১৯৩০-এর দশকের মাঝামাঝি সময়ে পৌঁছে, অতিরিক্ত সুরের কায়দা-নির্ভরতা ছেড়ে, কিছু নবীন সংগীত প্রতিভাবানের ভাবনা থেকে জন্ম নিল সহজ কথা, মনকাড়া মেলডিতে ভরা সুর ও অন্তর-ছোঁয়া গায়কীতে পরিবেশিত একধরনের বাংলা গান, যাকে বলা হল― ‘আধুনিক বাংলা গান’। উঠে এলেন বহু গীতিকার, সুরকার, গায়ক-গায়িকা। অনেক নতুন গান তৈরি হতে লাগল। আলোড়িত হলেন শ্রোতারা। এতদিন সংগীত সমঝদারদের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল যে বাংলা গান, তা ছড়িয়ে পড়ল আপামর বাঙালির ভালোলাগার দুনিয়ায়। এ জগতে এমন কয়েকজন এলেন, যাঁরা একাধারে গীতিকার ও সুরকার। এঁদের তৈরি গান বিভিন্ন শিল্পীর গলায় জনপ্রিয় হতে লাগল। এই ধারা অব‍্যাহত থেকেছে সেদিন থেকে আজ অবধি। 

আবার এঁদের চেয়েও কম সংখ‍্যক কিছু সংগীতকারকে দেখা গেল, যাঁরা নিজেরাই গান লিখছেন, সুর করছেন এবং রেকর্ডে সেইসব গান পরিবেশন করছেন। যেমন, সেই ১৯৩০-৪০ দশকে নাম করা যায় গিরীন চক্রবর্তী, ডঃ যশোদাদুলাল মণ্ডল প্রমুখ কয়েকজনের। এই ধারারই অন‍্যতম উজ্জ্বল ব‍্যক্তিত্ব হিসেবে ১৯৬০-এর দশকে আবির্ভূত হয়েছিলেন জটিলেশ্বর মুখোপাধ্যায়। ১৯৯০ দশকে আসা কবীর সুমন, নচিকেতা চক্রবর্তীদের মতো একই ধারা অনুসারী শিল্পীদের ঠিক পূর্বসূরি বলা যায় যাঁকে, এবং যিনি তাঁর লেখা, সুর ও পরিবেশনে অবশ্যই এক বিশিষ্টতার ছাপ রেখে গেছেন। ১৯৩০ থেকে ১৯৮০-র দশক অবধি চলা আধুনিক বাংলা গানের ধরন থেকে ১৯৯০-এর দশকে যে পরিবর্তন এলো, তার সেতুবন্ধনকারী সংগীতনির্মাতা হিসেবে স্পষ্টভাবে চিহ্নিত করা যায় জটিলেশ্বর মুখোপাধ‍্যায়কে।

Jatileswar Mukhopadhyay 1

চুঁচুড়ায় জন্ম ও বড় হওয়া জটিলেশ্বরের। এই মফসসল শহরটির সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য বহু পুরনো। সেখান পরিবেশ একটা ছিলই। বাড়িতে পেয়েছিলেন গানের আবহাওয়া। আট ভাইয়ের মধ্যে জটিলেশ্বর সবচেয়ে ছোট। দাদারা অনেকেই ভালো গান গাইতেন। তার মধ্যে ন’দা কপিলেশ্বর মুখোপাধ্যায় তো রীতিমতো হারমোনিয়াম বাজিয়ে আসরে-টাসরেও গাইতেন। সব ভায়েরই শিবের নামে ‘নাম’। শৈলেশ্বর, কপিলেশ্বর, ঈষাণেশ্বর, জটিলেশ্বর— এইরকম আর কী। একমাত্র দিদি ঊষা মুখোপাধ্যায়ও ভাল গাইতেন। এরকম সুরবেষ্টনে বড় হয়ে জটিলেশ্বরের ভেতরে গান যে জেগে উঠবে, সেটাই স্বাভাবিক। আপন খেয়ালেই গলায় সুর খেলতে লাগল। রেডিও আর গ্রামাফোন রেকর্ডের দৌলতে আকর্ষণীয় গানের জোগানের তো অভাব নেই। একের পর এক গলায় উঠে আসতে লাগল সেইসব। গঙ্গার ধারে ছবির মতো শহর চুঁচুড়া। সেখানে পরপর বিরাট তিনটি মাঠ যেখানে শেষ হয়েছে গঙ্গার কাছে, তারই ধারে আড্ডা দেওয়ার ভিড় চিরকালের। এই বৈঠকে জটিলেশ্বরেরও ক্লান্তি ছিল না। সেখানেই গান বেরতো গলা দিয়ে। বন্ধুদের প্রশংসা আর তা থেকে প্রচার। ছোটখাটো অনুষ্ঠানে ডাক আসতে লাগল। হারমোনিয়ামের সঙ্গে তখনও কোনওরকম পরিচয় হয়নি। বয়সে বড়, কিন্তু বন্ধুস্থানীয় সুহৃদ বিশ্বাস— যিনি জটিলেশ্বর ও আরও অনেকের ‘সুদুদা’, সেই ত জটিলেশ্বর গাইতেন। এইভাবেই চলছিল। হঠাৎ একদিন একটা ঘটনা ঘটল। 

এককালে চুঁচু়ড়ারই ভূমিপুত্র, যিনি সেই ১৯৫০-এর দশকে নামকরা সঙ্গীতশিল্পী, সেই সতীনাথ মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে মোলাকাত হল জটিলেশ্বরের। সতীনাথ তখন প্রায়ই চুঁচুড়ায় তাঁর বন্ধুবান্ধবের বাড়ি আসতেন। এরকমই একদিন এসেছেন। ডাক পড়ল জটিলেশ্বরের। এসে সতীনাথ মুখোপাধ্যায়ের সামনে, তাঁরই অনুরোধে একটার পর একটা তখনকার বিখ্যাত শিল্পীদের গান শোনাতে হল। এমনকী, তখন সতীনাথের নিজের গাওয়া রেকর্ডের একটি গান— ‘আমি খেলায় মেতে থাকবে, তবুও তোমায় ডাকা ভুলবে না…’— সেটিও গেয়ে ফেললেন জটিলেশ্বর। সব শুনে সতীনাথ, তাঁর বন্ধু প্রফুল্ল গুপ্তকে (যাঁর বাড়িতে বৈঠক চলছিল) বললেন, ‘প্রফুল্ল, ছেলেটি তো নিজের গলা হারিয়ে ফেলেছে। বিভিন্ন শিল্পীর গান যখন করছে, তখন তাঁদের মতো এক্সপ্রেশন, তাঁদের মতো দম নেওয়ার কায়দা ইত্যাদি নকল করেছে। ভয়েস তো সাধারণত ঠিক এইরকম হয় না। কায়দা কানুনগুলোই উপরে ভেসে ওঠে, যাঁরা সাধারণ শ্রোতা তাঁরা মনে করেন অমুকের কণ্ঠ অমুকের মতো। যাই হোক, আমার মনে হয় ছেলেটি হয়তো গান গাইতে পারবে।’ 

দাদারা অনেকেই ভালো গান গাইতেন। তার মধ্যে ন’দা কপিলেশ্বর মুখোপাধ্যায় তো রীতিমতো হারমোনিয়াম বাজিয়ে আসরে-টাসরেও গাইতেন। সব ভায়েরই শিবের নামে ‘নাম’। শৈলেশ্বর, কপিলেশ্বর, ঈষাণেশ্বর, জটিলেশ্বর— এইরকম আর কী। একমাত্র দিদি ঊষা মুখোপাধ্যায়ও ভাল গাইতেন। এরকম সুরবেষ্টনে বড় হয়ে জটিলেশ্বরের ভেতরে গান যে জেগে উঠবে, সেটাই স্বাভাবিক। আপন খেয়ালেই গলায় সুর খেলতে লাগল। রেডিও আর গ্রামাফোন রেকর্ডের দৌলতে আকর্ষণীয় গানের জোগানের তো অভাব নেই। একের পর এক গলায় উঠে আসতে লাগল সেইসব।

এই প্রথম সম্ভবত গান সম্পর্কে একটা অন্যরকম উপলব্ধি ধাক্কা লাগাল জটিলেশ্বরের মনে। তার মানে রেকর্ড শুনে একেকটা গান তুলে ফেলাই শেষ কথা নয়? এর জন্যে বিশেষ সাধনার প্রয়োজন? তবেই জটিলেশ্বর মুখোপাধ্যায় হিসেবে নিজেকে চেনানো সম্ভব। এইবার সেই পথে যাত্রার প্রস্তুতি শুরু হল। একটানা দশ বছর সতীনাথ মুখোপাধ্যায়ের কাছে তালিম, জটিলেশ্বরকে শিল্পী হিসেবে পৃথক সত্তায় গড়ে তুলেছিল। তাছাড়া, সুধীন দাশগুপ্ত, পণ্ডিত চিন্ময় লাহিড়ী প্রমুখ সঙ্গীতগুণীদের কাছে শিক্ষা নিয়ে, গানকে বিভিন্ন দিক থেকে দেখতে সক্ষম হলেন জটিলেশ্বর। সব সত্ত্বেও, যা মনে হয়, সারাজীবন জটিলেশ্বরের সঙ্গীত-অন্তরে সতীনাথ মুখোপাধ্যায়ের নামক আলোটা জ্বলত। সতীনাথবাবুর সুররচনার মধ্যে তিনি যেন নিজেকে খুঁজে যেতেন। এই অন্বেষণটাই তো শিল্পীকে আলাদা করে তোলে। সেই প্রথম সাক্ষাতের সময় সতীনাথ মুখোপাধ্যায় এই কথাটিই বোঝাতে চেয়েছিলেন। গানের কথার মধ্যে দুঃখ বা আনন্দ, যা-ই থাকুক, তা প্রত্যেক শিল্পীর অন্তরানুভূতির সঙ্গে মিশে যতক্ষণ না তাঁর নিজস্ব দুঃখ বা আনন্দের প্রকাশ হয়ে সঙ্গীতের মধ্যে দিয়ে বেরিয়ে আসতে না পারছে, ততক্ষণ তা সত্যিকারের প্রাণ পায় না। অন্যের আবেগানুভূতিকে তো নকল করা যায় না। প্রত্যেকের মনের চলন-গমন তাঁর নিজের মতো। উপরিতলের নকল, শুধুমাত্র প্রাণহীন সুর-তাল-লয়ে ভরা গান উৎপাদন করতে পারে মাত্র— তা থেকে শিল্পের প্রকাশ ঘটে না। ক্রমশ এটাই তাঁর সাঙ্গীতিক অন্তরে গভীরভাবে উপলব্ধি করলেন জটিলেশ্বর। এখান থেকেই তাঁর মধ্যে আলাদা হয়ে ওঠার প্রচেষ্টা তৈরি হল। তা এতটাই হল, প্রথম দুটি রেকর্ডে যথাক্রমে সুধীন দাশগুপ্ত ও সলিল চৌধুরীর মতো দুই দিকপালের সুরে চারটি গান গেয়ে, নিজেই ধরে ফেললেন কলম।

১৯৬০-এর দশকে নিজের কথায় সুরে ‘বঁধূয়া আমার চোখে জল এনেছে, হায় বিনা কারণে…’ রেকর্ড করলেন জটিলেশ্বর মুখোপাধ্যায়। প্রথম গানই হিট। সম্পূর্ণ অন্য ধরনের কথা ও সুরবিন্যাস সেই ১৯৬০-এর দশকে তরুণ জটিলেশ্বরের সঙ্গে বন্ধুত্ব হয়েছিল, সমবয়সী গীতিকার অমিতাভ নাহা, সুরকার অশোক রায়ের মতো উঠতি প্রতিভাবানদের। এঁরাও জটিলেশ্বরকে উৎসাহিত করেছিলেন গান লেখার জন্যে। সবচেয়ে বড় কথা, জটিলেশ্বর মুখোপাধ্যায়ের ভেতর সঙ্গীতচেতনার পাশাপাশি এক শক্তিশালী কবিচেতনা ছিল। না হলে, এরকম গীতিকবিতা কেউ লিখতে পারেন না। তাঁর যে কোনও গানের কথায় এক অন্যরকম অনুভূতির ধাক্কা ছিল, যা আমাদের সাধারণ ভাবনায় কাজ করে না। কিন্তু, গানগুলো শুনলে এই এলোমেলো অনুভূতির দীপ্তি মনে দপ্ করে জ্বলে ওঠে যেন। ‘আমার স্বপন কিনতে পারে…’ গানের সঞ্চারীতে জটিলেশ্বর লিখলেন, ‘…আমি অসীম ধনে ধনী/ দরিদ্র কে বলে আমায়, জাগরণের ঘুমেই আছি/ বিনিদ্র কে বলে আমায়…’। ‘জেগে ঘুমনো’ কথাটা সাধারণত হাল্কা অর্থে ব্যবহার হয়। সেখানে এই গানে ‘জাগরণের ঘুমেই আছি…’ কথাটা লিখে কোন অনুভবের খেলাটা খেললেন গীতিকার, তা বলাই বাহুল্য। ‘ও সজন হায়…’ গানের সঞ্চারীতে একই ‘দাঁড়াল’ কথাটাকে দুটি লাইনের শেষেই ব্যবহার করে অন্ত্যমিল দিলেন। কিন্তু, একই শব্দ অনুভূতির দিক থেকে কী অদ্ভুতভাবে সম্পূর্ণ পৃথক অর্থ বয়ে আনলো সবার মনে। যা বুঝতেও কোনও অসুবিধে হল না—

‘ও সজন— 
তোমায় দেখে যে পথে দাঁড়াল
হায় সেজন জানে না সে যে পথেই দাঁড়াল’—

এরকম উদাহরণ অজস্র দেওয়া যায়, গানের আগ্রহীরা জটিলেশ্বরের যে কোনও গান শুনলেই এই অপরূপ সাঙ্গীতিক-ক্রীড়ার সন্ধান পাবেন। সুরের দিক থেকেও অভিনবত্ব তো অবশ্যই এনেছিলেন জটিলেশ্বর মুখোপাধ্যায়। কথা যেখানে বিশিষ্টতায় ভরা, সুরও যে সেভাবেই নানারকম পথ খুঁজে নেবে, সেটাই স্বাভাবিক। তিনি নিজে বলেছেন, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সুর আসত আগে, তারপর কথা। আসলে, এই ধরনের সৃষ্টির ব্যাপারে কোনও কিছু ভাষায় প্রকাশ করতে গেলে, এমন করেই হয়তো বলতে হয়। কিন্তু, কোন অন্তর-গহন থেকে সুর-কথা উঠে এসে ‘গান’ তৈরি করে, তা বোধহয় সবটা কথায় প্রকাশ করা যায় না। জটিলেশ্বরের বক্তব্য অনুযায়ী, সুর তাঁর মনে আগে হানা দিতে পারে। কিন্তু, সেই সুরের সঙ্গে আলিঙ্গনে কথাগুলোও বোধহয় এসে কলমবাহিত হয়ে গীতিকাব্যে পরিণত হয়। কে যে কার আগে, সদর্থে তা বোঝা সম্ভবত অসম্ভব। জটিলেশ্বর একজায়গায় বলেছেন, ‘ভাটিয়ার’ রাগটি তাঁর মনে অনেকদিন ঘুরছিল। সেই সুরবিন্যাসেই কথা বসল— ‘এ কোন সকাল, রাতের চেয়েও অন্ধকার…’। এই গানের ব্যাপারেই একজায়গায় বলছেন জটিলেশ্বর— ‘…কথার টানেই সুরকে অর্থবহ করতে হয়েছে। এই গানটির মধ্যে যেখানে বলছি— ‘ওকি পাখির কূজন নাকি হাহাকার’, সেখানে “পাখির কূজন” সাধারণত শ্রুতিমধুর পর্দার কম্বিনেশনে বলা হয়, তাই-ই বলা উচিত, কিন্তু আমার কাছে সেই মুহূর্তে পাখির কূজন তো হাহাকার। তাই একটা সম্পূর্ণ অন্য ধরনের কম্বিনেশন লাগাতে হয়েছে— (গা পা র্ঋা র্ঋা র্স) ব্যবহার করতে হয়েছে।’— তাহলে এ ক্ষেত্রে কী হল? কথা ও সুর— কোনটা আগে, কোনটা পরে, সব তো এলোমেলো হয়ে গেল। আসলে অনুভূতির গতিপথকে কোনও হিসেবের মধ্যে ধরা যায় না বোধহয়। বিশেষ করে কোনও কিছু যখন সৃষ্টি হতে যাচ্ছে। 

‘এ কোন সকাল…’ গানটিতে সেই ১৯৭০ দশকের অশান্ত সময়ের সরাসরি প্রভাব পড়েছে— এরকম কথা অনেকে বলে থাকেন। এ ভাবনা হয়তো ঠিক, আবার না-ও ঠিক হতে পারে। কারণ, সে গান দিয়ে এক বৈচিত্র্যময় অনুভবের প্রকাশ ঘটছে, তার ওপর একটামাত্র কোনও দিকের সরাসরি প্রভাব পড়েছে বলে ধরে নেওয়াটা বোধহয় ঠিক নয়। তবে, জটিলেশ্বর সেই সময়ের ব্যাপারে উদাসীন ছিলেন না। সুধীন দাশগুপ্তের পরিচালনায় আইপিটিএ-তে কোরাসে গান করেছেন। তাঁরা গাইতেন সুধীন দাশগুপ্ত সুরারোপিত সুকান্ত ভট্টাচার্যের লেখা ‘ঠিকানা’ (সলিল চৌধুরীর সুরে হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের গাওয়ার আগের ঘটনা এটি) গানটি। পরবর্তীকালে, জটিলেশ্বর নিজের কথা ও সুরে তৈরি করেছেন, ‘মহীয়সী ধাত্রী ও ধরিত্রী মা/ সইতে শেখাও মা— সইতে শেখাও, কোটি কোটি ফুলকে একটি মালায় গেঁথে/ কাছাকাছি পাশাপাশি রইতে শেখাও…।’ গানটি যুববর্ষ উপলক্ষ্যে দীপা মুখোপাধ্যায় ক্যাসেটে গেয়েছিলেন। এরকম আরও কিছু গান সৃষ্টি করেছিলেন জটিলেশ্বর মুখোপাধ্যায়, যা থেকে সরাসরি সময়ের ছবি ভেসে ওঠে। ১৯৬০-৭০ দশকে যখন আধুনিক বাংলা গানের জগৎ পরিপূর্ণ রত্নপ্রতিভায়, তখন নিজে গান লিখে ও সুর করে নিজের পরিবেশনে তাকে প্রতিষ্ঠা দেওয়া, বড় কম কথা ছিল না। শাস্ত্রীয় সঙ্গীতে তাঁর যথেষ্ট তালিম ছিল। কিন্তু, রাগ-রাগিনীর সূক্ষ্ম প্রয়োগ করে, তাকে ভাবধর্মী পরিবেশনের মধ্যে দিয়ে, এক একটি আদর্শ আধুনিক বাংলা গান সৃষ্টি করে গেছেন তিনি। এইদিক থেকে শিল্পী হিসেবে জটিলেশ্বর মুখোপাধ্যায় হলেন সুধীরলাল চক্রবর্তী–সতীনাথ মুখোপাধ্যায় ঘরানার একজন আদর্শ উত্তরসূরী।   

*ছবি সৌজন্য: প্রথম আলো, গানের পাতা

Aveek Chottopadhyay Author

জন্ম ১৯৬৫-তে কলকাতায়। বেড়ে ওঠা চন্দননগরে। স্কুল জীবন সেখানেই। কলকাতার সিটি কলেজ থেকে স্নাতক। ছোটো থেকেই খেলাধূলার প্রতি আগ্রহ। গান শেখাও খুব ছোটো থেকেই। তালিম নিয়েছেন রামকুমার চট্টোপাধ্যায়ের কাছেও। দীর্ঘদিন মার্কেটিং পেশায় যুক্ত থাকার পর, গত বারো বছর ধরে পুরোপুরি লেখালেখি, সম্পাদনার কাজে যুক্ত। পুরনো বাংলা গান, সিনেমা, খেলা ইত্যাদি বিষয়ে অজস্র প্রবন্ধ লিখেছেন। আনন্দবাজার পত্রিকা, এই সময়-সহ বহু পত্রপত্রিকায় নিয়মিত লেখেন। সম্পাদিত বইয়ের মধ্যে উল্লেখযোগ্য উত্তমকুমারের "হারিয়ে যাওয়া দিনগুলি মোর", হেমন্ত মুখোপাধ‍্যায়ের "আনন্দধারা", রবি ঘোষের "আপনমনে", মতি নন্দীর "খেলা সংগ্রহ"। লিখেছেন "সংগীতময় সুভাষচন্দ্র" বইটি। সাত বছর কাজ করেছেন "মাতৃশক্তি" ও "জাগ্রত বিবেক" পত্রিকায়। বর্তমানে নিজস্ব লেখালিখি ও সম্পাদনা নিয়ে ব্যস্ত।

One Response

  1. আপনার লেখা পড়েছি এই সময়,
    ধার আছে, ভিতরে ঢুকলে বোঝা যায়।
    অন্য মাত্রার। সহজ সরল ভাবে ব্যক্ত করা। ঠিক ঝিনুকের মতন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *