একদম ফাঁকা রাস্তাটা ধরে একা হাঁটছিল জয়া। রাস্তাটার একটা ছবি তুলল ও। একেই কি বাংলা ভাষায় ‘জনমানবশূন্য’ বলে। দুএকদিন আগে পর্যন্ত যেখানে মানুষের ভিড়, গাড়ির লাইন লেগে থাকত— আজ সেখানে মরুভূমির শূন্যতা! একটা আধটা গাড়ি, একজন দুজন মানুষ। মনে হচ্ছে রাস্তাটা কত চওড়া। এপ্রান্ত থেকে ওপ্রান্তে কতটা ছড়ানো।

আজ আসার সময় মা বারবার বারণ করেছে। বলেছে “ছেড়ে দে চাকরি। প্রাণ বিপন্ন করে, দরকার নেই।”

ও কথা শোনেনি। এসেছে। মুখ-হাত ঢাকা। তবু বিপদ যে কোথায় ঘাপটি মেরে আছে কে জানে! কাগজের অফিসের চাকরিতে এসব রিস্ক থাকেই। যদিও প্রায় আটবছরের সাংবাদিকতায় এতটা ভয়ংকর অবস্থার মোকাবিলা করতে হয়নি। সাংঘাতিক এক অচেনা ভাইরাস রে রে করে ঝাঁপিয়ে পড়েছে সারাবিশ্বে। গোটা মানবজাতি আক্রান্ত সাবধান হবার আগেই বেশ কয়েকজন মারা পড়েছে। এখন সবাই গৃহবন্দি। নিতান্ত প্রয়োজন ছাড়া বাড়ি থেকে বার হচ্ছে না। অবস্থাটা একেবারেই বাস্তব, হলিউডের সিনেমা ভাবার উপায় নেই। ভাবছিল ও, লড়াইটা জিতবে কে? 

Image 1

মায়ের অবস্থা খুবই খারাপ। কাল রাতেই ভাইয়ের কাছে কেন্দ্রীয় মেডিক্যাল কাউন্সিল থেকে ফোন এসেছিল ওকে আজ ভোরেই তুলে নিয়ে গিয়েছে ওরা। ও ডাক্তার। ফুসফুসের বিষয়েই ওর বিশেষ পড়াশোনা। সরকারিভাবে ডাক এলে ওকে যেতেই হবে।

এই এক মুশকিল। পড়াশোনা, রেজাল্ট নিয়ে গর্ব করলে কী হবে, এখন সেটাই জীবনে ঝুঁকি এনে দিচ্ছে। যেমন ও সাংবাদিক বাবাকে দেখতে দেখতে বড় হয়েছে। বাবা এখন অংশত বেকার কাজ ছেড়েছে বেশ কিছুদিন। বাড়িতে বসে টুকটাক ফ্রি-ল্যান্সিং করত। এসময়ে মায়ের অর্ডারে সেটাও বন্ধ। ও ছোটবেলা থেকেই স্বপ্ন দেখত সাংবাদিক হবে। স্বপ্নপূরণের পর তো সেটা ভেঙে দেওয়া যায় না।

কৌশিক একই অফিসে ওর কয়েকধাপ ওপরে। ওর ছুটির ব্যাপারের অনুমোদন কৌশিকের হাতে। বলছিল, “তুই শারীরিক অসুবিধে দেখিয়ে একটা আবেদন কর। তোকে ছেড়ে দেব।”

ও হাঁ করে তাকিয়েছিল কৌশিকের দিকে। ছেলেটা বলেছিল “আসলে কাল রাতে তোর ভাইয়ের অর্ডারটা আসার পর মাসীমা আমাকে ফোন করেছিলেন। না মানে, ব্যাপারটা তোকে জানাতে বারণ করেছেন।”

মাকে আর কিছু বলেনি ও। বেচারি মা! কৌশিকের সঙ্গে ওর বিশেষ সম্পর্কটার একটা সুবিধে নিতে গিয়েছিল। কিন্তু ও অতটা বিবেকহীন হতে পারবে না। অফিসের বাচ্চা বাচ্চা ছেলেমেয়েগুলো ক্যামেরা মাইক্রোফোনের ঝোলা কাঁধে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছে। ও কী করে স্বার্থপর, দায়িত্বজ্ঞানহীন হয়? শুধু বয়স নয়, অভিজ্ঞতারও একটা ওজন আছে তো। এভাবে সুযোগ নেওয়া যায় নাকি?

Image 2

***

বিকেল হতে না হতেই আকাশের আলো হলুদ হতে থাকে। তারপর কাঁচাপাকা কিছুটা রং ছড়িয়ে মিলিয়ে যায়। আর জ্বলে ওঠা সাদা আলোয় সমস্ত অন্ধকার একদম ঢাকা পড়ে যায়। আজ আলো নিভে যাওয়া আর জ্বলে ওঠার সন্ধিক্ষণে কী যেন খুঁজছিল ও। আসলে কদিন ধরেই মনটা বড় বিকল হয়ে আছে। কাগজের লোক বলে কিছু কিছু খবর আগেই এসেছিল ওদের কাছে। তবে এই মহামারির প্রকোপ যে এতটাই হবে ভাবতে পারেনি কেউ। বিশ্বের উন্নত দেশগুলোতে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে মৃত্যুর হার। আর ছোট দেশগুলো ভয়ে কাঁপছে। না আছে পরিষেবার তেমন মজবুত কাঠামো, না আছে মজুত খাদ্যের ভাণ্ডার। দেশের পাঁচ-শতাংশ মানুষের হাতে নব্বই ভাগ সম্পদ। তেমন ভয়ংকর কিছু ঘটলে খড়কুটোর মতো সব প্রতিরোধই ভেঙে পড়বে তো।

আরও পড়ুন- গল্প: ছবি

চটকাটা ভাঙতেই নিজের কাজের কথা মনে পড়ল ওর। আজ এই মোড়ে ওর ডিউটি। সরকারি নির্দেশে সারাদেশব্যাপী যে স্বেচ্ছাবন্ধ ঘোষিত হয়েছে তার প্রতিক্রিয়া দূরদর্শনে দেখানো হবে। সংবাদপত্রের ঘোষিকা সরাসরি কথা বলবেন ওর সঙ্গে, আর সারা দেশে সেই ছবি ছড়িয়ে পড়বে।

মা শুনেছে কথাটা। জানতে চাইছিল নিউজ চ্যানেলে কটায় ব্রডকাস্টিংটা হবে। বলে দিয়েছে ও। এত চিন্তার মধ্যেও মেয়ের গরবে গরবিনী হওয়ার ইচ্ছে মায়ের ষোলো আনার মধ্যে আঠারো আনাই আছে। সেটা মেটে যদি মিটুক। ও ঠিক জানে বিকেলেই খবরটা পাশাপাশি বাড়িগুলোতেও চালান হয়ে গিয়েছে। ওই ঘোষ, বোস কাকিমাদের মা নিশ্চয়ই এতক্ষণে বলেছে, “জানো তো, আমাদের মিঠুকে আজ টিভিতে দেখাবে!” কথাটা মনে করে একঝলক হাসি ওর ঠোঁট ছুঁয়ে যায়। মাঝেমাঝে মনে হয় কী ঠুনকো এই সব দেখানোপনা, নানান বাহানায় বোঝানো— দেখ, আমার ছেলে-মেয়ে কতটা বিখ্যাত! টিভিতে মুখ দেখাচ্ছে একইসঙ্গে আগলানো আর আঁচল গলে বেরিয়ে গেলে চারদিকে ফাটানো। কী করে যে পারে এরা?

Image 3

রাস্তার জায়ান্ট স্ক্রিনে চোখ গেল ওর। একটি মেয়ের ছবি। দেখাচ্ছে কীভাবে এই অচেনা ভাইরাসের মোকাবিলা করতে হবে। এসব ভাবনা-চিন্তার মাঝেই পুলিশের ভ্যান এসে পাশে দাঁড়িয়েছে। আইডেন্টিটি কার্ড দেখাতেই ওরা চলে গেল। পায়ে পায়ে নিজের স্পটে এসে দাঁড়িয়েছে ও। শুনশান চারদিক! কেমন যেন আজব লাগছে। অন্য সময়ে এই মোড়ে দাঁড়ানোর কথা ভাবাই যায় না। ভাবতে ভাবতেই অফিসের ফোন এসে গেল। একটু সতর্ক হল ও। সবটাই টিভিতে লাইভ টেলিকাস্ট হবে তো। 

“হ্যাঁ। আমি জয়িতা মিত্র বলছি। রাসবিহারীর মোড়ে দাঁড়িয়ে আছি। না, আংশিকভাবে না, সম্পূর্ণভাবেই সরকারি আদেশ পালিত হয়েছে। পথ একদম ফাঁকা। হ্যাঁ, যানবাহন নেই বললেই হয়…”

টানা দশমিনিট কথা বলতে বলতে গলা শুকিয়ে আসছিল ওর। এদিক ওদিক তাকিয়ে রাস্তার ওপারে একটা ওষুধের দোকান খোলা আছে চোখে পড়ল। সামনে একটা টুল পাতা। ওখানে গিয়ে বসতে হবে। অফিসের গাড়ি এই মোড় থেকেই তুলে নেবে। কিন্তু কতক্ষণ লাগাবে কে জানে? রাস্তা পার হতে হতেই নজরে এলো একটা বাজারভর্তি ট্রলি চলেছে। ট্রলিওলার মুখে কিছু ছিল। থপ্‌ করে থুতু ফেলল মাঝ রাস্তায়। ও দৌড়ে গিয়ে দাঁড় করালো ট্রলিটা।

সামনাসামনি গিয়ে ঝপ্‌ করে লোকটার ছবি নিল একটা। ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে লোকটা বলে উঠল, “ছবি নিলেন কেন?”

“কাগজে ছাপাব। তুমি রাস্তায় থুতু ফেলছ যে সেই ছবিটাও আছে।”

লোকটা গাড়ি থেকে নেমে এল তক্ষুণি। “আর করব না দিদি। এবারটা ছেড়ে দিন।” 

“কেন আর করবে না কেন? আলবাৎ করবে। সরকারি রাস্তা এটা। আমি বলার কে?”

“না দিদি। সত্যি বলছি ভুল হয়ে গিয়েছে। আর করব না। আপনি আমার ছবি ছাপাবেন না দিদি,…

“ঠিক আছে যাও, দেখছি।”

Image 4

লোকটা চলে যাবার পর নিজের ওপর নিজেরই করুণা হচ্ছিল ওর। সামনের বাড়ির ভোম্বলকাকু সকালের প্রথম হিসিটা করে গেট খুলে বেরিয়ে ঠিক ওর ঘরের সামনের নর্দমায়। একদিন বলেছিল ও।

জবাবে শুনেছিল, “তুই তো এই সেদিন হলি। গত পঞ্চাশবছর ধরে আমি এখানেই, এই নর্দমার ধারেই যা করার করি পুরনো স্বভাব কি পাল্টানো যায়?” 

কী হবে এসব বলে? এরা কি কোনওদিন পাল্টাবে? এইসব থুতু ফেলা অভ্যেস তো নতুন আমদানি। মা বলে, মায়েদের ছোটবেলায় এসব ছিল না। কোনও পোশাক, আচরণ, ভাবভঙ্গি কারও খারাপ লাগলেই বলতে পারত। মানে পাড়া-প্রতিবেশিরা অনেক বেশি নাক গলাতে পারত সব ব্যাপারে। 

অতটা হয়ত ভালো নয়। তবু কিছুটা চালু থাকলে এইসব রোগভোগ হয়ত কমে যেত। রোগের ভাইরাসে হাওয়া দিচ্ছে এইসব অভ্যেস এ কি সারবে?

Image 5

ভাবতে ভাবতেই রাস্তা ক্রশ করছিল ও। ঠিক তখনই কানে এল আওয়াজটা। একদম কচি গলার একটা কান্নার আওয়াজ। কিন্তু কোথা থেকে আসছে আওয়াজটা?

***

ফুটপাতের একটা কোনায় কিছু ময়লা বস্তা জড়ো করা। আওয়াজটা আসছে সেখান থেকেই। কাছে এগিয়ে গিয়ে দ্রুত হাতে বস্তাগুলো সরাতে থাকে ও। কান্নার আওয়াজটা এবার আরও জোর হয় বস্তাগুলোর একদিক একটু উঁচু হয়ে আছে। সেখানেই কান্নার উৎস। ন্যাকড়া জড়ানো একটা বাচ্চা। চোখ বুজে কাঁদছে। কয়েকদিনের মধ্যেই হয়েছে। লালচে শরীর। মাথায় চুল নেই বললেই হয়। গুটিয়ে ছোট হয়ে আছে। কী করবে ভাবতে ভাবতেই স্বাভাবিক প্রবৃত্তির বশে বাচ্চাটাকে কোলে তুলে নেয় ও। তারপরই খেয়াল হয় হাতে স্যানেটাইজার ঘষা হল না। এই চিন্তাটা এখন খুব স্বাভাবিক হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে এই মুহূর্তে চিন্তাটার কোনওই গুরুত্ব নেই।

কয়েকদিনের একটা বাচ্চা তাকে ফেলে তার মা পালিয়েছে। মন্বন্তরের সময়ে নাকি এরকম ঘটেছে। এখনও হয়! তবে এই ভয়ংকর সময়ে এরকমটা কী করে করতে পারে মানুষ? বাবা যেখানেই থাকুক, এর একজন মা ছিল তো? কদিনের  বাচ্চা যখন, মা তাকে একদিন বুকের দুধ বা অন্য কিছু খাইয়েছে নিশ্চয়ই। সেই বাচ্চাকে ফেলে মা চলে যায় কীভাবে?

Image 6

বাচ্চাটা কোলে ওঠার একটু পরেই কান্না থামিয়েছে। ও কি বুঝেছে যে ও এখন নিরাপদ? চোখের পাতা খুলে দেখছে চারিদিকে। একেবারে অনির্দিষ্ট চাহনি। তবু সেই দেখা আর মুঠো করা হাতদুটো দেখে কী যে মায়া হল ওর। ঠিক সেই মুহূর্তেই ফোন এল

কোনওরকমে নিজেকে সামলে নিয়ে বলতে পারল, “হ্যাঁ আমি আসছি। আসছি।” ব্যাগ আর ক্যামেরা সামলে কোলে বাচ্চা নিয়ে আবার আগের মোড়ে ফিরে যাচ্ছিল ও। অফিসের গাড়ি ওখানে এসেই দাঁড়িয়েছে।

***

ছুটিটা নিতেই হল। থানায় চূড়ান্ত অব্যবস্থা। কোথাও পুলিশের ওপর মানুষ চড়াও হয়েছে। কোথাও আবার জনগণের ওপর পুলিশি অত্যাচারের অভিযোগ। সবমিলিয়ে থানার অবস্থা একেবারে বেহাল। অফিসার বললেন “ভাইরাস সংক্রান্ত কিছু হলে দেখা যেত। এ তো একেবারে অন্য কেস।” লিখে দিয়ে বাড়ি নিয়ে যান। পরে দেখছি।

তখুনি কৌশিককে ফোন করল ও। কৌশিক সব শুনে রীতিমতো বিরক্ত। “তুই নিতে গেলি কেন? এসব ঝামেলায় বুদ্ধি থাকলে কেউ জড়ায় না।”

“ওটাই বড্ড কম আমার। যাক গে, ছুটিটা নিতেই হচ্ছে। আপাতত বাচ্চা নিয়েই ঘরে ফিরছি। তুই দেখ কদিন লিভ পেতে পারি আমি।”

Image 7

বুঝেছিল কৌশিক আরও কিছু বলবে, তাই ফোনটা রেখে দিয়েছিল। এইসময় আর যাই হোক অযাচিত জ্ঞান ভালো লাগে না। কৌশিক প্রচণ্ড রকমের কাজ পাগল কাজের সময় সবকিছুকেই ও ঝামেলা মনে করে কিন্তু ওর তো মনে হয়েইছে যে এছাড়া আর কিছুই করণীয় ছিল না।

বাড়ি ফিরে বাচ্চাটার ঠিকঠাক একটা বন্দোবস্ত করতে করতে রাত হয়ে গেল। ভাগ্যিস বাড়িতে দুধ ছিল। এসময় চাইলেও বাইরে পাওয়া যেত না। মা জল মিশিয়ে পাতলা করে প্যাকেটের দুধই চামচে করে খাওয়াল পুঁচকেটাকে। তারপর ঢেঁকুর তুলিয়ে শুইয়ে দিল বাবার পুরনো ধুতির কাচা টুকরোতে।

বাচ্চা সমেত ওকে ফিরতে দেখে চোখ কপালে তুলেছিল মা। “একে কোথা থেকে পেলি?”

সব বৃত্তান্ত শুনে বাবা বলেছিল, “ঠিক করেছিস। হাজার হোক, মানুষের বাচ্চা তো।”

মা বিরক্তি দেখিয়েছিল, “তারা সত্যি সত্যি মানুষ হলে এভাবে ফেলে যেত? তোমার আর কী? বলেই খালাস। ঝামেলা তো আমাকেই পোহাতে হবে।” 

বাবা হেসে ওকে যে ইশারা করেছিল সেটার মানে,“এবার নিশ্চিন্ত হতে পারিস। তোর মা দায়িত্ব বুঝে নিয়েছে যখন।”

Image 8

***

না, মায়ের ঘাড়ে সবটা চাপিয়ে দেয়নি ও। এসময় করোনার প্রকোপে সবকিছুই লকডাউন তো। কোনও কাজের লোক আসছে না। রাতে মার ঘুমটা খুবই দরকার। তাই নিজের সিঙ্গল খাটে বাচ্চাটাকে নিয়ে শুয়েছে ও। খাওয়া দাওয়ার পর ঘুমোচ্ছে বাচ্চাটা। মার সবকিছু জমিয়ে রাখার স্বভাব। খুঁজেপেতে ওর ছোটবেলার একটা বোতল বার করেছে মা। ভালো করে শুদ্ধি করে তাতেই কিছুটা ফোটানো জল ভরে রেখেছে। রাতে কাঁদলে ওটাই মুখে ধরতে হবে

এককাত হয়ে শুয়ে আছে বাচ্চাটা। কম আলোটা জ্বলছে। গ্রিলের ফাঁক দিয়ে চাঁদের আলো এসে পড়েছে ওর মুখে, শরীরে। পাশ ফিরে ওকে দেখতে দেখতে কখন যেন চোখটা লেগে গেছিল ওর।

কান্নার তীক্ষ্ণ আওয়াজে ঘুমটা ভেঙে গেল। আধো আলোয় হাতড়ে হাতড়ে চশমাটা খুঁজছিল ও। হঠাৎ কিছুর টানে ওর ডান হাতটা আটকে যেতে বাঁ হাতেই বেডসুইচটা জ্বালিয়ে নিল আলোর ঝলকানিতে নজরে এল ওর কোলের একদম কাছে সরে এসেছে বাচ্চাটা। আর ওর হাতের একটা আঙুল টেনে ধরে মুখে পোরার চেষ্টা করছে। খাবে…।

ওর মনে হল করোনার এই ভয়ংকর যুদ্ধের ফলাফল নিয়ে আর ভাবার কোনও মানে হয় না। এই লড়াই চলছে, চলবে।একহাতে মোবাইলে ছবিটা তুলছিল ও। কৌশিককে পাঠাতে হবে।

*অলঙ্করণ: মৃণাল শীল

Sarbani Bandhyopadhyay author

ঐতিহ্যময় শহর চন্দননগরের স্থায়ী বাসিন্দা সর্বাণী বন্দ্যোপাধ্যায় বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির স্নাতক।১৯৯৬ সালে প্রথম গল্প প্রকাশিত হয়’দিবারাত্রির কাব্য’ পত্রিকায়।২০০১ সালে ‘দেশ’ পত্রিকায় প্রথমে কবিতা পরে গল্প প্রকাশিত হয়।‘আনন্দবাজার’ ও ‘বর্তমান’ পত্রিকার প্রায় সব বিভাগে, ‘আজকাল’, ‘প্রতিদিন’, ‘তথ্যকেন্দ্র’, ‘উত্তরবঙ্গ সংবাদ’ ছাড়াও, ‘অনুষ্টুপ’, ‘কুঠার’, ‘এবং মুশায়ারা’-র মতো বিভিন্ন লিটল ম্যাগাজিনেও তার কবিতা, গল্প, উপন্যাস, প্রবন্ধ প্রকাশের ধারা অব্যাহত। প্রকাশিত উপন্যাস নটি , গল্পগ্রন্থ চারটি, এবং কবিতার বই দুটি।
কর্মজীবনে তিনি অর্থনীতির শিক্ষিকা হিসাবে চন্দননগরের একটি উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।অবসরের পরে পুরো সময়টাই লেখালেখিতে মগ্ন থাকেন।এখন দেশ বিদেশের বিভিন্ন আন্তর্জালিক পত্রিকাতেও তার লেখা প্রকাশিত হচ্ছে।আপাততঃ অনলাইনে একটি পত্রিকায় একটি উপন্যাস প্রকাশিত হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *