দিনের পরে দিন: আমার দ্যাশের বাড়ি

আমার কোনও দেশের বাড়ি নেই। আমার অস্তিত্ব জুড়ে যে ‘দ্যাশের বাড়ি’র ছবি, সেটা বলতে গেলে সম্পূর্ণভাবে আমার কল্পনাপ্রসূত। সেই ছোটবেলা থেকে শোনা আমার বাবা, মা, দাদু ঠাকুমার স্মৃতিচারণে, আমার কল্পনায় গড়া আমার ‘দ্যাশের বাড়ি’। আমার সেই ‘দ্যাশের বাড়ি’ আক্ষরিক অর্থে একদিন ছিল, এখন নেই। সেই যে ১৯৪৭ সালে উপমহাদেশের ভূগোল নিয়ে আমাদের রাজনৈতিক নেতারা খেলা […]
উত্তুরে: হান্দাবারু, নাক চেংরানি এবং শিবচরণ রাভার কৃষ্টি

দিগন্তে ডিমার মিলন কালজানির সঙ্গে। তারপর দীর্ঘপথে সহবাস। তিস্তা আর রঙ্গিতের মতোই প্রেমকাহিনি। তবে ডিমা-কালজানির মিলনগাথা কোথাও লেখা হয়নি। এই দুই নদীর ভাব-ভালোবাসার সঙ্গে পরিচয় ছিল শিবচরণ রাভার। গাঁও বুড়ো। রাভা সমাজে পদমর্যাদায় মণ্ডল। উত্তরবঙ্গে মুখিয়াও বলে। বয়স জানতে চাইলে গাছের সঙ্গে তাঁর বেড়ে ওঠা বোঝাতেন। বলতেন “১৯৩০ সালে যখন এই প্ল্যানটেশন হয়, তখন আমার […]
দিনের পরে দিন: ফাদার দ্যতিয়েন কথা

“খেয়েছি ছাতু, দেখেছি রাঁচি, থেকেছি বিহারে নিঃসন্দেশ মৎস্যহীন সুদীর্ঘ তিন বছর। পড়োশি ছিল পিঁজরাপোলের হাড় জিরজিরে ষাঁড়। জায়গাটি ছিল স্বাস্থ্যকর, দৃশ্যও ছিল মনোজ্ঞ, ভাষা ছিল রাষ্ট্রভাষা। পালিয়েছি, ফিরেছি কলকাতায়, পাঠানকোট-এক্সপ্রেসে; নেমেছি হাওড়ায়, ঠেলতে ঠেলতে খুঁজেছি পথ, দুর্গোপুজোর ভিড়ের গোলকধাঁধার মধ্যে, কুলিদের অবাঞ্ছিত সাহায্যে।” এমন সাবলীল, রসে ভরপুর বাংলা অনায়াসে পাতার পর পাতা লিখে বাঙালির অন্দরমহলে […]
আই ঢাই: আরও যা যা হতো

রান্না ছাড়াও আরও কত কী যে এই রান্নাঘরে হতো তা বলতেই না দিন কাবার হয়ে যায়! সকালের ঝোঁকে রান্নার ঝকর ঝকর কিছুটা সামলে গেলে, মানে কর্তাদের আপিস, ছোটদের ইস্কুল কলেজ আর বাকিদের জল খাবার পর্ব শেষ হলেই কাজে কিছুটা ঢিলে পড়তো।
ইন্তিবিন্তি: গন্ধবিলাস গন্ধবিষাদ

ঘুমের ঘোরে বেশ টের পাচ্ছি মা ফাটা গালে চেপে চেপে ক্রিম মাখাচ্ছে। চারমিস ক্রিম। এখনও চোখ বন্ধ করে আমি চারমিস চিনে নিতে পারি। আর পারি তুহিনা। কেন? কারণ এটা শীত কালের মা। গরম কালের মায়ের সঙ্গে শীতের কালে তুহিনা মিশে শীত কালের মায়ের গন্ধটা একটু পাল্টে যেত। আসলে গন্ধ আমার কাছে শুধু সুবাস বা দুর্গন্ধের […]
আই ঢাই: হেঁসেল ভ্রমণ

না ছিল নেট সংযোগ , না ছোট ছোট পরিবার। তাই বাড়ি ছেড়ে কোথাও গিয়ে থাকা মানেই অন্তত একমাস আর তা চেনা গণ্ডির চৌহদ্দিতে। রেল কম ঝমাঝম – রাতের ঘুমে গায়ে মাথায় কয়লার গুঁড়ো মেখে ভোর রাতে নামা। তারপর গরুর গাড়িতে বোঁচকা-বুঁচকি সমেত, মাঠ ও মাটির রাস্তা পেরিয়ে একতলা বাড়িটি। এর প্রস্তুতি সাংঘাতিক। এ তো আর সেই ‘উঠলো বাই তো কটক যাই’ নয়, রীতিমতো বাঁধা এবং ছাঁদা করে লটবহর এমনকি পারলে দাঁড়ের টিউ-টি সমেত।
ইন্তিবিন্তি: সকালেই এক শালিখ!!!

আমার এক বন্ধু তো অচেনা কাউকে রাস্তায় এক চোখ কচলাতে দেখলেও, তাঁকে দাঁড় করিয়ে দু-চোখ দেখিয়ে তবে ছাড়ান দিত। অন্য কারও এক চোখ দেখলে যে অকল্যাণ হবেই, এ তো e=mc2-এর চেয়েও অনেক পোক্ত প্রমাণ, তা-ও রোজকার জীবনে।
আইঢাই: মাঁছ…কঁই…!

শাশুড়ির অসুখ শুনে জামাই চলেছে ভিন গাঁয়ে তাঁকে দেখতে। মেয়ে তার বরটিকে বার বার করে বলে দিয়েছে, পা চালিয়ে বেলাবেলি চলে যেও বাপু। জলার ধারে, বনে বাদাড়ে মায়ের কুঁড়েটি। দিনের আলো নিবলেই তেনারা কিন্তু এসে পড়েন। তো, জামাই পা চালিয়েই এসেছে। পথে একটু চিঁড়ে মাখা খেয়ে গাছের ছায়ায় জিরোতে গিয়েই চোখ দু’খান একটু যা লেগে […]