করোনা-বাহন নববর্ষ

illustration Suvomoy Mitra

এই বঙ্গাব্দ বাঙালির নিজের নয়। যেমন বাঙালির নিজের নয় পাঞ্জাবি, নাগরাই জুতো, সিঙারা, মালাইকারি, নিমকি, জিলিপি। তেমনই বঙ্গাব্দটা আকবরী। হিজরি সালটার একটু মিউটেশন হয়েছিল। যেমন সার্স, মার্স ভাইরাসের মিউটেশন হয়ে তৈরি হল করোনা ভাইরাস।…

বাঙালির সাল-তামামি

illustration by Chirajit Samanta

বছর ষোলশো আগে যখন সূর্যসিদ্ধান্ত লেখা হচ্ছে তখন আধুনিক জ্যোতির্বিজ্ঞান নিয়ে কতটুকুই বা জানতাম আমরা? মাধ্যাকর্ষণ থেকে শুরু করে আহ্নিক গতি বা বার্ষিক গতি নিয়েও বিজ্ঞানভিত্তিক স্বচ্ছ ধারণা ছিল না। আর্যভট্ট যখন আহ্নিক গতি নিয়ে গবেষণা শুরু করেছেন সম্ভবত তার একশ বছর আগেই সূর্যসিদ্ধান্ত লেখা হয়ে গেছে।

নববর্ষের প্রাতঃসূর্য

Rabindranath coming out of Upasana Mandir

শান্তিনিকেতনের প্রখর দাবদাহ আর জলকষ্টের জন্য এই বছর থেকেই নববর্ষের দিন রবীন্দ্রজন্মোৎসব পালনের রীতি শুরু হয়। এই রীতি চলে অনেকদিন পর্যন্ত। ২০০০ সালের গোড়ার দিকে এই রীতি পরিবর্তন করেন বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। নববর্ষ আর রবীন্দ্রজন্মোৎসব আলাদা করে দেওয়া হয় কারণ “সেমেস্টার সিস্টেম” চালু হয়ে যাওয়ায় পঁচিশে বৈশাখ তখন থেকে আর গরমের ছুটির মধ্যে পড়ে না। শান্তিনিকেতনের নববর্ষ ও রবীন্দ্রজন্মোৎসব শুধু উৎসব ছিল না কোনও দিনই। বাংলা নতুন বছরের দিনে সে ছিল বাংলা ভাষার উৎসব, বাঙালির সংস্কৃতির উৎসব।

ঈশ্বর এ রকমই দেখতে

Ravishankar portrait by Syamantak Chattopadhyay

মাঝরাতের কিছু আগে পণ্ডিতজি বসলেন বাজাতে। আমি অনুভব করলাম একটা রাত কী করে তৈরি হয়। একটু একটু করে কালো থেকে গাঢ় নীল থেকে আরও গভীর কোনও বর্ণহীন রাত। মোহিত ছিলাম। মোহভঙ্গ হল, যখন দেখলাম চ্যাপেলের ছাদের কাছের অনেক উঁচু প্য়ানেল দিয়ে ভোরের আলো এসে পড়ছে। সেতারে তখন ভৈরবী। সে ভোরও তৈরি করছেন পণ্ডিতজি। ভোরের যেন একটা গন্ধও ছড়িয়ে পড়ছে সুরের সেই মূর্ছনা থেকে।

তোমারি ওই অমৃতপরশে

Pt Ravishankar source Facebook

ভেবেছিলাম আমার ধৃষ্টতায় বিরক্ত হয়ে ঘর থেকে বের করে দেবেন। তা তো করলেনই না উল্টে আমাকে ধন্যবাদ দিয়ে জানতে চাইলেন “যেগুলোর কথা তুমি আমাকে বললে তা কি তোমার শোনা কথা না তুমি সেগুলো শিখেছ?” আমি সেসব শিখেছি শুনে আরও খুশি হয়েছিলেন। বলা বাহুল্য সেদিনের বক্তৃতা অসাধারণ হয়েছিল। বক্তৃতার মাঝে উনি গান গেয়েছিলেন, যার সঙ্গে আশীষদা সরোদ বাজান। সেই রেকর্ডিং আমার কাছে আজও সযত্নে রাখা আছে।

ঈশ্বরকণা

https://satyagrah.scroll.in/

তাঁর মতো রসিক মানুষও কম আছে। ওঁর বাড়ির কাছে একটা বড় মাঠে খুব বড় হ্যালোউিন-এর পার্টি হত। দু-তিন বার আমি আর বিক্রমও গিয়েছি। এবং ভাবলেও অবাক লাগে, জ্যাঠামশাই, চিন্নামা, অণুষ্কা, আমি, বিক্রম—সবাই আমরা অদ্ভুত সমস্ত পোষাক পরে দারুণ হুল্লোড় করেছি। কেউ পাইরেট, কেউ ভূত, কেউ পেত্নি সেজে মহানন্দে মেতে উঠেছি।

মীড় দিলে নিষ্ঠুর করে…

pandit ravishankar

রবিশঙ্কর তাঁর গুরু আচার্য আলাউদ্দিন খানের তালিম মাফিক শুরু করলেন বিলম্বিত তিনতালে গৎ বাজানো। এবং আজীবন কর্ণাটকী সঙ্গীত পদ্ধতিতে বিশ্বাসী থাকার দরুণ তিনি সেই গতে লয়ের মারপ্যাঁচ, অঙ্কের হিসেব, তেহাই ইত্যাদি নিয়ে এলেন। এতে তাঁর বাজনায় আমরা পেলাম সুরের সঙ্গে তাল-লয়ের অসামান্য সামঞ্জস্য।

গ্রাম-শহরের রূপকথা

do bigha zamin

বিমল রায়ের ছবিতে যখন ভূমিচ্যুত কোনও গ্রাম্য কৃষক, হাতে টানা রিকশা চালায়, তখন তা আসমুদ্র হিমাচলের আকাশে বিদ্য়ুৎবহ্নি! সামান্য একটা হাতে টানা রিকশা– যা এক কালে ভারত, চিন, দক্ষিণ এশিয়ার নানা শহরে স্থানীয় পরিবহণের অঙ্গ ছিল, তা হয়ে ওঠে গ্রাম-শহরের অন্তর্বর্তী রূপক।