পাহাড় যখন ডাকে

তাঁবু থেকে বেরিয়ে সামনের দিকে একটু হেঁটে দুরের পাহাড়ের দিকে তাকিয়ে নৈসর্গিক দৃশ্য দেখছি, এমন সময় একটা শব্দ পেয়ে নীচের দিকে তাকিয়ে চোখ কপালে উঠে গেল । এই কনকনে ঠাণ্ডায় একটা লোক স্নান করছে। একটা নতুন ট্রেকিং টিম এসেছে। জনা সাতেক লোক। দেখে মনে হল সবাই বাঙালি। তাদের পোর্টাররা তাঁবু খাটাবার তোড়জোড় করছে। বাকিরা গরম […]
পঞ্চকেদারের উৎস সন্ধানে (শেষ পর্ব)

মাথায় চিন্তা নিয়ে শুতে গেলাম। সকাল সকাল উঠে প্রস্তুত হয়ে বাইরে আসি। বৃষ্টি থেমেছে। কিন্তু পাতলা মেঘের আস্তরণে গোটা এলাকা ঢাকা। বাহনের জন্যে অপেক্ষা, গন্তব্যের নাম সাগর। যা হোক করে গাড়ি একটা পাওয়া গেল। পৌঁছলাম সাগর। ছোট জায়গা, কিন্তু যেহেতু রুদ্রনাথ যাত্রীরা এখান থেকে যাত্রা শুরু করে সেই জন্য লোকসমাগম আছে। মালবাহক ঠিক করে যাত্রা […]
পঞ্চকেদারের উৎস সন্ধানে (পর্ব ২)

গৌরিকুণ্ড থেকে গাড়িতে উখিমঠ হয়ে পৌঁছলুম উনিয়ানি। পরিষ্কার রাস্তা। সামনে মাঝে মাঝে নীলাকাশে উঁকি দিয়ে যাচ্ছে বরফে ঢাকা হিমশিখর। এক সময় গাড়ির রাস্তা শেষ হয়, এবার পদব্রজে। রাস্তা নেই,ভেঙে নেমে গেছে। কাদা আর ঝুরোপাথর কুচি। তার ওপর দিয়েই আক্ষরিক অর্থে চার হাত পায়ে উঠে আসি সুস্থ পথে। একটু হাঁফ ছেড়ে এগিয়ে যাই রাশি গ্রামের দিকে। […]
পঞ্চকেদারের উৎস সন্ধানে (পর্ব ১)

অতঃপর ব্যাসদেব বললেন, “হে পাণ্ডবগণ, তোমরা যুদ্ধে জয়লাভ করিয়াছ ঠিকই কিন্তু ঐ জয়মাল্যের মধ্যে প্রাণীহত্যাজনিত বিস্তর পাপকণ্টক বর্তমান। এই পাপ হইতে মুক্তি পাইতে গেলে তোমাদিগকে মহাদেবের বরপ্রাপ্ত হইতে হইবে। অতএব তোমরা শীঘ্র তাহার সন্ধানে ব্রতী হও।” এই কথা শোনা মাত্র পঞ্চপাণ্ডব মহাদেবের সন্ধানে দিগবিদিকে ধাবিত হলেন। এদিকে মহাদেবের কান ভারী করলেন নারদমুনি। বললেন, “ওহে ভোলানাথ, […]
পৌষমেলা: বদলের একাল সেকাল

সেই পৌষ আর নেই, এখন তো মাইক্রোওয়েভ বিক্রি হয়! এই অভিযোগটা শুনছি বহুদিন ধরে। ভয়ানক ভিড়, দাঁড়ানোর জায়গা পাওয়া যায় না। হোটেলগুলো গলা কাটে। এত আক্ষেপের পরেও শান্তিনিকেতনের পৌষমেলায় ভিড় উপচে পড়ে প্রতিবছর। পৌষ কেন, আবহাওয়াটাই তো ঘুরে গেছে দুনিয়া জুড়ে। মেলার শুরুর ব্যাপারটা দেখে নিই। ১৮৯৪ সালে দেবেন্দ্রনাথের আমলে ব্রাহ্ম মন্দির, এখন যা কাচঘর, […]
হিমবাহ আর তুষারশৃঙ্গের খেলাঘর: মাইকতোলি

সাধারণত শীতের শুরুতেই বাইরে যাওয়ার ইচ্ছেটা চাগাড় দেয়। তবে প্রকৃতি যে প্রতিটি মরশুমেই তার অফুরান সৌন্দর্য ভাণ্ডার রঙে-রসে অতুলনীয় করে সাজিয়ে রাখে, আর সেটা উপভোগ করতে গেলে যে প্রতিটি মরশুমেই একবার তার কোলে-পিঠে ঘুরে আসতে হয়, সেটা প্রথম বুঝলাম বছর পঁচিশ আগে মাইকতোলি ঘুরে আসতে গিয়ে। যাত্রাপথে সুন্দরডুঙ্গা পর্বত। তার হাতায় নানান ফুলের মেলা, টলটলে […]
মায়াবি রঙ্গারুন, স্বপ্নের সিটং…

রঙ্গারুন : দার্জিলিং থেকে মাত্র ১৬ কিমি দূরে ঐতিহ্যশালী রঙ্গারুন চা বাগিচা। এক সময়ে এই বাগিচার চা সুদূর বাকিংহাম প্যালেসের অন্দর মহলে সমাদর পেত। পাহাড়ের গায়েই সাজানো গ্রাম। মেন রোড ছাড়াতেই গহীন অরণ্যের মাঝে জনহীন, নির্জন পাকদণ্ডী পেরিয়ে পথ গিয়েছে রঙ্গারুন চা বাগিচার দিকে। গ্রামের ঠিক নীচে নকশাকাটা সবুজ বাগিচা। উল্টো দিকের নীলচে পাহাড়ের কোলে […]
মওফলং বনের পাতা বাইরে আনা নিষেধ!

হু হু করে হাওয়া দিচ্ছে সোহরা ভ্যালি উপত্যকায়। গাড়ির স্পিডে পিছনে পড়ে রইল মেঘের সাদায়ে মিশে যাওয়া ১৮৪৬ এর প্রেসব্যাটেররিয়ান চার্চ, পাহাড়ের উপর থেকে দেখা বাংলাদেশের জলছবি আর চেরাপুঞ্জি ওরফে সোহরার সবজে হলুদ প্যানর্যামিক ভিউ। শুরু হল পাহাড়ি পাইন বন, সবুজ খাদ আর শার্প হেয়ারপিন বাঁক । ঘন মেঘের আড়ালে এখন রাস্তা। সঙ্গে টিপটিপ বৃষ্টি। […]