স্কুলের আগে স্কুলে পাঠানোর কোনও মানে হয়? মানে প্রি-স্কুলে? জ্ঞান হওয়ার পর থেকে স্কুলে যাওয়ার বয়েস হওয়া অবধি মেরেকেটে চারটে কি পাঁচটা বছর, নিজে নিজে হাঁটাচলা, কথা বলা ইত্যাদি শুরু করার পরে আরও কম, ওইটুকুও কেড়ে নেওয়া কেন বাপু?— এ রকম একটা কথা অনেকেই বলেন। বলার কারণও আছে— এত ছোটবেলায় জীবনের বাঁধাবাঁধি যত কম হয় ততই ভাল।

কিন্তু তাই বলে প্রি-স্কুল ব্যাপারটাকে আজ আর অর্থহীন বলে উড়িয়ে দেওয়া যায় না। তার একটা কারণ তো সাধারণ বুদ্ধিতেই বোঝা যায়। আজকাল বেশির ভাগ বাড়িতেই শিশুরা একা। বড় পরিবার তো নেইই, পাড়ার বন্ধুবান্ধব বলতেও অনেকেরই আর বিশেষ কিছু অবশিষ্ট নেই। ফলে ছোট থেকেই ঘরের মধ্যে বন্দি সবাই। তার চেয়ে প্রি-স্কুলে নিজের বয়সি অনেকের সঙ্গে খেলাধুলো, সময় কাটানো, না হয় একটু চুলোচুলি, সে তো ভালই! কথাটা মেনে নিতেই হয়। তাই অনেক পুরনো দিনের মানুষও এখন নতুন ব্যবস্থাটাকে মন্দের ভাল বলে মেনে নিয়েছেন।

কিন্তু শুধু এইটুকুই নয়। প্রি-স্কুলের অন্য গুণও আছে। শিশুর মানসিক উন্নতিতেও তা সাহায্য করতে পারে। এটাও ভেবে দেখলে সাধারণ বুদ্ধিই বলে দেয়। অনেকের সঙ্গে মেশা, কথা বলা, নিজের কথা বোঝানো, দল বেঁধে কিছু একটা খেলা বা পড়া— এ-সবেরই একটা ভাল প্রভাব শিশুমনে পড়বে, সেটা স্বাভাবিক। কেবল কাণ্ডজ্ঞানের ভরসায় না থেকে এ নিয়ে অনেকে নানা সমীক্ষাও করেছেন বিভিন্ন সময়ে, অন্তত গত পঞ্চাশ বছরে এমন নানা সমীক্ষা হয়েছে। সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের চাইল্ড ডেভেলপমেন্ট জার্নালে একটি বড় সমীক্ষার রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে। প্রায় সাড়ে চারশো শিশুকে নিয়ে দশ বছর ধরে সমীক্ষাটি করা হয়েছে। নানা জাতিগোষ্ঠী থেকে নেওয়া হয়েছে এই শিশুদের। সবাই অল্প আয়ের পরিবার থেকে আসা। 

এই সমীক্ষার ফলাফল জানাচ্ছে, সামাজিক দক্ষতা (সোশ্যাল স্কিল) তো বটেই, পড়তে শেখা, শব্দের জ্ঞান ও তা ব্যবহার করে কথা বলার ক্ষমতা, সংখ্যা গোনা, নানান আকার চেনা ইত্যাদি নানা বিষয়ে প্রি-স্কুল শিশুদের অনেকটা এগিয়ে দেয়। তবে একটা বড় শর্ত হল, যাঁরা সেই সব প্রতিষ্ঠানে পড়াবেন বা শেখাবেন তাঁদের ঠিকঠাক প্রশিক্ষণ থাকা দরকার। মানে, শিক্ষকরা যথেষ্ট ওয়াকিবহাল এবং দক্ষ না হলে কাজের কাজ সে ভাবে হয় না। ভারতের মতো দেশে সেটা অবশ্য একটা বড় সমস্যা।

banglalive logo

বাংলালাইভ একটি সুপরিচিত ও জনপ্রিয় ওয়েবপত্রিকা। তবে পত্রিকা প্রকাশনা ছাড়াও আরও নানাবিধ কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে থাকে বাংলালাইভ। বহু অনুষ্ঠানে ওয়েব পার্টনার হিসেবে কাজ করে। সেই ভিডিও পাঠক-দর্শকরা দেখতে পান বাংলালাইভের পোর্টালে,ফেসবুক পাতায় বা বাংলালাইভ ইউটিউব চ্যানেলে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *