সূর্যোদয়ের কয়েক মিনিট পর
কে যেন ডেকেছিল
তখন নদীর এপার ওপার কেউ ছিল না
সে ডাকের উত্তর দেবে ব’লে 

কঙ্কালীতলা মন্দিরের পাশে যে কুণ্ড রাখা আছে
তার ভিতরে ভিতরে সেই ডাক
বইছে, ঘুরপাক খেয়েছে, ভেসে আসছে
শেষে বাতাসের এক স্থির বিন্দুতে এসে হারিয়ে গেছে।

মাঝে কেটে গেল একশো বছর
আবার সেই স্বর
কুণ্ড থেকে ভেসে আসে
সে এখন মস্ত এক নিনাদ হয়েছে
নিনাদের সঙ্গে ধ্বনি, ধ্বনির সঙ্গে গর্জন
সে ধ্বনির মধ্যে মিশেছে ক্ষোভের এক একটা বাক্য 

যে বাক্য ধেয়ে আসে বিস্মৃতিবাণ হয়ে

গড়িয়াহাটের ফ্লাইওভারের তলায় পাগলা গদাই বাস করে।
নর্দমার পাশে শুয়ে শুয়ে
মাথার ছাদের সাঁকো ফুঁড়ে সে চাঁদ দেখে নেয়
দৈনন্দিন রাতে 

তারপর অন্ধকার মাপে
দশ আঙুলের ফাঁকে
দু’চোখের কর্নিয়ায়
সহজ স্বপ্ন এঁটে 

এক মারির রাতে
গদাইয়ের কানে
কুণ্ড থেকে সেই শব্দ ভেসে আসে 

আজ তার মিশ্র রাগ। শেষের নিদাদ।
গদাই শুনে লাফিয়ে বলে,
‘বুঝলে না? এই শব্দ, এই ডাক
আসলে বাঁচতে-চাওয়ার আর্তনাদ —’

ছবি সৌজন্য: Pinterest

মৌমন মিত্র কবি এবং গদ্যকার। থাকেন আমেরিকার নিউ জার্সি শহরে। বিদেশে থেকেও তিনি বাংলা সংস্কৃতির সঙ্গে নিজেকে জড়িয়ে রেখেছেন। তাঁর অন্যতম নিয়ত চর্চার বিষয় রবীন্দ্রনাথ। কবিতা, গল্প ছাড়াও বিভিন্ন বিষয়ে গদ্য লেখেন নানা পত্রপত্রিকায়। তাঁর প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থের নাম শ্যামকাঞ্চন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *