যেন থমকে গেছে সব। স্থির হয়ে গেছে যবনিকা। তোমার চোখের জল গড়িয়ে পড়ছে না আর। কী মায়ায় অর্ধনেত্র পাতাগুলো আটকে আছে ডালে। জীবন রয়েছে স্থির। মৃত্যুও রয়েছে তার কাছে। স্থির, ধ্রুব। তবে, কেউ জীবিত নয়? নয় মৃত? জল থেকে ঢেউ উঠে আর জলে ঝাঁপিয়ে পড়েনি। একটি শিকার মুখে শিকারীও স্থির। শিকার রয়েছে সেই স্থির হয়ে শিকারীর মুখে। একটি প্রণাম স্থির। ধূপের ধোঁয়াও আর উড়ছে না কোথাও। এ কোন চিত্রকর, ছবি আঁকতে গিয়ে, নিজে একটি ক্যানভাস হয়ে গেছে।
সুখ তবে এরকম? সময় যেখানে স্থির, আয়ু স্থির, দৃষ্টি স্থির, তার হাওয়া এসে স্থির হয়ে আছে? কোথায় রয়েছ প্রাণবায়ু? কোথায় রয়েছ আলো, কোথায় আঁধার? পাখির ডানায় স্থির হাওয়া। ঘড়ির কাঁটায় কোনও অস্থিরতা নেই। কোনও দিক নেই, কোনও রাস্তা ধরে কেউ আর যাবে না কোথাও। অন্ধকার নামবে বলে কোথাও গোধূলি আজও চিরকাল শান্তি হয়ে আছে।
বেজে ওঠো শাঁখ। বেজে ওঠো বাঁশি। শিকারীর মুখে মুখে অর্ধমৃত শিকারের প্রার্থনার মতো। সুখ নেই, শান্তি নেই মহাকাশে কোনওদিন। এ স্রোতের ঘাট নেই। মোহানাও নেই। তোমার চোখের জল গড়িয়ে পড়েছে কবে, চোখ থেকে স্বপ্ন ঝরে পড়ে।
এভাবে থেমো না জল, এ পৃথিবী সুখ নয়, চায় স্রোত। যেখানে তোমার, কিছুকাল বিশ্রামের মতো কিছু ঘর জুটে যাবে। যেখানে ভাতের গন্ধ মনোরম। ঘাম থেকে ঝরে পড়ে একজীবন আয়ু। এভাবে থেমো না জল, জানলা খুলে দাও।
দুঃখ যত আসে, তত আসে আলো, ভোর হয়, অন্ধকার যত গাঢ় হয়। মমির শরীর হয়ে সুখ পেলে দু চোখে কি স্বপ্ন দেখা যায়?
ছবি সৌজন্য: Wikimedia Commons
হিন্দোল ভট্টাচার্যের কবিতা লেখার শুরু নয়ের দশকে। কবি ও লেখক হিসেবে পরিচিতি ও জনপ্রিয়তা দুইই পেয়েছেন বাংলা ভাষার পাঠকদের কাছে। মোংপো লামার গল্প, সব গল্প কাল্পনিক, রুদ্রবীণা বাজো, বিপন্ন বিস্ময়গুলি, এসো ছুঁয়ে থাকি এই লেখকের কিছু পূর্বপ্রকাশিত বই।