সেলাই করতে বসেছি
মেঝে জোড়া আসন, মাঝে সোনালি সুতো।
ও ছিল আমার অতীত।
যখন মানুষ চারপাশে ছড়ানো গল্পগুলিকে,
ফুটে ওঠা পদ্ম ও জলবিন্দু ধরা পদ্মপাতাকে
আর খিড়কির পাতিহাঁস, বড়দিঘির ভিনদেশির ছবি,
পরম যত্নে বুনে নিতো সুতোর রঙে,
সোনালি সুতো কোনও মুকুট নয়,
শিল্পীর গরিমার মতো,
এঁকেবেঁকে যাওয়া বহতা নদী  ছিল

এখন এই ছেঁড়া সুতো ওঠা
মাথা কাটা হরিণী,
পেট থ্যাঁতলানো হস্তিনী আর,
ডানাভাঙা ময়ূরের নকশা খুবলে,
ভেঙেচুরে গেছে পদ্মদিঘি আর
ভোরের মুদিত আঁখি পেঁচা,
এ আসনের ছেঁড়া সুতোগুলিকে,
পূর্বে ফেরাতে না পারি,
মেরামত করার আকাঙ্ক্ষায়,
ফের বুনতে বসেছি পুরনো সংসার

 

মালতি মাসি

ছাদজুড়ে ঘুড়ির সুতোয় মাঞ্জা মাখছে হাত,
হৃষ্ট মনে আটা আর ভাতের মাড় গালছে,
তারপর সবার মুখে চব্যচোষ্য তুলে দিয়ে,
পোড়া আর বাসি শাক ডাঁটা চচ্চড়ি শেষে,
কখনও লুকনো আচারে অপরাধবোধ মেখে,
বিড়াল আসার আগে ল্যাজা চিবিয়ে চুষে,
আধপেটা, নিজের জন্য পান সাজতে বসে।

সেবন্তী ঘোষের জন্ম শিলিগুড়িতে, উচ্চশিক্ষা বিশ্বভারতী বিদ্যালয়ে। নব্বই দশকের গুরুত্বপূর্ণ বাংলা কবি ও লেখকদের মধ্যে সেবন্তী নিজের জায়গা করে নিয়েছেন। পেয়েছেন কৃত্তিবাস পুরষ্কার ও পশ্চিমবঙ্গ বাংলা একাডেমি পুরস্কার। সেবন্তীর পেশা শিক্ষকতা। নিয়মিত লেখালেখি করেন বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় এবং পোর্টালে। ওঁর প্রকাশিত বইয়ের মধ্যে 'আমাদের কথা', 'যে থাকে অন্ধকারে', 'ফুর্তি ও বিষাদ কাব্য', 'ফুল ও সুগন্ধ', 'দিল-দরিয়া' উল্লেখযোগ্য।

2 Responses

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *