ছেঁড়াফাটা ঠোঙা বালতি বালিশ জোগাড়ে মেয়ে,
কাঠি দিয়ে মালসার হবিষ্যান্ন কুড়নো শ্মশান বালিকা,
তোমাদের জন্য খই ছড়ানো শরৎ নেমে আসুক ছোট্ট পায়ে-
লক্ষী ছাপের মতো ঘট ভরে যাক  নতুন টাকায়
ধবধবে প্যাঁচার পিঠে এই বর্ষা বিধুর শরৎ খানিক স্বস্তি আনুক,
খালবিল উপচানো জলে চ্যাং, পোনা মাছেরা খিদের গর্ত ভরুক,
গর্ভে যেন না আসে অকাল ষষ্ঠীর আশীর্বাদ,
দুঃখের দেবী এর বেশি আর কী দিতে পারেন তোমার চরণে!

হাঁটুসমান কাদায় নেমে মাছ ধরা ওরা,
বাপ ঠাকুরদা মামা  কেউ গেছে চির হেতালের বনে,
দক্ষিণরায় ছাড়েননি বলে ওদের চোয়াল আরও শক্ত,
থাই অবধি কাপড় তুলে যে অনন্ত যুদ্ধে নামে,
দেবীর অসুর দলনের চেয়ে কিছু কম নয়!
নারী শরীর মাত্র নয় ওই থাই বা উন্মুক্ত শরীর,
দশপ্রহরণধারিণী, একেকটা অস্ত্রই যেন তারা!
ঢাকের বাদ্যি নাইবা বরাদ্দ রইল ওদের!
স্বয়ং দেবী যখন কাপড় গুটিয়ে
মীন ধরেন ওদের সঙ্গে

সেবন্তী ঘোষের জন্ম শিলিগুড়িতে, উচ্চশিক্ষা বিশ্বভারতী বিদ্যালয়ে। নব্বই দশকের গুরুত্বপূর্ণ বাংলা কবি ও লেখকদের মধ্যে সেবন্তী নিজের জায়গা করে নিয়েছেন। পেয়েছেন কৃত্তিবাস পুরষ্কার ও পশ্চিমবঙ্গ বাংলা একাডেমি পুরস্কার। সেবন্তীর পেশা শিক্ষকতা। নিয়মিত লেখালেখি করেন বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় এবং পোর্টালে। ওঁর প্রকাশিত বইয়ের মধ্যে 'আমাদের কথা', 'যে থাকে অন্ধকারে', 'ফুর্তি ও বিষাদ কাব্য', 'ফুল ও সুগন্ধ', 'দিল-দরিয়া' উল্লেখযোগ্য।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *