দাম্পত্যের কালবৈশাখী

Chiranjit Samanta illustration

যদি অন্ত্যমিল না থাকে দুজন মানুষের দাম্পত্যে, যদি বৃষ্টি না-নেমে সবকিছু স্নিগ্ধই না-হয়ে যায়, তখন তারা থাকবে কেমন করে পরস্পরের সঙ্গে? মাছ আর পাখির মতো? একজন জলে, অন্যজন আকাশে? সেইভাবে এক ছাদের নিচে বিচ্ছিন্ন দ্বীপের মতো বসবাসে ভালোবাসা কি বেঁচে থাকে? সফল দাম্পত্যে ওই তীব্র অধিকারবোধের আকাঙ্ক্ষার থেকেও অনেক বেশি প্রয়োজন নির্ভরতা আর বিশ্বাস। যখন দু’টি মানুষের মনের মধ্যে যোজনবিস্তৃত ব্যবধান আলসেমির রোদ্দুর মেখে শুয়ে থাকে… দীঘল কালো চুলের সর্পিল বেণীটির মতো.. তাকেই বলা যেতে পারে বহুব্যবহারে জীর্ণ দাম্পত্য এবং তখনই কালবৈশাখী ঝড় ওঠে আচমকা।

কখন যে ঝড় আসে

ঝড় শুভ্রনীল ঘোয

কোনও কালবৈশাখীই অকালবৈশাখী নয়। কারণ কালবৈশাখীর মধ্যে  একধরনের অনিশ্চয়তা আছে যা নিষ্ঠুর , কিন্তু নিয়তিনির্ধারিত। প্রকৃতির মধ্যে এই সৃষ্টি এবং ধ্বংসের লীলা নিয়ে যে প্রচুর রোমান্টিক এবং আধ্যাত্মিক কাব্য রচিত হয়েছে, তা মনে হয় এখন আর নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না। দুর্গার প্রবল বৃষ্টিতে ভিজে যাওয়ার মতো বা জ্বরের মধ্যে পড়ে বাইরে প্রবল ঝড়ের আবহে প্রতি মুহূর্ত সেই অনিশ্চয়তার সঙ্গে দাবা খেলার মতো কালবৈশাখীকে ভিলেন বা অশনির দূত হিসেবে মনে করার পিছনেও সম্ভবত ভুল কিছু নেই।

তার ঠোঁটে লাল ছিটে

Illustration for cover story by Suvamoy Mitra

কেন ভুল বোঝা? কী আছে এই ঠোঁটের রংয়ে, যে যুগে যুগে এই সামান্য অধিকারটুকু পেতে লজ্জার সহস্রডিঙা পার হতে হয় টুনটুনি-আরতিদের? ষাট পেরুনো কারও ঠোঁটে রং দেখলে কেন আজও আমাদের মুখ ঘুরিয়ে ফিসফাস? এখন তো মিলেনিয়ামের সিংদরজাও পেরিয়ে এসেছি আমরা! ভুবনায়ন নিয়ে কেউ আর বিব্রত নয়। সোশ্যাল মিডিয়ার চণ্ডীমণ্ডপে টিকটক ভিডিও থেকে শুরু করে নায়িকাদের বিচওয়্যার ফোটোশ্যুট – আমরা রোজ গিলছি গপগপিয়ে। তবু পাশের বাড়িতে যে মেয়েটি রান্না করে, তাকে গড়িয়াহাটের মোড়ে সেজেগুজে ফুচকা খেতে দেখলে বাড়ি ফিরেই কেন প্রচ্ছন্ন অবজ্ঞায় বলে ফেলি, “মালতীকে দেখলাম গড়িয়াহাটে! কী সেজেছে বাপ রে বাপ! ঠোঁটে কটকটে লাল লিপস্টিক লাগিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে!”

রং-রাজনীতির রঙ্গ

Illustration by Suvranil Ghosh for Racism Article

দুর্বাদলশ্যাম রামচন্দ্র কী করে আর্যদের দেবতা হলেন? আর্যরা সব ইউরোপ-আগত, ঘোটক-চড়াও, বেজায় ফর্সা। কালো হয়েও রাম কিন্তু সেই আর্যসুলভ ব্যবহারই করলেন। মানে, শূদ্রকে কাটলেন। শূর্পনখার নাক কান কাটাকে সমর্থন জানালেন। শেষমেশ সো কলড অনার্য রাবণকেও বধ করলেন। তবু তিনি যে গৌরাঙ্গ নন এটা তো সত্যিই। এখনো পর্যন্ত সেই ধাঁধার সমাধান হল না। হল না কৃষ্ণকায় বিষ্ণুর ত্বকের রঙের সঙ্গে আমাদের ভারতীয়দের সাহেব ভজনার শ্বেতাঙ্গ-প্রীতি ও কালো চামড়ার প্রতি চাপা বর্ণ বিদ্বেষের সমঝোতা।

রং – যে নামে ডাকো

Arka Paitandy illustration

 শয়তান যেভাবে সেজে থাকে ঠিক সেভাবেই তোমার আই লাইনারও! বিশ্বের চরম লজ্জাজনক অধ্যায়ের ইতিহাস, যাকে ব্যাকহিল করে গোলের মালা পরিয়ে দ্যাখো সাম্বা নাচছে ছেলেমেয়েরা!

টুকলি মত টুকলি পথ!

illustration Upal Sengupta উপল

বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া জেলা মালদহে (উত্তর দিনাজপুরের কিয়দংশে) এমতাবস্থা দেখা যায় প্রায় প্রতিটি বোর্ডের পরীক্ষাতেই। প্রশাসন থেকে শুরু করে বিরোধী – গেল গেল রব তোলে সকলে। ব্যবস্থাও নেওয়া হয় কিছু কিছু। কিন্তু টুকলি অপ্রতিরোধ্য। বছরের পর বছর এই একই ছবি দেখে যাচ্ছে পড়ুয়া-অভিভাবক-প্রশাসন। আগে পাঁচিল টপকে, লোকের পিঠে চড়ে টুকলি সাপ্লাই হত। এখন প্রযুক্তির রমরমা। কাজেই কাজ সহজ হয়ে গিয়েছে। সহজ কাজ কঠিন করতে ইন্টারনেট বন্ধ করা হল চলতি বছরে। কিন্তু শেষরক্ষা হল কই? 

পরিষেবা সীমানার বাইরে

Illustration for cover story by Suvamoy Mitra

কলেজের সিনিয়র পার্থদা টুকতে গিয়ে ধরা পড়ল চোতা-সমেত। পার্থদা ইনভিজিলেটরের হাত থেকে চোতা ছিনিয়ে নিয়ে কচমচ করে চিবিয়ে গিলে নিয়ে ইনভিজিলেটরকে চ্যালেঞ্জ করেছিল- “প্রমাণ করুন আমি টুকেছি!”