নোবেল প্রাইজকে ভুলে যাওয়ার কথা নয় আমাদের কারোর। কারণ সে নিজেকে ভুলতে দেয় না। সারা পৃথিবীর মানুষের মনের মধ্যে গেঁড়ে বসে আছে এই প্রাইজের ডিনামাইট। তাকে এড়িয়ে যাওয়া সহজ নয়। ১৯০১ থেকে চালু হওয়া এই পুরস্কার নিয়ে বিতর্কও কম নেই। অনেকেই আছেন, যাঁরা এই পুরস্কার পাননি, তাঁদের মধ্যে এক নিঃশ্বাসে বলে যাওয়া যায় বেশ কয়েকজন এমন সাহিত্যিক বা কবির কথা, যাঁরা মূলত চিরকালীন সাহিত্যের স্তম্ভ। এখানে উল্লেখ্য, আধুনিক বা অধুনান্তিক শব্দটিকে ব্যবহার করলাম না, কারণ এই শব্দদুটির সঙ্গে যুক্ত ক্ষণস্থায়িত্ব। তবে, ১৯৬৪ সাল নোবেল পুরস্কার কমিটির কাছে বেশ মনে রাখার মতো একটি বছর। কারণ সেই বছরে এই ডিনামাইটসুলভ পুরস্কার কমিটির সঙ্গে টক্কর হয়েছিল জঁ পল সার্ত্রের।
১৯৬৪-এর অক্টোবর থেকেই এই গুঞ্জন ছড়াতে শুরু করে, যে সার্ত্র সে বছর নোবেল পুরস্কার পাচ্ছেন। এই গুজব কানে যেতেই একটি চিঠিতে সার্ত্র নোবেল পুরস্কার কমিটিকে চিঠি লিখে জানান, পুরস্কারের জন্য তাঁর নাম বিবেচিত হোক, তা তিনি চান না। যেন তাঁর নাম সম্ভাব্য তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়। কিন্তু নোবেল পুরস্কার কমিটি সার্ত্রের সে কথায় কর্ণপাত করলেন না। সার্ত্রও সম্ভবত জানতেন না, যে পুরস্কার বিষয়ক কোনওরকম মতামতই গ্রহণ করেন না সুইডিশ অকাদেমি। ফলে, সার্ত্রের আপত্তি অগ্রাহ্য করেই তাঁর নাম সে বছরের সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার প্রাপক হিসেবে ঘোষিত হল। কারণ হিসেবে বলা হল,
“for his work which, rich in ideas and filled with the spirit of freedom and the quest for truth, has exerted a far-reaching influence on [the] age.”
এর পরে যা হল, সেটাই ইতিহাস। সুইডিশ অকাদেমিকে একটি চিঠি লিখলেন সার্ত্র এবং নোবেল পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করলেন। কী ছিল সেই চিঠিতে? তিনি স্পষ্টই জানালেন এই পুরস্কার গ্রহণের বিষয় কিছু ব্যক্তিগত এবং অবজেক্টিভ কারণ আছে তাঁর। তিনি বললেন, কতকগুলি নীতির উপরে দাঁড়িয়েই তিনি এই পুরস্কার বর্জন করছেন, যেগুলি শুধু তাঁর প্রবর্তিত নীতি নয়, বরং তাঁর কমরেডদেরও সায় আছে সেই সব নীতিগুলির ক্ষেত্রে। ফলে, তাঁর সেই চিঠির বয়ানের ভাষায় (অনূদিত রূপ)– এটাই আমার কাছে বেশি দুঃখজনক, যে পুরস্কার পাওয়া ও তাকে বর্জন করার দুটি বিষয়েই তিনি “obliged to make”।

সার্ত্র-এর মনের ভিতর সেই সময় কী চলছিল, তা সহজেই অনুমেয়। আবার এটিও সহজেই ধরা যাচ্ছে, যে সার্ত্র তাঁর রাজনৈতিক আদর্শ বা নীতির প্রতি কতটা অনুগত। এই আনুগত্য কি তাঁর মনেও একপ্রকার অন্ধকার তৈরি করেছিল? সম্ভবত তা নয়। কারণ অন্ধকার মন নিয়ে কোনও আদর্শবোধের প্রতি এতটা বিশ্বস্ত হওয়া যায় না। বিশেষ করে, সার্ত্র যে তখন শুধু নোবেল পুরস্কারই প্রত্যাখ্যান করেছেন, তাই-ই নয়, ১৯৪৫ সালে প্রত্যাখ্যান করেছেন লিজিয়ঁ অফ অনার।
কিন্তু তাঁর এই ব্যক্তিগত ও বস্তুগত কারণ অনেকেরই মনে গোলকধাঁধাঁর জন্ম দেয়। কারণ অনেকে বলেন, ১৯৫৭ সালে কামুর নোবেল পুরস্কার প্রাপ্তি তাঁর মনে একপ্রকার এই পুরস্কারের প্রতি রাগের জন্ম দিয়েছিল। আবার অনেকে বলেন, তিনি যে পুরস্কার গ্রহণে অক্ষম, সে চিঠি স্টকহোমে পৌঁছয়নি। তাই পুরস্কার প্রত্যাখ্যানের পরে সার্ত্র একটি প্রবন্ধও লেখেন এই বিষয়ে। তিনি সেখানে লিখলেন,
“একজন লেখক, যাঁর নিজস্ব রাজনৈতিক, সামাজিক বা সাহিত্যবিষয়ক অবস্থান রয়েছে, তাঁর উচিত নিজস্ব শক্তি অর্থাৎ লিখিত শব্দের শক্তি দিয়ে চালিত হওয়া। পুরস্কৃত হওয়ার ফলে লেখকের ওপর (প্রাতিষ্ঠানিক) চাপ সৃষ্টি হয়, যা কখনোই কাম্য নয়। আমার নাম জঁ পল সার্ত্র, অথচ যদি লেখা হয় জঁ পল সার্ত্র, নোবেল বিজয়ী, তাহলে দুটো বিষয় এক হবে না।”

তিনি একপ্রকার বস্তুনিষ্ঠ কারণ দেখালেন, যা একটু জটিল। কিন্তু খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বললেন, সাম্প্রতিককালে সাংস্কৃতিক প্রাঙ্গনে একমাত্র যে যুদ্ধ প্রয়োজন, তা হল পূর্ব এবং পশ্চিমের মধ্যে একপ্রকার শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান। এই দুইয়ের মধ্যে দ্বন্দ্বের বিষয়ে তিনি অবগত। নিজে তিনি বুর্জোয়া সংস্কৃতিরই সৃষ্টি। কিন্তু তিনি সমর্থন করেন পূর্বকে অর্থাৎ, সমাজতন্ত্রকে।
প্রত্যাখ্যানের চিঠিতে তিনি লেখেন,
“I deeply regret the fact that the incident has become something of a scandal: a prize was awarded, and I refused it. It happened entirely because I was not informed soon enough of what was under way. When I read in the October 15 Figaro littéraire, in the Swedish correspondent’s column, that the choice of the Swedish Academy was tending toward me, but that it had not yet been determined, I supposed that by writing a letter to the Academy, which I sent off the following day, I could make matters clear and that there would be no further discussion.
I was not aware at the time that the Nobel Prize is awarded without consulting the opinion of the recipient, and I believed there was time to prevent this from happening. But I now understand that when the Swedish Academy has made a decision it cannot subsequently revoke it.
My reasons for refusing the prize concern neither the Swedish Academy nor the Nobel Prize in itself, as I explained in my letter to the Academy. In it, I alluded to two kinds of reasons: personal and objective.”
সে সময়ে পুরস্কারের অর্থমূল্যের পরিমাণ ছিল ৫৩০০০ ডলার। সার্ত্র তাঁর চিঠিতে এই প্রসঙ্গও তুলে ধরে লিখলেন, এই আড়াই লক্ষ ক্রাউন তিনি কোনও অর্থপূর্ণ কাজে দান করতে পারতেন, কিন্তু তিনি তা করলেন না। এ নিয়ে তাঁর মনে কোনও দ্বন্দ্ব নেই। কারণ পূর্ব বা পশ্চিম কোনওপক্ষের কাছেই প্রাতিষ্ঠানিকভাবে তিনি দায়বদ্ধ থাকতে চান না। তিনি এও সরাসরিই বললেন, যে নোবেল পুরস্কার মূলত পশ্চিমের লেখক এবং পূর্বের সমাজতন্ত্রবিরোধী মতামত অবলম্বন করেন যেসব লেখক, তাঁদের জন্য নির্ধারিত। এই কারণেই সেই সময় অনেক প্রধান লেখককে এই পুরস্কার দেওয়া হয়নি।
এই প্রসঙ্গে এসে আমরা একটু থামতে পারি। সার্ত্রের সৎ ও আন্তরিক প্রত্যাখ্যানের বিরুদ্ধে আমাদের বলার কিছু থাকতে পারে না। বরং লোভের কাছে নতজানু না হওয়ার শিক্ষাই আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু সমস্ত বিষয়ের মতো এই বিষয়ের মধ্যেও রয়েছে নানা দ্বন্দ্ব। কারণ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে স্তালিনের কমিউনিস্ট রাশিয়ার যে ফ্যাসিবাদী প্রবণতার ইতিহাস আমরা পড়ি, সে সম্পর্কে সার্ত্র বিন্দুমাত্র জ্ঞাত ছিলেন না, এ কথা মেনে নেওয়া কঠিন। তিনি তাঁর প্রত্যাখ্যানের চিঠিতে লিখেছিলেন, “ “A writer should not allow himself to be turned into an institution.”

এই প্রতিষ্ঠান তবে কোনও নির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠান নয়। এই প্রতিষ্ঠান নিজেরই ভিতরে থাকা নিজস্ব কুঠুরি ভেঙে ফেলার প্রতিষ্ঠান। কিন্তু এখানেই প্রশ্ন আসে অন্য বিষয়ে। সার্ত্র কি নিজের ভিতরে থাকা সবরকম প্রতিষ্ঠান ভেঙে ফেলার কথাই ভাবতেন? নাকি তিনি এক নির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে ক্ষমতার আসনে বসানোর কথা ভাবতেন? পোল্যান্ডের গণকবরের কথা সার্ত্র জানতেন না? এমনকী রাশিয়ায় স্তালিনপন্থার বিরুদ্ধে যেসব মানুষ, তাদের উপর স্তালিনের অত্যাচারের কথা সার্ত্র জানতেন না? পশ্চিম বা ধনতন্ত্রের যে প্রতিষ্ঠান তার বিরুদ্ধে তিনি যখন যাচ্ছেন, তাঁর তো যাওয়া উচিত ছিল সোভিয়েত বা স্তালিন যে প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছে, তার বিরুদ্ধেও। পাস্তেরনাকের নোবেল প্রাইজ প্রাপ্তিকে তিনি ভালো চোখে দেখেননি। পাস্তেরনাকের বই যে রাশিয়ায় নিষিদ্ধ তার বিরুদ্ধেও সার্ত্র কিছু বলেননি। পাস্তেরনাকের নোবেল পুরস্কার প্রাপ্তিকে তাঁর মনে হয়েছিল সোভিয়েত স্বার্থবিরোধী অবস্থান নেওয়ার পুরস্কার।
নোবেল পুরস্কার এবং তার বিপুল অর্থ– এ সবকিছুকে ত্যাগ করা সহজ বিষয় নয়। জঁ পল সার্ত্রের মতো লেখকও পৃথিবীতে এখনও পর্যন্ত কমই এসেছেন। কিন্তু সার্ত্রের পক্ষপাত চরম রাজনৈতিক ভুল, এ বিষয়েও কোনও সন্দেহ নেই। কারণ ধনতন্ত্র এবং সাম্রাজ্যবাদ বিরোধিতা করার জন্য তিনি সমাজতান্ত্রিক সাম্রাজ্যবাদকে ধৃতরাষ্ট্রের মতো সমর্থন করে গেছেন। অথবা বলা ভালো, স্তালিনের কোনওরকম দোষ তিনি দেখতেন না। অথচ রাশিয়াও যে তখন একটা বিরাট প্রতিষ্ঠান, এ বিষয়েও কোনও সন্দেহ থাকার কথা নয়। আমাদের এই বাংলা ভাষায় লেখালেখির জগতে যেমন শুধুমাত্র আনন্দবাজারই প্রতিষ্ঠান হয়ে যায়, রাজ্য বা রাষ্ট্র যে সবচেয়ে বড় প্রতিষ্ঠান, সে বিষয়ে আর লেখক-সাহিত্যিকদের কোনও অবস্থান দেখতে পাই না। বরং যা দেখি, তা এক প্রকার নির্লজ্জ চাটুকারিতা।
সার্ত্র প্রসঙ্গে ফিরে আসতে চাইলে আমাদের বলতেই হবে, সোভিয়েত ইউনিয়নের ছোট ছোট অসংখ্য জাতিগোষ্ঠীর মানুষের উপরে নেমে আসা স্তালিনের নৃশংস অত্যাচারের বিরুদ্ধে সার্ত্রের নীরবতা সহ্য করতে না পেরে অলবেয়ার কামু সার্ত্রের সততা এবং দ্বিচারিতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। প্রশ্ন তুলেছিলেন অক্তাভিও পাস-ও। ট্রটস্কিকে হত্যা করেছিলেন স্তালিন। সে বিষয়েও সার্ত্র নীরব। ইতিহাসের দিকে তাকালে দেখা যাবে, ফ্যাসিস্ট হিটলারের চেয়ে কম ফ্যাসিস্ট ছিলেন না যোসেফ স্তালিন। কিন্তু তাঁর গায়ে পোশাক ছিল সমাজতন্ত্রের।

সমাজতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানের বিরোধিতা করেননি সার্ত্র। কিন্তু তিনি নোবেল পুরস্কার ত্যাগ করেছিলেন। পশ্চিম ইউরোপের কোনও পুরস্কার নেননি। একজন ব্যক্তি সাহিত্যিক বা শিল্পী বা কবি যে কোনও প্রতিষ্ঠানের দ্বারা বন্দি হবেন না, এ কথা সার্ত্র বারবার বলেছেন তাঁর বিভিন্ন আলোচনায়। এমনকী কামুর সঙ্গে তাঁর দীর্ঘ চিঠিপত্রগুলির মধ্যেও ধরা পড়ে, এই প্রতিষ্ঠানের থেকে একজন লেখককে বা কবিকে কেন দূরে থাকতে হবে , সে সব বিষয়। কিন্তু এই প্রতিষ্ঠানের সংজ্ঞা বিষয়ে সার্ত্রের ভাবনার মধ্যেই যে স্বচ্ছতার অভাব রয়েছে, এ বিষয়েও আজ আর সংশয় নেই।
এই প্রতিষ্ঠান তবে কোনও নির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠান নয়। এই প্রতিষ্ঠান নিজেরই ভিতরে থাকা নিজস্ব কুঠুরি ভেঙে ফেলার প্রতিষ্ঠান। কিন্তু এখানেই প্রশ্ন আসে অন্য বিষয়ে। সার্ত্র কি নিজের ভিতরে থাকা সবরকম প্রতিষ্ঠান ভেঙে ফেলার কথাই ভাবতেন? নাকি তিনি এক নির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে ক্ষমতার আসনে বসানোর কথা ভাবতেন? পোল্যান্ডের গণকবরের কথা সার্ত্র জানতেন না? এমনকী রাশিয়ায় স্তালিনপন্থার বিরুদ্ধে যেসব মানুষ, তাদের উপর স্তালিনের অত্যাচারের কথা সার্ত্র জানতেন না? পশ্চিম বা ধনতন্ত্রের যে প্রতিষ্ঠান তার বিরুদ্ধে তিনি যখন যাচ্ছেন, তাঁর তো যাওয়া উচিত ছিল সোভিয়েত বা স্তালিন যে প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছে, তার বিরুদ্ধেও।
এমন একজন লেখক সার্ত্র, যিনি তাঁর লেখার জন্যই অমর হয়ে থাকবেন আমাদের কাছে। কিন্তু তিনি যখন দুই রাক্ষসসুলভ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে একটি প্রতিষ্ঠানকে ‘প্রতিষ্ঠান’ হিসেবে চিহ্নিত করেন এবং অন্যটিকে মানবসমাজের ‘আদর্শ’ হিসেবে, তখন অলব্যের কামুর মতোই সন্দেহ জাগে তাঁর নীতি বা আদর্শ সম্পর্কে। তাঁর প্রত্যাখ্যানকে সম্মান জানিয়েই, সোভিয়েত সমাজতন্ত্র নামক প্রতিষ্ঠানের সমস্ত নির্দয় কার্যকলাপের বিরুদ্ধে মুখে কুলুপ এঁটে বসে থাকাকে সম্মান করতে পারি না। দ্বিতীয়টি, অর্থাৎ, স্তালিনের একনায়কতন্ত্র এত বেশি করে মানুষের জীবন ও সম্মানহানির কারণ হয়েছে, যে, সে বিষয়ে সার্ত্রের অবস্থানকে কেবল একজন পার্টি ক্যাডারের অবস্থানের মতোই মনে হয়। এর চেয়ে বেশি কিছু নয়। অথচ, একজন সার্ত্র উদাহরণ হয়ে থাকতে পারতেন সবরকম প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে একা দাঁড়িয়ে থাকার।
নোবেল পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করার জন্য সার্ত্র উদাহরণ হতে হতেও হলেন না। কারণ তাঁর যে নীতি বা আদর্শ, তাকে হয়তো আমরা এখন আনুগত্য বলব।
*ছবি সৌজন্য: Openculture, The Hans India, Paris Review
*ভিডিও সৌজন্য: Youtube
হিন্দোল ভট্টাচার্যের কবিতা লেখার শুরু নয়ের দশকে। কবি ও লেখক হিসেবে পরিচিতি ও জনপ্রিয়তা দুইই পেয়েছেন বাংলা ভাষার পাঠকদের কাছে। মোংপো লামার গল্প, সব গল্প কাল্পনিক, রুদ্রবীণা বাজো, বিপন্ন বিস্ময়গুলি, এসো ছুঁয়ে থাকি এই লেখকের কিছু পূর্বপ্রকাশিত বই।
অত্যন্ত জরুরি আলোচনা। সার্ত্রের মতো বড়মাপের মানুষ, চিন্তক ও লেখকের এহেন স্ববিরোধ ও একদেশদর্শী বিচার পীড়া দেয় বইকি। এই প্রসঙ্গে মনে পড়ে যায় ইউরোপ ভ্রমণরত রবীন্দ্রনাথের মুসোলিনি স্তূতির কথা। অবশ্য সেই ভ্রম থেকে বেরিয়ে এসেছিলেন রবীন্দ্রনাথ, সভ্যতার প্রকৃত সঙ্কটকে চিনে নিতে, চিনিয়ে দিতেও পেরেছিলেন। আবার ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের অপশাসনের প্রবল বিরোধিতা করেও একইসঙ্গে স্বদেশী আন্দোলনের উগ্র জাতীয়তাবাদী ফাঁদ সম্বন্ধেও সতর্ক ও সচেতন ছিলেন। সার্ত্রের প্রসঙ্গে রবীন্দ্রনাথকে টেনে আনাটা আশা করি অমূলক হল না। যাই হোক, এই চিন্তা উসকে দেওয়া আলোচনাটির জন্য লেখক ও বাংলা লাইভকে ধন্যবাদ।
সার্তের বিরুদ্ধে সরাসরি এরকম জোরালো অভিযোগ তাঁর নোবেল পুরষ্কার প্রত্যাখ্যানের মতো ঐতিহাসিক ঘটনাকে ম্লান করে দেয়। ক্যামুর বিরুদ্ধেও কথা বলতে কসুর করেন নি হিন্দোল। কোদালকে কোদাল বলতে ভয় পাবার এই সমযে এভাবে বলার জন্য লেখককে ধন্যবাদ।