মিলে ‘সুরা’ মেরা তুমহারা! (রম্যরচনা)

ফেসবুক অ্যাকাউন্টে যদি বন্ধুর সংখ্যা কোভিড-১৯ সংক্রমণের মতো বাড়াতে চান, তা হলে এর থেকে ভাল সুযোগ আর পাবেন না, গ্যারান্টি সহকারে বলতে পারি। শুধু এক লাইনের একটা ছোট্ট পোস্ট করে দিন— যত্নসহকারে মদের হোম ডেলিভারি করা হয়। দুশো ফ্রেন্ড কুড়ি হাজার হয়ে যাবে তিন দিনে।
করোনা: হারানো প্রাপ্তি সংবাদ

করোনাভাইরাসের দৌলতে এই শব্দটা দিব্যি শিখে গিয়েছি আমরা। ডব্লুএফএইচ। মানে ওয়ার্ক ফ্রম হোম। কথা শোনও, হাত ধোও, অফিসেতে যেও না। করোনায় প্রথম করণীয় কী, আঁচ করতে পেরেই একের পর পর এক অফিসে দিন পনেরোর ছুটি হয়ে গিয়েছে দেশের বেশ কয়েকটা শহরে। নামী কোম্পানির দামি সিইও বড় মুখ করে মিডিয়ায় বলছেন, প্রেস নোট দিচ্ছেন, ‘আমরা আমাদের কর্মীদের উপরে পূর্ণ ভরসা রাখি। আমরা জানি, অফিসে বসে তাঁরা দিন রাত এক করে যে কাজ করেন, একই উদ্যমে তাঁরা কাজ করে যাবেন বাড়িতে বসেও।’
চিরসখা হে (গল্প)

আমি তো রোজই স্কুলের পাশ দিয়ে যাই, জানিস। ভুল বললাম। রোজ না। মাঝেমধ্যে। ওই এরিয়ার দোকানের অর্ডার তুলতে যেতে হয়। এক এক দিন তো এক একটা এলাকা আমার। দোকানে যাই। অর্ডার তুলি। কার্ড সোয়াইপ করার মেশিনের মতো দেখতে একটা যন্ত্রে রিকুইজিশনগুলো পাঞ্চ করি। ডিস্ট্রিবিইউটারের কাছে সঙ্গে সঙ্গে চলে যায় সেগুলো। কয়েকদিন পরে ডেলিভারি দেওয়ার সময় আবার ডিস্ট্রিবিউটারের ছোট ম্যাটাডরে। স্কুলের পাশ দিয়ে গেলে তাকাই। তিনতলায় বারান্দার পাশের জানালাটা দেখি। ওইখানেই তো আমাদের ক্লাস নাইন। ক বিভাগ। মানে এ সেকশন। দোতলার মাঝামাঝি ওই ঘরটা। আমাদের ক্লাস সেভেন। খ বিভাগ। মনে পড়ে। ঘাড় উঁচু করে তাকালে কয়েকটা মাথাও দেখতে পাই। আমাদের তখনকার মতো ওরাও হয়তো এখন ভাবছে বড় হব কবে।
আলপনা, মালতী, জবা…আর আমরা

আমার আপনার বাড়িতে প্রতিদিন ভোরবেলা যে মহিলারা কলিং বেল বাজান, আমাদের চোখ খোলার আগেই যাঁদের কাজের সময় শুরু হয়ে যায়, তাঁদের কথা বলছি। ভোরের ঠান্ডায় হালকা চাদরটা যখন আমরা জাপ্টে ধরতে থাকি আরও, তার মধ্যেই হয়ত তাঁরা আধ ঘণ্টা কিংবা পঁয়তাল্লিশ মিনিট দূরের কোনও স্টেশন থেকে ট্রেনে চেপে বসেছেন, আপনার বাড়িতে ঠিক সময়ে কাজে ঢুকবেন বলে।
দেহ আগলে বসে আছি প্রিয়জনের

ক্যাসেট। ক্যাসেট। ক্যাসেট। ক্রমশ বড় হয়েছি যত, গান ভরা এই ছোট্ট প্লাস্টিকের বাক্সগুলো আমাকে চুম্বকের মতো, আলেয়ার মতো টেনেছে
নোবেলের আহ্লাদ, আহ্লাদি নোবেল

নোবেল পুরস্কার ঘোষণার পরে সবার প্রথমে ফোন পাই এক বন্ধুর কাছ থেকে। আমি তখন ধর্মতলায়। একটা বাসের পাদানিতে দাঁড়িয়ে কোনও মতে ঝুলছি, কবীর সুমনের ‘ডানপিটে’ গানটার মতো। ‘হ্যালো’ বলার পরেই শুনলাম উচ্ছ্বসিত এক গলা। ‘অ্যাই, বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায় নোবেল পেয়েছে শুনেছিস? তুই তো খুব শারদীয়া কিনিস। দু’তিনটে দে না রে প্লিজ। ওনার লেখা পড়ে দেখব। প্লিজ […]
একলা পুজো

গতবারের পুজো। উত্তর কলকাতার এক বিখ্যাত পুজোমন্ডপের বাইরে প্রায় চল্লিশ মিনিট লাইন দেওয়ার পরে প্যান্ডেলে ঢোকার সুযোগ পাওয়া গেল। পনেরো কুড়ি ফুট এগোনোর পরেই ছ’ফুট বাই ছ’ফুটের একটা জায়গা। উপরে লেখা, ‘সেলফি জোন’। লাইনে ঠেলাঠেলি করে একটু এগোতে না এগোতেই কানে এসে গেল সেই অমোঘ ঘোষণা, ‘আগত দর্শনার্থীদের উদ্দেশে জানানো যাচ্ছে, মন্ডপে কেউ ভিড় করবেন […]