টিউশন পড়িয়ে ফিরছিল হিমাদ্রি প্রজাপতি ম্যারেজ হলের সামনে থমকে দাঁড়াল আলো-টালো দিয়ে বেশ জবরদস্ত সাজিয়েছে বাড়িটা সানাই বাজছে বাড়ির সামনে ফুল-আলোয় সাজানো গেটের ওপরে লেখা‒ ‘ঋতিকা ওয়েডস রামানুজ।’

বেশিক্ষণ তাকানো যাচ্ছে না মনে হচ্ছে হৃৎপিণ্ডটাকে কেউ আখমাড়াই কলে পিষছে ওখানে রামানুজের বদলে হিমাদ্রির নামটা থাকার কথা ছিল আজ ঋতিকা ওয়েডস হিমাদ্রি কিন্তু হল না কোথাকার কে এক রামানুজ উড়ে এসে জুড়ে বসল 

গেট দিয়ে লোকজন ঢুকছে বেরচ্ছে গেটের পাশে দাঁড়িয়ে সিগারেট খাচ্ছে ঝাক্কাস পাজামা পাঞ্জাবি পরা দু’জন ঋতিকার ছোটকাকা হন্তদন্ত হয়ে রজনীগন্ধার গোড়ে মালা নিয়ে ঢুকল এই মালাতেই মালাবদল হবে নিশ্চয়ই আখমাড়াই কলটা যেন আরও দ্রুত ঘুরতে লাগল ভিতরে 




একসময় ঋতিকাকে পড়াত হিমাদ্রি
সেই হিসাবে ঋতিকা তার ছাত্রী একদিন ঋতিকাকে ট্রান্সলেশন করাচ্ছিল হিমাদ্রি জল ছাড়া মাছ বাঁচতে পারে না ফিশ ক্যানট লিভ উইদাউট ওয়াটার অক্সিজেন ছাড়া মানুষ বাঁচতে পারে না— ম্যান ক্যানট লিভ উইদাউট অক্সিজেন হঠাৎ ঋতিকা বলে উঠল হিমাদ্রিদা, একটা কথা বলব? হিমাদ্রি বলল, বল ‘ঋতিকা ক্যানট লিভ্‌ উইদাউট হিমাদ্রিদা’— বলেই, মিটিমিটি হাসি নিয়ে হিমাদ্রির দিকে তাকিয়ে থাকে ঋতিকা হিমাদ্রি চোখ বুজে বলে দেয়,  ‘হিমাদ্রি তো কবেই মারা পড়েছে ঋতিকার হাতে।’

সেই থেকে প্রেম দু’জনের ঠিক ছিল হিমাদ্রি ছোটখাট একটা কাজ পেলেই বিয়ে হবে তাদের বাড়িতে মেনে না-নিলেও পালিয়ে করবে বিয়ের কথা উঠলেই হিমাদ্রির চোখে ভেসে উঠত একটা দৃশ্য— লাল চেলি, লাল বেনারসি পরে, হাতে রজনীগন্ধার মালা নিয়ে অপেক্ষা করছে ঋতিকা কপালে চন্দনের ফোঁটা, পরনে ধুতি-পাঞ্জাবি, হিমাদ্রি যেতেই মালাটা পরিয়ে দিল কারা যেন উলু দিয়ে উঠল কতবার যে এ দৃশ্য দেখেছে হিমাদ্রি ধুতি পরা অভ্যেস নেই বলে, মাঝে মাঝে দাদুর একটা ধুতি নিয়ে প্র্যাকটিসও করেছে কিন্তু কী থেকে যে কী হয়ে গেল একদিন ঋতিকা এল বাড়িতে; ফ্যাঁচফ্যাঁচ করে খুব খানিক কাঁদল প্রথমে বুঝতে পারেনি হিমাদ্রি ভাবল, বাড়িতে বাবা-মার সঙ্গে বুঝি কিছু হয়েছে তারপর বুঝল সেরকম কিছু নয় ঋতিকার জন্য নাকি পাত্র দেখা শুরু হয়েছে

প্রেমিকার দেখাশোনা শুরু হলে বেশির ভাগ প্রেমিকের মুখ দিয়ে যে শব্দটি বেরিয়ে আসে,  হিমাদ্রির মুখ দিয়েও সেই শব্দ দুটোই বেরিয়ে এল— এই খেয়েছে ছলছলে চোখে ঋতিকা বলল, ‘হ্যাঁ, আমার খুব ভয় করছে হিমাদ্রিদা তুমি কিছু একটা চাকরির ব্যবস্থা কর করে বাবা-মাকে গিয়ে বল।’

বিয়ের কথা উঠলেই হিমাদ্রির চোখে ভেসে উঠত একটা দৃশ্য— লাল চেলি, লাল বেনারসি পরে, হাতে রজনীগন্ধার মালা নিয়ে অপেক্ষা করছে ঋতিকা 

সেই সময় কিছুদিন চাকরির চেষ্টা করেছিল হিমাদ্রি হন্যে হয়েই করেছিল এ অফিস, সে অফিস দৌড় অ্যাপ্লিকেশন ছাড়া নানা জায়গায় একসময় তার মনে হল চাঁদে যেমন জল নেই, এদেশে তেমন চাকরি নেই হতাশ হয়ে পড়েছিল হিমাদ্রি ঋতিকা তখন এক এক দিন আসত আর নতুন নতুন খবর দিত আজ ছেলের বাবা দেখতে এসেছিল, আজ খোদ ছেলে এসেছিল বন্ধুদের নিয়ে তারপর ক’দিন দেখা-সাক্ষাৎ, ফোন সব বন্ধ কিছুদিন পর আবার ফোন করল ঋতিকা কাঁদতে কাঁদতে বলল, ‘আমার বিয়ে ফাইনাল হয়ে গেছে হিমাদ্রিদা।’ 




হিমাদ্রি কী বলবে ভেবে পাচ্ছিল না। তারও কান্না পাচ্ছিল
হাউমাউ কান্না একসময় থামল ঋতিকার ফোঁপানি চলছিল ফোঁপাতে ফোঁপাতে বলল, ‘বিশ্বাস কর, তোমার জন্যে আমার কষ্ট হচ্ছে খুব; শ্বশুরবাড়িতে তোমাকে খুব মিস করব।’ বাচ্চা ছেলের হাত থেকে গ্যাসবেলুন উড়ে গেলে যেমন হয়, হিমাদ্রির অবস্থা তেমনই কী বলবে, কী করবে কিছুই বুঝে উঠতে পারছে না ফোঁপাতে ফোঁপাতে ঋতিকা বলল, ‘ছাড়ছি হিমাদ্রিদা, ভাল থেক, নিজের যত্ন নিও; সিগারেট কম আর জল বেশি খেও; আমি না থাকলে তোমার কী অবস্থা যে হবে, ভাবলেই কেমন হচ্ছে। ঠিক আছে, রাখছি হিমাদ্রিদা, একটু বেরব।’ 

হিমাদ্রি বলে ফেলল, ‘কোথায় যাবে?’

ঋতিকা বলল, ‘বেনারসি কিনতে।’

হিমাদ্রির কেবলই মনে হচ্ছিল, আজই শেষ কথা ঋতিকার সঙ্গে। আর সুযোগ আসবে না। তাই ফোন ছাড়তে মন চাইছিল না। সে বলে বসল, ‘কী রঙের বেনারসি?’

একটু অবাক হয়ে ঋতিকা বলল, ‘কেন গো?’

হিমাদ্রি বলল, ‘আসলে আমার মনে হয়, লাল বেনারসিতে তোমাকে খুব সুন্দর মানাবে।’ 

ঋতিকা বলল, ‘ওমা; আমারও তো লাল বেনারসি খুব পছন্দ।’

ঋতিকা তখন এক এক দিন আসত আর নতুন নতুন খবর দিত আজ ছেলের বাবা দেখতে এসেছিল, আজ খোদ ছেলে এসেছিল বন্ধুদের নিয়ে তারপর ক’দিন দেখা-সাক্ষাৎ, ফোন সব বন্ধ

হিমাদ্রি বলল, ‘আচ্ছা, তোমাদের মালা বদল হবে?’

ঋতিকা বলল, ‘ওমা, কেন হবে না?’

‘কী ফুলের মালা?’

ঋতিকা একটু চুপ করে থাকে। তারপর বলে, ‘এই মালা নিয়ে একটু ঝামেলা। আমার জুঁই ফুলের মালা পছন্দ, কিন্তু বাড়ির লোক বলছে জুঁইয়ের মালা পাওয়া যাবে না এখন, রজনীগন্ধার মালাতে মালা বদল হবে। সত্যি হিমাদ্রিদা, জুঁইয়ের মালা পাওয়া যায় না এখন?’

হিমাদ্রি বলে, ‘ঠিক জানি না গো।’

‘তুমি একটু খোঁজ নিয়ে জানাবে হিমাদ্রিদা? বড্ড ভাল হয়। আমার কতদিনের ইচ্ছা ছিল জুঁইফুলে মালাবদল করব; তোমার সঙ্গেই করব; কিন্তু ভাগ্য! হল না। তার জন্য তো জুঁইফুলকে দোষ দেওয়া যায় না।’

হিমাদ্রি বলে, ‘সে তো বটেই।’




একটা সিগারেট ধরাল হিমাদ্রি। না, জুঁইফুলের মালার খোঁজ দেওয়া হয়নি ঋতিকাকে। বাড়ির লোকও বোধহয় জোগাড় করতে পারেনি। তাই ওর ছোটকাকা রজনীগন্ধার মালা নিয়ে ঢুকল। হিমাদ্রির হঠাৎ মনে হল, আচ্ছা কনের সাজে কেমন দেখাচ্ছে ঋতিকাকে! লাল বেনারসিই কি পরেছে! কেমন খোঁপা বেঁধেছে ! খুব দেখতে ইচ্ছা করছে।

নিমন্ত্রণ হয়নি হিমাদ্রির। খুব স্বাভাবিক। কোন মেয়ে প্রাক্তন প্রেমিককে নিমন্ত্রণ করে বলে, ‘সকাল সকাল চলে যেও, আমার সাতপাকের সময় পিঁড়ে ধরো।’ কিন্তু মুশকিল হচ্ছে, কনের সাজে ঋতিকাকে তার দেখতে ইচ্ছা করছে। আর তো দেখতে পাবে না এ সাজে। নিজের জামা-প্যান্টের দিকে তাকাল হিমাদ্রি। খুব ধোপদুরস্ত না হলেও চলেবল। অতএব ‘জয় মা’।

ভিতরে থিক থিক করছে মানুষ। ঋতিকার বাবা খুব উদ্বিগ্ন মুখে ফোনে কথা বলছে। ঋতিকার জ্যাঠামশাই ‘তমাল কোথায় গেলি’ বলে হন্তদন্ত হয়ে আসছিল। এসে সোজা ধাক্কা মারল হিমাদ্রিকে। তারপর ‘সরি ভাই’ বলে ভিড়ে মিশে গেল। গা বাঁচিয়ে একটু এদিক-ওদিক ঘুরল হিমাদ্রি। বাঁধানো চত্বরটার একদিকে পর পর ফুচকা, কুলফি আর পানের স্টল। দোতলায় খাবার ব্যবস্থা। একতলায় একটা ঘরে কনে বসেছে। হিমাদ্রির গন্তব্যস্থল সেটাই।

নিমন্ত্রণ হয়নি হিমাদ্রির। খুব স্বাভাবিক। কোন মেয়ে প্রাক্তন প্রেমিককে নিমন্ত্রণ করে বলে, ‘সকাল সকাল চলে যেও, আমার সাতপাকের সময় পিঁড়ে ধরো।’

দরজার কাছে জমাট ভিড়। বেশিরভাগই মেয়ে। এমন সেজেছে, যেন সব বিউটি পার্লারের বিজ্ঞাপন! দেখতে হলে এই ভিড় ঠেলে ভেতরে ঢুকতে হবে। ঝুঁকির ব্যাপার।কিন্তু মনটা যে বড্ড ‘কনে দেখি’, ‘কনে দেখি’ করছে। বর মনে হয় আসেনি এখনও। এই সুযোগেই দেখে নিতে হবে। ঠাসাঠাসি ভিড় বাসে কন্ডাকটর যেমন বডি গুঁজে দেয়, ঠিক সেভাবেই ঘরের মধ্যে এন্ট্রি নিল হিমাদ্রি। দেখল, কনের সাজে সিংহাসনে বসে আছে ঋতিকা।

প্রথমেই ধাক্কা খেল হিমাদ্রি। লাল নয়, বটল-গ্রিন রঙের বেনারসি পরেছে ঋতিকা। মন্দ দেখাচ্ছে না, কিন্তু হিমাদ্রি নিশ্চিত লাল বেনারসিতে ওকে আরও ভাল দেখাত। ফোটোগ্রাফার ছেলেটা নানা কেতা করে ছবি তুলছে। ফোটোগ্রাফারের পাশে ঋতিকার জ্যাঠতুতো দাদা অভয়। ছেলেটার পেটানো চেহারা; আবার নাকি ক্যারাটে শেখে। হঠাৎ হিমাদ্রির সঙ্গে চোখাচোখি হয়ে গেল ঋতিকার। ঋতিকা যেন আঁৎকে উঠল। ফটোগ্রাফার ছেলেটা বলল, ‘ওহ, দিদির এই ছবিটা একেবারে সুপার্ব। একদম অন্যরকম এক্সপ্রেশন।’

হিমাদ্রি আর দাঁড়াল না। দ্রুত বেরিয়ে এল ঘর থেকে। বেরতেই ঋতিকার ছোটকাকিমার মুখোমুখি। মানুষটা সরলসোজা ধরনের। হিমাদ্রিকে দেখে বললেন, ‘খাওয়া হয়েছে বাবা?’

হিমাদ্রি বলল, ‘না, কাকিমা, এখনও খাইনি।’

‘খেয়ে নাও বাবা, পরে ভিড় হয়ে যাবে। দেখ না, এখনও বর এল না। এদিকে লগ্ন এগিয়ে আসছে; কী কাণ্ড!’

ছোটকাকিমা চলে গেলেন। আর হিমাদ্রির বুকের মধ্যে একটা রঙমশাল জ্বলে উঠল। বর আসেনি। তাহলে কি কিছু সমস্যা? আসার পথে গাড়ি অ্যাক্সিডেন্ট। বর হসপিটালে। মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছে। কিংবা এমনও হতে পারে, বরের অন্য কোনও মেয়ের সঙ্গে লটঘট ছিল। সেই মেয়ে লোকজন নিয়ে বরের বাড়ি হাজির। পুলিশ পাহারায় সেই মেয়ের সঙ্গে বিয়ে হচ্ছে তার। এমন খবর তো খবরের কাগজে খুব দেখা যায়।

লাল নয়, বটল-গ্রিন রঙের বেনারসি পরেছে ঋতিকা। মন্দ দেখাচ্ছে না, কিন্তু হিমাদ্রি নিশ্চিত লাল বেনারসিতে ওকে আরও ভাল দেখাত। ফোটোগ্রাফার ছেলেটা নানা কেতা করে ছবি তুলছে।

সে ক্ষেত্রে কী হবে! মেয়েকে তো লগ্নভ্রষ্টা হতে দেওয়া যায় না। তখন কি হিমাদ্রির খোঁজ পড়বে না! তখন কি ঋতিকা বলবে না, হিমাদ্রিদা ছাড়া আর কাউকে বিয়ে করব না আমি। বলতেই পারে। সেদিন যেমন কান্নাকাটি করছিল, তাতে তো মনে হয় খুবই অনিচ্ছার সঙ্গে করছে বিয়েটা। তাই হিমাদ্রি ভাবল, এসেছে যখন, তখন আর কিছুক্ষণ দেখেই যাবে। একটু আড়াল আবডাল দেখে থেকে যাবে।




হঠাৎ পিঠে একটা টোকা পড়ল তার। ঘাড় ঘুরিয়ে দেখল সেই ক্যারাটে অভয়। বলল, ‘এদিকে আয়, কথা আছে।’ 

হিমাদ্রি বলল, ‘কোথায়?’

অভয় তাকে টেনে একটা কোণে নিয়ে গেল। বলল, ‘তোকে কে নেমন্তন্ন করল?’

হিমাদ্রি কাঁপা কাঁপা গলায় বলল, ‘কেউ না।’ 

‘তাহলে এসেছিস কেন?’

মুখ নামিয়ে নিল হিমাদ্রি।

‘শালা গন্ডগোল পাকাবার ইচ্ছে!’

‘না, না। বিশ্বাস কর, সত্যি বলছি।’ 

‘তাহলে এসেছিস কেন; খেতে নিশ্চয়ই আসিসনি।’

হিমাদ্রি আবার মাথা নামিয়ে  নেয়। আর নামানোর সময় তার চোখে পড়ে মৃত্তিকা। ঋতিকার বোন। মৃত্তিকা অবাক হয়ে দেখছে তাকে।

অভয় কড়া গলায় বলে, ‘সোজা বাড়ি যাবি; কোনও বেচাল করবি না। আমাকে তো চিনিস; মেরে হাড় গুঁড়ো করে দেব।’ 

হিমাদ্রি মাথা নাড়ে। তারপর মাথা নিচু করে গেট দিয়ে বাইরে আসে। হাঁটতে থাকে রাস্তার ধার দিয়ে।

‘হিমাদ্রিদা!’

থমকে দাঁড়ায় হিমাদ্রি। পিছনে তাকায়। মৃত্তিকা। লাল একটা শাড়ি পরেছে। ভারি মিষ্টি দেখাচ্ছে। হিমাদ্রির দিকে এগিয়ে আসে মৃত্তিকা। বলে, ‘দিদিকে দেখতে এসেছিলে?’ 

হিমাদ্রি মৃদু গলায় বলে, ‘হ্যাঁ।’

‘কেন এসেছিলে হিমাদ্রিদা? দিদি কি তোমার কথা ভেবেছে একটুও?’

থমকে দাঁড়ায় হিমাদ্রি। পিছনে তাকায়। মৃত্তিকা। লাল একটা শাড়ি পরেছে। ভারি মিষ্টি দেখাচ্ছে। হিমাদ্রির দিকে এগিয়ে আসে মৃত্তিকা। বলে, ‘দিদিকে দেখতে এসেছিলে?’ 

হিমাদ্রি চুপ করে থাকে।

‘ভাবেনি হিমাদ্রিদা, আমি জানি। সে তার বরকে নিয়েই ব্যস্ত।’

হিমাদ্রি মৃদু গলায় বলে, ‘ও।’

‘আচ্ছা, আমি কেমন সেজেছি হিমাদ্রিদা? কেমন দেখাচ্ছে আমাকে?’ 

হিমাদ্রি একটু অবাক হয়ে যায়। বলে, ‘ভালই তো।’ 

‘দিদির থেকেও ভাল?’

কী বলবে ভেবে পায় না হিমাদ্রি। চুপ করে থাকে। 

‘আমি জানি, তুমি খুব ভাল হিমাদ্রিদা। তোমার মন খুব নরম। তাই তো তুমি দিদিকে দেখতে এসেছিলে।’

হিমাদ্রি চুপ।

মৃত্তিকা এগিয়ে আসে হিমাদ্রির দিকে। হিমাদ্রির হাতটা ধরে বলে, ‘আমিও একদিন কনে সাজব হিমাদ্রিদা। কেন বল তো?’ 

হিমাদ্রি অস্ফুটে বলে, ‘কেন?’

‘তোমার জন্য। হ্যাঁ, তোমার জন্যই। তুমি বরের সাজে আসবে সেদিন। আসবে তো?’

 বর বুঝি এসে গেছে। উলুধ্বনি দিচ্ছে কারা। উলুধ্বনি এত মধুর জানা ছিল না হিমাদ্রির।

জন্ম ১৯৭১ | লেখালিখি শুরু ২০০০ সালে | প্রথম উপন্যাস ‘প্রস্তুতিপর্ব’ | শখ –ক্রিকেট আর শস্য শ্যামল ক্ষেত | সুযোগ পেলেই বেরিয়ে পড়েন গ্রাম বাংলার সবুজের হাতছানিতে |

One Response

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *