যত দিন যাচ্ছে চারিদিকে দূষণ আরও বেড়ে চলেছে| যে বাতাসে আমরা শ্বাস নিচ্ছি তা দূষণে ভরা| সঙ্গে রোজকার ফল-শাক-সব্জি যা খাই তাতে কীটনাশকে | এ ছাড়াও নেশায় আসক্ত হলে বা ওষুধ খাওয়ার ফলে আমাদের শরীরে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠছে| এই অবস্থায় আমাদের স্বাস্থ্যের যাতে আর ক্ষতি না হয়, তার দিকে নজর রাখা খুব জরুরি| বিশেষজ্ঞদের মতে, আমরা যদি নিয়মিত ভাবে শরীর থেকে দূষিত পদার্থ বা টক্সিন বের করে দিই, তা হলে আমাদের শরীর ঠিক থাকবে| কিন্তু প্রথমেই বুঝতে হবে কখন আপনার শরীর ক্ষতিকারক টক্সিনে ভরে উঠেছে|

আমাদের শরীর কিন্তু বহু রকম আকার-ঈঙ্গিতে বোঝায় এই বার শরীরের খেয়াল রাখতে হবে, টক্সিন বের করে দেওয়ার সময় এসে গেছে| কিন্তু বেশির ভাগ ক্ষেত্রে আমরা তা উপেক্ষা করি| মিলিয়ে দেখে নিন এই উপসর্গুগলো আপনার সঙ্গে মিলে যাচ্ছে কী না? যদি মিলে যায় তা হলে বুঝবেন সময় এসে গেছে আপনার শরীরকে ডিটক্সিফাই করার|

১) পেটে অতিরিক্ত মেদ জমলে : শরীরে ক্ষতিকারক টক্সিন বেড়ে গেলে শরীর গ্লুকোজ লেভেল ঠিক রাখতে পারে না| একই সঙ্গে কোলেস্টেরলকে সঠিক ভাবে কাজে লাগাতে পারে না| ফলে পেটে মেদ জমা হয়|

২) ত্বকের সমস্যা : শরীরে অতিরিক্ত টক্সিন জমা হলে ত্বকের সমস্যা দেখা দেয়| ত্বকের চুলকানি‚ ইনফ্ল্যামেশন এবং খসখসে হয়ে যাওয়া ইত্যাদি ত্বকের সমস্যা দেখা দিতে পারে|

৩) মাথা ব্যথা : শরীরে যে টক্সিন জমা হচ্ছে তা আমাদের সেন্ট্রাল নার্ভাস সিস্টেম কে ঠিক মতো কাজ করতে দেয় না| ফলে মাঝে মাঝেই মাথা ব্যথা হবে|

৪) শরীর থেকে অতিরিক্ত তাপ বেরোবে : শরীরে অনেক রকমের টক্সিন জমা হওয়ার ফলে লিভার বা যকৃতকে বেশি পরিমাণে কাজ করতে হয়| এর ফলে শরীরে উচ্চ তাপ তৈরি হয়|

৫) লো এনার্জি লেভেল : টক্সিন জমা হওয়ার ফলে আপনার মনে হবে শরীরে কোন এনার্জি নেই| সব সময়ই ক্লান্ত লাগতে থাকবে।

৬) সাইনাসের সমস্যা বেড়ে যাবে : শরীরে বেশি মাত্রায় টক্সিন জমনে ঘন ঘন সাইনাসের সমস্যা দেখা দেবে|

৭) ইনসোমনিয়া : শরীরে টক্সিন বেড়ে গেলে ঘুমে ব্যাঘাত ঘটে, ঘুম আসে না| এটা হয় কারণ টক্সিন শরীরের টিস্যুতে গিয়ে জমা হয় আর ঠিক মত রক্ত চলাচল হতে দেয় না |

৮) গলব্লাডারে অসুবিধা দেখা দেয় : যকৃতে টক্সিন জমা হওয়ার ফলে গলব্লাডারের মুখ বুজিয়ে দেয়|

৯) জিভের ওপর সাদা বা হলুদ পরত : যদি দেখেন জিভের ওপর সাদা বা হলুদ পরত পরেছে তা হলে বুঝবেন আপনার রক্তে টক্সিন বেড়ে গেছে|

এই বার জেনে নিন কী করে ডিটক্স করবেন – 

১) এপসম সল্ট বাথ : শরীরকে ডিটক্সিফাই করতে এপসম সল্টের জুড়ি নেই| এটা দিয়ে চান করার ফলে ম্যাগনেসিয়ামের লেভেল বেড়ে যায়| যার সাহায্যে শরীর থেকে ক্ষতিকারক টক্সিন বেরিয়ে যায়| এ ছাড়াও শরীর থেকে ব্যাথা-বেদনা কমাতে সাহায্য করে এপসম সল্ট বাথ| তবে যাদের উচ্চ রক্ত চাপ বা হার্ট প্রবলেম আছে তারা এটা করবেন না|

২) গ্রিন টি : গ্রিন টি বহু রকমের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আছে যা টক্সিন কমাতে সাহায্য করে| এ ছাড়াও এতে Epigallocatechin-3-gallate (EGCG) আছে যা লিভারকে টক্সিনের হাত থেকে বাঁচায়| দিনে ২ থেকে ৩ বার গ্রিন টি খান|

৩) লেবুর রস : লেবুর রস একই সঙ্গে অ্যালকালাইজ়ার অর্থাৎ লেবুতে ক্ষারের মাত্রা বেশি থাকে, তাই অম্লকে ভারসাম্যে রাখে এবং টক্সিন মুক্তিতে সাহায্য করে| এ ছাড়াও লিভারের বা যকৃতের পিত্ত উৎপাদনের মাত্রা বাড়িয়ে দেয় ফলে আরও ভাল করে খনিজ পদার্থ শোষণ করতে পারে| লেবুতে ভিটামিন সি এবং অ্যান্টি অক্সিডেন্ট আছে যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়| লেবুর খোসায় এক ধরনের অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট আছে যার নাম d-limonene যা যকৃতের উপস্থিত এনজাইমের কার্য ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয় যা শরীর থেকে টক্সিন কমাতে সাহায্য করে|

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *