আমি ছোটবেলা মায়ের সঙ্গে প্লেনে করে ফ্লোরিডায় গেছিলাম। বাবা তখন ওখানে থাকত। আমরাও ওখানে গিয়ে থাকতে লাগলাম। সেই বাড়িটা ছিল দারুণ সুন্দর। আমার রোজ সেই বাড়িটার কথা মনে হয়। আমি ওই বাড়িটার ছবি এঁকেছি।
ওই বাড়িটায় যেমন শোবার ঘর ছিল তেমন এঁকেছি। খাটের পাশে ল্যাম্প থাকত। বড় বড় আলো। আমি পাছে ভেঙে ফেলি তাই মা-বাবা সরিয়ে রাখত। আর স্নানের জন্য বাথটব ছিল। আমি সেখানে সাঁতার কাটতাম। আমার ব্যাঙ পুতুল ছিল। ওদের নিয়ে। তবে সত্যি সত্যি সাঁতার কাটার জন্য বাড়ির সামনে একটা ইয়াআআব্বড় সুইমিং পুলও ছিল।
সুইমিং পুল আমার ফেভারিট, জানো তো? আমি জলে ভয় পেতাম তখন। ছোট ছিলাম তো। তাই মা-বাবা কোলে করে জলে নামাত। মা-বাবা আর সব কাকু মিমিরা জলে বল দিয়ে খেলত। বাবা রোজ তাড়াতাড়ি অফিস থেকে বাড়ি চলে আসত। তারপর খুব মজা হত। আমি জলে আর মাটিতে ছুটোছুটি করতাম। একবার সুইমিং পুলের ধারে একটা বাক্সে আগুন জ্বালিয়ে আমরা পিকনিক করেছিলাম। সেটার নাম বার-বি-কিউ।
আমি তাই ছবিতে সুইমিং পুলটা এঁকেছি। ওই যে রঙিন গোলগুলো দেখছ, ওগুলো গায়ে পরে জলে নামলে কেউ ডোবে না। আমি ওগুলোতে চড়ে জলে ভাসতাম। ওখানে আকাশ সব সময় টুকটুকে নীল রঙের থাকত। মাঝে মাঝে বৃষ্টি হত। আর আমাদের বাড়িতে একটা সিঁড়ি ছিল। কিন্তু সেটা দিয়ে উঠতে গেলেই মা বকত। কিন্তু সিঁড়িটা আমার খুব ভাল লাগত। তাই বাড়ির মধ্যে বাদামি রঙের সিঁড়ি এঁকেছি।
ওই বাড়ির পাশেই নদী আর সমুদ্র ছিল। নৌকোও চলত। কিন্তু পাতায় তো আর জায়গা ছিল না। তাই ওগুলো আঁকতে পারিনি।
*বৈশাখের বক্তব্যের উপর ভিত্তি করে লিখে দিয়েছেন পল্লবী মজুমদার।
বৈশাখের বয়স সাত। একদণ্ড স্থির হয়ে বসা তার না-পসন্দ। এই সে সাজছে পাওয়ার রেঞ্জার কিংবা স্পাইডারম্যান, পরমুহূর্তেই হয়ে যাচ্ছে সপ্তদ্বীপের রাজামশাই! এক্ষুণি পায়ে হাতে বাস্কেটবল, পাঁচ মিনিট পরেই পাজ়ল নিয়ে উপুড়। পড়াশুনো তার পোষায় না। সারাদিন ছবি আঁকা, খেলা, গল্প শোনা, লাফালাফি করাতেই তার প্রাণের আরাম। অ্যালার্জির জন্য অনেক কিছু খাওয়া তার বারণ। তা সত্ত্বেও আইসক্রিম, দইবড়া, মিষ্টি হলুদ পোলাও আর মাটন খেতে খুব ভালোবাসে বৈশাখ।
বৈশাখ, আমার যদি এমন সুন্দর একটা বাড়ি থাকতে, কী আনন্দই না হত।