হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা কষছেন’ , ‘দারিদ্র্যের সঙ্গে পাঞ্জা কষেছেন আjজীবন।হামেশাই শোনা যায় লাইনগুলো সাহিত্যে, সাংবাদিকতার ভাষায়। আমার কিন্তু পাঞ্জা’ – এই শব্দটা শুনলেই অনেকটা সেই জুল ভের্নের গল্পের টাইম মেশিনে চড়ে এ গলি, ও গলি, এ রাস্তা, ও রাস্তা, হৈ হল্লা, বেদম ট্র্যাফিক জ্যাম, আকাশঝাড়ু সব অট্টালিকা, একতলা দোতলা, ঘিঞ্জি সব ঝুপড়ি বস্তি , বড় বড় হোর্ডিং, এসব কিছুকে অনেক পেছনে ফেলে জেটগতিতে এ মনপাখির  উড়ান সেই কবে পঞ্চাশ-পঞ্চান্ন বচ্ছর আগে একটা বেকার বেমতলব ছেলেবেলায়। সে এক রূপকথামার্কা সময়। স্লো- মোশন কলকাতা। ভোরবেলায় সার্কুলার রোডে কর্পোরেশনের রাস্তা ধোয়ানো গাড়ি। শুয়ে থাকা ট্রামলাইনের ঘুম ভাঙ্গিয়ে ঘ্যাড়ঘ্যাড় শব্দ তুলে চলে যাওয়া ফার্স্ট ট্রাম। ডিসি অফিসের উল্টোদিকে হাফিজের দোকানে টাঙ্গানো লাল শালুতে লেখা – খাসির মাংস ৫ টাকা কিলো, বিশ্বকাপ না কোন একটা টুর্নামেন্টে কে একটা কেলেপানা ছোকরা নাকি ভগবানের চেয়েও ভালো ফুটবল খেলেছে, যার ঝাপসাটে একটা ছবি ছাপা হয়েছে খবরের কাগজে খেলার পাতায়, তবে সেটা পেলে না শ্রীমানি মার্কেটের পেঁয়াজ বিক্রেতা নবগোপাল, দেখে বোঝা দায়। 

আগেই বলেছি সে এক ভারী রূপকথামার্কা সময়। সবকিছুই বেদম ঢিলেঢালা তখন। সকাল নটা থেকে দশটায় হাতে অথবা ফোলিও ব্যাগে টিফিন বক্সে রুটি-তরকারি আর পানের ডাবা নিয়ে হেমন্ত মুখুজ্যে মার্কা বাংলা শার্ট আর ধুতি পড়ে বাপকাকারা সরকারি অথবা সওদাগরি আপিসে যেতেন। ক্লাসে হাফ-ইয়ারলি বা অ্যানুয়াল পরীক্ষায় টুকটাক দু-এক সাবজেক্টে ফেল্টুস মারলেও বাড়িতে কারো মাথায় তেমন একটা পাহাড়টাহার ভেঙে পড়তো না। অনেকের বাবারা তো খবরই রাখতেন না ছেলের এবার কোন ক্লাস হলো। ফলে আমাদের শৈশব কৈশোরের সুখরথ একপ্রকার গড়্গড়িয়েই চলছিল সেইসময়, সেই অর্ধশতাব্দীরও কিছুকাল আগে। বিনোদন বলতে গুলি, ঘুড়ি, চোর-চোর, ক্যাম্বিস বলে ফুটপাতে চার দশ হাইটে আর সংঘের মাঠে  চামড়ার লেস বাঁধা বড় বলে ফুটবল। ক্রিকেটীয় সভ্যতা সেভাবে বাজারে জাঁকিয়ে বসেনি তখনো। আর ছিলো বিকেলবেলা এরিয়াল টাঙ্গানো  মারফি কিম্বা জি ই সি রেডিওয় ময়দান থেকে ঘরে ভেসে আসা পুস্পেন সরকার, অজয় বসু। রোববার মানে মাংস আর দুপুর সন্ধেয় অনুরোধের আসর, ছায়াছবির গান। পাড়ার মাস্তান থুড়ি ডাকাবুকো দাদারা তখন ঈশ্বর অথবা ধর্মেন্দ্ররূপে পূজিত হতেন আমাদের মত শিশু-কিশোরকূলের কাছে। বেপাড়ার সঙ্গে মারামারিতে অস্ত্র ছিল রড, সাইকেলের চেন, সোডার বোতল, কালেভদ্রে সোর্ড এবং পেটো ( হাতবোমা )। আর নিজেদের মধ্যে টুকটাক লেগে গেলে কুস্তি-বক্সিং মিশ্রিত স্ট্রিট ফাইট, চালু ভাষায় যার নাম – ঝাড়পিট বা ক্যালাকেলি। নকশাল আমল আসতে তখনো বেশ বছরকয়েক দেরী ফলে পাইপগান বা ওয়ান শটার তখনো কালের গর্ভে। সে যাই হোক, উপরোক্ত এইসব ঝাড়পিট বা ক্যালাকেলি যে সর্বদাই সহিংস হত সে কথা বলাই বাহুল্য। 

তবে অহিংস পদ্ধতিতেও লড়াই একটা ছিল। পাঞ্জা। যার কথা এ লেখার একদম শুরুতেই উল্লেখ করেছি। যে প্রসঙ্গে আসার জন্যই এতক্ষণ ধরে মাঝারি সাইজের একটা মুখড়া সেরে নিলাম আর কি। পাঞ্জা মানেই তখন গড়পারে উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরীর ছাপাখানা আর অ্যাথেনিয়াম ইশকুলের উল্টোদিকে কয়লামাঠের আধভাঙা পাঁচিল। পাঁচিলের দুপাশে নিজেদের তাগদের চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেয়া দুই প্রতিদন্ধী। যে কেউ একজন রেফারি। ইশারা পাওয়ামাত্র শুরু ধুন্ধুমার পাঞ্জা ! বড়জোর মিনিটদুয়েকের ব্যাপার, একজনের কব্জির চাপে হেলে কাৎ হয়ে পড়া বিপক্ষ প্রতিদ্বন্ধী ! কিন্তু চোখেমুখে ক্রোধের চিনহমাত্র নেই। সেসময় নিজস্ব শক্তিপ্রদর্শনের জন্য এধরণের পাঞ্জা কষার লড়াই হত প্রায়ই। হপ্তায় অন্তত বার দুতিনেক তো বটেই। তবে সেরার সেরা লড়াইটা দেখেছিলাম বিশুদা আর শিবেনদার মধ্যে। বিশুদা মানে ব্যায়ামাচার্য আন্তর্জাতিক ক্ষ্যাতিসম্পন্ন শ্রী বিষ্ণুচরণ ঘোষের সুযোগ্য পুত্র শ্রী বিশ্বনাথ ঘোষ। গ্র্যান্ড চ্যাম্পিয়ন সুমো রেসলার মানে ইকোজুনাদের মত পর্বতপ্রমাণ চেহারা। বুকে হাতী তুলতো বিশুদা। চোখ বেঁধে ৫৫০ সি সি-র ডাবল সিলিন্ডার রয়্যাল এনfফিল্ড বুলেট মোটরবাইক চালাতো খোলা সার্কুলার রোডের ওপর, ভর দিনের বেলায়, ১২০-র স্পিডে।  বিশাল সাইজের লোহার বল শুন্যে ছুঁড়ে দিয়ে বুকে রিসিভ করতো অবহেলায়। যা দেখে সুকুমার রায়ের সেই কবিতার লাইনটা মনে পড়তে বাধ্য। খেলার ছলে ষষ্টিচরণ / হাতী লোফেন যখনতখন । 

 এহেন মহাবলী, কলির ভীম বিশুদাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছিল শিবেনদা। শিবেন ভট্টাচার্য। এলাকার সর্বজন শ্রদ্ধেয় শিক্ষক, ক্যালকাটা অ্যাকাডেমির হেডস্যার শ্রী কমল ভটচাযের মেজ ছেলে। বিশুদার মত বিশালদেহী না হলেও লোহার মত পেটানো ছিপছিপে চেহারা। বর্ন স্পোর্টসম্যান। ফুটবল, ক্রিকেট থেকে শুরু করে ১০০ মিটার স্প্রিন্ট, যে কোন খেলাতে সমান দঢ়। আজো মনে আছে গোটা গড়পার ভেঙ্গে পড়েছিল কয়লামাঠে, বিশুদা বনাম শিবেনদার পাঞ্জার লাড়াই দেখতে। সবাইকে অবাক করে দিয়ে বিশুদার মত মহাবলীর সঙ্গে প্রায় মিনিট তিনেক সমানে সমানে লড়াই চালিয়েছিল শিবেনদা। শেষমেষ হার মানলেও বীরের সম্মান পেয়েছিল সবার কাছে। অনেকটা সেই আলেকজান্ডার নাটকের পুরুর মত। হাত ছেড়ে বিশুদাও এসে জড়িয়ে ধরেছিল শিবেনদাকে। সব মিলিয়ে যাকে বলে মধুরেণ সমাপায়েত’ !

আজ এতগুলো বছর বাদে বিষয়টা নিয়ে লিখতে বসে বারবার খালি একটা কথাই মনে হচ্ছে। এরকম একটা জনপ্রিয় অথচ নির্দোষ এবং ঝুঁকিহীন খেলা কখনো বড় বড় আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা যেমন অলিম্পিক, এশিয়াড বা কমনওয়েলথ গেমসের আঙ্গিনায় স্থান পায়নি কেন ? অন্যান্য যে কোন মার্শাল আর্ট যেমন কুস্তি, বক্সিং, জুডো, কারাটে, কুং ফু, তায়কোন্ডো, এগুলোর সবকটাতেই আহত হবার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে কিন্তু পাঞ্জা সম্ভবত একমাত্র মারশাল আর্ট যেখানে প্রতিদ্বন্ধীদের কারো চোটআঘাত লাগার ন্যুনতম সম্ভাবনা নেই। আন্তর্জাতিক আঙ্গিনা তো দুরের কথা পাড়ায় পাড়ায় ফুটবল, ক্রিকেট, খো খো, হা ডু ডু, ব্রিজ, কল ব্রে এমনকি ক্যারম কম্পিটিশন আকছার হতে দেখলেও পাঞ্জা প্রতিযোগিতা হতে দেখিনি কোনদিন। প্রতিযোগিতার দুনিয়ায় যেন খানিকটা দুয়োরাণীহয়েই রয়ে গেছে সম্পূর্ণ ব্যয়বিহীন এবং আদ্যন্ত নিরাপদ এই সামরিক ক্রীড়াধারাটি। অথচ একটু তলিয়ে অনুসন্ধান চালাতে গিয়ে গিয়ে দেখতে পাচ্ছি এর ইতিহাস কিন্তু অতি প্রাচীন। খ্রিষ্টপূর্ব ২০০০ সালে মিশরের সম্রাটবর্গ অর্থাৎ ফরাওদের প্রাসাদ, উপাসনাস্থল, মিনার, গম্বুজ, এমনকি পিরামিডের দেয়ালেও একাধিক জায়গায় পাঞ্জা যুদ্ধের চিত্র খোদাই করা রয়েছে। ফারাও রামেসিস দ্য থার্ডের ( টেন কমান্ডমেন্টস সিনেমায় ইউল ব্রাইনার অভিনীত চরিত্রটি) অত্যন্ত প্রিয় ছিল এই পাঞ্জা দ্বৈরথ। সারা দেশ থেকে সেরা বলশালী পাঞ্জাযোদ্ধাদের আমন্ত্রণ করে এনে তাদের লড়াই দেখতেন তিনি। মিশরের মত আমাদের ভারতবর্ষের ইতিহাসও অতি সুপ্রাচীন। ভীম, দুরযধন, বলরাম, কীচক, হিরিম্ব, জরাসন্ধ, কুম্ভকর্ণ, ঘটোতকচের মত তাবড় তাবড় সব মহাবলীরা উপস্থিত আমাদের পুরাণে। কিন্তু সেখানে মল্লযুদ্ধ, গদাযুদ্ধের সরব উল্লেখ থাকলেও পাঞ্জার উল্লেখ নেই কোথাও। বিষয়টা কিঞ্চিৎ আশ্চর্যের বই কি ! 

তবে একটা কথা এখানে বলা খুর জরুরী। আন্তরজাতিক আঙ্গিনায় পাঞ্জা লড়াই বা আর্ম রেসলিং-এর তেমন একটা স্বীকৃতি না জুটলেও এর গুণগ্রাহী বা রসিকরা তাদের নিজেদের মত করে এর একটা নিজস্ব পরিসর গড়ে নিয়েছেন। এবং তাদের নিজস্ব সেই পরিসরে এই প্রতিযোগিতা জনপ্রিয়তাও পেয়েছে প্রচুর। আধুনিক আর্ম রেসলিং-এর জনক বলা চলে বিল সোবার্নসকে। উত্তর ক্যালিফোর্নিয়ার এই তরুন সাংবাদিক স্থানীয় একটি সেলুনে নিয়মিতভাবে আর্ম রেসলিং কম্পিটিশন সংগঠিত করতেন পঞ্চাশের দশকে। পরবর্তীতে তার আলাপ হয় ডেভ ডেভিটো নামে আরেক পাঞ্জাপ্রেমীর সঙ্গে। ১৯৫২ সালে দুজনে মিলে অল আমেরিকান আর্মস রেসলিং কম্পিটিশনের আয়োজন করেন উত্তর ক্যালিফোর্নিয়ার সবচেয়ে বড় অডিটোরিয়ামে। অচিরেই এই প্রতিযোগিতা তার নিজস্ব মহলে এতটাই জনপ্রিয়তা পায় যে ১৯৬৯ সালে আমেরিকান ব্রডকাস্টিং কর্পোরেশন বিল আর ডেভের সঙ্গে একটি দীর্ঘমেয়াদী চুক্তি করে। সারা দুনিয়া জুড়ে গড়ে ওঠে ওয়ার্ল্ড আর্ম রেসলিং লীগ। নিয়মিতভাবে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে পৃথিবীর নানা দেশে। আন্তর্জাতিক স্তরে এ লড়াইয়ের কিছু সুপারস্টারের নাম কানাডার ডেভন নো লিমিটলারাট, ব্রাজিলের ওয়াগনার অ্যানকোন্ডাবোরতেলেতো, ইউক্রেনের ডেভিড কিপলেঙ্কো, সুইডেনের সারা বেকম্যান, হেইডি এন্ডারসন, এরকম আরও অনেকে। 

 ক্রমে ক্রমে এই পাঞ্জা প্রতিযোগীতা বিশেষত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এতটাই জনপ্রিয়তা লাভ করে যে হলিউডের বিখ্যাত পরিচালক ম্যানহেম গোলান ১৯৮৭ সালে আর্ম রেসলিং কে উপজীব্য করে একটি সিনেমা বানিয়ে ফেলেন। সিনেমাটির নাম – ওভার দ্য টপ। একজন নিম্নবিত্ত ট্রাক ড্রাইভার ভালোবেসে বিয়ে করেছিল এক ধনকুবেরের একমাত্র কন্যাকে। দুজনের একটি পুত্রসন্তান হয়। কিন্তু সেই ধনকুবের ব্যবসায়ী তার ক্ষমতা ও প্রভাব খাটিয়ে তার মেয়ে ও একমাত্র নাতিকে নিজের প্রাসাদে এনে রেখে দেয়, বলতে গেলে প্রায় খানিকটা জোর খাটিয়েই। স্ত্রী-পুত্রকে কোনমতেই বিলিওনেয়ার শশুরের হাত থেকে উদ্ধার করতে না পেরে নায়ক বেছে নেয় ওয়ার্ল্ড আর্ম রেসলিং চ্যাম্পিয়নশিপের মঞ্চকে, ওই ধনকুবের মানুষটির সমকক্ষ হয়ে উঠতে চেয়ে। কি অসম্ভব জেদ, হার না মানা মনোভাব আর কঠোর পরিশ্রমের মধ্যে দিয়ে তার স্বপ্ন সফল হয়েছিল সেটাই ফুটে উঠেছে এ ছবির বৃহদাংশ জুড়ে। ছবিটিতে  নায়কের ভুমিকায় অভিনয় করেছিলেন সিলভেস্টার স্ট্যালোন। সাধারণত যে স্ট্যালোনকে আমরা পরদায় র‍্যাম্বোজাতীয় অ্যাকশন মুভিতে গাম্বাট সাইজের মেশিনগান হাতে বিকট হাউ হাউ শব্দে  চ্যাঁচাতে দেখি, চরিত্রটি আদৌ সেরকম নয়। ছবিতে একটিবারও মারামারি করেননি স্ট্যালোন। উল্টে শশুরের পাঠানো ভাড়াটে গুন্ডাদের হাতে মার খেয়ে রক্তাক্ত হয়েছেন বারবার। অনেককাল আগে দেখা সিনেমা, কিন্তু নায়কের চরিত্রে নিজের জনরের একদম বাইরে গিয়ে স্ট্যালোনের অসামান্য এবং ব্যতিক্রমী আন্ডার অ্যাকটিং মনে দাগ কেটে রয়েছে আজও।     

এতটা পড়ার পর কোন কোনও পাঠক অধৈর্য হয়ে প্রশ্ন করতেই পারেন – আপনি তো আজব মানুষ মশাই ! সেই যে পাঞ্জার শিকড় খুঁজতে ৫০/৫৫ বছর আগে হারিয়ে গেলেন তারপর প্রায় গোটা দুনিয়া এমনকি প্রাচীন মিশরেও চক্কর কেটে বেড়ালেন অথচ দেশে ফেরার নামগন্ধটুকু পর্যন্ত নেই ! বলি এদেশে আর্মস রেসলিং-এর বর্তমান হালহকিকত কি ? সে ব্যাপারে তো কিচ্ছুটি বললেন না ? তাঁদের অবগতির জন্য জানাই, এদেশেও অল ইন্ডিয়া আর্ম  রেসলিং ফেডারেশন নামে পাঞ্জাযোদ্ধাদের একটি সংগঠন রয়েছে। প্রতিবছর নিয়ম করে সর্বভারতীয়স্তরে প্রতিযোগিতারও আয়োজন করে থাকেন তারা। এছাড়াও সম্ভবত ৯০ দশকের প্রথমভাগে কলকাতার নেতাজী ইন্ডোর স্টেডিয়ামে এক বিশাল আন্তর্জাতিক পাঞ্জা প্রতিযোগীতার আয়োজন করা হয়েছিল। সারা দুনিয়ার তাবড় তাবড় সব পাঞ্জাবীররা এসছিলেন এই প্রতিযোগীতায় অংশ নিতে। যদ্দুর মনে পড়ছে বিশ্বশ্রী মনোহর আইচের এক কন্যা ছিলেন এই প্রতিযোগীতার অন্যতম প্রধাণ উদ্যক্তা। কিন্তু সেই টুর্নামেন্টের বিশ্বস্তরে কোন স্বীকৃতি ছিল কিনা সেটা জানা যাচ্ছেনা কিছুতেই কারণ আন্তরজালে এ বিষয়ে কোন উল্লেখ নেই। সহৃদয় কেউ এ ব্যাপারে আলোকপাত করলে খুশি হবো।  

জন্ম ও বেড়ে ওঠা উত্তর কলকাতার পুরোনো পাড়ায়। বহু অকাজের কাজী কিন্তু কলম ধরতে পারেন এটা নিজেরই জানা ছিল না বহুদিন। ফলে লেখালেখি শুরু করার আগেই ছাপ্পান্নটি বসন্ত পেরিয়ে গেছে। ১৪২১ সালে জীবনে প্রথম লেখা উপন্যাস 'দ্রোহজ' প্রকাশিত হয় শারদীয় 'দেশ' পত্রিকায় এবং পাঠকমহলে বিপুল সাড়া ফেলে। পরবর্তীতে আরও দুটি উপন্যাস 'জলভৈরব' (১৪২২) এবং 'বৃশ্চিককাল' (১৪২৩) প্রকাশিত হয়েছে যথাক্রমে পুজোসংখ্যা আনন্দবাজার এবং পত্রিকায়। এছাড়া বেশ কিছু প্রবন্ধ এবং দু চারটি ছোটগল্প লিখেছেন বিভিন্ন পত্রপত্রিকা আর লিটিল ম্যাগাজিনে। তার আংশিক একটি সংকলন বই আকারে প্রকাশিত হয়েছে 'ব্যবসা যখন নারীপাচার' শিরোনামে। ২০১৭ সালে পেয়েছেন পশ্চিমবঙ্গ বাংলা আকাদেমি পুরস্কার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *