‘অগ্নীশ্বর’ উপন্যাস সাহিত্যিক বনফুলের (বলাইচাঁদ মুখোপাধ্যায়) এক অনবদ্য সৃষ্টি। কিন্তু সত্যিই কি এই নামে কেউ ছিলেন, যাঁকে অবলম্বন করে বনফুল এই চরিত্রের অবতারণা করেন? আজ, বনফুলের জন্মদিনে এ প্রশ্ন সঙ্গত ও প্রাসঙ্গিক। এবং তার উত্তরও দিয়েছেন পরবর্তীকালের গবেষকরা। বনফুল সৃষ্ট চরিত্র ডাক্তার অগ্নীশ্বর মুখোপাধ্যায় আদতে হলেন, মেডিকেল কলেজের প্রসিদ্ধ চিকিৎসক ডাক্তার বনবিহারী মুখোপাধ্যায় ( ১৮৮৫- ১৯৬৫)। বনফুলের মেডিকেল কলেজের শিক্ষক। তবে শুধু চিকিৎসাশাস্ত্রের নয়, সাহিত্যচর্চারও। বনফুল নিজেই জানিয়েছেন প্রায় সব সত্যি ঘটনা! এই উপন্যাসের দৃঢ়চেতা যে চিকিৎসকের ছবি পাওয়া যায় তা সাধারণভাবে অভাবনীয় মনে হলেও অতিরঞ্জিত নয়, বনবিহারী ছিলেন এক অবিশ্বাস্য চরিত্র।
গীতিকারকে আড়ালে রেখে গানের কথা ও সুর যেমন ধীরে ধীরে গায়ক-প্রধান হয়ে ওঠে, কল্পরসে জারিত হয়ে বাস্তব চরিত্রও তেমন অনুচ্চারিত থেকে যায়। প্রধান হয়ে ওঠে গল্প ও সেলুলয়েডের নায়ক। ডাক্তার বনবিহারী মুখোপাধ্যায়ের জীবানালেখ্যও যেন তেমনই এক অচর্চিত মেঘে ঢাকা নক্ষত্র দ্যুতি। ছায়াছবিতে তাঁর গুণের যে প্রকাশ দেখি তাও সামান্য। হিমশৈলের চূড়া মাত্র। বাস্তবের অগ্নীশ্বর বা বনবিহারী মুখোপাধ্যায় ছিলেন অকৃতদার। মেডিকেল কলেজের অধ্যাপক চিকিৎসক। পরবর্তীকালে সুপারিন্টেডন্ট। তাঁর যাপন রামধনুর মতো বিচিত্র। অবিশ্বাস্য। সুন্দর। কী ব্যঙ্গ-সাহিত্য কী রসাত্মক অঙ্কন সব জগতেই তাঁর অবাধ গতায়াত।
খ্যাতনামা সাহিত্যিক ‘বনফুল’ তাঁরই ছাত্র ছিলেন মেডিকেল কলেজে পড়ার সময়। তাঁর সাহিত্য-সাধনার দ্রোণাচার্য ছিলেন এই বনবিহারী মুখোপাধ্যায়। বনফুল নিজেই বলেছেন, “মেডিকেল কলেজে তাঁহার নিকট আমি পড়িয়াছি। কিন্তু তিনি আমার প্রকৃত শিক্ষক ছিলেন সাহিত্যের ক্ষেত্রে। স্কুলে মাস্টারমহাশয়েরা পূর্বে যেমন ছেলেদের এক্সারসাইজ বুক সংশোধন করিয়া পাঠাইতেন, তেমনি তিনি আমারও অনেক লেখা সংশোধন করিয়া পাঠাইতেন। সঙ্গে দীর্ঘ চিঠিও থাকিত। চিঠি নয়, যেন বেত। সাহিত্যের প্রকৃত সমঝদার ছিলেন তিনি। অত্যন্ত কড়া সমালোচক; কোনওরকম শৈথিল্য সহ্য করিতেন না। আমার সাহিত্য সাধনার পথে তিনি প্রথম শ্রেণির গাইড ছিলেন একজন।”
সুকুমার সেন লিখেছেন, ”বনফুল এসেছিলেন জুনিয়র শিক্ষকের কাছে সিনিয়র ছাত্ররূপে। মনে হয় পিতার পরেই বনবিহারীর প্রভাব সবচেয়ে বেশি পড়েছিল বলাইচাঁদের চরিত্র গঠনে…” তাঁরই জীবন ভিত্তি করে পরবর্তীকালে বনফুলের গুরুদক্ষিণা ‘অগ্নীশ্বর’ উপন্যাস। বনবিহারীর ভাই অরবিন্দ মুখোপাধ্যায়ের পরিচালনায় এই উপন্যাস চলচ্চিত্রায়িত হয়। হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের গানে ও উত্তমকুমারের অনবদ্য অভিনয়ে সিনেমাটি জনপ্রিয়তা লাভ করে। কিন্ত বনবিহারীর জীবনের মহাকাব্যিক বিস্তারকে কয়েক ঘণ্টার ছায়াছবি কিংবা কয়েক পৃষ্ঠার বক্তব্যে বাঁধা যায় না।
বাস্তবের এই বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী অগ্নীশ্বর সত্যিই ছিলেন বহ্নিমান অগ্নিশিখা। একদিকে রাতের অন্ধকারে বিপ্লবীর শরীর থেকে গুলি বের করে নিয়ে বলছেন “বন্দেমাতরম”, দুঃস্থ রোগীর চিকিৎসার খরচ তুলে নিচ্ছেন নিজের কাঁধে। অন্যদিকে সৃষ্টি করে চলেছেন অমোঘ সব সাহিত্য। লিখছেন ‘শনিবারের চিঠি’, ‘বঙ্গবাণী’, ‘ভারতবর্ষ’ ও ‘বসুমতী’-সহ অন্যান্য অনেক নামিদামী পত্রিকায়। ‘বেপরোয়া’ নামে তাঁদের যে দল ছিল, তার অন্যতম সভ্য বিষ্ণুচরণ ভট্টাচার্যের সম্পাদনায় ১৯২৩ খ্রিস্টাব্দে ‘বেপরোয়া’ নামে একটি পত্রিকাও প্রকাশিত হয়। সেখানে বেশিরভাগ লেখাই ছিল বনবিহারীর। প্রচারবিমুখ ও ছদ্মনামের আড়ালে থাকা এই চিকিৎসক সাহিত্যিকের গল্প, উপন্যাস ও নাটক ছিল শ্লেষ ও ব্যঙ্গ-বিদ্রুপে ভরা। কৌতুক ও বিদ্রূপের মাধ্যমে তিনি সমাজে পরিবর্তন আনতে চেয়েছিলেন। ব্যক্তি আক্রমণ কখনই তাঁর লক্ষ্য ছিল না। তিনি ল্যাম্পুন লেখেননি কখনও। তাঁর আক্রমণ ছিল সমাজধর্মের অন্তর্গত অন্ধতার বিরুদ্ধে। বিশেষত ধর্ম নিয়ে তাঁর যুক্তি ছিল অকাট্য। কারও ধর্ম অন্যের উপর চাপিয়ে দেওয়ার বিরুদ্ধাচারণ করে গেছেন আজীবন কৌতুকের ঢঙে। ধর্ম, তাঁর মতে, যক্ষা রোগের মতো এক দুরারোগ্য ব্যাধি। তিনি দেবদেবীর মূর্তিতে বিশ্বাসী ছিলেন না। প্রকৃত মানুষের সঙ্গে দেখা হওয়াই ছিল তাঁর কাছে তীর্থদর্শন।
আরও পড়ুন: অভীক চট্টোপাধ্যায়ের কলমে: নায়িকার আগে ছিলেন মানবতাবাদী
‘দশচক্র’ উপন্যাসে ভূপতি-নন্দন সরোজ যখন ব্রাক্ষ্মধর্ম গ্রহণ নিয়ে তাঁর পিতার আপত্তি আছে কিনা জানতে চায়, তখন তাঁর পিতার উত্তরের মাধ্যমে লেখকেরই নিজস্ব বিশ্বাস ধ্বনিত হয়:
“ভূপতি– আপত্তি! দাঁড়াও! তোমার কাজে আপত্তি করবার আমার অধিকার নেই। কারণ তুমি বড় হয়েছ। তবে দুটো কথা জানতে ইচ্ছা করে, এ দীক্ষা নিলে কারুর মাথা ফাটবে না তো?
সরোজ- একটা ধর্ম সম্বন্ধে…
ভূপতি– মাথা ফাটানো ধর্মের অঙ্গ বলেই বলছি। আর, মুখের ভাত ফেলে দিয়ে শুকিয়ে মরতে হবে না? অনেক ধর্মে তাই করতে হয়।
সরোজ– না।
ভূপতি– তা হ’লে দীক্ষা নাও, by all means, and be damned,- and welcome.”
যত পাপই কেউ করুক, বুকে ক্রস ছোঁয়ালেই যিশু তা মাফ করে দেবেন, একেও বুজরুকি বলে ঠাট্টা করতে তিনি দ্বিধা করেননি। দশচক্রের ১৩ নং অধ্যায়ে ফুটে উঠেছে সেই কৌতুক:
“শশীর ব্রাহ্ম হওয়া হইল না। দীক্ষা লওয়া ইত্যাদিতে নষ্ট করার মতো সময় তাহার ছিল না। বিবাহ কার্যটা তাহাকে তাড়াতাড়ি সারিয়া লইতে হইবে। কাজেই কৃশ্চান মতে তাহা সুসম্পন্ন হইল। ঘটনাচক্রে শশী কৃশ্চানই রহিয়া গেল। ঘটনাচক্রে শশীর ঘরে যে সব সন্তানাদি হইবে, তাহারা যে যে ঘরে বিবাহ করিবে, এই সকলের যে সব সন্তান-সন্ততি হইবে, তাহাদের সহিত যাহারা সন্বন্ধসূত্রে আবদ্ধ হইবে, এবং তাহাদের সকলের পুত্র-পৌত্র-প্রপৌত্রাদি যাহারা জন্মগ্রহণ করিবে সকলে অতি সহজে বুঝিতে পারিবে যে তাহারা যে সব পাপ-কার্য করিবে, যিশু নামক ঈশ্বরপুত্র কোন পুরাকালে সেগুলার প্রায়শ্চিত্ত সারিয়া রাখিয়াছেন। আর কেহ তাঁহাদের উদ্ধার করিতে পারিবে না, এটুকু বিশ্বাস থাকিলেই তাহারা স্বর্গে গিয়া দিনের পর দিন, মাসের পর মাস, বৎসরের পর বৎসর, সকাল হইতে সন্ধ্যা, ও সন্ধা হইতে সকাল, মজা করিয়া ঈশ্বরের স্তবগান শুনিতে পাইবে, এবং স্বর্গের গাড়ীবারান্দা হইতে দেখিবে- পৃথিবীর বাকী লোকগুলা নরকের তপ্ত খোলায় খৈ ফুটিতেছে।”
বনবিহারী নিজের জীবন দিয়ে বুঝিয়ে গেছেন, কীভাবে উচ্চ-নীচের ভেদরেখা মুছে সবাইকে কাছে টেনে নিতে হয়। কীভাবে শক্ত হাতে দূর্নীতিগ্রস্ত মানুষকে দমন করতে হয়। সে যুগে বাংলাদেশে শক্তিশালী কার্টুনিস্ট হিসাবে গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুরের সঙ্গে তাঁর নামও উচ্চারিত হত। নিজের লেখা হাসির ছবি দিয়ে তিনি নিজেই নিজের লেখা অলংকৃত করতেন। বঙ্কিমচন্দ্রের ‘দেবী চৌধুরানী’ অবলম্বনে ‘ঢেলে সাজা’ নাম দিয়ে কার্টুনের সহযোগিতায় তাঁর প্যারডি বিশেষ জনপ্রিয় হয়েছিল। তাঁর ব্যঙ্গ কবিতা ও কার্টুন ‘ভারতবর্ষ’ পত্রিকায় ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হত। অন্ধ সমাজের বিপরীতে দাঁড়িয়ে তিনি তাঁর বিধবা বোনকে পুনরায় পাত্রস্থ করেছিলেন। বিচারপতি আশুতোষ মুখোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে সেই বিবাহ অনুষ্ঠিত হয়। অভাবনীয়ভাবে ডাক্তার নিজেই করেছিলেন সেই বিবাহের পৌরোহিত্য।

১৮৮৫ খ্রিস্টাব্দে পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলার গরলগাছা গ্রামে এই প্রতিভাধর, জনদরদী ডাক্তারের আবির্ভাব। পিতা বিপিনবিহারী মুখোপাধ্যায়। মা অপর্ণা মুখোপাধ্যায়। অনেক পরে মুখোপাধ্যায় পরিবার কলকাতার বেহালায় বসবাস করতে আসেন। প্রখ্যাত চিত্রশিল্পী বিনোদবিহারী মুখোপাধ্যায় ছিলেন তাঁর সর্বকনিষ্ঠ ভ্রাতা। অজিত মুখোপাধ্যায় ছিলেন তাঁর আর এক ভাই, যিনি ছিলেন স্বাধীনতা সংগ্রামী। সুচিকিৎসার জন্য ডাক্তার বনবিহারীর জনপ্রিয়তা ছিল বিপুল। সাধারণ মানুষের সেবাই ছিল তাঁর জীবনের শ্রেষ্ঠ ব্রত। অসহায় নিঃস্ব রোগীদের কাছে তিনি ছিলেন ভগবান।
দর্শনশাস্ত্রে পারদর্শী বনবিহারী সংস্কৃতের পাশাপাশি ফরাসি সাহিত্যেও পাণ্ডিত্য অর্জন করেছিলেন। মহাকাশ বিজ্ঞান ও পক্ষীতত্ত্ব বিষয়েও তাঁর জ্ঞান ছিল অপরিসীম। তাঁর গল্প, উপন্যাস ও নাটক সমকালীন সমাজের আয়না। রক্ষণশীলতার বিরুদ্ধে পুঙ্খানুপুঙ্খ সমালোচনা। বনফুলের শিক্ষক বনবিহারী প্রধানত হাসির গল্পের জন্যই সবচেয়ে বেশি পরিচিত ছিলেন। সংকীর্ণ সমসাময়িকতার আদর্শ দলিল ‘নরকের কীট’। বাংলা গল্পে যথেচ্ছ ইংরাজি শব্দের ব্যবহার, বিজ্ঞান ও কথ্যরীতির অতি সাহসী উপস্থাপনার জন্য বনবিহারী মুখোপাধ্যায় সমালোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে আসেন। ‘নরকের কীট’ হয়ে ওঠে উত্তর-ঔপনিবেশিক বাংলা সাহিত্যের একটি আদি পাঠ। বাঁধা গতের বাইরে গিয়ে লেখা সম্ভবত এটাই প্রথম গল্প।
নারীজাতির সহিষ্ণুতা ও ত্যাগ যেমন এসেছে তাঁর লেখায়, তেমনি নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধেও গর্জে উঠেছে তার কলম। আদর্শভঙ্গের নীরব বিরোধিতাও তাঁর লেখনির অন্যতম বৈশিষ্ট্য। ‘যোগভ্রষ্ট‘ তাঁর লেখা অন্যতম বলিষ্ঠ উপন্যাস। আদর্শচ্যুতি ও তার কুফল এই উপন্যাসের অন্যতম উপজীব্য। মহিমের কাছে পরস্ত্রীর প্রতি অনুরাগ ছিল পাপ। সে তার ভাইকে বলেছিল, “যে কোনও লাভমেকিং-এর প্রত্যেক খুঁটিনাটি শুনতে ভারি কৌতূহল হয়। কিন্তু সত্যি বলতে কি বেশি ভাল লাগে না। আদিরসের সঙ্গে খানিকটা করুণ আর বীভৎস মিশে সবটাকে বিস্বাদ করে তোলে।”
কিন্তু সেই মহিমই ব্রজলালের স্ত্রীকে বিবাহ করে স্বাধীনতা সংগ্রামী আজীন্দ্রকে অবাক করে দিয়েছে। যে রাজেন্দ্র-র শিক্ষা দীক্ষা ও কর্মদক্ষতা ছিল আন্দামান জেল থেকে মুক্ত আজীন্দ্রের গর্বের বস্তু, সেই রাজেন্দ্রই কালক্রমে হয়ে উঠলেন পানাশক্ত, ব্যাভিচারী, লোভী ও অত্যাচারী। পুরুষের এই ব্যাভিচার ও নারীর আদর্শচ্যুতির বিরুদ্ধে পরোক্ষ প্রতিবাদ ধ্বনিত হয়েছে তৃপ্তি বা রাজেন্দ্র-র স্ত্রীর কথায়: “পুরুষ তো ব্যাভিচারী হইয়াই থাকে, গোঁফ গজানোর ন্যায় এই প্রকৃতিও তাহাদের স্বাভাবিক। তাহাদের চরিত্রের এই দিকটা বুঝিবার শক্তি নারীর নাই। কিন্তু মাধুরীর পক্ষে এটা যে অত্যন্ত অসঙ্গত ও অস্বাভাবিক।” প্রেমের অন্তর্দ্বন্দ ও সংযত বর্ণনার গুনে উপন্যাসটি উপভোগ্য ও একইসঙ্গে শিক্ষনীয় হয়ে ওঠে। যদিও প্রণোদিত ডাইড্যাকটাসিজ়ম ও প্রোপাগান্ডার লেশমাত্র নেই গল্পটিতে। বাংলা সাহিত্যের এ এক অভূতপূর্ব সৃষ্টি।

সরকারি চাকরি থেকে অবসরের পর বনবিহারী ভাগলপুরে বসবাস করতে শুরু করেন। পরামর্শী চিকিৎসকের ভূমিকায় থাকার পাশাপাশি তাঁর সমাজসেবাও থাকে অব্যাহত। নিজের কৃতকর্ম ও অনবদ্য অনণুকরনীয় সাহিত্যসৃষ্টির মাধ্যমে সমাজ সংস্কারের যে চেষ্টা তিনি করে গিয়েছিলেন সেসবের বিচারে সৈয়দ মুজতবা আলী তাঁকে ‘ইণ্ডিয়ান ভলতেয়ার‘ বলে সম্বোধন করেছেন। ১৯৬৫ খীষ্টাব্দের ৫ জুলাই আশি বছর বয়সে এই ভারতীয় ভলতেয়ারের জীবনাবসান হয়।
কালের অমোঘ নিয়মে সবাইকেই চলে যেতে হয় একদিন। কিন্তু দাগ রেখে যেতে পারেন ক‘জন? বনবিহারী হলেন সেই মহাত্মা যিনি ছাপ রেখে গেছেন তাঁর মহানুভবতার, কৃতিত্বের, প্রতিভার ও দেশসেবার। তাঁর পরম্পরা বেঁচে থাক আধুনিক প্রজন্মের মধ্যে। ফিরে আসুক শত সহস্র অগ্নিশিখা মানুষের রূপ ধরে। রক্তমাংসের চিকিৎসকের অবয়বে। সাধারণ মানুষ শ্রদ্ধা জানাবে সেই পরম্পরাকে। সেই স্নেহময়, দরদী ঐতিহ্যকে। এটাই হবে কাম্য। তবেই তো শুশ্রূষা পাবে সমাজ। অন্ধকার চিরে দেখা দেবে আলোর রেখা।
উৎপল চক্রবর্তী ইংরেজি ভাষার শিক্ষক, অনুবাদক, প্রাবন্ধিক ও কবি। ২০১৭ সালে প্রথম দেশ পত্রিকায় ওঁর কবিতা প্রকাশিত হয়। সিগনেট থেকে প্রকাশিত কবির প্রথম কাব্যগ্রন্থের নাম 'উড়ন্ত ডলফিন' এবং শাম্ভবী থেকে প্রকাশিত প্রথম অনুবাদ গ্রন্থ, 'দ্যা মার্ক'। কলকাতার নবোদয় পাব্লিকেশন থেকে বিদ্যালয় ও মহাবিদ্যালয় স্তরে ইংরেজি ভাষায় প্রকাশিত হয়েছে ওঁর দশটিরও বেশি বই।