স্বগত স্বীকার (কবিতা)

অসুখের ইতিহাসে নীরব কান্নার বিবরণ আছে, জেনো।
অভিমান ঘনিষ্ঠ হলে যে ব্যক্তিগত সুখ হয়
তার নীচে জমা থাকে এক-একটা এপিসোডিক বিরতি
নিশ্চিত আশ্রয় থেকে ছদ্ম-সুখে,
নিজস্ব পরিধি ছেড়ে কৌণিকবিন্দুতে-
আজ তবে শূন্যের কথা কেন?
সোনার শহর কলকাতা

ভিক্টোরিয়াতে যাই চলো, বলায় রাজি হল। তাজমহলের ডুপলি না ওটা? খবর রাখে। ট্র্যাভেল গাইড হওয়া সহজ নয়, বুঝতে পারছিলাম। নিজের শহরেই হিমশিম খেতে হবে সেটাও টের পেলাম । ভেতরে ঢুকে মস্ত ডোমের ঠিক তলায় পৌঁছে এই প্রথম মোবাইল ফোন বের করল বৌদি। সেলফি তুলল না, মেঝেতে সাদা কালো পাথরের তারার মত নকশাটা দেখতে লাগল ঘুরে ফিরে। বললো, কলকা টা ভালোই করসে। শাড়ি করাব একটা।
পাখির ঘুমে

কীভাবে গর্ভের বীজে আলো জ্বালব বলো?
জল দেব, মাটি সার কীভাবে কীভাবে
গোলকিপার (পর্ব ১৮)

একসঙ্গে জনা কুড়ি লোকের ছড়িয়ে ছিটিয়ে বেশ আরাম করে বসার ব্যবস্থা যে ঘরে, সেখানে একা বসে খবরের কাগজ পড়ছিলেন সুজাত। পড়ছিলেন, না সামনে কাগজ মেলে বসেছিলেন, বলা মুশকিল। সামনে রাখা পেয়ালায় চা জুড়িয়ে জল। একবারও ইচ্ছে হয়নি তাতে চুমুক দেওয়ার। রাতে অনেক ধৈর্য ধরেও ঘুম না-আসায় ওষুধ খেতে বাধ্য হয়েছিলেন। সকালেও মন দিতে পারছেন না কোনও কিছুতে। যে মনঃসংযোগের জন্যে তাঁর এত সুনাম, আজ কিছুতেই তার হদিশ পাচ্ছেন না। অনেক ধাঁধার কোনও সমাধানই খুঁজে পাচ্ছেন না তিনি–– কুর্চি কী জেনেছে, কতটা জেনেছে, কীভাবে জেনেছে!
করোনা: হারানো প্রাপ্তি সংবাদ

করোনাভাইরাসের দৌলতে এই শব্দটা দিব্যি শিখে গিয়েছি আমরা। ডব্লুএফএইচ। মানে ওয়ার্ক ফ্রম হোম। কথা শোনও, হাত ধোও, অফিসেতে যেও না। করোনায় প্রথম করণীয় কী, আঁচ করতে পেরেই একের পর পর এক অফিসে দিন পনেরোর ছুটি হয়ে গিয়েছে দেশের বেশ কয়েকটা শহরে। নামী কোম্পানির দামি সিইও বড় মুখ করে মিডিয়ায় বলছেন, প্রেস নোট দিচ্ছেন, ‘আমরা আমাদের কর্মীদের উপরে পূর্ণ ভরসা রাখি। আমরা জানি, অফিসে বসে তাঁরা দিন রাত এক করে যে কাজ করেন, একই উদ্যমে তাঁরা কাজ করে যাবেন বাড়িতে বসেও।’
শতবর্ষে শেখ মুজিব

“একসময় এ দেশের বুক হইতে, মানচিত্রের পৃষ্ঠা হইতে ’বাংলা’ কথাটির সর্বশেষ চিহ্নটুকুও চিরতরে মুছিয়া ফেলার চেষ্টা করা হইয়াছে। …একমাত্র ’বঙ্গোপসাগর’ ছাড়া আর কোনো কিছুর নামের সঙ্গে ’বাংলা’ কথাটির অস্তিত্ব খুঁজিয়া পাওয়া যায় নাই। … জনগণের পক্ষ হইতে আমি ঘোষণা করিতেছি — আজ হইতে পাকিস্তানের পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশটির নাম ’পূর্ব পাকিস্তান’-এর পরিবর্তে শুধুমাত্র ’বাংলাদেশ’।
ইন্দিরার স্বর্গারোহণ ও তারপর (গল্প)

একদিন নিজের জগতের বাইরে গিয়ে বসার ঘরে বৌমার ছবিতে বাসি মালা দেখে কেঁপে উঠে হাঁক দিয়েছিলেন “সাধনা!” বলে। সিদ্ধেশ্বরীদেবীর এই উচ্চস্বর অনেকদিন বাদে শুনে পুরনো কাজের মেয়ে সাধনা- যে নিজেকে বাড়ির ম্যানেজার বলে পরিচয় দিয়ে থাকে, হন্তদন্ত হয়ে হাজির হল। “জানিস না, কোনও ফটোতে বাসি মালা ঝুললে বৌমা রেগে যায়!” হঠাৎ খেয়াল পড়তে কালে গোলমাল হয়ে গিয়েছে- ‘যায়’টা ‘যেতো’ হবে। চোখের জল মুছতে মুছতে নিজের ঘরে ফিরে গিয়েছিলেন সিদ্ধেশ্বরী। তারপর থেকে মালাটা নিত্য আসে আর বৌমার গলায় টাটকা মালা ঝোলে।
দু’টি কবিতা

আর আজকাত লাভ-ক্ষতির হিসেবনিকেশকে তো
অঙ্ক বলেই মানি না।
সুদকষা দেখলে পেটে খিল ধরে যায় –
হাসি থামে না।