ভাবা হয়েছিল যে সব ঝেড়ে ঝুড়ে বিদেয় করে দেওয়া হবে, কিন্তু সে আর কোথায়! সব আবার ঝেড়ে বেছে হেঁশেলে উঠল, তবে তা এক মস্ত পর্ব শেষে। এই ‘পব্ব’টি হল পুরোপুরি হেঁইয়ো হো গোছের। একদিকে টেনে সব নামানো – ‘দেখ দিকি’ ওটা-এটা-সেটা; আবার একই সঙ্গে কী কাণ্ড কী কাণ্ড বাপ!

ঝাড়াঝুড়ির এই যে পর্ব, এর শুরু হত ভাদ্র মাসে – শাল বেনারসি গালচে, সব রোদ খাওয়ানো দিয়ে। ছাদ-বারান্দায় মাদুর বিছিয়ে ভাঁজ খুলে খুলে পেতে, তার ওপর একটা আটপৌরে শাড়ি বা ধুতি টান টান করে মেলে দিয়ে; হাওয়ায় যাতে উড়ে না যায় তাই কোণাগুলি পাথর বা ইট দিয়ে চাপা দেওয়া থাকত। এসব তোলার আগেই আলমারি তোরঙ্গ সব ঝেড়ে, কর্পূর জলে মুছে, মোতিহারি দোক্তাপাতা বিছিয়ে, তার ওপর ন্যাকড়া পেতে সগৌরবে আহ্বান করা হত, রোদ খাওয়ানো ‘তোলা কাপড়’গুলিকে। সঙ্গে কুচো কুচো পুঁটলিতে বাঁধা নিমপাতা ও কালজিরে, যাতে আরও একবছর পোকা ও স্যাঁতা ভাব না লাগে। এসব করতে সময় লাগবে মানে এই নয় যে, হেঁশেল থেকে ছুটি। সবটাই করতে হবে, ফাঁকে – হয় ভোরে উঠে, না হয়তো দুপুরের বিশ্রাম বাদ করে। আবার কোনও বউ এসবে যদি গা ছাড়া দেয়, বা ঠিক মতো না করে, তখন আবার খাস গিন্নির বচন শুনতে হবে। আর এই সব দিনগুলোতে বাড়ির ছোটদের ডিউটি পড়বে, ছাদে বসে হনু তাড়ানো; বেড়ালের কাদা পায়ের ছাপ, কাকপক্ষীর হাগু এসব থেকে মেলা কাপড় বাঁচিয়ে রাখা।

তবে শোরগোল করে ঝাড়া হত বটে ভাঁড়ার ঘর, ‘গুদোম’ ঘর আর হেঁশেল। সম্পন্ন এদেশি বাড়িতে ভাঁড়ারের থেকেও প্রিয় ছিল, গুদাম বা ‘গুদুম’ ঘরখানি। রেকর্ড কিপিং রুমও বলা চলে। লাল শালুতে মোড়া থরে থরে দলিল, দস্তাবেজ, চিঠি, হিসেবের খাতা, ঠিকুজি কুষ্ঠি এবং পুরনো পাঁজি। আর যত বড় বড় তোরঙ্গ এবং নানা সময়ে বাতিল হওয়া শাল কাঠের খুঁটি ও সোঁটা। তবে এসব পরিষ্কারের লোক পাওয়া যেত। কর্তার তদারকিতে সারাদিন ধরে চলত মুষল পর্ব। যেসব সম্পত্তি আর নেই, মানে দখল বা বাজেয়াপ্ত, সেগুলোর জন্যেও মোকদ্দমা এবং মোকদ্দমার খরচাপাতির হিসেব। কর্তার মুখে সে কী পরিতৃপ্তির হাসি, সব আছে; ইঁদুরে বা পোকায় কাটেনি। আর এর উল্টোটা হলেই সিংহগর্জন – বাড়ির আর সকলকে ইঁদুর, উই বা সিলভার অ্যান্ট সাব্যস্ত করে। এ পব্বের শেষ হতো, শাল সেগুনের খোঁটাগুলোতে নতুন করে কেরোসিন লেবড়ে, জায়গামতো আবার গুছিয়ে রেখে।

ভাঁড়ার পরিষ্কারেরও লোক পাওয়া যেত, তবে তার তদারকি করতেন কর্তামায়েরা, মানে বয়স্ক শাশুড়ি, দিদিশাশুড়ি, খুড়িমা বা পিসিশাশুড়ি; এঁদের আর রোজকার হেঁশেল ঠেলতে হত না, কিন্তু ভাঁড়ার থাকত নখদর্পণে। যাবতীয় যা ঝাড়া বাছা, এঁরা সবটাই বসে বসে করে দিতেন; এমনকি প্রতিদিন সকালের চালটাও হাঁড়িতে চড়ার আগে, ধান কাঁকর বেছে রাখতেন। কুলোয় ঝেড়ে খুদ বেছে, সেগুলিকেও আলাদা করতেনআলুসেদ্ধ দিয়ে, ঘি ঢালা এই খুদের ফ্যান ভাত ছিল অনবদ্য স্বাদের এবং পেট রোগাদের পথ্যিও বটে।

ভাঁড়ার ঘর ঝাড়ার আগে, চালের কলসি, তেলের টিনে নাড়াচাড়া পড়লেই প্রথমেই ফরফর করে বেরত আরশোলার দল। তাদের প্রায় পিছু পিছু নেংটি ইঁদুর। নারকেল ঝাঁটা দিয়ে আরশোলা নিধন হলেও ইঁদুর পালানো রোখা যেত না। তবে সুড়ুত করে অন্য ঘরগুলোতে যাতে ঢুকে না পড়ে, তার ব্যবস্থা হিসবে সে সব ঘরের দরজা বন্ধ রাখা হত। বছরে এই একটা দিন, জানলাবিহীন রহস্যময় ভাঁড়ার ঘরে আলো ঢুকত, কারণ দরজাটা সারাদিন খুলে রেখে হাওয়া খাওয়ানো হত পুরো খালি ঘুপচি ঘরটাকে। বারান্দায় রাখা থাকত টেনে নামানো এবং বের করে আনা মাটির কলসি, ঝুড়ি, কুলো, দড়ি, বস্তা – সে যে কত কিছু! সঙ্গে বিস্তর গিঁট বাঁধা বাঁধা পুঁটলিও। বিপুল উদ্যমে দশ হাত এক করে শুরু হত স্টক টেকিং –  কী আছে, কী নষ্ট হল, আর কী কী ‘বাড়ন্ত’ (শেষ বলা মানা)! এই ফাঁকে, গেরি রং মেশানো চুন গোলায় সুতোর তুলি ডুবিয়ে, ঝপাঝপ কলি ফেরানো হবে। আর একজন বসে যাবে মেরুন রংয়ে ন্যাকড়া ডুবিয়ে মাটির হাঁড়ি কলসিগুলো রং করতে। সব ঝেড়ে মুছে গোছগাছ হতে হতে বেলা গড়াবে।

এর মধ্যেই সাফসুতরো শুরু হয়ে যাবে অন্যদিকে, মানে হেঁশেলে। খোদ হেঁশেল-গিন্নিদের তদারকিতে, যেখানে সুর বেশ চড়া। ঘড়াঞ্চি থাকলে ভাল, না হলে উঁচু কাঠের টুল; আর তাতেও নাগাল না পেলে, ছোটকাকা বা রাঙাদার কোলে ভুলু বা বাপি বা খোকা। আট ন’বছরের কোনও বালককে উঁচু করে কোলে তুলে ধরে বলা, ‘এটা নামা- ওটা টান’। তখন তো বাঁধানো লফট হত না, তাই চাটাইয়ের টানা মাচা বেঁধে তাতেই সব রাখা হত। ঝোলানোর শিকে, তুবড়ে যাওয়া কাঁসি, ভাঙা ঝুড়ি সব তো টেনে টেনে নামানো হল, টান মেরে ফেলে দেবার জন্যে। ওমা! কোথায় কী! ঝেড়ে বেছে আবার সব ঘরে ঢুকে এল, ‘আর কদ্দিন যাক’ -এই মায়ায়

তবে ঝাড়াঝুড়ির ঠেলায় কী না বেরোল! ইঁদুর, আরশোলা, উই, পিঁপড়ে, তেঁতুলে বিছে, কেন্নো ছাড়াও  একোণ ওকোণ থেকে টিকটিকি আর চড়ুইয়ের ডিম। কখনও সদ্য চোখ ফোটা বেড়াল বাচ্চা বা পায়রার ছানাওতবে কুমোর পোকার বাসা চোখে পড়লেও কিন্তু ভাঙা যাবে না। তাকে পাশ কাটিয়েই ঝাড়তে হবে, কারণ ওতেই সংসারের আয়পয়তেমনই ‘হ্যান্ডেল উইথ কেয়ার’ পাখির ডিমও। একরাশ মাটি, ধুলো, পোকায় কাটা চট ও বাঁশের স্যাঁতাগুঁড়ো বেরনোর পর বিপুল পর্বে ঝুল ঝাড়া এবং আঁচে রান্নার কালিগুলো দেওয়াল ঘষে তোলা। এসব করবে বাইরের ভাড়া করা লোক, যারা ওই গেরি রং বুলিয়ে দেওয়ালের কলি ফেরাবে। সেদিনের রান্না নমো নমো করে ডাল আলুভাতে ভাত এবং সব্বার খাওয়া টানা দালানে বসে। না কোনও আদিখ্যেতা, না কারও বায়না। কারণ গিন্নিদের মেজাজ সপ্তমে। তার মধ্যে রান্নাঘরে সাহায্যকারী বামনদিদি বা শৈলর মা বা বাহাদুর – এদের আবার মুখ হাঁড়িকারও এক পুঁটলি লুকনো কয়েন, কারও কাগজের নিচে গুঁজে রাখা কিছু টাকা, কার বা আফিমের স্টক, এসবেও তো টান পড়েছে। টান পড়েছে লুকিয়ে রাখা চিনি, বিস্কুট, বাতাসাতেও। কেউই জানে না যে কে রেখেছে। সম্পত্তি আছে কিন্তু দাবিদার নেই।

আবার এমন অনেক জিনিস হাতে আসছে, যা খোওয়া যাওয়ার কথা গিন্নিরও মনে ছিল নাকখনও বিস্ময়, কখনও রোষ, কখনও আক্ষেপ – এই নিয়ে ঝাড়াঝুড়ি পর্ব চলতে চলতেই, শুরু হবে রিলে রেস। ভাঁড়ার থেকে দফায় দফায় আসতে থাকবে, নতুন ঝুড়ি, কুলো, হাঁড়ি, চেটাই, বসার আসন ইত্যাদি। সে এক অপূর্ব রিপ্লেসমেন্ট পদ্ধতি। আর এ সব কিনে রাখা ছিল চৈত্র মাসে বা রথের মেলায়। ছেঁড়া বস্তাগুলো কেটে কুটে হলো পা-পোঁছা আর ভাঙা ঝুড়ি কুলো গেল বাগানে, শুকনো ডালপালা কুড়িয়ে রাখতে, আর পুকুরপাড়ের আল থেকে কাঁকড়া চিংড়ি ধরার কাজে। এমনকি মুড়ো ঝাঁটা কটিও – রান্না ঘরের বাইরে, এক কোণে। তাই ঝাড়া হল, ঝুড়িও খালি হল, কিন্তু কিছুই আসলে ফেলা হল না। এই ফেলে দেওয়া বাতিলের মধ্যে থেকেই আবার বেছেবুছে নিয়ে যাবে বাড়ির আশ্রিত মানুষগুলি। এসব সত্যিকারের ফেলা হবে কালীপুজোর দিন দীপান্বিতা লক্ষ্মী পুজোর আগে, অলক্ষ্মী বিদায় পুজোর সময়। 

সাধারণ মানুষ যাঁঁরা চিলতে ঘরে থাকতেন এবং উঠোনের একপাশ ঘিরে রান্না করতেন, তাঁরাও কিন্তু এই ঝাড়া ঝুড়িটা সময় মেনেই করতেন। এই সময়টা উৎসব আসে তর্পণের মধ্যে দিয়ে; আর আশ্বিন শেষে, সারা কার্তিক মাস জুড়ে, ছাদে জ্বলে আকাশপ্রদীপ। ভাদ্র আশ্বিন কার্তিক – এই যে বর্ষা থেকে হেমন্ত পার করে অঘ্রাণে এসে দাঁড়ানো, এর সবটাই বোধহয় প্রস্তুতিরও সময়ধনী, দরিদ্র, বাঙালি অবাঙালি নির্বিশেষে সকলেই এই যাপনে অভ্যস্ত এবং তা প্রায় প্রজন্ম পরম্পরায়। এমনকি মুসলিম পরিবারেও দেখেছি তাঁদের উৎসবের আগে সব কিছু টেনে নামিয়ে, দরকারে ঘর জানলা দরজা রং করে আবার নতুন করে গোছাতে। আনোয়ার শাহ রোডের কাছে রহিমউদ্দিন লেনে থাকবার সময় দেখেছি পাশের মুসলিম বস্তিতে কী বিপুল উৎসাহে ঝাড়াঝুড়ি। এরা জানলাগুলো তেল রং করত আর দেওয়াল ঝেড়ে সাঁটিয়ে দিত নানা নকশার মার্বেল কাগজ। সন্ধেবেলা ঘরে ঘরে আলো জ্বললেই ঝলমল করে উঠত।      

বড়বেলায়, আমাদের যখন সব নিজস্ব সংসার হল, তখনই হয় ফ্ল্যাট অথবা সাবেক বাড়ি ছেড়ে পছন্দমতো শহুরে বাড়ি বানানোর দেদার উৎসাহ দেখা দিল। মজা হল এই যে, লোক কমল, ঘর বাড়ল এবং তৈরি হল লফট বা ছোট ছোট স্টোরেজ, যেগুলি সব সময় জিনিসে ঠাসা। কে নামায় আর কে গোছায়! সবাই ব্যস্ত। ইতিমধ্যে মেয়েরাও দায়িত্ব নিয়েছে বাইরের কাজে, বিশেষত উপার্জনে। তা ছাড়াও বচ্ছরভর পাওয়া যায়, যখন যা দরকার। তাই কোথায় ভাদ্র আর কোথায় আশ্বিন! তবে হাড়ভাঙা খাটুনি করা মেয়েদেরই উদ্যোগে জনপ্রিয় হল, পেস্ট কন্ট্রোল ডেকে একসঙ্গে উই, আরশোলা, টিকটিকি সব তাড়ানো। সেন্টার থেকে পাওয়া যেতে লাগল ঝাড়াঝুড়ি করার জন্য একদিন বা দু’দিনের কাজের মেয়ে এবং করিৎকর্মা ছেলেদেরএভাবেই কৌস্তুভী খুঁজে বার করল দধিরামকে, যে অন্য কাজ করেও ছুটির দিন ঝাড়াঝুড়ি করে দেয় ঘণ্টা মেপে পারিশ্রমিকের বিনিময়ে। মধুজা খুঁজে আনল পাড়ায় চপ বিক্রি করা তারাপদকে, যে সকালবেলা প্রতিদিন বাড়ি ঝাড়ার কাজ করে। আমি খুঁজে পেলাম তপনকে যে শুধু ঘরই ঝাড়ে না, আমার ফুলের টবের মাটিও বছরে একবার ঝেড়ে, শিকড় কেটে গাছগুলোকে চনমনে করে দেয়। সহকর্মী, পাঞ্জাবি মেয়ে ঊর্মি তো ধন্তেরাসের আগে বড়বাজার থেকে এক সঙ্গে চারজন লোক এনে ঘর ঝাড়িয়ে পরিষ্কার করে, নতুন পর্দা ও নতুন বেড কভার লাগায়। নিয়ম করে। আমি শুধু কিনি নতুন পাপোশ আর ভাবি মা-মাসি-কাকিরা কত অনায়াসে ছেঁড়া চট ভাঁজ করে তাতে পা মুছে গেলেন প্রায় সারাটা জীবন।  

এখন অবশ্য বাতিল ব্যাপারটাও বদলেছে। বাঁশ, বেত, মাটি ছেড়ে পাকাপোক্ত সব তৈজস। এসব আর ভাঙে কই আর জামাকাপড়ই বা কত আর ছেঁড়ে! ফলে দেদার বিলিয়ে দেওয়া। নানা স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা আছে সে সব নেবার। তা ছাড়াও দস্তুর হয়েছে সারা বছর ধরে জমানো বাতিল তোবড়া সব এক করে বিগ বাজারে নিয়ে গিয়ে কিলো দরে সেল। এই বিক্রি ব্যাপারটা এখনও বোধহয় আছে; দুধের প্যাকেট, খবরের কাগজ জমিয়ে বিক্রি করে এটা সেটা কেনা; কিছু সম্পন্ন গিন্নিকেও দেখেছি, লেডিস ক্লাবের নামে স্টল করে নিজেদের পুরনো শাড়ি জামা এমনকি সায়াও বিক্রি করতে। এও এক অন্যরকম ঝাড়াঝুড়ি।

ইদানীং ঝাড়াঝুড়ির সংক্ষিপ্তকরণে হাসি পেলেও, আমরা নিরুপায়। কারণ এ ব্যাপারে বাড়ির ছেলেরা আজকাল একেবারেই উপসর্গহীন উদাসীনতায় আক্রান্ত। ফলে সবটাই ‘মেয়েলি বাতিকে’র ঝক্কি বিশেষ। ফেসবুকে দেখলাম, আমার বন্ধু গোপা তার শাড়িগুলো রোদে না দিয়ে, আলমারির ডালাটা দু’দিন হাট করে খুলে রেখেছেরোদেরই দায় আলমারিতে ঢোকা। আমি আবার আর এক কাঠি ওপরে; আশপাশ এবং ওপর নিচ, সবেতেই মেশিন চালিয়ে সাবেকি ন্যাপথলিন ছুঁড়ে ছুঁড়ে দিয়ে দিই। কোনও টানামানি বা নাড়ানাড়ির মধ্যেই নেই। স্টিলের মই বেয়ে তপন ওঠে ‘ভ্যাকুম’ বগলে করে, আর ভোঁ ভোঁ শব্দে কান ঝালাপালা করে দেয়। ওই আওয়াজেই আমি শুনতে পাই, ঠাকুমার শাসন – ‘এদিকে একদম নয়, ভাঙা কাচে পা কাটবে’; ‘কী ছাই ভস্ম ঘেঁটে বার করছিস, আ ছিছি!’ আবার একই সঙ্গে আরাম পাই একেলে গিন্নিদের আলমারি থেকে উড়ে আসা নানারকম সুগন্ধি কীটনাশকের সুবাস এবং হুকে ঝোলানো মনোরম পটপউরির আয়োজনেএখন অবশ্য ঘর ঝাড়ার থেকেও বিষম দায় নিজেদের জিনিসপত্র – জামা, কাপড়, জুতো, গরম জামা এবং রাশি রাশি বই ও ফাইল এসব গুছিয়ে রাখা এবং সময়মতো খুঁজে পাওয়া।

তবে এবার এই ঝাড়াঝুড়ি পব্ব কিছু ভিন্ন। প্রথমত, দীর্ঘ লকডাউনে বাড়িতে থাকতে পেয়ে খোঁচা খুঁচির চোটে, ঘর বাড়ি এমনিই সন্ত্রস্ত হয়ে আছে। তার ওপর কাজের মেয়ের অনুপস্থিতিতে, নিজে  হাতে পরিষ্কার ও গোছগাছ করায় সব বেশ জুতে আছে। আর তাছাড়াও মলমাস পড়ে যাওয়ায় পুজোর হিড়িক, হৈ হৈ সবই মহালয়ার গা ঘেঁষে না হয়ে, মাসখানেক দূরে। ফলে, সপ্তমীতে স্নান সেরে কলাবউ যখন মণ্ডপে এসে বসবেন, ততক্ষণে সকলের বাড়ির দরজার মাথায় তেল হলুদ-সিঁঁদুরের মাঙ্গলিক চিহ্নে স্বস্তিক আঁকা হয়ে গেছে। ঝাড়াঝুড়ি শেষে সংসার আবার ভোল বদলে হাসছে।

Mandar Mukhopadhyay

আড্ডা আর একা থাকা,দুটোই খুব ভাল লাগে।
লিখতে লিখতে শেখা আর ভাবতে ভাবতেই খেই হারানো।ভালোবাসি পদ্য গান আর পিছুটান।
ও হ্যাঁ আর মনের মতো সাজ,অবশ্যই খোঁপায় একটা সতেজ ফুল।

4 Responses

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *