(ইন্দীবর কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকেন। তারপর কথা বলেন)

ইন্দীবর: তুমি ভুল বলছ

কোকনদ: আমি ঠিক বলছি, আর আপনিও সেটা জানেন।

ইন্দীবর: এইসব বলে তুমি আসলে নিজের পিঠটা একটু গোপনে চাপড়ে দিচ্ছ। নিজেকে বলছ, ‘আমি কী বেচারা! আমি যে আসলে ইন্দীবর খুরানার ছেলে। আমি যা করেছি, যথেষ্ট  করেছি, এর থেকে বেশি কিছু করার কথা আমার ছিল না।’ না, না, নিজেকে স্তোক দিও না পাপ্পু। কখনও না। আমি তোমাকে বিভিন্ন ফিল্ডে অন্তত একশোটা উদাহরণ দিতে পারি, যে সুপারস্টার বাবার ছেলেও সুপারস্টার হয়েছে। হ্যাঁ হয়তো সময় লেগেছে, কিন্তু হয়েছে। তুমি সেই উদাহরণগুলো নিচ্ছ না। নিজের ক্ষমতার চেয়ে নিজের দুর্ভাগ্যকে বেশি শাপান্ত করছ। তুমি ঠিক করছ না পাপ্প।

কোকনদ: আমি…




ইন্দীবর:
তোমার আসলে খুব তাড়াতাড়ি বিয়ে করা উচিত। আর ওইসব তোমার অভিনেত্রী বান্ধবী মেয়েরা, কি যেন নাম হ্যাঁ ওই অ্যানি দত্তা বা ববিতা চোপড়া ওই টাইপের নয়। তোমার এমন কাউকে বিয়ে করা উচিত, যার ব্যক্তিত্ব তোমার থেকেও বেশি। যে তোমাকে ভালবাসার থেকেও বেশি বেশি করে আগলে রাখবে। যার নাম বা সম্মান, আমার আর তোমার মায়ের নাম বা আমাদের পারিবারিক মর্যাদার সঙ্গে সাযুজ্যপূর্ণ। আচ্ছা ইন্ডিয়ান কেমিক্যালসের মালিক সুনীল প্যাটেলের একমাত্র মেয়ে রাধিকা প্যাটেল সম্পর্কে তোমার অভিমত কী? রাধিকাকে তো তুমি অনেক বছর চেন।

কোকনদ: বাবা প্লিজ। পাগলামি করবেন না। আপনি একটা মৃত্যুবাসরে এসে আমার মৃত্যুগাথা রচনা করবেন না।

ইন্দীবর: কেন? রাধিকা তো খুব লক্ষ্মী মেয়ে। তোমার মা-ও ওকে খুব পছন্দ করেন। বিদেশে পড়াশোনা করলেও পারিবারিক মর্যাদা অটুট রাখার ক্ষেত্রে রাধিকা খুবই দায়িত্বশীল বলে আমার মনে হয়।

কোকনদ: প্লিজ় বাবা। আপনি যেমন বললেন, আমি অমন মেয়ে ঠিক খুঁজে বার করব। তাই বলে রাধিকা নয়। ইমপসিবল। আর তাছাড়া আমার এখন বিয়ে করার ইচ্ছেও নেই। কেরিয়ারটা আর একটু গুছিয়ে নিই, তারপর ভাবা যাবে।

ইন্দীবর: (নিঃশ্বাস ফেলেন) তুমিও আসলে আমার নিয়তি। আমি জানি তুমিও আমার মতো শেষমেশ কোনও একজন অভিনেত্রীকেই বিয়ে করবে। আমি যতই আমার ব্যক্তিগত ক্ষতগুলো সমাজের সামনে লুকিয়ে রাখতে চাই, সেগুলো ঠিকই কালক্রমে প্রকট হয়ে উঠবেই।

কোকনদ: (হাসে) আমি আপনার ব্যক্তিগত ক্ষত স্যারজি?

ইন্দীবর: তুমি আমার ক্ষত, তুমি আমার নিরাময়। তুমিই আমার সব পাপ্পু। তুমি না থাকলে হয়তো তোমার মা আমাকে ছেড়ে চলেই যেতেন, আমি আর এক অনিশ্চয়তার গহ্বরে ঢুকে পড়তাম। যাকগে এসব কথা।

কোকনদ: (লঘু গলায়) স্যারজি, আপনার সঙ্গে সত্যিই মায়ের ভাষায় ওই ‘চুড়েইল শয়তা’ হিরোইন ভানুমতীর অ্যাফেয়ার হয়েছিল?

ইন্দীবর: চ্যাংড়ামো কোরও না। ছোটবেলা থেকে বন্ধুর মতো মিশি বলে তার সুযোগ নিও না।

(বাইরে হইচই হয়। ইন্দীবর সচকিত হন।)

শোনো, জাফর এসেছে বলে মনে হচ্ছে। যা বলেছি মনে রাখবে। গলে পড়বে না। মনে রাখবে ও যদি গ্রিকবীর আলেকজান্দার হয়, তুমিও তবে মহারাজা পুরু। হতে পারে তোমার সাম্রাজ্য ছোট, কিন্তু তুমিও রাজা। ফলে রাজকীয় দূরত্ব রেখে কথা বলবে। আমার কথা বাদ দাও, অন্তত তোমার মায়ের ওর সম্পর্কে মূল্যায়ন মাথায় রেখে ওর সঙ্গে কথা বোলো।

(যেন বাইরে হাত নাড়তে নাড়তে জাফর ও তার সঙ্গে পরিচালক অর্জুন মেহরোত্রা ঢোকেন। একজন ভৃত্য ওদের পৌঁছে দিয়ে যায়। জাফর আর অর্জুন ঢুকে ইন্দীবরের হাঁটুতে হাত দিয়ে প্রণাম করে।)

জাফর: প্রণাম স্যার। খুব আনফরচুনেট শিবজির চলে যাওয়াটা।

ইন্দীবর: হ্যাঁ, অনেক স্মৃতি ওঁর সঙ্গে আছে আমার।

জাফর: কী খবর পাপ্পু?

কোকনদ: ঠিক আছি জাফরভাই। নমস্তে অর্জুনভাই।

অর্জুন: হ্যালো পাপ্পু (ইন্দীবরকে) স্যার আপনি কি একটু ওয়েট গেইন করেছেন?

ইন্দীবর: হতে পারে স্যার। দু’দিন এক্সারসাইজ করা হয়নি। তারপর জাফরস্যার, সমাচার কী?




জাফর:
ভাল স্যার জানেন, কাল আমার এক শালী লন্ডন থেকে কল করেছিল। ও ওখানেই থাকে। ও নাকি এতদিন পরে অনলাইনে আমাদের ওই সিনেমাটা ‘আনেওয়ালা পল, জানেওয়ালা হ্যায়’ দেখেছে। স্যার, ও বলেছে, আপনি নাকি আমাকে দশ গোল দিয়েছেন।

ইন্দীবর: আর ধৃতি বলে, তুমি সবকটা সিনেমায় আমাকে দশ গোল দাও। ওর কথায় এমনকী আমি যে সিনেমায় তোমার সঙ্গে নেই, সেটাতেও আমাকে গোল দাও।

অর্জুন: (হাসতে হাসতে) খালি আমার সিনেমায় দু’জনেই দু’জনকে পাঁচ গোল করে দেন স্যার। শোধবোধ।

জাফর: আরে কী বলছিস তুই অর্জুন? তোর ওই যে সিনেমাটা..

অর্জুন: কোনটা? ‘কভি তো হাসায়ে, কভি ইয়ে রুলায়ে’?

জাফর: হ্যাঁ, ওটাতে তো স্যার টেরিফিক। কিন্তু ওটা নয়। আমি বলছি যেটায় আমাদের হেড-অন অ্যাকশন ছিল।

অর্জুন: দূর! তুই গুলিয়ে ফেলেছিস জাফর। ওটা আমার ছবি না। তুই ‘গুলশন মে গুল খিলতে হ্যায়’এর কথা বলছিস তো? ওটা ত্রিপাঠীভাইয়ের সিনেমা। আমার কেন হবে?

জাফর: স্যরি সকাল তো, গুলিয়ে ফেলেছি। স্যরি স্যারজি।

ইন্দীবর: নট অ্যাট অল। তুমি গুলিয়ে ফেলা লোক নয় স্যারজি। ওই সিনেমাটার কথা তুমি বলছ, কারণ তোমার পার্টটা ওতে অ্যাওয়ার্ড মেরেছিল, আমারটা নয়।

জাফর: ছিছি স্যারজি। অ্যাওয়ার্ড-ফ্যাওয়ার্ড সব বওয়াস। ওটার সেটে প্রত্যেকদিন শট দেবার আগে আমি ভাবতাম, আমার সামনে মি: খুরানা দাঁড়িয়ে। ইন্দীবর খুরানা, যাঁর প্রত্যেকটা সিনেমা আমি আলিগড়ে থাকতে ফার্স্ট ডে ফার্স্ট শো দেখতাম। যিনি, যাঁর অভিনয়, আমাকে এ নোবল প্রফেশন বেছে নিতে উৎসাহিত করেছে। স্যার, প্রতিদিন আপনার থেকে আমি কিছু না কিছু শিখি। আমি অর্জুনকে একদিন বলেছিলাম, যখন আমি ওই গেম শোটা, মানে ‘কউন হোগা পহেলা সাট্টাবাজ’ টিভিতে অ্যাঙ্করিং করার অফার পেলাম, আমার তো রাতে ঘুম চলে যাওয়ার যোগাড় হল। আমি অর্জুনকে বলেছিলাম, কী বলেছিলাম বল তুই অর্জুন, স্যারকে।

অর্জুন: (হেসে) তুই-ই বল না। (ইন্দীবরকে) না স্যার, আমার খালি মনে আছে তখন জাফর দিনে রাতে যখন খুশি ফোন করে আমায় জ্বালিয়ে মারত।

কোকনদ: সে তো জাফরভাই এমনিতেই বোধহয় দিনে দশবার তোমায় কল করে।

অর্জুন: আহা। সে তো এমনি। তুই না খুব বিচ্ছু আছিস পাপ্পু।

(ইন্দীবর একবার কড়াচোখে কোকনদের দিকে তাকান। কোকনদ অপ্রতিভ হাসে। অর্জুন ইন্দীবরকে বলে)

অর্জুন: জানেন স্যার, আমিই জাফরকে বলি, তুই পুরো স্যারের উল্টো স্টাইলে চলে যা। স্যার শো-তে যে ফর্মাল, ফ্র্যাংক ডিগনিটিটা রাখতেন, তুই পুরো সেটাকে ব্রেক করে দে। স্যারকে টিভিতে দেখে মনে হত যে স্নেহশীল বড়দা, আর তোকে যেন দেখে মনে হয় বাড়ির দুষ্টু ছোটছেলে, যে এক্ষুনি দামাল হয়ে উঠবে।

ইন্দীবর: (হাসেন) আর এই শো-তে আমিও জাফরের থেকে অনেক কিছু শিখেছি। আমি আর ধৃতি রোজ রাতে এই শো-টা দেখতাম। ধৃতিই টিভি চালিয়ে আমাকে ডাকত। আমি ধৃতির পেছনে লাগতাম। বলতাম কী, বড়ছেলের শো কি স্বামীর থেকেও ভাল? ধৃতি বলত, অনেক ভাল।

জাফর: আবার উমা, মানে আমার বউ আমার শো দেখে বলত, ইন্দীবর স্যার এই শোয়ের যা ট্রেন্ড সেট করে দিয়ে গেছেন, তুমি জীবনেও ওটা ভাঙতে পারবে না।

(সবাই হাসে। ভিকি খান্না দিব্যা-সমেত ফাইটমাস্টার প্রণব ফড়নবিশ ও তাঁর অভিনেত্রী স্ত্রী টিকলিকে নিয়ে ঢোকে।)

ভিকি: এক্সট্রিমলি স্যরি। আমি সবার কাছে ক্ষমা চাইছি। আসলে  আমাদের ফ্যামিলি মিটিং চলছিল। পিতাজির বডি কতক্ষণ বাড়িতে রাখা হবে তাই নিয়ে। আমি আর দিব্যা চাইছিলাম যত তাড়াতাড়ি ক্রিমেশন হয় তত ভাল। কিন্তু মাজি চাইছেন বডি আরও কিছুক্ষণ বাড়িতে থাকুক। তার মধ্যে দিদি এল। বলল সিএম নাকি বাড়িতে আসতে পারেন। তাহলে তো এখন বডি নিয়ে যাওয়ার  কোনও প্রশ্নই নেই। (ইন্দীবরকে) স্যরি স্যার।

ইন্দীবর: না, না ঠিক আছে। আমরা তো গল্প করছিলাম। তো সিএম এখানে আসছেন নাকি ভিকি?

ভিকি: দিদি তো তাই বলছে।

অর্জুন: নবনীত এসেছে? কোথায় ও?

দিব্যা: দিদি বোধহয় ড্রইংরুমে বডির কাছে গেল। আরও অনেকে আসছেন। সবাইকে অ্যাটেন্ড করতে হবে তো। মাজি প্রায় অজ্ঞান হয়ে আছেন। আমি অনেক কষ্টে মাজিকে সামলে রেখেছি।

ইন্দীবর: হ্যাঁ, অরুণা একদম একা হয়ে  গেল।। তাই না ভিকি?

ভিকি: হ্যাঁ স্যার, কী করা যাবে? দিস ইজ় লাইফ এভরিডে ইজ় নট সানডে। কি রে পাপ্পু, লস্যি খেয়েছিস? আর কিছু খাবি?

কোকনদ: না বস্। তোমার সঙ্গে দেখা হয়ে গেল, আমার প্রাণটা এমনিতেই জুড়িয়ে গেছে।

ইন্দীবর: আমি তাহলে এগোই। আমার বিকেলে শ্যুটিং আছে। তার আগে বাড়িতে একবার যেতে হবে। কলকাতা থেকে এক ডিরেকটরের আসার কথা।

প্রণব: স্যার, আপনি আজকাল এত বাঙালি ডিরেকটরদের সঙ্গে কাজ করছেন? কী ব্যাপার?

ইন্দীবর: আর বোলও না। তুমি তো জানো আমার শ্বশুরবাড়ি বাঙালি। ধৃতির কলকাতার ওপর একটা সফটনেস আছে। ওরা মুম্বইতে সব ছোট ছোট প্রোডিউসার পায়। আমাকেই ব্যাঙ্ক করে।




টিকলি:
আরে ভাই, প্রমিত সান্যালের পর বাঙালি ডিরেকটররাই তো এখন ইন্ডাস্ট্রি চালাচ্ছে। খামোকা তেরচা চোখ দিয়ে কিছু লাভ আছে? 

জাফর: এই তো আর এক বাঙালি মায়ের মেয়ের আসল রুট বেরিয়ে পড়েছে।

(সকলে হাসে। প্রণব শুধু গম্ভীর থাকে। ইন্দীবর বলেন)

ইন্দীবর: প্রণবের কি শরীর খারাপ নাকি? একটু কেমন লাগছে।

প্রণব: না স্যার। আই অ্যাম ফাইন। আই অলসো রেসপেক্ট বেঙ্গলিজ়। 

জাফর: রেসপেক্ট না করে উপায় আছে? তোর শাশুড়ি ক্ষেপে যাবে তো!

(প্রণব আড়ষ্ট হাসে।)

ইন্দীবর: আমি তাহলে এগোচ্ছি। কোকনদ বেটা, তুমি কী করবে?

কোকনদ: আপনি এগোন বাবা। আমি একটু পরে যাব। বাড়িই ফিরব।

ইন্দীবর: জি। তাহলে কি আমি বাড়ি পৌঁছে তোমাকে গাড়ি পাঠিয়ে দেব?

কোকনদ: দরকার নেই, আমি সুরজকে টেক্সট করে দিয়েছি। ও আমার গাড়ি নিয়ে আসছে।

ইন্দীবর: বেশ। তুমি এখন তোমার বড়দা জাফর আলিকে পেয়ে গেছ। সঙ্গে গ্রেট ডিরেকটর অর্জুন মেহরোত্রা, সঙ্গে সুন্দরী নায়িকা, গ্র্যান্ড ফাইটমাস্টার প্রণব ফড়নবিশ, তুমি কি আর তোমার বৃদ্ধ বাবার সঙ্গে ফিরবে?

কোকনদ: আরে না না। ভিকি ভাইয়ের সঙ্গে কিছুটা সময় কাটাই। ভিকি ভাই আসলে এত ইমোশনাল, মে বি হি নিডস আওয়ার কোম্পানি। ওর মন ভাল থাকবে।

ইন্দীবর: রাইট। নো প্রবলেম। আমি চলি তবে। ভাল কথা, প্রণব জানো তো (ভিকির কাঁধে হাত দেন) ভিকি আমার এইট্টিজ়ের সিনেমা ‘ত্যাগীচাচা’-র ফাইট সিকোয়েন্সে আমার ডাবল হয়েছিল।

প্রণব: তাই নাকি? এটা তো জানতাম না।

ভিকি: তুই আমার সম্পর্কে কমই জানিস।

জাফর: রিয়েলি ইটস আ নিউ ইনফরমেশন। স্যারের ডাবল ভিকিভাই। এই জন্য প্রণবের মতো ফাইট ডিরেকটররা বলে, পেয়ার না হলেও ‘অ্যাকশন কা ওয়াদা ফিফটি ফিফটি হোনা চাহিয়ে’।

[সবাই হাসে। প্রণব গম্ভীর থাকে। দ্বিতীয় ঘর অন্ধকার হয়ে যায়। বাইরে রাস্তায় আলো জ্বলে। মহেশ ক্যামেরায় কথা বলছে। পুনম এখানে নেই।]

মহেশ: ইয়েস অশোক, দিস ইজ় আ ব্রেকিং নিউজ়। তুমি চালাও, আমি সাগির হুসেনকে ধরে নিচ্ছি। হ্যাঁ আমি রেডি। যাচ্ছি তাহলে।… এই মুহূর্তে হট নিউজ়ের দর্শকদের জন্য একটি ব্রেকিং নিউজ। হ্যালো, হ্যাঁ অশোক শুনতে পাচ্ছ? দর্শকদের জন্য একটি তাজা খবর। বিখ্যাত অভিনেতা ও থিয়েটার পরিচালক সাগির হুসেন এইমাত্র টুইট করে জানিয়েছেন যে তিনি প্রয়াত অভিনেতা শিব খান্নার জন্য দুঃখপ্রকাশ করলেও বলতে বাধ্য হচ্ছেন যে শিব খান্না বস্তুত একজন মধ্যমানের অভিনেতা ছিলেন। তাছাড়া সারাজীবনে একটিও ভালো সিনেমা শ্রী খান্না করেননি। সাগির হুসেনের ভাষায়, ‘‘শিব খান্নার অভিনীত সবকটি সিনেমা হচ্ছে কদর্য ও জঘন্য। ন্যূনতম কোনও শিল্পগুণ শ্রী খান্না অভিনীত একটি সিনেমা থেকেও বেরিয়ে আসে না। ফলে শিব খান্নার মৃত্যু আমাকে দুঃখ দিলেও আমি বলতে বাধ্য হচ্ছি যে, তাঁর করা প্রতিটি সিনেমা ভারতীয় সিনেমাকে ক্রমশ পেছন দিকে ঠেলে নিয়ে গেছে।’’ হ্যাঁ, অশোক শুনতে পাচ্ছ? ইতিমধ্যেই সাগির হুসেনের করা এই টুইট নিয়ে ইন্ডাস্ট্রিতে বিতর্ক তুঙ্গে উঠেছে। কেউ কেউ এই বিতর্কি অভিনেতাকে সমর্থন করলেও অনেকেই বলছেন প্রয়াত অভিনেতার মৃত্যুদিনে সাগির হুসেনের করা এই টুইট কুরুচিপূর্ণ ও নীচ মনোভাবের পরিচয়। আবার কেউ কেউ বলছেন সাগির হুসেনের কথাগুলো একটু কড়া শোনালেও, বস্তুত উনি ঠিকই বলেছেন। ভাল খবর এই যে, এই ব্যাপারে আমরা সরাসরি অভিনেতা সাগির হুসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পেরেছি। হট নিউজ়ের দর্শকদের জন্য সুসংবাদ, এ ব্যাপারে আমাদের সঙ্গে কথা বলতে রাজি হয়েছেন স্বয়ং অভিনেতা সাগির হুসেন। আমরা বরং তাঁর থেকেই জেনে নিই, কেন তিনি আজ শিব খান্নার মৃত্যুদিনে এই ধরনের একটি টুইট করলেন।

 

*ছবি সৌজন্য Pinterest
পরবর্তী পর্ব প্রকাশিত হবে ২৯ জানুয়ারি ২০২১
আগের পর্বের লিংক –

জন্ম ১৯৬৯, ২৫ সেপ্টেম্বর, মেদিনীপুর। পূর্বতন প্রেসিডেন্সি কলেজ ও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী। পরবর্তীতে সিটি কলেজে অধ্যাপনা। নাটককার, পরিচালক, অভিনেতা, চলচ্চিত্র পরিচালক, চলচ্চিত্রাভিনেতা, প্রাবন্ধিক, অনুবাদক, গীতিকার সম্পাদক। 'কালিন্দী ব্রাত্যজন' নাট্যগোষ্ঠীর কর্ণধার ও 'ব্রাত্যজন নাট্যপত্রের' প্রধান সম্পাদক। বর্তমান পশ্চিমবঙ্গ সরকারের গুরুত্বপূর্ণ বিভাগের মন্ত্রী। পেয়েছেন বহু পুরস্কার ও স্বীকৃতি। উল্লেখ্য সত্যেন মিত্র পুরস্কার, শ্যামল সেন স্মৃতি পুরস্কার, দিশারী পুরস্কার, রমাপ্রসাদ বণিক স্মৃতি পুরস্কার, খালেদ চৌধুরী স্মারক সম্মান, অন্য থিয়েটারের শ্রেষ্ঠ নাট্য নির্মাণ সম্মান। বাংলা সাহিত্যে অবদানের জন্য পেয়েছেন গজেন্দ্র কুমার মিত্র-সুমথনাথ ঘোষ স্মৃতি সম্মান। তাঁর সম্পাদনায় 'গিরিশ কথা' ও 'শিশির কথা' দু'টি বই তথ্য ও সংস্কৃতি বিভাগ, প: ব: সরকার কর্তৃক প্রকাশিত হয়েছে। পেয়েছেন এবিপি আনন্দ 'সেরা বাঙালি ২০১৯' সম্মান। পেয়েছেন বাংলার নাট্যশিল্প জগতের সর্বোচ্চ সম্মান 'দীনবন্ধু মিত্র পুরস্কার'।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *