দিনের পরে দিন: রমাপদবাবুর স্মৃতি

ফাঁকা ঘর দেখে একদিন বেলাবেলি আনন্দবাজার অফিসে ফোন লাগালাম। অপারেটর ফোনে উত্তর দিলেন। বললাম, “রমাপদ চৌধুরীর সঙ্গে কথা বলতে চাই।” অবিলম্বে লেখক ফোন ধরলেন। বেশ গম্ভীর গলার আওয়াজ। ততক্ষণে আমার সাহস তলানিতে এসে ঠেকেছে। নিজের বুকের ভিতরকার ধুকপুকুনির আওয়াজ নিজের কানে শুনতে পাচ্ছি। জিজ্ঞাসা করলেন আমার পরিচয় এবং ফোন করার কারণ। পরিচয়? বললাম, “আমি কলেজে পড়ি। ফার্স্ট ইয়ারের ছাত্রী।” অর্বাচীন প্রশ্নটিও চোখকান বুজে করেই ফেললাম। উত্তরে লেখক মনে হল খুকখুক করে একটু হেসে উঠলেন। তারপরেই সস্নেহে জিজ্ঞাসা করলেন কলেজের নাম এবং কোথায় থাকি।
দিনের পরে দিন: আমার দ্যাশের বাড়ি

আমার কোনও দেশের বাড়ি নেই। আমার অস্তিত্ব জুড়ে যে ‘দ্যাশের বাড়ি’র ছবি, সেটা বলতে গেলে সম্পূর্ণভাবে আমার কল্পনাপ্রসূত। সেই ছোটবেলা থেকে শোনা আমার বাবা, মা, দাদু ঠাকুমার স্মৃতিচারণে, আমার কল্পনায় গড়া আমার ‘দ্যাশের বাড়ি’। আমার সেই ‘দ্যাশের বাড়ি’ আক্ষরিক অর্থে একদিন ছিল, এখন নেই। সেই যে ১৯৪৭ সালে উপমহাদেশের ভূগোল নিয়ে আমাদের রাজনৈতিক নেতারা খেলা […]
দিনের পরে দিন: ফাদার দ্যতিয়েন কথা

“খেয়েছি ছাতু, দেখেছি রাঁচি, থেকেছি বিহারে নিঃসন্দেশ মৎস্যহীন সুদীর্ঘ তিন বছর। পড়োশি ছিল পিঁজরাপোলের হাড় জিরজিরে ষাঁড়। জায়গাটি ছিল স্বাস্থ্যকর, দৃশ্যও ছিল মনোজ্ঞ, ভাষা ছিল রাষ্ট্রভাষা। পালিয়েছি, ফিরেছি কলকাতায়, পাঠানকোট-এক্সপ্রেসে; নেমেছি হাওড়ায়, ঠেলতে ঠেলতে খুঁজেছি পথ, দুর্গোপুজোর ভিড়ের গোলকধাঁধার মধ্যে, কুলিদের অবাঞ্ছিত সাহায্যে।” এমন সাবলীল, রসে ভরপুর বাংলা অনায়াসে পাতার পর পাতা লিখে বাঙালির অন্দরমহলে […]
কাব্যে সাহিত্যে পিঠে পাঁচালি

ভোজন-রসিক বাঙালির মিষ্টান্ন-প্রীতির কথা সর্বজনবিদিত। শীত পড়ল কী পড়ল না, এই বঙ্গভূমিতে পিঠে-পার্বণের পালা শুরু। পিঠের প্রতি বাঙালির এই আকর্ষণ কিন্তু আজকের নয়। কৃত্তিবাসের রামায়ণ থেকে শুরু করে, মধ্যযুগের মঙ্গলকাব্য, চৈতন্যচরিতামৃত সর্বত্রই পিঠের জয়জয়কার। কৃত্তিবাসের রামায়ণে জনক ভূপতি কন্যার বিবাহে অতিথিদের জন্য যা যা আহার্যের ব্যবস্থা করেছেন, তার মধ্যে ‘পরমান্ন পিষ্টকাদি’র উল্লেখ মেলে। পঞ্চদশ শতকের […]