঙে, বাঁকিয়ে পায়ের নীচে বেঁধে রাখা হত। পায়ের আঙুল ভাঙার পর পায়ের পাতার মাঝখানের অংশটিকে দুমড়ে, মুচড়ে ভেঙে, বিকলাঙ্গ চরণ যুগল প্রায় দশ ফুট লম্বা কাপড়ের টুকরো দিয়ে চেপে বেঁধে রাখা হত। এরপর শিশুটিকে ভাঙা পায়ে ভর দিয়ে দীর্ঘ সময় হাঁটতে বাধ্য করা হত প্রতিদিন। এছাড়া প্রতি সপ্তাহে পায়ের বাঁধন খুলে ক্ষতস্থান পরিস্কার করে, আবার নতুন বাঁধনে বেঁধে রাখা হত তাদের পা। এমনভাবে কয়েক বছর পর্যন্ত চালানো হত, অর্থাৎ যতক্ষণ না তারা পার্মানেন্টলি বিকলাঙ্গ হয়ে যাচ্ছে।
সে যুগের চিনদেশে পুরুষদের চোখে বাঁধা পায়ের মেয়েরা ছিলেন অন্যান্যদের তুলনায় অনেক বেশি সুন্দরী। প্রচলিত বিশ্বাস ছিল যে, পা বেঁধে রাখার ফলে মেয়েদের জননাঙ্গ, নিতম্ব এবং উরু হয়ে ওঠে বেশি আকর্ষণীয়। পুরুষদের সমর্থনের কারণ না হয় বোঝা গেল, কিন্তু আগেই বলেছি যে এই প্রথা জনপ্রিয় করেছিল মেয়েরা নিজেরাই। ফিট বাইন্ডিং-এর শিকার মেয়েরা হলেও দশম শতাব্দী থেকে বিংশ শতাব্দী পর্যন্ত এই বীভৎস নিয়মের রাশ কিন্তু ছিল মেয়েদের হাতেই। পুরুষেরা শুধু তাদের সমর্থন করেছিল এই যা। ফিট বাইন্ডিং-এর সামাজিক ও অর্থনৈতিক তাৎপর্য দেখলে সহজেই এমন পরস্পরবিরোধী ব্যবহারের পেছনে যুক্তি খুঁজে পাওয়া যায়।

প্রথমত, ফিট বাইন্ডিং ছিল মেয়েদের জন্য সহজেই বিউটি কুইন হয়ে ওঠার সবচাইতে সহজ (!) রাস্তা। ভেবে দেখুন ব্যাপারখানা। বাঁধা পায়ের কৃপায় সৌন্দর্য্য ব্যাপারটি শুধুমাত্র জন্মগত বা জিনগত হয়ে রইল না। দরিদ্র্য পরিবারের, নিতান্ত সাধারণ দেখতে একটি মেয়ের পক্ষেও শুধুমাত্র বাঁধা পায়ের গুণে সুন্দরীশ্রেষ্ঠা হয়ে ওঠা সম্ভব হল। সেই সময় নিম্নবিত্ত পরিবারগুলিতে তাদের প্রথম কন্যাসন্তানের পা বেঁধে দেওয়া হত, কারণ কোনওভাবে তার জন্য একটি ধনী পাত্র জুটে গেলে মেয়েটির পরিবারের সামাজিক অবস্থান রাতারাতি বদলে যাবে। অন্যান্য কন্যাসন্তানদের জন্য এমন কোনও নিয়ম ছিল না। তবে উচ্চবিত্ত পরিবারের ক্ষেত্রে প্রতিটি নারী সদস্যের জন্য লোটাস ফিট ছিল বাধ্যতামূলক, এবং মেয়েদের পোশাক ও সাজসজ্জার অন্যতম উপকরণ ছিল তাদের ছোট্ট, ত্রিকোণাকৃতির লোটাস শ্যুজ় অর্থাৎ পদ্মপাদুকা।
তৎকালীন চিন দেশে পুরুষ সন্তানদের থেকে আশা করা হত শৈশবে পড়াশোনা এবং যৌবনে কায়িক শ্রম। তেমনি পরিবারের মেয়েদের থেকে আশা করা হত ভাঙা পায়ের যন্ত্রণা সহ্য করার ক্ষমতা। বিকলাঙ্গ পা নিয়ে মেয়েটি দৈনন্দিন কাজকর্ম করবে কী করে? এই স্বাভাবিক প্রশ্নের উত্তর ছিল বেশ সহজ। ধনী ঘরে বিয়ে হলে কাজকর্ম করার জন্য প্রচুর দাসদাসী থাকবে। মেয়ে তখন শুয়ে বসে দিন কাটাতে পারবে। তার চলাফেরা করার প্রয়োজনই থাকবে না। চিনের বিখ্যাত প্রবাদ বাক্য “ছেলের কান্না পড়তে বসে, মেয়ে কাঁদে বাঁধা পায়ের দোষে!” (Teng er bu teng xue, teng nu bu, teng jiao) –র জন্মও হয় এই একই কারণে।

এছাড়া লেখক ও গবেষক অ্যামান্ডা ফোরম্যানের মতে তৎকালীন চিনে “নতুন কনফুশিয়ানিজমের দর্শনধারা অনুযায়ী একজন আদর্শ গৃহবধূর জীবনের একমাত্র উদ্দেশ্য ছিল তার স্বামীর সেবা, পুরুষ সন্তানের জন্ম দেওয়া এবং স্বামীর পরিবারের জন্য সবরকমভাবে ত্যাগ করতে জানা।” এর বাইরে মেয়েদের অন্য কোনও রকমের উচ্চাশা থাকলে তা সমাজের চোখে অত্যন্ত নিন্দনীয় হত। শৈশবে পায়ের যন্ত্রণার মাধ্যমে মেয়েটিকে জানিয়ে দেওয়া হত যে আগামী জীবনে এমন বহু যন্ত্রণা তাকে হাসিমুখে সহ্য করতে হবে। তাই সে যেন পরিস্থিতির সঙ্গে অল্প বয়সেই মানিয়ে নিতে শেখে।
সমাজবিজ্ঞানীরা ফিট বাইন্ডিং-এর অর্থনৈতিক তাৎপর্য্য নিয়ে যথেষ্ট সন্দিহান ছিলেন একসময়। চিনের মতো অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী দেশ প্রায় এক হাজার বছর ধরে কোটি কোটি মেয়েদের বিকলাঙ্গ করে রেখেছে শুধুমাত্র শো পিস হিসেবে সাজিয়ে রাখার জন্য, একথা কখনই বিশ্বাসযোগ্য হতে পারে না। পৃথিবীর যে কোনো দেশের প্রতিটি সফল এবং দীর্ঘ সময় ধরে চলতে থাকা সংস্কারগুলির পেছনে অতি অবশ্যই অর্থনীতির প্রভাব থাকে, এবং চিনের ফিট বাইন্ডিং প্রথাও এই নিয়মের ব্যতিক্রম ছিল না। এ ব্যাপারে খোঁজখবর করতে গিয়ে গবেষকরা দেখলেন যে দশম শতাব্দির শেষের দিকে মেয়েদের স্বাভাবিক চলাফেরা বন্ধ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই উত্তর চিনের বয়নশিল্প রাতারাতি ফুলে ফেঁপে উঠেছিল। আবার বিংশ শতকের শুরুর দিকে বৈদ্যুতিক তাঁতকলের ব্যবহার শুরু হওয়ার পর এবং ক্রিশ্চান মিশনারিদের শিক্ষার প্রভাবে এই প্রথার জনপ্রিয়তা হঠাৎ কমে যায়। আপনি নিশ্চয় ভাবছেন যে সেটা কী করে সম্ভব? বিকলাঙ্গ মেয়েদের সঙ্গে বয়নশিল্পের সম্পর্ক কোথায়, তাই তো?

দেখুন, বয়ন শিল্পের সঙ্গে জড়িত প্রধান কাজগুলি ছিল তুলো থেকে সুতো তৈরি, তাঁতে কাপড় বোনা এবং সূচসুতো দিয়ে পোশাকে এমব্রয়ডারি। প্রত্যেকটির জন্যই প্রচুর ধৈর্য্যের প্রয়োজন, এবং বসে না থাকলে এই কাজগুলি করা অসম্ভব। মেয়েরা যখন স্বাভাবিকভাবে হাঁটাচলা করতেন, তখন তাঁরা ঘুরে বেড়াতে বা ছোটাছুটি করতে ভালোবাসতেন। কিন্তু ফিট বাইন্ডিং প্রথা শুরু হওয়ার পর হাঁটতে বা দাঁড়াতে তাঁদের এতটাই কষ্ট হত যে তাঁরা স্বেচ্ছায় সারা দিন সুতো কাটা বা কাপড় বোনার মতো কাজ বেছে নিতেন। কাজেই রাতারাতি বয়ন শিল্পের উৎপাদন প্রায় দশগুণ বেড়ে যায়। আবার ঠিক একই কারণে উত্তর চিনের তুলনায় চিনের দক্ষিণাংশে লোটাস ফিট ঠিক ততটা জনপ্রিয় হয়ে উঠতে পারেনি। কারণ সেই সময় চিনের উত্তরাংশ বয়ন শিল্পের ওপর নির্ভরশীল হলেও দক্ষিণ চিনের অর্থনীতি দাঁড়িয়ে ছিল কৃষিকার্যের ওপর। বুঝতেই পারছেন, চাষবাসের মতো কাজকর্ম বাঁধা পায়ের মেয়েদের পক্ষে করা সম্ভব নয়। অতএব তাঁরা প্র্যাক্টিক্যাল কারণেই ফিট বাইন্ডিং প্রথাটিকে জনপ্রিয় হয়ে উঠতে দেননি। চিনের হাক্কা কমিউনিটির লোকেরাও নিয়ম করে ফিট বাইন্ডিং ব্যাপারটিকে এড়িয়ে চলতেন। কারণ তাঁদের প্রধান পেশা ছিল মাছ ধরা। বলাইবাহুল্য নৌকোয় দাঁড়ানো বা মাছের জাল টানার মতো কাজ খুব শক্তসমর্থ পা না থাকলে করা অসম্ভব। কাজেই সঙ্গত কারণেই তাঁরাও লোটাস ফিট-এর হাতছানি এড়িয়ে গিয়েছিলেন।
অর্থাৎ সবদিক থেকে ভেবে দেখলে বুঝবেন যে, এমন ভয়াবহ প্রথার জন্ম এবং সার্থকভাবে টিঁকে থাকার পেছনে উদ্দেশ্য কিন্তু ছিল ওই একটিই– সামাজিক এবং অর্থনৈতিক ক্ষমতালাভ। তবে এসব নিয়ে বেশি জাজমেন্টাল না হওয়াই বোধহয় বুদ্ধিমানের কাজ হবে। কারণ, আমরা এখন, এই ডিজিটাল যুগে বসে সেকালের চিনে মেয়েদের পদ্মচরণ দেখে চোখ কপালে তুলে “ইস্ কী ভয়ঙ্কর” বলছি। কে জানে, হয়তো আজ থেকে হাজার বছর পর আমাদের এই সময়ের বেলি বাটন পিয়ার্সিং বা এমন কোনও বিউটি ট্রেন্ডের ব্যাপারে জানলে আমাদের উত্তরসূরীরাও আঁতকে উঠবে। বডি অল্টারেশনের ব্যাপারে আমাদের প্রজন্মও কিন্তু খুব বেশি পিছিয়ে নেই। ওয়্যাক্সিং, থ্রেডিং, কান ফুটো, নাক ফুটো বা ট্যাটুর মতো ছোটখাটো অল্টারেশন ছাড়াও মানুষ আজকাল ঈশ্বরদত্ত শরীরের গঠন বদলাতে অপারেশন থিয়েটারেও নির্দ্বিধায় ঢুকে যান। শরীরের বিভিন্ন অংশে বিষাক্ত সিলিকন ঢোকাতেও আমাদের আপত্তি নেই। ফিট বাইন্ডিং-এর তুলনায় সেই যন্ত্রণাই বা কম কীসে!
তথ্য সৌজন্য:
Women and the Family in Chinese History — Patricia Buckley Ebrey
trc-leiden.nl
Every Step a Lotus: Shoes for Bound Feet — Dorothy Ko
https://www.ancient.eu/Foot-Binding/
https://www.smithsonianmag.com/history/why-footbinding-persisted-china-millennium-180953971/
ছবি সৌজন্য: Reuters, Itv, Reddit
যূথিকা উত্তরবঙ্গের মেয়ে। পেশায় রেস্তোরাঁ ম্যানেজার। ভারতবর্ষের পাঁচটি শহরে বড় কিছু গ্রুপের সঙ্গে কাজ করার পর অস্ট্রেলিয়ায় পাড়ি দেন। ঘুরতে ঘুরতেই লেখালিখির সূত্রপাত। আপাতত মেলবোর্নে একটি নামী রেস্তোরাঁর দায়িত্বে আছেন। যূথিকা বিভিন্ন দেশের খাদ্যাভ্যাস এবং জীবনযাত্রা নিয়ে দুই বাংলার বেশ কিছু পত্রপত্রিকায় নিয়মিত লেখেন। প্রথম বই "আশাবরী" দুই বছর আগে প্রকাশ পেয়েছে। ভ্রমণ সম্পর্কিত লেখা ছাড়াও মুক্ত গদ্য এবং গবেষণাধর্মী প্রবন্ধ লিখতে ভালোবাসেন।
বোন, দারুণ লাগল পড়তে…
অনেক ধন্যবাদ দাদা।
অনেক ধন্যবাদ।