এক

এমনই সম্মোহক আলো আসঙ্গ বিধুর,
জন্ম তারার কাছে পাওয়া যতটুকু গান,
বারান্দায় এসেছিলে সঙ্গে নিয়ে আমূল বৈরাগ
স্কার্ফে লেগেছিল ধুল পরিমাণ,
বিয়োগব্যথার মতো হাহাকার, পত্রবিরহিত,
হিমকথাকলি আজ তবু লিখে রাখো স্থানীয় মর্মরে

দুই

পিকনিক থেকে উড়ে যায় টায়ার সঙ্গীত,
আমাদের বিভ্রান্ত করেছিল মায়াবী ফসল,
কুয়াশার কোর্টে কবে যেন ঝরে গেছে র‌্যাকেটের শ্রম
আজ শুধু হারজিত জমে জমে তীব্র শ্বাসভার,
জানি, এক মাঘে পালাবে না পিকনিক, শীতের বিষাদ

তিন

উইকেট হারিয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরার দীর্ঘ আয়ুপথে
এক জীবনের অসহযোগ রয়ে গেল।
গ্যালারি থেকে গড়িয়ে আসা উলের রং
আর কৌশলী ঘাসেদের মধুর বিদায় সম্বোধন ক্ষণস্থায়ী,
কারণ বেলা পড়ে আসে দ্রুত,
মুছে যায় ফেটে যাওয়া ত্বকের বিপদ,
ক্যালিপসো সঙ্গীতে দপ করে জ্বলে ওঠা
শেষবার, অন্য ইনিংস-জন্মের আগে

চার

নতুন গুড়ের গন্ধ বুকে নিয়ে
ধেয়ে আসে ভোরের লোকাল,
তোমাদের পাড়ায় আজ গন্ধের উৎসব
জ্বাল দেওয়া স্মৃতির উনুনের ধারে
ঘাপটি মেরে বসে আছে পরীক্ষাক্লান্ত বেলা,
ধুনুরির শব্দের তালে অসম্মত পাঁজর,
আজ জ্বরভোলানো রোদ ওঠে
তাকে নিয়ে খেলা করে আনত ডিসেম্বর

পাঁচ

ক্রস ও কাঁটার মাঝে সম্বলহীন ঝুলে আছে
না বোনা নক্সার হৃদয়, মায়ের আঙুল, অনুমেয় শূন্যতা।
গত মরশুমে কিছু অনাদায়ী কথা আজ
গলার কাঁটা হয়ে গেলে, তাকে টনসিল বলে ডেকো।
বসন্তের দিকে যে চলে গেল আজ, তার পথজুড়ে
পড়ে থাক অক্ষয় মাফলার তোমার

সকালে কবিতা লেখেন আর সন্ধ্যায় সংবাদ । এই স্বআরোপিত দ্বিচারিতার মধ্যেই ফ্রিস্টাইল বেঁচে থাকা । পেশার সূত্রে দেড় দশক দিল্লিতে অতিক্রান্ত। ভ্রমণ যত্রতত্র, কাব্যগ্রন্থ আপাতত পাঁচটি। জন্ম ১৯৭০, কলকাতা।

6 Responses

  1. সবকটি কবিতাই এক মুগ্ধ অগ্রহায়ণের কথা বলছে। শীতের স্নিগ্ধ স্মৃতিকে চাড়িয়ে দিচ্ছে। আপনার শব্দনির্মাণ ও কবিতার ভাষা এক অনন্য পাঠের অভিজ্ঞতা দেয়। আর চার নম্বর কবিতাটি যেন হৃদয় ছুঁয়ে গেল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *