আনাহিতার সঙ্গে এই পথে দেখা হয়েছিল
আনাহিতা, ইয়োরোপে ইরানের মেয়ে –
সাদা চামড়ার ভিড়ে আশ্চর্য ত্বকের ম্যাজিক
এশিয়ান বন্ধুতা ঘটেছিল স্কচের টেবিলে
পেট্রো ডলার তাকে স্বাধীন করেনি
বাঁচার জন্যে সে পালিয়ে গিয়েছিল একদিন
হারিয়ে গিয়েছিল ফ্রান্স, স্পেন, ইতালির ডাউনটাউন অন্ধকার-উৎসবে
পোল-ডান্সের লুকোনো আস্তানায় তাকে আবিষ্কার করেছিলাম এক সন্ধ্যায়
আনাহিতা, তেহরানের বিষন্ন গোধূলি দুই চোখে ধারণ করে রেখেছিল যত্নে
ম্লান হেসেছিল
ময়লা ইউরোর জন্যে খুলে ফেলেছিল তার অভিমানী এশিয়া
আমাকে পাকিস্তানী ভেবেছিল প্রথমটায় , ভারতীয় শুনে বড় বড় চোখ করে জিজ্ঞেস করেছিল –
“গান্ধী.. ?”
এক সন্ধেয় আনাহিতা , ইয়োরোপে ইরানী মেয়ে
ভাঙা ভাঙা ইংরেজিতে বলেছিল – “আই ওয়ান্ট টু গো ব্যাক…”
পোল ডান্স বার থেকে, স্কচের টেবিল থেকে হেঁটে বেরিয়ে পড়েছিল তার ছায়া
এই পথে কারেন্সি কুড়োতে কুড়োতে
পার্সিয়ান গালফের জল-হাওয়ার ভেতরে
বাতিল ভিসার মতো
আনাহিতা আবার নিরুদ্দেশ হয়ে গিয়েছিল তারপর…

এই সময়ে যাঁরা বাংলা কবিতা লিখছেন , তাঁদের মধ্যে সৌভিক বন্দ্যোপাধ্যায় অন্যতম। সৌভিকের কাব্যভাষা স্বকীয় ও স্বতন্ত্র - নাগরিক বিষন্নতা , সমাজসচেতনতা , মাঝে মাঝে কালো ঠাট্টা বা শ্লেষ ও নস্টালজিয়া তাঁর কবিতায় নানাভাবে ফিরে ফিরে আসে। লিখেছেন ছোট-বড় প্রায় সমস্ত বাণিজ্যিক ও লিটল ম্যাগাজিনে। এ পর্যন্ত প্রকাশিত কবিতার বইয়ের সংখ্যা তেরো, ২০২২ সালে প্রকাশিত হয়েছে 'কবিতাসমগ্র ১'। কবিতার জন্যে ভাষানগর-মল্লিকা সেনগুপ্ত পুরস্কার, সুধীন্দ্রনাথ দত্ত স্মৃতি পুরস্কার সহ পেয়েছেন আরও একাধিক পুরস্কার ও স্বীকৃতি। গদ্যকার হিসেবেও উজ্জ্বল, এখনো পর্যন্ত প্রকাশিত গদ্যের বইয়ের সংখ্যা তিন । বড় পর্দাতে অভিনেতা হিসেবেও তাঁকে মাঝে মাঝে দেখা যায়।

One Response

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *