বকুলবিছানো পথে
একপিঠে দু চার লাইন পদ্য বা বকুল, অন্য পিঠ
সাদা, ধবধবে, পড়ে ছিল উঠোনে সেই কাগজ,
মিসফিট হয়ে, নম্র হয়ে, ঝরাপাতার ব্যস্ত বিছানায়।
সে তাকায়নি একবারও, কাগজে পা পড়েছে জানলে
কপালে হাত, অজান্তেই হয়তো, অভ্যাসের এমনিই দর,
কিন্তু তাকায়নি একবারও, চলে যাওয়ার পথে আনমনা সে,
অশান্ত হয়তো, কিন্তু বিমর্ষ নয় একেবারেই।
সময় এসে এইভাবে নিয়ে যায় তাকে।
বিস্ময় ফুরিয়ে যায়, চমক, দ্যাখো একবার
আমার চোখের দিকে, নিরাভরণ,
হয়তো নিরাবরণ সেই মালব দেশের দিশা,
তবু দ্যাখো–
চলে যায় সে, কাগজ মাড়িয়ে, বকুল মাড়িয়ে,
ঝরাপাতার ভিড়ে সেই সুবোধ কাগজ, সাদা,
যেন খেলতে এসেছে বেপাড়ায়, যেন সূয্যি ডুবলে
বাড়ি ফেরা, বসে থাকবে আজীবন সন্ধ্যায় বা দুপুরে
তার রাঙাছাপ নিয়ে, তার নিরাভরণ পায়ের,
তার নিরাবরণ পায়ের।
তুমি যে গিয়াছ …
মৃদু প্রার্থনা
যেমনি করে স্যাক্সোফোন বিরহিনী সন্ধ্যায়
অথবা সে কী এক ফুটন্ত জ্যাজ় ক্লাব, রহস্যে ভরা
যেমনি করে কুয়াশা ফুঁড়ে বসন্তের ছোপ
চকমকি পাহাড়ে, অনুভূতি আসে তেমনই
খোলস ছেড়ে একটা আনন্দ, একটা কমনীয়তা
বেড়িয়ে পড়ে ভোর সকালে। জানি না কী ভুল হয়েছে
আমার, অথচ ক্ষমা চাইতে ইচ্ছে করে,
সকলের কাছে, সকালের কাছে, তবে তাই হোক,
ছড়িয়ে দাও আমার ক্ষমাপ্রার্থনা, সমুদ্রে কিংবা ঘাসে
বন্দরে, মৃত মানুষের ছাইয়ের মতো জলে, ধূলায়,
শোনো আমার মৃদু প্রার্থনা, অলৌকিক
জাল বোনা শেষে, শোনো একবার
প্রার্থনা, শীত এসে যদি ধ্বংস করে দেয়
প্রাগৈতিহাসিক যৌবন, চুমু ভাসানোর
সওদাগরি নৌকো।
*ছবি সৌজন্য: Pixabay