জীবন থেকে জীবনে: পর্ব ২৩

Bookmark (0)
Please login to bookmark Close
Jessore and Khulna tour

আগের পর্বের লিংক: [] [] [] [] [] [] [] [] [] [১০]
[১১] [১২] [১৩] [১৪] [১৫] [১৬] [১৭] [১৮] [১৯] [২০] [২১] [২২]

জীবনে প্রথমবার পিতৃভূমি দর্শন করার অভিজ্ঞতা যে কী অপূর্ব এবং প্রায় কী অলৌকিক তা ভাষায় বর্ণনা করতে পারব না। শিশুকাল থেকে শুনে এসেছি খুলনার কথা, অথচ খুলনা তখন বিদেশ। শ্বেতপাথরের থাম ও মেঝের বাড়ি। বাড়ি ঘিরে জাফরির কাজ। ছড়ানো বাগান, তাতে ময়ূর পোষা। বাড়ির নানা ঘরে ছড়িয়ে বাবার চল্লিশ আলমারি বই। পার্টিশনের পরেও পাসপোর্ট সঙ্গে করে বাবা গাড়িতে করে বেশ ক’বার খুলনা গেছেন উকিল হিসেবে ওখানকার মামলা লড়তে। শেষ একসময় তাও থেমে গেছে।

বাবা চলে যাওয়ার পর ওই বাল্যকাল থেকে বুকভরা শখ পোষণ করে এসেছি ওঁর ওই লাইব্রেরি আর সাধের ভিটে দেখার। এতটা কাল একটা ফ্রেমে বাঁধানো ছবি দেখেই আশ মিটিয়েছি, এবার সেই পিতৃস্থান চাক্ষুষ করতে পারব। এতদিন মোল্লার দৌড় মসজিদ অব্দির মতো যাতায়াত করেছি বনগাঁ বর্ডার পর্যন্ত। একবার ওই প্রান্তসীমায় দাঁড়িয়ে জুলজুল করে তাকিয়ে ছিলাম তখনকার পূর্ব পাকিস্তানের দিকে। পাশে দাঁড়ানো বন্ধুকে বলেছিলাম, “আমরা কিন্তু ওই পারের।”

আর আজ সেই ‘ওই পারের’ দিকেই যাচ্ছি আমরা। সামনের সিট থেকে ধীরেনবাবু এক সময় আমাকে উদ্দেশ্য করে বললেন, “পার্টিশনের পর বাড়ির সবাই এক-আধবার খুলনা গেছেন, তাই তো?” বললাম, “ঠিক তাই।” ধীরেনবাবু বললেন, “শুধু তোমারই আসা হয়নি।” প্রায় বুজে আসা গলায় বললাম, “হ্যাঁ।” তখন ধীরেনবাবু সেই সুন্দর কথাটা বললেন, “যারা দেশ হারায়নি তারা এই ব্যথা বুঝতে পারবে না।” বললাম, “আমার জন্মই তো কলকাতায়। খুলনা ভাবলে বাবা, মা, কাকার যন্ত্রণার কথা ভাবি।” তখন সদা রসিক ধীরেনবাবু মজা করলেন, “হিন্দুস্থান স্ট্যান্ডার্ড যদি তোমাকে তাদের খুলনা করেসপন্ডেন্ট করে,—আসবে?” উনি কথা শেষ করার আগেই বলে দিয়েছিলাম, “হ্যাঁ।” আর ওই বলার মধ্যে কীরকম একটা হৃদয়ের ছোঁয়া ছিল, আর গাড়ির সবাই কীরকম উচ্ছ্বাসের সঙ্গে হা হা করে হেসে উঠল।

মনে আছে সবার গলায় আমার এই অনুভূতির সমর্থন শুনে একটা ইংরেজি লোকসত্য উচ্চারণ করেছিলাম: You can take the boy out of the farm but not the farm out of the boy.

তা শুনে বরুণ বললেন, “পিতৃভূমি বা মাতৃভূমি কী তা তো ঢাকা, খুলনা, যশোহর, ময়মনসিঙের মানুষ নিজেদের রক্ত দিয়ে দেখিয়েই ছিল।”

আমাদের এপার বাংলা ছেড়ে কখন আমরা ওপারে চলে এসেছি বুঝতেও পারিনি, গাছপালা খেতখামার আকাশে এমন এক নিরবচ্ছিন্নতা। সীমান্তরক্ষীও নেই কোথাও যে দেশ বিভাজন খেয়ালে আসবে। আমরা যশোহরে এসে পড়েছি এই ভাবটা জানান দিল বোমাবারুদে তছনছ কিছু বাড়ি, টেলিগ্রাফে ছেঁড়া তার, কিছু ভাঙা গাড়ি ও ট্যাঙ্ক। এবং ঝলমলে রোদে প্রায় নিস্তব্ধ ও জনমানবহীন এক জনপদ। যার নাম যশোহর।

এক চায়ের দোকান আবিষ্কার করা গেছিল। আমরা সেখানে চা, বিস্কুট নিয়ে রাস্তায় দাঁড়াতে আমাদের ঘিরে আট-দশজনের একটা জটলা তৈরি হল। আমাদের দশ-বিশটা প্রশ্নের পঞ্চাশ-একশো জবাবও মিলল। সবাই কীরকম রাজাকার আর পাক সেনাদের শয়তানির ছবি তুলে ধরছে। একজন দূরের একটা অ্যালা রঙের বাড়ি দেখিয়ে বলল, “ওইখানেই তো হেডমাস্টার মশায় আর তেনার ফেমিলিকে আটকায় রাখল তিনদিন। তারপর খুলনায় ইন্ডিয়ার বোমা পড়তিছে সেই খবরে রাস্কেলগুলো পিট্টান দেলো।”

Jessore 71 Old image
মুক্তিযুদ্ধের সময়কার যশোর

তারপর পায়ে হেঁটে শহরকেন্দ্র ঘোরা হল একসময়। এক মায়াময় নির্জনতা ছেয়ে আছে, পরিবেশটায়। বরুণ একজনকে জিজ্ঞেস করলেন, “স্বাধীন হয়ে কেমন লাগছে, ভাইসাহেব?” মধ্যবয়সী ভদ্রলোক ভুরু কুঁচকোলেন, “স্বাধীন? নতুন করে কী স্বাধীন হব, কন তো? মুজিবভাই যেদিন থিকে যুদ্ধের ডাক দেলেন আমরা সেইদিন হইতেই স্বাধীন। আমরা হলাম গিয়ে মার খাওয়া, মার দেওয়া বাঙালি। মার খাই, আবার মার দেইও। পাকরা এবার ট্যার পালো।”

যুদ্ধের বর্ণনা শুনতে শুনতে ঘুরছিলাম শহরে যখন যশোহরের এক এককালের জমিদারবাবু নমস্কারের ভঙ্গিতে নেমে এলেন আমাদের গাড়ির কাছে। বললেন, “আজ কিন্তু দুপুরের খাওয়াটা এইখানেই আপনাদের।” বলেই কাছেই একটা হোটেল দেখালেন। বললেন, “দূর থেকে আসছেন, একটু ডাল-ভাত আর পাঙাশ মাছের ঝোল খেয়ে নেন। খুলনা পৌঁছতেও তো বেশ সময় যাবে।” বলেই হোটেলের মালিককে যা বলার বলে দিলেন, তারপর ধীরেনবাবুর দিকে চেয়ে বললেন, “ওরা কিন্তু আপনার থেকে দাম নেবে না। সেই ব্যবস্থা করাই আছে। দামই যদি দেন তো দুটো সিগারেট দেন। ক’দিন যাবৎ সিগারেট মেলে না।”

ভদ্রলোক এ কথা বলতে ধীরেনবাবু আমার দিকে তাকালেন, কারণ সিগারেটখোর এক আমিই। আমার পকেটে তখন দু’দুটো প্যাকেট, কোনওটাই খোলা হয়নি। এক প্যাকেট চার্মিনার আর আরেক প্যাকেট ফিল্টার উইলস। সেই কখন থেকে প্রাণ উসখুস করছে একটু ধোঁয়া টানের জন্য, কিন্তু জিপের মধ্যে সে সুযোগ হয়নি। চা খেতে নেমেও ধীরেনবাবুর সামনে সেটা ধরাতে পারিনি। এবার স্বয়ং ধীরেনবাবুই সেই সুযোগ করে দিলেন।

আমি দুটো প্যাকেটই ভদ্রলোকের সামনে বাড়িয়ে বললাম, “যেটা খুশি নিয়ে নিন।”

ভদ্রলোক অপ্রস্তুত হয়ে বললেন, “সে কী! পুরো প্যাকেট?”

বললাম, “প্লিজ। আমি তো কলকাতা ফিরলেই কিনতে পারব।”

ভদ্রলোক এবার মজার মুডে এসেছেন। বললেন, “ফিরবেন কেন? খুলনা ঘুরে এসে যশোহরেই থেকে যান। আমাদেরও তো জার্নালিস্ট প্রয়োজন।”

ধীরেনবাবু পাশ থেকে বললেন, “ওর আসল দেশ তো খুলনা। থাকলে খুলনাতেই থাকবে। একটা অপিস তো আমাদের হবে এই পারে।”

ওই হাসাহাসির মধ্যেই ভদ্রলোক আমার হাত থেকে চার্মিনারের প্যাকেটটাই তুলে নিলেন। নিতে নিতে বললেন, “আমার কড়া তামাকই পছন্দ। চার্মিনার আমি আগেও টেনেছি। দম আছে।”

প্যাকেটটা থেকে একটা আমাকেও দিলেন। দুপুরের খাওয়া শেষ করে আমারটা ধরাবার আগেই যশোহরের সাহেব একটা খেয়ে ফেলেছেন, আমাকে সঙ্গ দিতে ফের একটা ধরালেন। আমরা অদূরে দাঁড়িয়ে সুখের টান দিচ্ছি। ভদ্রলোক আবার একটার পর একটা রিং ছুড়ছেন দেখে ধীরেনবাবু কেমন একটা আফশোসের সুরে বললেন, “কেন যে বয়েস থাকতে বিড়ি ফোঁকাটা ধরলাম না!”

Rupsa bridge Khulna
রূপসা নদীর উপর সেতু- আজকের খুলনা

খুলনা পৌঁছতে পৌঁছতে সন্ধে নামে নামে। আহা, কী সুন্দর একটা শহর! রাস্তাঘাট, বাড়িঘরদুয়োর সবের মধ্যে একটা বাঙালি মেজাজ। একটা শান্ত ভাব। এক অপূর্ব কৃষ্টির ছোঁয়া। একটা কোথাও একটা বিলিতি ছোঁয়া। মনের চোখে দেখছি সুটেড-বুটেড, সাহেবি চেহারা চরিত্রের বাবা খুলনা কোর্টে ঘোরাঘুরি করছেন। আসলে তখন আমরা খুলনার আদালত চত্বরের পাশ বেয়ে যাচ্ছি।

হঠাৎ শুনি সামনের সিট থেকে ধীরেনবাবু বলছেন, “শঙ্করলাল, তোমাদের বাড়িটা ঠিক কোথায়?”

যেরকমটা শুনে এসেছি এতকাল সেটাই নিখুঁত করে বললাম, “এই যে জজকোর্ট, এরই পাশাপাশি কোথাও। খুলনার এডিসি থাকেন ওখানে এখন।”

অন্ধকার নেমে এসেছে, তার মধ্যেই আমাদের ড্রাইভার বলে উঠল, “মনে হচ্ছে এই বাড়িটাই হবে। যেমন বলছিলেন জাফরি করা শ্বেতপাথরের বাড়ি, বাগানে ঘেরা।”

আমি সেদিকে চাইতেই ভেতরে ভেতরে স্তম্ভিত হয়ে গেলাম। চিরকাল বাঁধানো ছবিতে যা দেখে এসেছি আর মুখে মুখে যে-ছবি আঁকতে শুনেছি সবাইকে। আলো পড়ে গিয়ে স্বপ্নিল হয়ে ধরা দিচ্ছে। সেই স্বপ্নে দেখা বাড়ি। কী এক আত্মবিশ্বাস থেকে বলে দিলাম, “হ্যাঁ, হ্যাঁ, এটাই আমাদের বাড়ি। ধীরেনবাবু, আপনি এখানেই দাঁড় করাতে বলুন ওকে।”

গাড়ি দাঁড় করানো হল, কিন্তু আমি বাস্তবিকই চলচ্ছক্তিহীন, সিট থেকে বাইরে ফেলতে পাচ্ছি না। ওদিকে ধীরেনবাবু তরতর করে হেঁটে বেল বাজিয়ে ঢুকে গেছেন বাড়িতে। ওঁর দেখাদেখি বরুণও চলে গেছেন ভেতরে। ড্রাইভার বসে আছে স্টিয়ারিঙে। আর দলের ফটোগ্রাফার ফ্ল্যাশ দিয়ে তুলছে আমাদের বাড়ির ছবি। আমি নিশ্চুপ হয়ে বসে বাড়িটাকে শুধু দেখছি, দেখছি আর দেখছি। মনে পড়ছে নীরদচন্দ্র চৌধুরীর স্মৃতিচারণায় ওঁর হারিয়ে যাওয়া পূর্ববঙ্গের বাড়ি ও এলাকার কথা। কারও কারও সংগ্রহের বইয়ের কথাও।

যখন দু’জন ভদ্রলোককে নিয়ে বাড়ির থেকে বেরিয়ে এলেন ধীরেনবাবু, আমি গাড়ির থেকে নেমে বাড়ির গেটের বাইরে দাঁড়ালাম। ধীরেনবাবু সাদা শার্ট-প্যান্টের বিশিষ্ট চেহারার ভদ্রলোককে দেখিয়ে বললেন, “ইনিই এডিসি। তোমাদের বাড়ির বাসিন্দা।”

ভদ্রলোক খুব সুন্দর করে বললেন, “আসুন একটু চা খাবেন। আপনাদের বাড়িটাও একটু দেখে যান। আপনার মামার লাইব্রেরিটাও দেখে নিন। খুবই যত্ন করে রেখেছি আমরা। দরকার হলে কোনও বই নামিয়ে পড়ি। কী যে কালেকশন বঙ্কিমবাবুর!”

আমার চোখে জল আসছিল। কোনওমতে বলতে পারলাম, “এখন থাক। এখন তো আসা-যাওয়া শুরু হল, পরেরবার একটা দিনই কাটাব খন।”

ওঁরা তখন সবাই মিলে ভেতরে গেলেন চায়ের পর্ব সারতে। বাইরে ঘন অন্ধকারে আমি একা সাদা টুইডের কোটের ভেতরেও শীতের একটা কামড় অনুভব করছি। কত এলোমেলো স্মৃতি ভিড় করছে যেন। একবার বড় ইচ্ছে হল ছুট্টে গিয়ে বাবার বইগুলোকে ছুঁয়ে আসি। কিন্তু নিজেকে সামলালাম।

দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে শুধু বাড়িটাকে দেখেই যাচ্ছি। একসময় শরীরটা উষ্ণ হতে থাকল। মনের মধ্যে চলাচল শুরু হল বাবার প্রিয় কবি জন ডান-এর এক অপূর্ব কবিতার। যেটির শিরোনাম ‘Death, be not proud’. বাবার মুখে এই প্রথম লাইনটুকুই শুনেছিলাম মাঝে মাঝে। কলেজে ইংরেজি নিয়ে পড়তে শুরু করে এই কবিতা আর জন ডান নিয়ে মেতেছিলাম। আজ অন্ধকারে বাবার ভালবেসে তৈরি করা বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে কেন জানি না সেটাই মনে এল—

Death be not proud, though some have Called
thee
Mighty and dreadful, for thou art not so,
For those whom thou think’st, thou dost overthrow,
Die not, poor Death, nor yet canst thou kill me…

এই কবিতায় ভাবনাতেই ছিলাম যখন ধীরেনবাবু সদলবলে বেরিয়ে এসে বললেন, “চল, শঙ্করলাল, এবার খুলনা বন্দরে যাব। সেখানে পাক ওয়ারশিপটা ঘায়েল হয়ে পড়ে আছে। ওঁরাও আমাদের সঙ্গে আসছেন।”

আমাদের গাড়িতে আমরা, ওঁদের গাড়িতে এডিসি ও ওঁর সঙ্গী আমাদের সঙ্গে চললেন।    (চলবে)

*পরবর্তী পর্ব প্রকাশিত হবে ৩১ জানুয়ারি ২০২৩
*ছবি সৌজন্য: Wikipedia, Jessore.info

Sankarlal Bhattacharya Author

শংকরলাল ভট্টাচার্যের জন্ম ১৯৪৭ সালের ১৫ অগস্ট, কলকাতায়। ইংরেজি সাহিত্যে স্বর্ণপদক পাওয়া ছাত্র শংকরলাল সাংবাদিকতার পাঠ নিতে যান প্যারিসে। তৎপরে কালি-কলমের জীবনে প্রবেশ। সাংবাদিকতা করেছেন আনন্দবাজার গোষ্ঠীতে। লিখেছেন একশো ত্রিশের ওপর বই। গল্প উপন্যাস ছাড়াও রবিশংকরের আত্মজীবনী 'রাগ অনুরাগ', বিলায়েৎ খানের স্মৃতিকথা 'কোমল গান্ধার', হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের স্মৃতিমালা 'আমার গানের স্বরলিপি'-র সহলেখক। অনুবাদ করেছেন শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের কবিতা থেকে সত্যজিৎ রায়ের চিত্রনাট্য পর্যন্ত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Subscribe To Newsletter

কথাসাহিত্য

সংস্কৃতি

আহার

বিহার

কলমকারী

ফোটো স্টোরি

উপন্যাস

banglalive.today/TheSpace.ink Guidelines

Established: 1999

Website URL: https://banglalive.today and https://thespace.ink

Social media handles

Facebook: https://www.facebook.com/banglaliveofficial

Instagram: https://www.instagram.com/banglalivedotcom

Twitter: @banglalive

Needs: banglalive.today/thespace.ink are looking for fiction and poetry. They are also seeking travelogues, videos, and audios for their various sections. The magazine also publishes and encourages artworks, photography. We however do not accept unsolicited nonfiction. For Non-fictions contact directly at editor@banglalive.com / editor@thespace.ink

Time: It may take 2-3 months for the decision and subsequent publication. You will be notified. so please do not forget to add your email address/WhatsApp number.

Tips: Banglalive editor/s and everyone in the fiction department writes an opinion and rates the fiction or poetry about a story being considered for publication. We may even send it out to external editors/readers for a blind read from time to time to seek opinion. A published story may not be liked by everyone. There is no one thing or any particular feature or trademark to get published in the magazine. A story must grow on its own terms.

How to Submit: Upload your fiction and poetry submissions directly on this portal or submit via email (see the guidelines below).

Guidelines:

  1. Please submit original, well-written articles on appropriate topics/interviews only. Properly typed and formatted word document (NO PDFs please) using Unicode fonts. For videos and photos, there is a limitation on size, so email directly for bigger files. Along with the article, please send author profile information (in 100-150 words maximum) and a photograph of the author. You can check in the portal for author profile references.
  2. No nudity/obscenity/profanity/personal attacks based on caste, creed or region will be accepted. Politically biased/charged articles, that can incite social unrest will NOT be accepted. Avoid biased or derogatory language. Avoid slang. All content must be created from a neutral point of view.
  3. Limit articles to about 1000-1200 words. Use single spacing after punctuation.
  4. Article title and author information: Include an appropriate and informative title for the article. Specify any particular spelling you use for your name (if any).
  5. Submitting an article gives banglalive.today/TheSpace.ink the rights to publish and edit, if needed. The editor will review all articles and make required changes for readability and organization style, prior to publication. If significant edits are needed, the editor will send the revised article back to the author for approval. The editorial board will then review and must approve the article before publication. The date an article is published will be determined by the editor.

 

Submit Content

For art, pics, video, audio etc. Contact editor@banglalive.com