রামকিঙ্কর বেইজ। নামটা উচ্চারণমাত্রই শিল্পজগতের সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে যুক্ত মানুষের হৃদয়ে একঝলক রক্ত চলকে ওঠে। আমৃত্যু চাক্ষিক রূপকার এই শিল্পীর প্রাণের সংযোগ ছিল বীরভূমের লাল কাঁকুরে মাটির সঙ্গে, সোনাঝুরির পাতার সঙ্গে, প্রাচীন বটের শেকড়ের মতো তাঁর শেকড় ছড়িয়ে ছিল রাঢ় বাংলার রুক্ষতা, আদিমতার গহনে। তাঁকে স্মরণ করে প্রতি বছরই তাঁর জন্মদিনে দেবভাষা বই ও শিল্পের আবাস (৯/২ ফার্ন রোড, গড়িয়াহাট, কলকাতা ৭০০০১৯) আয়োজন করে রামকিঙ্কর উৎসবের।
কিন্তু এ বার, এই বিশ্বব্যপী অতিমারী এবং সাম্প্রতিক প্রাকৃতিক দুর্যোগের অভিঘাতে, প্রতিবারের মতো দেবভাষার দোর খুলে দেওয়া গেল না সর্বসাধারণের জন্য। লকডাউনে মানুষ ঘরবন্দি। দুর্যোগের আঘাতে বিমর্ষ, হতাশ্বাস। তাই এক অভিনব পদ্ধতিতে উৎসবের আয়োজন করেছে দেবভাষা। রামকিঙ্করকে স্মরণে রেখে প্রদর্শনী শুরু করা হয়েছে ফেসবুক ও ইউটিউবের মাধ্যমে, যার নাম ‘সপ্তরথী’।
এমতাবস্থায় সকলের আগে যে স্বাভাবিক প্রশ্নটি উঠে আসে তা হল, প্রদর্শনীর জন্য কেন ফেসবুক ও ইউটিউবকে বেছে নেওয়া হল? এর মূল কারণ দু’টি।
প্রথমত, কোভিড-আবহে ফেসবুক ও ইউটিউব লাইভে কবিতাপাঠ, গানের জলসা থেকে শুরু করে আড্ডার আসর সবই দেখতে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছি আমরা। রয়েছে ইন্সটাগ্রাম লাইভও। তাহলে চিত্র প্রদর্শনীই বা বন্ধ থাকবে কেন? অনলাইন মাধ্যম এই কলাক্ষেত্রেও ব্যবহার করার কথা ভাবনায় এনেছে দেবভাষা।
দ্বিতীয়ত, সূচনাকাল থেকেই দেবভাষাকে কখনওই শুধুমাত্র একটি শিল্পবাণিজ্যের ক্ষেত্র হিসেবে বিবেচনা করা হয়নি। আমাদের উদ্দেশ্য – সকলের কাছে পৌঁছক শিল্প। নীরবে সকলের মনে উন্মেষ হোক শিল্পরুচির। এ ব্যাপারে সাক্ষ্য দেবে দেবভাষার অতীত প্রয়াসগুলি। ফেসবুক ও ইউটিউবে মতামত-রুচি-সম্প্রদায় নির্বিশেষে সকলের দেখা মেলে। শিল্পরুচিশীল দর্শকের পাশাপাশি যাঁদের খুব নিয়মিত ছবি দেখার অভ্যাস নেই, তাঁরাও রয়েছেন। এই সাধারণ জনপরিসরে ছবিকে নিয়ে যাওয়ার ভাবনা থেকেই দেবভাষার প্রয়াস এই ফেসবুক ও ইউটিউবে অনলাইন প্রদর্শনী। এবং, সম্ভবত কলকাতায় এই প্রথম, ফেসবুক ও ইউটিউবের মাধ্যমে কোনও চিত্র প্রদর্শনীর সূচনা হতে যাচ্ছে।

তাই দেবভাষা বই ও শিল্পের আবাস-এর দুই কর্ণধার সৌরভ দে ও দেবজ্যোতি মুখোপাধ্যায়ের ফেসবুক পেজে সোমবার, ২৫ মে থেকে শুরু হয়ে গিয়েছে এই অনলাইন প্রদর্শনী – সপ্তরথী। উপলক্ষ – রামকিংকর উৎসব। ফেসবুকেই প্রকাশিত হচ্ছে প্রদর্শনীর প্রয়োজনীয় আপডেট এবং ছবি দেখার ইউটিউব লিংক।
কিন্তু কেন সপ্তরথী নামকরণ?
উত্তরটি সরল। সাত সপ্তাহে সাত জন বিশিষ্ট শিল্পীর ছবি প্রদর্শিত হবে এখানে। প্রথম সপ্তাহে, অর্থাৎ ২৫ থেকে ৩১ মে পর্যন্ত প্রদর্শিত হচ্ছে বর্ষীয়ান শিল্পী রামানন্দ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি। পরের পরের শিল্পীদের নাম জানতে চোখ রাখুন সৌরভ ও দেবজ্যোতির ফেসবুকের পাতায়।

এই প্রদর্শনীর ওয়েব পার্টনার www.banglalive.today। বাংলালাইভ দীর্ঘ পঁচিশ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাঙালি সংস্কৃতির মূল সুরটুকু ধরে রাখার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে সাহিত্য, শিল্প, নাটক, সিনেমা, সঙ্গীত এবংবিধ নানা বিষয়ে একনিষ্ঠ মননচর্চার মাধ্যমে। দেবভাষার এই অভিনব উদ্যোগে শামিল হতে পেরে বাংলালাইভ গর্বিত, আনন্দিত। বাংলালাইভের চলছবি বিভাগেও দেখা যাবে প্রদর্শনী সংক্রান্ত নানা ভিডিও। প্রকাশিত হবে এই সংক্রান্ত লেখা। প্রদর্শনী দেখতে ক্লিক করুন নিচের ইউটিউব লিঙ্কটিতে। এখানেই দেখা যাবে রামানন্দ বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রদর্শিত ছবিগুলি।
এবার আসা যাক বিকিকিনির বিষয়টিতে। প্রদর্শনীতে দেখানো কোনও ছবি কিনতে আগ্রহী হলে সরাসরি যোগাযোগ করতে পারেন এই দু’টি মাধ্যমে –
৯৮৩৬৯১৬৩৭৬ – হোয়াটস্যাপ
৯৮৭৪২৩৭২১৭ – হোয়াটস্যাপ
banglalive@celsiusindia.com – ইমেল আইডি।
প্রাথমিক কথাবার্তার পর ছবির মূল্য স্থির হলে বাংলালাইভের মাধ্যমেই পেমেন্ট করা যাবে। পেমেন্ট লিঙ্কটি সংশ্লিষ্ট ক্রেতার কাছে ইমেল মারফত পাঠানো হবে। সেই লিঙ্কে ক্লিক করলেই ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড ও ইন্টারনেট ব্যাঙ্কিংয়ের মাধ্যমে টাকা দেওয়া যাবে। এই দামের মধ্যে ধরা থাকবে –
১. ছবির দাম
২. প্যাকিং ও হ্যান্ডলিংয়ের খরচ
৩. ডেলিভারির খরচ
লিখতে শিখেই লুক থ্রু! লিখতে লিখতেই বড় হওয়া। লিখতে লিখতেই বুড়ো। গান ভালবেসে গান আর ত্বকের যত্ন মোটে নিতে পারেন না। আলুভাতে আর ডেভিলড ক্র্যাব বাঁচার রসদ। বাংলা বই, বাংলা গান আর মিঠাপাত্তি পান ছাড়া জীবন আলুনিসম বোধ হয়। ঝর্ণাকলম, ফ্রিজ ম্যাগনেট আর বেডস্যুইচ – এ তিনের লোভ ভয়ঙ্কর!!