এক আমাজনে রক্ষা নেই, এ বার দোসর কঙ্গো।

গত কয়েক দিন যাবৎ গোটা বিশ্বের নজর আমাজনের দিকে। ব্রজিল-সহ দক্ষিণ আমেরিকার বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে থাকা ‘পৃথিবীর ফুসফুস’ হিসাবে পরিচিত এই বৃষ্টি বনানীর বড় অংশে দাউদাউ করে জ্বলছে আগুন। সেই অগ্নিকান্ডের দায় কার তা নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক। এর মধ্যেই বিরাট অগ্নিকান্ডের খবর আসতে শুরু করেছে আফ্রিকার কঙ্গো অববাহিকা থেকে। একাধিক আর্ন্তজাতিক সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, কঙ্গো-সহ আফ্রিকার ৫টি দেশে ছড়িয়ে থাকা প্রায় ১০ লক্ষ বর্গমাইলের বেশি এলাকা এখন দাবানলের কবলে। ফলে আমাজনের পরে পৃথিবীর ‘দ্বিতীয় ফুসফুস’ হিসাবে পরিচিত আফ্রিকার এই বিস্তীর্ণ বনাঞ্চলও এ বার বিপন্ন।

আমাজনের অগ্নিকান্ডের প্রেক্ষিতে দুনিয়া জুড়ে সরব হয়েছেন পরিবেশবিদেরা। সম্প্রতি জি-৭ শীর্ষ বৈঠকেও উঠে এসেছে আমাজনের প্রসঙ্গ। ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাঁকর ব্রাজিলকে অর্থসাহায্যের প্রস্তাব দিয়েছেন। যদিও সেই প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছে দক্ষিণপন্থী বোলসোনারো সরকার। কিন্তু এখনও পর্যন্ত সেভাবে আলোচনায় ঠাঁই পায়নি কঙ্গোর আগুনের প্রসঙ্গ। তবে জি-৭ বৈঠক চলাকালীন মাঁকর একবার উল্লেখ করেন, আফ্রিকার একাংশেও আগুন জ্বলছে। ব্রাজিল প্রসঙ্গে ঐক্যমত তৈরি হওয়ার পর ওই বিষয়টির দিকেও নজর দেওয়া প্রয়োজন।

পরিবেশবিদদের অবশ্য আশঙ্কা, রাষ্ট্রনেতাদের পর্যাপ্ত মনোযোগ আকর্ষণ করতে না পারলেও কঙ্গোর সমস্যা অত্যন্ত গভীর। গত ৪৮ ঘন্টায় সেখানে দাবানলের তীব্রতা ছিল ব্রাজিলের চেয়ে কয়েক গুণ বেশি! প্রসঙ্গত, কঙ্গো অববাহিকার ওই বনাঞ্চল আফ্রিকার ৫টি দেশে ছড়িয়ে রয়েছে। এই দেশগুলি হল- কঙ্গোো, গ্যাবন, অ্যাঙ্গোলা, ক্যামেরুন ও ম্যাডাগাস্কার। গত কয়েেক দিন যাবত কঙ্গো এবং অ্যাঙ্গোলার পরিস্থিতি শোচনীয়। বাকি দেশগুলিও বিপুল ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ।

সমস্যা এক হলেও আমাজন এবং কঙ্গোর অগ্নিকাণ্ডের কারণে ভিন্নতা রয়েছে। আমাজনের রেন ফরেস্টের সংকটের নেপথ্য রয়েছে জলবায়ু পরিবর্তন এবং খরার ভূমিকা। কিন্তু কঙ্গো সরকারের এক প্রতিনিধি জানিয়েছেন, তাঁদের দেশের দাবানলের জন্য দায়ি অবৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে কৃষিকাজ। সাধারণত কঙ্গোয় ঝুম পদ্ধতিতে জঙ্গল সাফ করে কৃষিকাজ করা হয়। অর্থনৈতিক ভাবে অত্যন্ত পিছিয়ে পড়া দেশটির ৯১ শতাংশ মানুষ বিদ্যুতায়নের সুবিধা পান না। তাই রান্না এবং অন্যান্য কাজের জন্য বিপুল পরিমাণে গাছ কাটা হয়। এছাড়া একাধিক তেল প্রকল্প ও খনিজ উত্তোলনের কারণেও জঙ্গল ধ্বংস করা হচ্ছে। গত কয়েক বছরে গ্যাবন, কঙ্গো এবং অ্যাঙ্গোলায় জঙ্গল নিধনের হার উদ্বেগজনক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *