ওকি সত্যিই দেবী
রণলিপ্সু, আক্রমণ চায়!
নাকি ধ্বস্ত এক মেয়ে
নররক্ত মাখা
ধর্ষণ ঠেকাতে  ছিন্ন- খামচানো দেহ

দেবতারা অস্ত্রচিহ্নে গড়েছেন তাকে
অসুর নিধন চেয়ে
যোগ্যতার প্রমাণ দিয়েছে এই মেয়ে
ছিন্নমুণ্ড মহিষাসুরের
রক্তে স্নান করে…
যুদ্ধ শেষ হল
আর কেন যুদ্ধসাজ
কেউ কি ছাড়িয়ে দেবে বর্ম
আঁট হয়ে বসা-দমফাঁস!
ধুয়ে দেবে রক্ত মাখা পিছল আঙুল !
কাদামাখা দু’পায়ের গোছ!
ক্লান্ত ধ্বস্ত দেহ টেনে টেনে
নদী দেখে হেঁটে যায়
স্নান চায় দেহ
ফালা ফালা পোষাকের থেকে
ঝুলে ঝুলে আছে
তোবড়ানো খোঁচা লাগা অস্ত্র –  যুদ্ধ সাজ

তাল তাল ধ্বংসের স্তূপ:
মাটি কেঁপে গেছে
ফাটলের ফাঁক দিয়ে
মরা লাভা স্রোত
গহ্বরে হাঁ-মুখ
কিলবিলে সাপ আর কীট
পাখিরা লুকোয়
জঙ্গলে আগুন – আর্তনাদ
ব্যাপক যুদ্ধের শেষ
সভ্যতার শেষ
তলানিতে মান অপমান
পরাজয়ে শেষ সীমাটুকু
পার হয় দুহাতে আকাশ
ঈশ্বরের সাড়া নেই কোনও –
যে যাঁর আসনে তাঁরা স্থির
জয় মেখে রয়েছেন
মুদ্রার নির্দেশে বরাভয়-
মেয়েটা কোথায় যাবে!

কার কাছে, পাবে পরিত্রাণ?

আজ
ভাগাভাগি জয়পরাজয়

বনের রাখাল এসে বলে
আয় খুলে দিই
জড় থেকে মুক্তি দিই তোকে
দেবী থেকে হয়ে ওঠ, শূন্য বনচারী  –
দ্বিতীয় কাপড় নেই
শরীরে জড়াবি!
জলে ডুবে থাকে মেয়ে
ভেসে থাকে হ্যাচড়ানো চুল
রক্তের ধারায় লাল, থেমে যায় নদী
আঠা আঠা স্রোতহীন যেন
রাখাল দু’হাতে চোখ ঢাকে
ঢেকে রাখে আসন্ন প্রসব
কাঠকুটো জড়ো করে ঝলসে বানায়
পোড়া কন্দমূল, তুলতুলে
অন্ধকারে তারার আলোয়
ছায়া কেঁপে স্থির
ভিজে চুলে শ্যাওলা জড়ায়
গাছের আড়ালে ঢেকে দেহ
রভস শরীরী ঘ্রাণ
এই যেন প্রথম প্রকাশ
প্রেমের কাঁপন তার চোখের পাতায়
প্রথম সে লজ্জা পায়
লজ্জা  পেতে শেখে
ঝেড়ে ফেলে পরাক্রম, হু হু কেঁদে ওঠে
কেঁপে ওঠে ভয়ে –
এই সামান্য রাখাল, তাকে আজ নারী করে তোলে!
বৃক্ষলতায় ঢেকে দুই স্তন
দু’হাত বাড়িয়ে মেয়ে বলে,
‘আয় কাছে আয়
বনের বালক’।।

Mandar Mukhopadhyay

আড্ডা আর একা থাকা,দুটোই খুব ভাল লাগে।
লিখতে লিখতে শেখা আর ভাবতে ভাবতেই খেই হারানো।ভালোবাসি পদ্য গান আর পিছুটান।
ও হ্যাঁ আর মনের মতো সাজ,অবশ্যই খোঁপায় একটা সতেজ ফুল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *