বিসর্জন

রেস্তোরাঁয় বাইরে বেরোতেই প্রবল বৃষ্টি আর দ্বিতীয় অদ্ভুত ঘটনা। ক্লে’র সোনার মেডেল দেখে হিংসেয় জ্বলেপুড়ে যাওয়া চার শ্বেতাঙ্গ গুন্ডা বাইকে করে ওঁকে ও রনিকে তাড়া করল। উদ্দেশ্য মেডেলটা কেড়ে নেওয়া আর একটু মারধর করে সাদাদের ক্ষমতা জাহির করা।
ভারতীয় কুস্তিগীরদের আন্দোলন ও পদক বিসর্জন দেওয়ার ঘোষণা মনে করিয়ে দিচ্ছে কিংবদন্তি বিশ্ব-চ্যাম্পিয়ন মহম্মদ আলির জীবনের ঘটনা। সেই প্রসঙ্গেই দু-চার কথা, লিখলেন শংকরলাল ভট্টাচার্য।
সচেতনতার অভাব আর লাগামহীন দূষণে ধুঁকছে মহাসাগর

এতসব ভয়াবহ তথ্যের আঁতুড়ঘর কোথায়? আমার, আপনার বাড়ি। সাধারণ গেরস্থালি থেকেই নদীবাহিত হয়ে লক্ষ লক্ষ টন প্লাস্টিক মিশছে সমুদ্রে। জন-সচেতনতার অভাবে সমুদ্র অঞ্চল থেকে দূরে বসবাসকারী আমজনতা জানতেই পারে না যে মহাসাগরগুলির এই তিলে তিলে মৃত্যুর জন্য দায়ী তারাও।
সমুদ্র দূষণের ভয়াবহ পরিণতি বিষয়ে আমরা কি সচেতন? প্রশ্ন তুললেন সম্রাট মৌলিক…
কাজের মানুষ রথীন্দ্রনাথ

অতি বাহুল্যবর্জিত পড়াশোনার এই রীতির সমান্তরালে, শিলাইদহের প্রকৃতি এক কথায় পেয়ে বসেছিল রথীন্দ্রনাথকে। ডানপিটেমি করলে ছিল না কোনও শাস্তির ভয়। বেড়ানো, মাছ ধরা, সাঁতার কাটা, লাঠি সড়কি খেলা, ঘোড়ায় চড়া এমনকি ভরা পদ্মায় নৌকা চালানো— তাতেও কোনও বাধা ছিল না। মা মৃণালিনীর দেওয়া মাসিক পাঁচ টাকার পকেটমানি জমিয়ে কিনেছিলেন এক ডিঙি নৌকো, যা চেপে শনি-রবিবার নদী পারাপার করা যেত। নদীতে সাঁতারও শিখেছিলেন খুব সহজে— পদ্মাবোটের উপর থেকে বাবার সজোর ধাক্কায় জলে পড়ে খানিক হাবুডুবু আর জল খেয়ে।
লিখলেন সপ্তর্ষি রায় বর্ধন।
‘বসন্ত’ গীতিনাট্যে রবীন্দ্র-নজরুল বন্ধন : কিছু অনুমান ও অনুভূতি

নিজের সম্পাদিত ‘ধূমকেতু’ পত্রিকায় তীব্র শাসকবিরোধী কবিতা লেখার জন্যে, ১৯২২-এর নভেম্বরে নজরুলকে কারারুদ্ধ করে ব্রিটিশ সরকার। সেইসময় নজরুল ছিলেন আলিপুর সেন্ট্রাল জেলে। পবিত্র গঙ্গোপাধ্যায় সেখানে গিয়ে তাঁকে দিলেন বইয়ের একটি কপি। বই বুকে নিয়ে তো আনন্দে নাচতে লাগলেন নজরুল। ওখানে দাঁড়িয়ে থাকা জেল-সুপার এসব দেখে, পবিত্রবাবুর কাছে জানতে চাইলেন ব্যাপারটা কী? পবিত্র গঙ্গোপাধ্যায় বললেন যে, ‘পোয়েট টেগোর’ নজরুলকে এই বইটি ‘ডেডিকেট’ করেছেন। সুপার জিজ্ঞেস করলেন, “ইউ মিন প্রেজেন্টেড?” পবিত্রবাবু বললেন, “নো ডেডিকেটেড”।
লিখলেন অভীক চট্টোপাধ্যায়…
মৃত্যুর দশ বছর পর ঋতুপর্ণ শুধুই কি সমকামের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর?

ঋতুপর্ণ কিন্তু তাঁর ছবিগুলির মধ্যে নিজের কথাই বারবার বলেছেন। ‘উনিশে এপ্রিল’-এর মিঠু দেবশ্রী রায়, ‘বাড়িওয়ালি’র বনলতা কিরণ খের বা ‘দোসর’-এর কাবেরী কঙ্কনা, যেই হন, আদতে সে ঋতুই। আসলে ঋতুও অভিমানে দুঃখে একইভাবে কাঁদত। ঋতু কাঁদলে মুঠো করে হাতটা সামনে চলে আসত। যেন নিজেকেই আয়নায় দেখতেন ঋতুপর্ণ। শেষ দেখা দেখলেন চিত্রাঙ্গদার সঙ্গে নিজের অস্তিত্বের লড়াইয়ের তুলনা করে। ঋতু বললেন পুরুষসিংহ নয়, সিংহবাহিনী হতে চাই।
ঋতুপর্ণর মৃত্যুদিনে তাঁর ব্যক্তিত্বের নানা দিক নিয়ে আলোচনায় শুভদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়…
আশ্চর্য জনজাতি ‘শেরপা’

তেনজিং নোরগে ছিলেন শেরপা জনগোষ্ঠীর মানুষ। কাঠমাণ্ডু উপত্যকায় তিব্বতীয় মানব-গোষ্ঠীকেই ভোটিয়া বা ভোট বলে উল্লেখ করা হয়। নেপালি ভাষায় তিব্বতের নাম ‘ভোট’। পশ্চিমে কুমায়ুন সীমান্ত থেকে পূর্বে সিকিম পর্যন্ত অঞ্চলের একটি বিশেষ গোষ্ঠীই ‘শেরপা’ নামে পরিচিত। এঁরা বেশি উচ্চতায় নিজেদের মানিয়ে নেওয়ার ক্ষমতা রাখে। পর্বতারোহণের জন্য ইতিমধ্যেই খ্যাতি ও দক্ষতা অর্জন করেছেন এঁরা। নেপালে এভারেস্ট, লোৎসে প্রভৃতি উচ্চ পর্বত-শিখর বেষ্টিত সংকীর্ণ উপত্যকায় এদের বাসভূমি। প্রধানত পালের খুম্বু ফারক ও সোলো অঞ্চলেই বাস করেন এঁরা। এই গ্রামগুলির উচ্চতা প্রায় বারো-তেরো হাজার ফুট।
লিখলেন বিকাশচন্দ্র সরকার…
অভিনেতার আড়ালে থাকা পরিচালক বিকাশ রায়

হিংলাজ মাতার দুর্গম দর্শন নিয়ে ছবি। অভিনয়ে উত্তমকুমার, সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়, বিকাশ রায়, অনিল চট্টোপাধ্যায় প্রমুখ। এই সময় কিন্তু ব্যক্তিগত জীবনে উত্তম-সাবিত্রীর প্রেম ভেঙে গেছিল। তবু দৃশ্যে উত্তমের কোলেই সাবিত্রীকে পড়তে হবে। সেই দৃশ্য দুজনেই অনবদ্য করেছিলেন নিজেদের ব্যক্তিগত অভিমান দূরে রেখে। ছবির শেষে সাবিত্রী ওরফে কুন্তীর থিরুমল (উত্তমের চরিত্র-নাম) বলে একটা চিৎকার করে ডেকে ঝাঁপ দেবার দৃশ্য ছিল। বিকাশ রায় সাবিত্রীকে নির্দেশ দেন গায়ের যত শক্তি আছে তত জোরে চিৎকার করতে। সাবিত্রী বলেছিলেন “বিকাশদা আমার গলার শিরা ছিঁড়ে গেলে অন্য ছবি বা মঞ-নাটক আর কোনওদিন করতে পারব?”
লিখলেন শুভদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়…
রামকিঙ্কর বেইজ: এক অনন্য প্রচলবিরোধী শিল্পী

২৫শে মে, ১৯০৬ সালে বাঁকুড়ায় জন্ম রামকিঙ্করের। লাল মাটির ভূমিপূত্রের প্রথম আর্টের দুনিয়ায় আকৃষ্ট হন মৃৎশিল্পী অনন্ত সূত্রধরের প্রতিমা বানানো দেখে। কিশোর কাল থেকে ছবি আঁকা শুরু। লিখলেন কুহকী