আচ্ছা কবিতাকে কি নাটক বলা চলে?
কবিতা যদি জীবন হয়, জীবন যদি নাট্যমঞ্চ হয়! কবিতা হয়তো নাটমন্দির বা একটা নাটক।
তবে আমাদের কবিতায়, কেন শেষ অঙ্ক পর্যন্ত থাকতে দিলে না আমায়! কোন সে ভুল? যা অকস্মাৎ থামিয়ে দিয়ে গেল সংলাপ,
তোমার সুন্দরতম গভীর মোনোলোগে আবিষ্ট হয়ে আসা। কেন, কেন, কেন, কেন?
সমস্ত কেনতে যে হাত দিতে নেই। পুড়ে যাওয়া চলে না সবার।
তবু, কিসের অহমিকায়, মাঝপথে রুদ্ধগতি নেমে আসে? অচল হয়ে যায় চতুর্দিক। কেন তুমি বড় নিশ্চুপ হয়ে দেখলে, দুরন্ত পবিত্রতায় ছেয়ে থাকা কবিতাও লেখা হল না আর। এক প্রেক্ষাগৃহ হিতৈষী ভিড় কেন সব মেনে নিল?
আগুন লেগেছিল প্রেক্ষাগৃহে। তীব্র দহনবায়ু ধোঁয়া হয়ে চেপে ধরেছিল শ্বাসনালী। আমার মোনোলোগের এক একটা অক্ষর অক্ষরেখার মতো এফোঁড় ওফোঁড় করে দিচ্ছিল আমার নিশ্বাস।
কেন বলনি আমায়? সে আগুনের তেজ কি এমনই তীব্র যা আমি নেভাতে পারতাম না?
পারতে না তুমি, তাত তোমার অসহ্য। মোমের মতো দাহ্য মনের প্রতিটা কক্ষ পুড়ে ছাই হয়ে যেত সহসা।
তুমি কি মনে কর, তোমার দহনের আঁচে পুড়িনি আমি?
আমার পুড়ে যাওয়া কবিতা থেকে বেরিয়ে আসছিল ধোঁয়া, কালো মেঘের নিম্নচাপ ঢেকেছিল আস্ত পান্ডুলিপি।
কেন তুমি এত দুর্বল ভাবলে আমায়? আমি কি পারতাম না, আর একবার মেঘদূত হতে; যে বহু বিনিদ্র রাতে শুষে নিত আর্দ্রতা, তোমার অশ্রুসিক্ত জলজ বাতাসে ভারী হয়ে আসা মেঘভাঙা বৃষ্টিতে কি পারতাম না সমস্ত আগুন নিভিয়ে দিতে!
আমার কবিতাগুচ্ছ পুড়ে রাখ হয়ে গিয়েছে। আর যে নেভানোর কিছুই নেই!
লেখক বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরাজি সাহিত্যে স্নাতকোত্তর। পেশাগতভাবে শিক্ষকতার সঙ্গে যুক্ত।লিখতে ভালবাসেন। তারচেয়েও বেশি পড়তে ভালবাসেন। শখের তালিকায় সর্বাগ্রেও বই পড়া। অবসর যাপন করেন সিনেমা দেখে, কখনও কবিতা পড়ে। বিভিন্ন পত্রিকা ও ব্লগে লেখেন। 'গল্পকুটির'পত্রিকার সম্পাদনার সাথে যুক্ত।
সুন্দর।