তুফানি ঠান্ডার পর্দাজোড়া বিজ্ঞাপন থেকে 
টুপ করে নেমে এল এক বিন্দু টলমল,
তোমার শিমুল গ্রন্থি থেকে তুলোর বীজ 
ছুটি নিয়ে ভেসে গেল বাতাসহীন অন্য জন্মের দিকে
আমি তার দামাল রৌদ্রের বুকে
ঠোঁটের ফেটে যাওয়া বিপদ রেখে দিই,
যেভাবে বৃক্ষকোটর রাখে নাবালক দাগ,
হে মুখর, করতাপ জেনো, 
মৌরিগ্রামের দিন ফুরিয়ে আসিল,
তোমাদের পাড়া থেকে আজ 
বৈশাখফেরির শব্দ ভেসে আসে
শরবৎপ্রসন্নতায় তুমি জেগেছিলে কাল,
খুলে রাখো জানলা, 
সিমেন্ট ফাটানো বটের উত্থান। 
বাতাস যেখানে ছিল চাতকের মতো গাঢ়
দুপুর যেখানে না মেলা অঙ্কের মতো স্থির,
সে সব ছেড়ে আমি চলে যাব বরফবিক্রেতার কাছে
প্রিয় কাঠগুঁড়ো, চটের বস্তার শ্বাস 
রাতের কষ্ট থেকে তোমাকে নিয়ে যাব 
আইসক্রিম গাড়ির ভ্যানিলা আড়ালে।
বাজারের নিরপেক্ষতা থেকে উঠে আসে কাঁঠালসঙ্গীত
দেশ গাঁ ভিটে আজ সকলই উতরোল তার কাছে,
আমবাগান চুরি করে নিয়ে যায় প্রৌঢ় ইতিহাস.
আজ শুধু কলোনীর ঘটিটুকু 
ভেসে আছে পুকুরের তালে,
জামরুল গাছ থেকে শৈশব নেমে আসে,
জ্বরে পোড়া ফুটবল মাঠে 
আমি গড়িয়ে দিয়েছি লাল বল,
শ্মশানের সবজান্তা হাওয়া বইছে দুপুরে
হোমওয়ার্ক জমা না দেওয়ার পাপে 
এক জন্ম শেষ হয়ে এল, 
মুঠো থেকে খসে গেল বালিকার কথা,
তপ্ত দিন আর দীর্ঘ রাত্রির দল, প্রহরের আঠা,
তোমরা জানো, জেনেছিলে এই সব কথা? 
হিমসুধা বিস্ফোরণের জন্য তবু আজও দীর্ঘ হয় পথ
আমার নিষ্ঠুর এপ্রিলে মিশে যায় কারও শবগাথা,
তোমার ডায়েরিতে রক্তের মতো জমুক অক্ষর
মার্জিনহীন দমবন্ধ এই বিকেলের মতো।
হে প্রখর, শুধু তোমার দৌড় আটকাবো বলে
আমি লেফট ব্যাকের সঙ্গে জায়গা বদলেছিলাম,
আমার গোড়ালি ভেঙেছে, চুন হলুদ হদয় থেকে
লু বইছে অনন্ত, 
অমৃত কুঁজোর জলে বেড়েছে তৃষ্ণা তবু
মুগ আর মুসুরির দিনে লেবুর অরণ্যে চলে গেছি
যেখানে শুধু জৈষ্ঠে পাকে ফল, 
যেখানে কাসেমের বুকে ঝলসে ওটে মর্জিনার ব্যথা।  
পাখার ব্লেড ঘোরে, রেকর্ড-এর গোল.
খবর পেয়ে গ্রীষ্মের ছুটির দিনে ছুটে আসে মাছি,
নদী থেকে জলভার নত তোমার গভীর
রূপকথার ঝাঁক, হারানো শহরের দেওয়ালে  
বৃষ্টি পরোয়ানা হয়ে, জানি, থেকে যাবে আদিগন্ত কাল

সকালে কবিতা লেখেন আর সন্ধ্যায় সংবাদ । এই স্বআরোপিত দ্বিচারিতার মধ্যেই ফ্রিস্টাইল বেঁচে থাকা । পেশার সূত্রে দেড় দশক দিল্লিতে অতিক্রান্ত। ভ্রমণ যত্রতত্র, কাব্যগ্রন্থ আপাতত পাঁচটি। জন্ম ১৯৭০, কলকাতা।

2 Responses

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *