কলকাতায় পরিযায়ী পাখিদের আসার সময় হলে ধীরে ধীরে নকশাদার পশমিনা শালগুলো সব বেরিয়ে এসে রোদে গা মেলে দেয়। বুঝে নেওয়া যায় কলকাতার রাতজাগা শীতের আসরগুলি বসার সময় হয়ে গেছে। কিন্তু হেমন্ত-শীতের আরেকটি খুনসুটি হল উড়াল দিয়ে নিয়ে যাওয়া নস্ট্যালজিয়ার উদ্ভিন্ন বাগানে। স্মৃতির অলিতে গলিতে ঠেলে দিয়ে অতীতচারী করে তোলা মুহূর্তমধ্যে। আর আমার স্মৃতির ভান্ডারে তো শুধু শ্রাব্যদৃশ্য নেই, আস্ত একেকটা মেহফিল সেঁধিয়ে গেছে আজীবনের জন্য। এমন একেকটা মেহেফিল যার জুড়ি আজকের দিনে মেলা ভার।
সঙ্গীতের ঘরে জন্মেছি এ বড় সৌভাগ্য। প্রতিমুহুর্তই আসলে শিখতে শিখতে কেটে গেছে, কেটে যাচ্ছেও। তার মধ্যে সঙ্গীতের শিক্ষা তো রয়েইছে, তার সঙ্গেও জুড়ে রয়েছে সহবৎ , শিল্পযাপনের শিক্ষা, আরো কত কী, তা লিখতে গেলে একটা গোটা খেরোর খাতাই শেষ করতে হবে। আসল কথা হল প্রতিটি শিল্পের নির্যাসকে আত্মস্থ করতে না পারলে যে সঙ্গীত এককভাবে দুর্বল ও প্রাণহীন হয়ে পড়তে পারে সেই বোধটা এমনভাবে ভিতরে চারিয়ে দিয়েছিলেন বাবা (পণ্ডিত মানস চক্রবর্তী) যে, আমার কাছে সঙ্গীতচর্চা মানে শুধু রেওয়াজ করা বা গান শেখা বা সঙ্গীত পরিবেশন করা কোনোদিনই ছিল না। তার সাথে সাথেই ছিল বিভিন্ন দেশী-বিদেশী সাহিত্য, ইতিহাস, ছবি, চলচ্চিত্র, ভাস্কর্য ইত্যাদি নিয়ে নানা বই পড়া আর তাই নিয়ে অবসরে বাবার সঙ্গে গপ্পে মেতে ওঠা। মহাভারত থেকে শুরু করে হেনরি মাতিস, এলিসিও সুবিয়েলা থেকে শুরু করে ভ্যান গঘ, রঁদ্যা থেকে শুরু করে ঋত্বিক, এলভিস থেকে শুরু করে আর ডি বর্মণ, আব্দুল ওয়াহিদ খাঁ থেকে শুরু করে আলতামিরা কিচ্ছু বাদ পড়তো না সেইসব মেতে ওঠায়। তখন আমার কৈশোরবেলা। আর এইসবের পরেই আসরে গিয়ে বসতাম যখন বাবার সঙ্গে, বুঝতে পারতাম যে দরবারির ওইরকম ভেতরের কষ নিংড়ে উঠে আসা বাঢ়ত এর পর ঝড়ের মত আটগুনের তান আছড়ে ফেলতে গেলে আর তার পরক্ষণেই সমস্তকিছুকে শান্ত, শূন্য করে দেওয়া পঞ্চমের ওই পুকার দেওয়ার যোগ্যতা শুধুমাত্র রাগশিক্ষা করে আসেনা।
এমনিতে তো সারা বছরই বিভিন্ন অনুষ্ঠান চলতেই থাকত। কলকাতা বাদেও ট্রেনে বা উড়োজাহাজে করে বাবার বিভিন্ন শহরে যাতায়াত লেগেই থাকত। কখনও পুণে, কখনও আমদাবাদ, কখনও বেনারস, কখনও লখনউ বা দিল্লি, মুম্বই বা গোয়া ইত্যাদি ইত্যাদি। আবার কখনও পাড়ি জমানো ইউরোপের বিভিন্ন দেশগুলিতে। কিন্তু তবুও কলকাতার শীতের মেহফিলের আমেজই আলাদা। আর আমার কচিবয়সে যে সমস্ত সঙ্গীতের আসর প্রত্যক্ষ করেছি, তাতে লক্ষ করেছি শ্রোতারাও ছিলেন অসম্ভব দীক্ষিত। আসরের শেষে সেইসব শ্রোতাদের ভিড়ে বাবার পাশে ছায়ার মতন জুড়ে থাকতাম। অজস্র মুগ্ধতার মাঝে আমারও মুগ্ধতা কিছু তার কাছে পৌঁছত বোধহয়।
কিছুদিন আগেই অবনীকাকু বাবার একটি আসরের কথা বলছিলেন। কাকু একেবারে পোড় খাওয়া শ্রোতা যাকে বলে। অনেক অল্পবয়স থেকে অসংখ্য আসরে বাবাকে শুনেছেন। সেইদিন বলছিলেন যে আসরের কথা, পেইন্টার্স এইট্টি আয়োজিত সেই আসরে মিয়াঁ কি মলহার গেয়েছিলেন বাবা আর তারই সঙ্গে সঙ্গে ক্যানভাসে রঙ তুলিতে ছবি এঁকেছিলেন খ্যাতনামা শিল্পীরা। কাকু এমন ভাবে বর্ণনা করছিলেন সেই পরিবেশনকে, আমি যেন আবার করে গিয়ে পড়ছিলাম সেই সন্ধ্যেটার কলকাতায়। এমনটাই তো আসলে চাইতেন বাবা, শিল্পী হিসাবে। শ্রোতার মনে তাঁর সঙ্গীতের এমনভাবে জারণ ঘটুক যে, সেই সময়টা প্রোথিত হয়ে যায় মনের কন্দরে। শ্রোতা যেন শিল্পের শুধু সাক্ষী হয়ে না থেকে তার অংশ হয়ে যেতে পারেন, এমন পরিবেশনাই তো জীবনবোধের প্রতিভূ। আর মলহারে যেন সিদ্ধ ছিলেন বাবা। শ্রোতারা শ্রদ্ধাভরে বলতেন “মলহারে সিদ্ধপুরুষ”। বাবা বিশ্বাস করতেন স্বর দিয়ে প্রকৃতিকে উদ্বুদ্ধ করা যায়। বাটারফ্লাই এফেক্ট যাকে বলে। সঠিক এবং আন্তরিক রাগগায়নে মেঘকে পুঞ্জীভূত করে আনা যায়, আসে বৃষ্টি। এমন ঘটনার সাক্ষী আছে অনেক। মেঘ বা মিঁয়া কী মলহার গাইছেন বাবা, মাঝপথে অঝোরধারে বৃষ্টি এসে গেছে আর আসরশেষে বাড়ি ফিরতে না পেরে গুরুভাই-বোনেরা থেকে গেছেন রাতভর, এমন দৃষ্টান্তও বিরল নয়।
যে সমস্ত আসরের কথা আজ উল্লেখ করছি তা আমার খুব ছোট্টবেলা থেকে দেখা। সেইসব আসরে যেমন শ্রোতারা থাকতেন, শিল্পীরাও থাকতেন শ্রোতার ভূমিকায়। যার সাথে করপোরেট স্পনসরড কনসার্টের বিস্তর ফারাক। বাবা যখন সঙ্গীতাসরের যাত্রা শুরু করেন তখন বয়স মাত্র সাত। সেইসময়ে তাঁকে সামনে বসে শুনেছেন গাঙ্গুবাই হাঙ্গল, কেসরবাঈ কেরকর, বড়ে গুলাম আলি খান সাহেব, আমির খান সাহেব প্রমুখ কিংবদন্তীরা। সুদীর্ঘ তেষট্টি বছর আসরে সঙ্গীত পরিবেশন করেছেন বহু বহু শ্রোতা এবং গুণী শিল্পীদের সামনে, দশকের পর দশকে মুখগুলো বদলাতে বদলাতে থেকেছে। নতুন মুখের সারিরা এসেছে ধীরে ধীরে, পুরোনো সময় আর মানুষেরা ইতিহাস হয়ে থেকে গেছেন।
আর পরবর্তীকালে এই শেষদিন পর্যন্ত সামনে বসে শুনতে দেখেছি অজয়কাকু, রাশিদ চাচা, রাজন-সাজন চাচা, কুমার কাকু, অনিন্দ্যকাকু, এন রাজম, কলা রামনাথ প্রমুখ আরও বহু বহু শিল্পীদের। এঁদের প্রত্যেকেই বাবার অনুজ এবং তৎসহ প্রোথিতযশা শিল্পী, তাই প্রত্যেকের সঙ্গেই একটা স্নেহের সম্পর্ক যেমন ছিল, তেমনই পারস্পরিক শ্রদ্ধারও একটা গভীর সম্পর্ক ছিল সেই প্রথম থেকেই। মাঝেমধ্যে বাড়িতেও আসতেন অনেকেই। সেই যুগ থেকে এ যুগ পর্যন্ত সক্কলের সঙ্গেই আসলে জড়িয়ে রয়েছে অগুন্তি গল্পকথা। সেই দাদুর সময় থেকেই আমাদের গানের ঘরে পায়ের ধুলো পড়েনি এমন শিল্পী কমই আছেন। শিল্পীদের মধ্যে পারস্পরিক ভালোবাসা আর শ্রদ্ধাবোধ আসলে তো সঙ্গীতকেই এগিয়ে নিয়ে যায়।
একবার মনে আছে, সেটা ১৯৯৫ সাল, কানন জেঠু অর্থাৎ সর্বজনশ্রদ্ধেয় এ টি কানন সাহেবের পঁচাত্তর বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে তাঁর আইটিসি সঙ্গীত রিসার্চ আকাদেমির বাড়িতে সারা বছর ব্যাপী সঙ্গীতানুষ্ঠানের আয়োজন হচ্ছিল। প্রত্যেক মাসে একজন একজন করে তাবড় তাবড় শিল্পী গাইতে বা বাজাতে আসছিলেন ওঁর ওই সঙ্গীতময় গানের ঘরটিতে। শ্রোতা, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সঙ্গেই সামনে আলো করে বসে শুনতেন কলকাতার সঙ্গীতজগতের নক্ষত্ররা। সেই সূত্রেই বাবাকে অনুষ্ঠানে গাইবার আমন্ত্রণ জানাতে একদিন বাড়িতে এলেন কাননজেঠু আর মালবিকা পিসি। আগেই কথাবার্তা হয়ে গেছিল টেলিফোনে কিছুটা, তাই বাড়িতে আসাটা একটা উপলক্ষ্যমাত্র। বাবাকে অসম্ভব ভালোবাসতেন দু’জনেই। আর বাবাও অপার শ্রদ্ধার চোখে দেখতেন দু’জনকেই। সারাটা সকাল কেটে গেল চা আর পানের বাটা সহযোগে সুদূর অতীত থেকে বর্তমানের সঙ্গীতযাত্রায়। কত যে আসরের গল্প তার কোনো ইয়ত্তা নেই। প্রথম কবে কানন জেঠু দাদুকে শুনেছিলেন আসরে, সঙ্গে ছিল কিশোরবয়সী বাবা। আবার কখনও বাবা গল্প বলছেন কাননজেঠু বা মালবিকা পিসির আসরের। কখনও বা আবার গল্প গিয়ে পড়ছে অন্য কোনও আসরে শোনা অন্য কোনও কিংবদন্তী শিল্পীর কথায়। আমার কাছে তখন সেইসব রূপকথার গল্পের মতোই মায়াবি। সঙ্গীত জগতের রাজা-রানীদের উপকথা আর তার সঙ্গে উপরি পাওনা ছিল বিভিন্ন ঘরের গায়কির আলোচনা-প্রত্যালোচনা। অজান্তেই শিখে নিচ্ছিলাম অমোঘ সব প্রয়োগের কথা! যা শুধু প্রথাগত শিক্ষায় মেলেনা।
তারপর, যথাসময়ে একদিন সন্ধ্যায় আসর বসলো কানন জেঠুর বাড়ির হলঘরে। কানায় কানায় পূর্ণ ঘর। তিলধারণের জায়গা নেই। বাইরে পর্যন্ত দাঁড়িয়ে রয়েছেন মানুষ। স্টেজে বাবার সঙ্গে তবলা সঙ্গতে কুমার কাকু – পণ্ডিত কুমার বোস। কার্পেট বিছানো শ্রোতার আসন সারা হলঘর জুড়ে। সামনেই বসে রয়েছেন কানন জেঠু, মালবিকা পিসি, পণ্ডিত বিজয় কিচলু, পণ্ডিত অরুণ ভাদুড়ী, মুশকুর চাচা , আনন্দগোপাল বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখ আরও অনেক শিল্পীরা। অনেকে তখনও এসে ঢুকছেন আসরে। টুক করে বসে পড়ছেন সামনে। তারপর শুরু হল গান।
এইসব আসরের মজা হল এই, যে শ্রোতার আসনে যাঁরা রয়েছেন তাঁদের অধিকাংশ নিজেই লব্ধপ্রতিষ্ঠ শিল্পী, তাই গানের মাঝখানেও তারিফ, আর কথার আদানপ্রদান চলছিল, আসছিল ফরমায়েশও। প্রথম অধিবেশন শেষ হল একটি অভাবনীয় সওয়াল জওয়াবে। কুমার কাকু আর বাবা সমে এসে পড়লেন যাকে বলে এক্কেবারে ক্লাইম্যাক্সে। তৎক্ষণাৎ সামনে থেকে বিজয় কিচলু সহাস্যে বলে উঠলেন “ক্যা বাত হ্যায় ভাই। ক্যা গানা হ্যায়, ক্যা সওয়াল জওয়াব। অওর ইতনি সুন্দর জোড়ি স্টেজপে হো তো সিরফ সুননে মে নহী দেখনে মে ভী মজা হ্যায়!” বলাই বাহুল্য কুমার কাকু আর আমার পিতৃদেবের মতন দুই সুপুরুষের এহেন পরিবেশনা শ্রুতিনন্দন তো বটেই দৃষ্টিনন্দনও বটে। অরুণ জেঠু আর কানন জেঠুও বলে উঠলেন একসঙ্গে “সহি বাত!” “অব এক ঠুমরী হো যায়ে মানস!” অমনি অরুণ ভাদুড়ী বলে উঠলেন “না না সে কী! খেয়াল আরেকটু হোক! সাধ মেটেনি তো! ”
আসলে এইরকম মজলিসি আদানপ্রদান বড় আসরে তো পাওয়া যায় না। ঘরোয়া আসরের রজনীগন্ধার স্নিগ্ধতা আর শিল্পীদের পরস্পরের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ, ভালোবাসা আর সৌভ্রাতৃত্ব চিরকাল মুগ্ধ করতো আমাকে। আমাদের বাড়িতেই যখন বাবার জন্মদিন উপলক্ষ্যে সারারাতব্যাপী আসর হত, তাবড় তাবড় শিল্পীরা এসে গানবাজনা করে গেছেন সেইসব আসরে। আমাদের কাছে সেইসব আসরের দিন উৎসবের চেয়েও বেশি কিছু ছিল আসলে। সারাবছর মুখিয়ে থাকতাম। একবার মনে আছে বাবার সঙ্গে বাজাতে বাজাতে পুকার শুনে অঝোরে কাঁদতে শুরু করলো শ্যামল জেঠু – পণ্ডিত শ্যামল বোস। সঙ্গীতের সঙ্গে এতখানি আত্মিকতা না হলে যে সঙ্গতও অসঙ্গত হয়ে যায়।
আবার এই যেমন কানন জেঠুর বাড়ীর সেই আসরের কথা লিখতে লিখতেই মনে পড়ে যাচ্ছে কানন জেঠুর ওই একই গানের ঘরে কয়েকমাস পরেই রাশিদ চাচার গাইবার কথা ছিল। তখন রাশিদ চাচা তরুণ প্রতিশ্রুতিমান গায়ক হিসেবে সদ্য সকলের নজর কাড়তে শুরু করেছেন। আমাদেরও আমন্ত্রণ ছিল। যথাসময়ে আমি বাবার সঙ্গে সঙ্গে গুটিগুটি পায়ে গিয়ে উপস্থিত হলাম আসরে। গেট দিয়ে ঢুকতে ঢুকতেই শুনতে পাচ্ছিলাম শুদ্ধকল্যাণের বাঢ়ত শুরু হয়ে গেছে। বাবা ঢুকতেই রাশিদ চাচা গাইতে গাইতেই প্রণাম জানালেন, সামনের আসন দেখিয়ে দিলেন বাবাকে। সামনে ফাল্গুনী কাকা, উস্তাদ আমজাদ আলি খান সাহেব, কানন জেঠু প্রমুখরা আসর উজ্জ্বল করে বসে রয়েছেন। বাবার সঙ্গে সঙ্গে আমিও গিয়ে বসলাম। খুব কুন্ঠিত লাগছিল এইরকম সব মানুষের সঙ্গে পাশাপাশি আসনে বসতে। কিন্তু আমি তো বাবার ছায়া, আলাদা হওয়ার প্রশ্ন ওঠেনা। চুপচাপ বসে পড়লাম তাই। সবাই সবাইকে প্রতিনমস্কার করলেন।
আশ্চর্যভাবে লক্ষ্য করলাম রাশিদ চাচা বাঢ়তের কিছুদূর এগিয়ে যাওয়া সত্ত্বেও আবার ফিরে ষড়জ থেকে বিস্তার আরম্ভ করলেন। আসলে সত্যিকথা বলতে একজন শিল্পী তো সবসময়েই চান তাঁর গান গুণী মানুষের কাছে পূর্ণমাত্রায় পৌঁছক। তিনি আসলে হয়ত সেটাই চাইছিলেন তখন। আর এমন আসরই তো আদর্শ সেই ক্ষেত্রে। আসরের শেষে বাবার পা ছুঁয়ে প্রণাম করছেন যখন রাশিদ চাচা আর বাবা বলছেন “জিতা রহ”… রাশিদ চাচা বলে উঠলেন “বাঢ়ত টা চেষ্টা করেছি একটু…” বলে বাবার দিকে হাত দেখাচ্ছেন, আর বাবা তার পিঠে আলতো চাপড় মেরে তারিফ করছেন। একমুহুর্তের জন্যও মনে হচ্ছিলনা রাশিদ চাচা বাবার শিষ্য নন, দুটো মানুষের ঘরানা আলাদা, ধর্ম আলাদা। এইসব রেখা আসলে তো একই হাতের পাতার মধ্যে মিলেমিশে যায়, হাতের তাতে কিচ্ছু যায় আসে না। সঙ্গীতও তেমনই এইসব কিছুকে ধারণ করেও এইসব কিছুর উর্ধ্বে পারস্পরিক ভালোবাসা আর সৌহার্দ্যের জায়গায় নিয়ে যায় আমাদের। আরও আরও কাছে নিয়ে আসে আর পারস্পরিক ভেদের রেখাগুলি মিলিয়ে যেতে থাকে মেহেফিল থেকে মিনারের যাত্রায়।
সঙ্গীতজ্ঞ মানস চক্রবর্তীর সুযোগ্যা কন্যা শ্রীদর্শিনী উত্তর ভারতীয় উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতে তালিম নিয়েছেন এক্কেবারে শিশুবয়স থেকে। সঙ্গীত তাঁর শিরা-ধমনীতে। টাইমস মিউজিক থেকে বেরিয়েছে গানের সিডিও। মুম্বইয়ের ইন্ডিয়ান আইডল অ্যাকাডেমিতে মেন্টরের ভূমিকা পালন করেন শ্রীদর্শিনী। লেখালিখিও তাঁর পছন্দের বিষয়।তাঁর প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ 'শীতের অব্যর্থ ডুয়ার্স', 'এসো বৃষ্টি এসো নুন', 'রাজা সাজা হল না যাদের' এবং 'জ্বর-জ্বর ইচ্ছেগুলো' পাঠকমহলে সমাদৃত।
ইতিহাসের পাতা গুলো কেউ যেন মেলে ধরল। খুব সুন্দর লেখা। ভারতবর্ষের মার্গ সংগীতের প্রসার করতে এধরনের লেখা খুব প্রয়োজন। আরও এরকম লেখা পাবার ইচ্ছে রইল।
লেখা সংকলিত হলে ভাল হয়।