কথাটা শুনেই বাবলুর মার চোখে জল এসে গেল। বাবলুর বয়স মোটে পাঁচ বছর। এখন তো পড়াশুনো খেলাধুলা সবই অনলাইনে। কদিন থেকেই বলছিল ক্লাস করবার সময় চোখে ব্যথা করছে, টিভিটাও ভালমতো দেখা যাচ্ছিল না। তাই ওর মার সাথে এসেছে চোখের ডাক্তারের কাছে। চোখ পরীক্ষা করে জানা গিয়েছে বাবলুর চোখে পাওয়ার এসেছে, চশমা পরতে হবে। তাই মার চোখে জল।   

বাচ্চাদের চশমার গুরুত্ব বড়দের চাইতে অনেক বেশি। বড়রা যদি চশমা ব্যবহার না করেন, যদি চশমা ঠিক মতো বানানো না হয় বা যদি পাওয়ারের ত্রুটি হয়ে থাকে তাহলে মাথাধরা, ঝাপসা দেখা  ইত্যাদি কিছু সাময়িক সমস্যা হতে পারে যা সহজেই সমাধান করা সম্ভব। কিন্তু ছোট বাচ্চাটির যদি চশমার প্রয়োজন হয়, অথচ তাকে চশমা পরাতে না চান, যদি পাওয়ার ঠিকঠাক না হয় বা ডাক্তারের নির্দেশে সময়মতো পাওয়ার বদল না করেন তাহলে দৃষ্টির স্থায়ী ক্ষতি হয়ে যেতে পারে যা পরবর্তীকালে আর সংশোধন করা সম্ভব হয়না। 

জন্মের পরে ১০-১১ বছর বয়স পর্যন্ত সময় লাগে শিশুদের চোখের গঠন ও দৃষ্টির পূর্ণতা পেতে। চোখের কোনও ত্রুটি থাকলে সেই সময়ের ভিতরেই চিকিৎসা শুরু করা দরকার। পাওয়ার ছাড়াও জন্মগত ছানি, ট্যারা চোখ ইত্যাদি নিয়েও শিশু জন্মগ্রহণ করতে পারে। দূর্ভাগ্যক্রমে শিশুদের চোখের সমস্যা বা তার চশমা লাগবে কিনা অনেক সময়ই তা সহজে বোঝা যায়না। ফলে চিকিৎসা শুরু করতে অহেতুক দেরি হয়ে যায়। এই দেরির মাসুল তাকে সারাজীবন ভোগ করতে হতে পারে। এজন্য প্রত্যেক শিশুর যত তাড়াতাড়ি সম্ভব একবার ভালভাবে চোখ পরীক্ষা করিয়ে নেওয়া অত্যন্ত জরুরি।

kid wearing eyeglasses
বাচ্চাদের চোখ পরীক্ষা করা বা পাওয়ার ঠিক করা খুব সহজ কাজ নয়

কীভাবে বুঝবেন আপনার বাচ্চার চশমা লাগতে পারে?

  • চোখের কাছে নিয়ে বই পড়া বা টিভির খুব সামনে গিয়ে বসা।
  • এক চোখ বন্ধ করে বই পড়া বা টিভি দেখা।
  • পড়বার সময় লাইনের উপরে আঙ্গুল রাখা।
  • চোখ কুঁচকিয়ে তাকানো। 
  • চোখের ট্যারা ভাব।
  • ঘাড় কাত করে পড়বার চেষ্টা।
  • বার বার চোখ রগড়ানো, চোখ থেকে জল পড়া।
  • আলোর দিকে তাকাতে কষ্ট।
  • মাথা ব্যথা বা চোখের ক্লান্তি।
  • দেখবার সময় বাচ্চার চোখ যদি কাঁপতে (Nystagmus)  থাকে।
  • বাইরে খেলাধুলা করতে না যাওয়া, পড়াশুনো বা হোমওয়ার্ক করতে অনীহা।
  • পড়াশোনায় অমনোযোগ, পরীক্ষার খারাপ রেজাল্ট।

এছাড়াও বর্তমান করোনা পরিস্থিতে স্কুল বন্ধ, গৃহবন্দি বাচ্চাদের পড়াশুনো, খেলাধুলা সবই হয়ে পড়েছে ডিজিটাল, স্মার্টফোন কিম্বা কম্পিউটার নির্ভর। এগুলির অতিরিক্ত ব্যবহারও বাচ্চাদের চোখে পাওয়ারের সৃষ্টি করে, চশমার প্রয়োজন হয়ে পড়ে।  

বাচ্চাদের চোখের পাওয়ার কীভাবে জানা যায়?

আজকাল অত্যাধুনিক অটো-রিফ্রাক্টোমিটার যন্ত্রের সাহায্যে চট করে চশমার পাওয়ার জেনে নেওয়া সম্ভব। কিন্তু বাচ্চাদের চোখ পরীক্ষা করা বা পাওয়ার ঠিক করা খুব সহজ কাজ নয়। প্রথমত তারা চঞ্চল, ডাক্তারের নির্দেশ অনেক সময় বুঝতে পারে না। অনেকের অক্ষরজ্ঞান সম্পূর্ণ হয় না এবং অনেকে আবার ভয়ে বা লজ্জায় চুপ করে থাকে। অনেক ধৈর্য আর সময় নিয়ে এইসব বাচ্চাদের চোখ পরীক্ষা করতে হয়। বড়দের মতো একদিনেই পাওয়ার দেওয়া যায় না বলে বাচ্চাদের একাধিকবার চোখের ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতে হতে পারে। অ্যাট্রোপিন মলম বা হোমাট্রোপিন আইড্রপ দিয়ে বা চোখের Pupil কে বড় (Dilate) করে, রেটিনোস্কোপি পরীক্ষার পরে বাচ্চাদের পাওয়ার নির্ণয় করা হয়। বাচ্চাদের চোখের Pupil বড় হতে অনেক সময় লাগে। সেইজন্য হোমাট্রোপিন জাতীয় আইড্রপ বাড়ি থেকে লাগিয়ে আসাই ভাল।  

বাবা-মায়ের দুঃশ্চিন্তা

অনেক বাবা-মা চান না তাদের বাচ্চা এখনই চশমা পরুক। বরং চান আইড্রপ, চোখের ব্যায়াম বা ভিটামিনের সাহায্যে চোখ ভাল করতে। তাঁরা মনে করেন এত ছোট বয়সে চশমা পরলে, পরে পাওয়ার অনেক বেড়ে যাবে। সেজন্য চোখের সমস্যা থাকলেও চোখের ডাক্তারের পরামর্শ নিতে তারা অহেতুক অনেক দেরি করে ফেলেন। মনে রাখা দরকার আইড্রপ বা ভিটামিনের সাহায্যে চোখের পাওয়ারের চিকিৎসা করা যায় না। কোনও বাচ্চার যদি চশমার প্রয়োজন হয় তবে সেটা পরতেই হবে, নতুবা দৃষ্টির পুরোপুরি বিকাশ হবে না। প্রায় সব বাবা-মা চান তাদের বাচ্চার চশমার পাওয়ার যেন না বাড়ে। এজন্য প্রথমেই তারা জানতে চান পাওয়ার কীভাবে কমবে। চশমায় পাওয়ারের সংখ্যার চাইতে, চশমা পরে সে কতটা দেখতে পাচ্ছে সেটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। চশমার পাওয়ার যাই হোক না কেন, সে যদি স্নেলেনস চার্টের (চোখের ডাক্তারের চেম্বারে বিভিন্ন অক্ষর লেখা চার্ট) শেষ লাইনের সবকটা অক্ষর ঠিকভাবে পড়তে পারে তবেই বুঝতে হবে বাচ্চার চোখ একদম স্বাভাবিক। 

অন্য সমস্যা

অনেক সময় বাচ্চাদের দু’চোখে দু’রকমের পাওয়ার থাকে। কখনও কখনও দেখা যায় বাচ্চার একচোখ ঠিক থাকলেও অন্য চোখের দৃষ্টি খুবই ক্ষীণ। এটি অ্যামব্লায়োপিয়া বা Lazy Eye-এর লক্ষ্মণ। এক্ষেত্রে চশমার সঙ্গে বিভিন্ন ধরনের চোখের ব্যায়ামেরও প্রয়োজন হয়। ডাক্তারের নির্দেশ অনুযায়ী বাড়িতে এবং বিশেষ ক্লিনিকে (Orthoptic Clinic) এই ধরের ব্যায়াম নিয়মিত করলে উপকার পাওয়া যায়।

আজকাল অত্যাধুনিক অটো-রিফ্রাক্টোমিটার যন্ত্রের সাহায্যে চট করে চশমার পাওয়ার জেনে নেওয়া সম্ভব। কিন্তু বাচ্চাদের চোখ পরীক্ষা করা বা পাওয়ার ঠিক করা খুব সহজ কাজ নয়। প্রথমত তারা চঞ্চল, ডাক্তারের নির্দেশ অনেক সময় বুঝতে পারে না। অনেকের অক্ষরজ্ঞান সম্পূর্ণ হয় না এবং অনেকে আবার ভয়ে বা লজ্জায় চুপ করে থাকে।

শুধু চশমা নিলেই সমস্যার সমাধান হয় না। ডাক্তারের নির্দেশমত চশমাটা পরতে হবে। শরীরের গঠন বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বাচ্চাদের চোখের পাওয়ারও বেড়ে যাবার সম্ভাবনা থাকে। তাই ছয় মাস বা একবছর অন্তর চোখের পাওয়ার পরীক্ষা করে বাড়ন্ত মুখের মাপ অনুযায়ী নতুন চশমা তৈরি করে নিতে হয়। এছাড়াও পাঠ্যবস্তু ও পারিপার্শ্বিক আলোর উজ্জ্বলতার দিকে নজর রাখতে হবে। বাচ্চারা প্রথম প্রথম চশমা পরতে চায় না বা ভুলে যায়। বাবা-মার সেদিকে খেয়াল রেখে চশমার প্রয়োজনীয়তা বাচ্চাদের বুঝিয়ে বলা দরকার। এছাড়া ফ্রেম ও লেন্সের যত্ন নেওয়ার বিষয়টাও তাদের শিখিয়ে দেওয়া জরুরি। তবে এটাও ঠিক যে রঙ এবং ডিজাইন বাচ্চাদের পছন্দ না হলে তারা চশমা পরতে চাইবে না।

বাচ্চারা কেন চশমা পরতে চায় না

  • নতুন চশমা পরে বাইরে বেরতে বা অন্যদের সামনে যেতে কেউ কেউ লজ্জা বা সঙ্কোচ বোধ করে। 
  • কেউ যদি চারচোখো বা অন্যকিছু বলে সম্বোধন করে। বাচ্চাদের ক্ষেত্রে স্কুলে এটা প্রায়ই ঘটে। 
  • ফ্রেমের ফিটিংস ঠিক না হলে চশমাটা বারবার খুলে যায় কিম্বা নাক থেকে ঝুলে পড়ে। 
  • নাকে বা কানে ব্যথার জন্য চশমা পরবার অনীহা।
  • নিন্মমানের লেন্সের জন্য চশমা পরে দেখতে এবং চলাফেরা করতে যখন অসুবিধা হয়। 
  • অনেক বাচ্চা অধৈর্য্য হয়ে চশমা পরাই ছেড়ে দেয়।
  • চশমা পরলে চোখ আরও খারাপ হয়ে যাবে ভেবে কেউ কেউ সেটা আর পরে না।
  • চশমা না পরার অন্যতম কারণ আলসেমি, বিশেষ করে কম পাওয়ারের চশমার ক্ষেত্রে।

চশমার কি সব সময়ই পরে থাকতে হবে?

সঠিক পাওয়ারের চশমা পরে সবকিছু এতই ঝকঝকে ও স্পষ্ট দেখা যায় যে লোকেরা সবসময়ই সেটা পরে থাকতে ভালোবাসেন। বাড়ন্ত বাচ্চাদের সবসময় চশমা পরে থাকা দরকার, নতুবা দৃষ্টির সঠিক বিকাশ ঘটবে না। এমনকি চোখের স্থায়ী ক্ষতিও হতে পারে। অ্যামব্লায়োপিয়া, ট্যারা ইত্যাদির চিকিৎসার চশমা সবসময় না পরলে যথাযত উপকার পাওয়া যায় না। সিলিন্ড্রিক্যাল পাওয়ারের চশমা সবসময় না পরলে চোখের নানা উপসর্গ দেখা দেয়। অল্প পাওয়ারের চশমা বেশিক্ষণ না পরলে ক্ষতি নেই। তবে ঘুমানোর সময় চশমা পরবার দরকার নেই। আর অনলাইন ক্লাসের সময়ে চশমা পরতেই হবে। স্মার্টফোন, ল্যাপটপ ইত্যাদি যন্ত্র থেকে যে নীল আলো বা ব্লু-লাইট বেরোয় সেটা বাচ্চাদের চোখের পক্ষে  ক্ষতিকর। তাই চশমার কাঁচে ব্লু-লাইট  প্রতিরোধক ফিল্টার ব্যবহার করা উচিৎ। চোখে কোনও পাওয়ার না থাকলেও মোবাইল বা ল্যাপটপে কাজ করবার সময়  পাওয়ার-বিহীন, ব্লু-ফিল্টারযুক্ত চশমা ব্যবহার করা উচিৎ।  কিন্তু তার আগে অবশ্যই একবার চোখের ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া দরকার।

ছোটদের চশমা বানানোর আগে মাথায় রাখুন

বাচ্চাদের চশমা বানানো সহজ কথা নয়। ফ্রেম নির্বাচনে তাদের পছন্দের যেমন গুরুত্ব রয়েছে তেমনি অভিভাবকেরও অনেক কিছু জিনিস খেয়াল রাখা দরকার। ফ্রেমের রঙ আর ডিজাইন তাদের পছন্দ মত না হলে বাচ্চারা চশমা পরতে চাইবে না। এ ছাড়াও চশমা তৈরির সময় তার আকার, ফিটিংস, লেন্সের উপাদান, বাচ্চার স্বভাব অর্থাৎ সে শান্ত না ছটফটে ইত্যাদি খুঁটিনাটির দিকেও নজর রাখতে হবে।

  • ফ্রেম পছন্দ করা: প্রথমেই ফ্রেম পছন্দের ব্যাপারটা বাচ্চাদের উপর ছেড়ে দেওয়া উচিৎ। ছোটদের বিচিত্র কল্পনার জগতে চশমা একটা ফ্যান্টাসি। চশমা পরে সে সকলের কাছে নিজেকে স্বতন্ত্র ভাবে মেলে ধরতে চায়। বাচ্চারা সাধারনত নিজের প্রিয় হিরোকে অনুকরণ করে। সুতরাং চশমার রঙ ও ডিজাইন বাচ্চাদের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। তবে মুখের গড়ন ও মাপ অনুযায়ী ফ্রেমে নির্বাচনের সঙ্গে ডিজাইনের দিকেও খেয়াল রাখতে হবে।
  • ফ্রেমের ফিটিংস: ফ্রেম খুব বড় বা ছোট হওয়া চলবে না। দেখতে হবে ফ্রেমের আকারের জন্য বাচ্চার চলাফেরা, পড়াশোনা বা খেলাধুলার যেন অসুবিধা না হয়। ফ্রেমের সাইজ মুখের গড়ন ও চোখের অবস্থানের উপর নির্ভর করে। ফ্রেম যেন ভ্রুর উপরে না ওঠে বা চওড়ায় মুখের থেকে বেরিয়ে না যায়। মোট কথা চশমাটিকে নাকের উপরে ঠিকঠাক বসে থাকতে হবে, পিছলিয়ে পড়া চলবে না। দরকার হলে ইলাস্টিক বা রিবন দিয়ে মাথার সঙ্গে বেঁধে রাখতে হবে। এটাও খেয়াল রাখা জরুরি যে চশমা যেন নাকে, গালে বা কানের উপরে চেপে না বসে। ফ্রেমের ফিটিংস যথাযত না হলে চশমায় সঠিক উপকার পাওয়া যাবে না। আর এজন্য চোখের ব্যথা বা অস্বস্তি হলে বাচ্চারা চশমা পরতে চাইবে না। বাড়ন্ত বাচ্চার কথা ভেবে বড় সাইজের ফ্রেম পছন্দ করা বুদ্ধিমানের কাজ নয়।
  • ফ্রেমের উপাদান:  ফ্রেমের উপাদান বাচ্চার চলাফেরার উপযোগী হতে হবে। অর্থাৎ সেটা যেন মজবুত, হালকা এবং আরামদায়ক হয়। ফ্রেম থেকে এলার্জি একটা প্রধান সমস্যা। মেটাল, প্লাস্টিক বা পলিকার্বোনেট যেকোনও রকমের ফ্রেমে থেকেই এলার্জি হতে পারে। সেজন্য ফ্রেমে এন্টি-এলার্জি কোটিং থাকা উচিৎ।
  • লেন্স নির্বাচন:  চশমার লেন্স নিয়ে বাচ্চাদের মাথাব্যথা না থাকলেও আপনাকেই এই ব্যাপারে মাথা ঘামাতে হবে। বাচ্চাদের লেন্স কাচের বদলে প্লাস্টিক বা পলিকার্বোনেটের হওয়া বাঞ্ছনীয়। কারণ খেলাধুলো বা হুটোপাটি করবার সময় কাচের লেন্স ভেঙে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। পলিকার্বোনেটের লেন্স বেশি মজবুত, আরামদায়ক আর অত্যন্ত হালকা। এতে সহজে আঁচড়ের দাগ পড়ে না। চোখের পাওয়ার বেশি হলে হাই-ইন্ডেক্স লেন্সও আরামদায়ক হবে। বাচ্ছারা যেহেতু রোদে ঘোরাঘুরি করে সেজন্য আল্ট্রাভায়োলেট রশ্মি প্রতিরোধক হলে চোখের পক্ষে ভাল হয়।
  • নোজ ব্রিজ ও ডাঁটি : চশমার ফ্রেম নাকের উপরে যেন ঠিকভাবে বসে এবং পিছলিয়ে নেমে না আসে। একটু বড় সিলিকন নোজ-প্যাড থাকলে চশমার ওজনে নাকে চাপ পড়বে না। স্প্রিং যুক্ত ডাঁটি কানের উপরে দৃঢ়ভাবে এঁটে থাকে, ফলে চশমা বারবার খুলে পড়ে না। খেলাধুলোর উপযোগী ফ্রেমের ডাঁটিগুলি খুব নমনীয় আর কানের লতি পর্যন্ত ঘিরে থাকে।
eye examination of kid
বাচ্চাদের লেন্স কাচের বদলে প্লাস্টিক বা পলিকার্বোনেটের হওয়া বাঞ্ছনীয়।

শখের চশমা

বাচ্চাদের কল্পনার জগত আকাশের মতই সীমাহীন। অনেক সময় তাদের মনে নানা শখের উদয় হয়। স্কুলের বন্ধু, পরিবারের সদস্য বা টিভির প্রিয় কার্টুনকে দেখে তারও চশমা পরতে ইচ্ছে করে। চোখে কোনও অসুখ না থাকলেও বাবামাকে তারা নানা অভিযোগ জানাতেই থাকে। যেমন তার নাকি দেখতে অসুবিধা, মাথাব্যথা বা চোখ টনটন করছে। এখুনি চোখের ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতে হবে। বাচ্চাদের এই ধরনের আবদারকে বকাবকি না করে বুঝিয়ে বা অন্য উপায়ে তার সমাধান করতে হবে।

নতুন চশমা পরে মাথাব্যথা, বমিভাব বা ঝাপসা দেখলে বুঝতে হবে হয় প্রেসক্রিপশনে ভুল আছে নতুবা চশমা তৈরিতে ত্রুটি  হয়েছে।

মনে রাখবেন

  • রেটিনোস্কোপি পরীক্ষার পরেই বাচ্চাদের চশমার পাওয়ার দেওয়া উচিৎ
  • বাচ্চার চশমা কতক্ষণ পরে থাকতে হবে সেটা আপনার চিকিৎসকের কাছ থেকে জেনে নিন
  • চশমা হতে হবে হালকা, মজবুত আর টেঁকসই
  • চশমা সবসময় দুই হাতে খোলাপরা করা উচিৎ
  • বাচ্চাদের চশমায় কাচের লেন্স একেবারেই নয়
  • চশমার ফিটিং ঠিক না হলে বাচ্চাদের চোখের ক্ষতি হতে পারে
  • প্রতি ৬ মাস বা এক বছর অন্তর চশমার পাওয়ার বদলিয়ে নেওয়া দরকার

বিশিষ্ট চক্ষু চিকিত্‍সক ডা. পূর্ণেন্দুবিকাশ সরকার সল্টলেক আই কেয়ার ফাউণ্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা। চিকিত্‍সার সঙ্গেই চলে লেখালেখির কাজ। লিখেছেন 'চশমার হ্যান্ডবুক', 'গীতবিতান তথ্যভাণ্ডার', 'চোখের কথা' ইত্যাদি বই। এছাড়াও 'গীতবিতান আর্কাইভ' এবং 'রবীন্দ্রকবিতা আর্কাইভ' নামে দুটি মূল্যবান সংকলন তৈরি করেছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *